<p>শেষ হলো আবাসন খাতের সবচেয়ে বড় আয়োজন রিহ্যাব মেলা। মেলা শুরুর দিন থেকেই দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। গতকাল শুক্রবার মেলার শেষ দিনেও উপচে পড়া ভিড় ছিল স্টলগুলোতে। আবাসনের স্বপ্নপূরণে অর্থের জোগানের জন্য ঋণের বিষয়ে জানতে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের স্টলগুলোর প্রতিনিধিরা পার করেছেন ব্যস্ত সময়।</p> <p>গত ২৩ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হয়েছিল রিহ্যাব ফেয়ার-২০২৪।</p> <p>গতকাল দেখা গেছে, বিভিন্ন স্টল ঘুরে ক্রেতা-দর্শনার্থীরা ফ্ল্যাট ও প্লটের খোঁজ নিচ্ছে; একই সঙ্গে অর্থের জোগানের কথা মাথায় রেখে ছুটছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের স্টলগুলোতে। হোম লোনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান মেলায় রেখেছিল আকর্ষণীয় অফার। আবাসন মেলায় বুকিং দিলেই গ্রাহকরা পেয়েছেন লোন প্রসেসিং ফি মওকুফসহ নানা অফার।</p> <p>মেলায় ঢাকা ব্যাংকের স্টলের সামনে কথা হয় এনজিও কর্মকর্তা মোতালেব হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে জমা টাকা নেই। যা আছে সেই টাকা দিয়ে নগদে ফ্ল্যাট কেনা অসম্ভব। তাই ব্যাংক লোনের মাধ্যমে কিভাবে কেনা যায় সে বিষয়ে জানতে আসলাম।’</p> <p>মেলায় আকর্ষণীয় মুনাফা, সহজ কিস্তি এবং দ্রুত সময়ে লোন প্রসেসিংয়ের ব্যবস্থা রেখেছিল ঢাকা ব্যাংক। ব্যাংকটির একজন দায়িত্বশীল জানান, ব্যাংকটি সর্বোচ্চ ২৫ বছর মেয়াদের লোন দিচ্ছে। সম্পত্তির ৭০ শতাংশ মূল্যের সর্বোচ্চ দুই কোটি টাকা পর্যন্ত লোনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যারা মেলায় যোগাযোগ করেছেন তাঁদের পরে এসব সুবিধা দেওয়া হবে।</p> <p>সিটি ব্যাংক মেলায় ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক এবং শূন্য শতাংশ হোম লোন প্রসেসিং ফি সুবিধা রেখেছিল। স্টলে যোগাযোগ করা ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রসেসিং ফি দিতে হবে না। মিজানুর রহমান নামের এক প্রতিনিধি বলেন, ‘আমরা পাঁচ লাখ থেকে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত লোন সুবিধা দিচ্ছি। এই টাকা গ্রাহক পরিশোধ করতে পারবেন ১ থেকে ২৫ বছরে।’</p> <p>বাণিজ্যিক ও আবাসিক স্থাপনা নির্মাণ, ক্রয় ও সম্প্রসারণের জন্য ঋণ নিয়ে মেলায় আসে ইস্টার্ন ব্যাংক। সর্বোচ্চ ২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত মেয়াদি ঋণ দেয় ব্যাংকটি। ১২ মাস পর্যন্ত গ্রেস পিরিয়ডের সুবিধাসহ আকর্ষণীয় ইন্টারেস্ট রেট দ্রুত লোন প্রসেসিংয়ের ব্যবস্থা রেখেছিল তারা।</p> <p>পূবালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার শাহরিয়ার হাসান জানান, গ্রাহকদের আবাসনের স্বপ্নপূরণে সর্বোচ্চ দুই কোটি টাকা অথবা ক্রয়মূল্যের বা নির্মাণ ব্যয়ের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গ্রাহকের সুবিধার্থে সর্বোচ্চ ১৮ মাস পর্যন্ত ডিএসপিওড এবং মেয়াদ ২৫ বছর পর্যন্ত রাখা হয়েছে।</p> <p>মেলায় গতকাল বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৪০৩ কোটি ১২ লাখ ৭৪ হাজার টাকার ফ্ল্যাট, প্লট ও বাণিজ্যিক স্পেস বিক্রি ও বুকিং হয়েছে। এর মধ্যে ফ্ল্যাট বিক্রি ও বুকিং হয়েছে ২৩০ কোটি টাকা। প্লট ৯৬ কোটি, বাণিজ্যিক স্পেস ৭৭ কোটি ১২ লাখ ৭৪ হাজার টাকার বুকিং ও বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংক কমিটমেন্ট এসেছে প্রায় এক হাজার নব্বই কোটি টাকা। মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থী এসেছে ১৭ হাজার ৭২৯ জন।</p> <p>মেলা বিষয়ে রিহ্যাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূইয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এবারের মেলায় ভালো সাড়া পেয়েছি। আবাসনসহ লিংকেজ প্রতিষ্ঠানও ভালো সাড়া পেয়েছে। আশা করছি, যাঁরা মেলায় এসেছেন, সামনের দিনগুলোতে আবারও আসবেন। মেলায় থাকা স্টলগুলোর মাধ্যমে নিজের আবাসন নিশ্চিত করবেন। সব কিছু মিলিয়ে আবাসন মেলা সফল এবং আমাদের সংকট কাটাতে সহায়তা করবে।’</p>