<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চা মৌসুমের শুরুতেই অনাবৃষ্টির কারণে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন বাগানের চা-গাছ বিবর্ণ হয়ে পাতা পুড়ে যাচ্ছে। নদ-নদী, ছড়া, জলাশয় ও লেক শুকিয়ে যাওয়ায় চাহিদামতো সেচ দেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। নতুন কুঁড়ি আসছে না গাছে। এতে চা উৎপাদনে ভাটা পড়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্টরা মৌসুমের শুরুতেই প্রতিকূলতার মুখে পড়ায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা যায়, জেলায় ৯৩টি চা-বাগান রয়েছে। এর মধ্যে অনেক চায়ের টিলা শুকিয়ে যাচ্ছে। দাবদাহ আর অনাবৃষ্টির কারণে বাড়ছে না চা-গাছের কুঁড়ি। আসছে না নতুন পাতাও। খরায় নতুন সৃজিত চায়ের ৪০ শতাংশ চারাগাছ এবং ১০ শতাংশ পুরনো চা-গাছ পুড়ে গেছে। চা-বাগান কর্তৃপক্ষ কিছু কিছু টিলায় নিয়মিত সেচ দিয়ে এ বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করছে।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনাবৃষ্টির কারণে চা-বাগানের নতুন সৃজিত চা-গাছের পাতা রোদে পুড়ে মারা যাচ্ছে। তা ছাড়া অনাবৃষ্টির ফলে চা-বাগানের নার্সারি বাগানগুলোতে ফড়িংয়ের আক্রমণ হচ্ছে। শীত মৌসুমে চা-বাগানগুলোতে পুরনো চা-গাছ উপড়ে ফেলে সেখানে নতুন করে চারাগাছ লাগানো হয়। বাগানের প্লান্টেশন এলাকার চা-গাছ কাটিং (আগাছা ছেঁটে দেওয়া) হয়। এসব কাজের পর নিয়মিত সেচ দেওয়ার প্রয়োজন হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ন্যাশনাল টি কম্পানির (এনটিসি) মাধবপুর চা-বাগানের ব্যবস্থাপক দিপন কুমার সিংহ বলেন, এখন পাতা তোলার মৌসুম। কিন্তু যে হারে পাতা চয়ন করার কথা সেভাবে হচ্ছে না। এখন প্রচুর খরা, এ জন্য কিছু গাছ মরে যাচ্ছে। যদি বৃষ্টি হয় তাহলে স্বাভাবিক হবে চা-গাছগুলো।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ চা সংসদের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, চা-গাছ রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েও পানির অভাবে সেচ দেওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এমনিতেই চা রপ্তানি আগের তুলনায় কমে গেছে। এরপর যদি উৎপাদন ঘাটতি হয়, তাহলে তার প্রভাব হবে অন্য রকম।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ টি এস্টেট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান বলেন, বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এখন কোনো উৎপাদন নেই। তবে দু-একটি বাগানে পাতা চয়ন শুরু হচ্ছে। পরিস্থিতি অনুকূল নয়। বর্তমানে প্রতি কেজি চায়ের উৎপাদনে খরচ হয় ২২০ টাকা আর বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। কেজিতে ৪০ টাকা ঘাটতি দিয়ে চা-শিল্প কতক্ষণ টিকে থাকবে কে জানে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ন্যাশনাল টি কম্পানির (এনটিসি) পাত্রখোলা চা-বাগানের ব্যবস্থাপক আকতার হোসেন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রয়োজনীয় বৃষ্টি ও সহনীয় তাপমাত্রা চা উৎপাদনের মূল চালিকাশক্তি। বৃষ্টি না হওয়ায় আমরা কৃত্রিমভাবে ইরিগেশনের মাধ্যমে পানির ব্যবস্থা করে চা-গাছে পানি দিচ্ছি। কিন্তু সব জায়গায় ইরিগেশন করা সম্ভব হচ্ছে না। চা-গাছের জন্য বৃষ্টি খুবই প্রয়োজন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আনিসুর রহমান বলেন, এই সময়ে চা অঞ্চলে ১৫ থেকে ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। গত বছরের মার্চ মাসে ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। অথচ চলতি বছরের মার্চে এসে মাত্র চার মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। শুধু তাই না, গেল পাঁচ মাসে এ অঞ্চলে কোনো বৃষ্টিপাত নেই। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশি চা সংসদের সিলেট অঞ্চলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ শিবলী জানান, চায়ের জন্য ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা আদর্শ। তবে সর্বোচ্চ ২৯ ডিগ্রি পর্যন্ত চা-গাছ তাপ সহ্য করতে পারে। এর ওপরে গেলেই খরায় পুড়ে যাবে চা-গাছ। পানির সংকট দেখা দিতেই নতুন কুঁড়ি আসা বন্ধ হয়ে যায়। তবে বাগানে যথেষ্ট পরিমাণ ছায়া প্রদানকারী গাছ থাকলে ৩৫ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে থাকে। জেলায় তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি আবার কখনো তা বেড়ে ৩৬ ডিগ্রি পর্যন্ত ওঠানামা করে।</span></span></span></span></p>
