দেশজুড়ে ট্রান্সকমের পণ্য বয়কটের ডাক

বিভিন্ন স্থানে কেএফসি বাটা পিৎজা হাটে হামলা

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
বিভিন্ন স্থানে কেএফসি বাটা পিৎজা হাটে হামলা
বিক্ষোভ মিছিল থেকে সিলেট নগরীর মিরবক্সটুলায় ফাস্ট ফুড চেইন কেএফসিতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। গতকাল বিকেল ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ছবি : কালের কণ্ঠ

ইসরায়েলি পণ্য রাখা ও বিক্রি করায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষুব্ধ মানুষ ফাস্ট ফুড চেইন কেএফসি, পিৎজা হাট, বাটার মতো আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের শোরুমে হামলা চালিয়েছে। পাশাপাশি কোমল পানীয় কোকাকোলা, সেভেন আপ রাখায় দেশীয় প্রতিষ্ঠানও হামলার শিকার হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।

ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদ ও ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের দাবিতে কর্মসূচি চলাকালে গতকাল সোমবার এসব স্থানে হামলার ঘটনা ঘটে। গাজায় গণহত্যা বন্ধ ও ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের দাবি জানাতে বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ উত্তেজিত হয়ে এসব হামলা চালায়।

অবশ্য স্থানীয় প্রশাসন বলছে, বিক্ষোভকারীদের অতি উৎসাহী কিছু ব্যক্তি এসব হামলায় অংশ নেয়। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা হামলার পর দাবি করেছেন, তাঁরা যতটা সম্ভব ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করেছেন। তাঁরা গতকালের কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করার পরও হামলা চালানো হয়েছে। কালের কণ্ঠের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য থেকে রেস্তোরাঁ ও শোরুমে হামলা-ভাঙচুরের চিত্র পাওয়া গেছে।

চট্টগ্রাম : ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে দিনভর বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা। এসব সমাবেশ থেকে ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের ডাক দেওয়া হয়। ওই সময় চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি এলাকায় পিৎজা হাট ও কেএফসিতে ইটপাটকেল ও জুতা নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এতে দুটি প্রতিষ্ঠানের সামনের অংশের কাচ ভেঙে যায়।

মিছিল থেকে রাস্তার পাশের বিভিন্ন দোকানে থাকা কোকা-কোলা ও পেপসি-কোলা কম্পানির সাইনবোর্ড ভাঙচুর করা হয়। বিকেল সাড়ে ৩টায় ২ নম্বর গেট বিপ্লব উদ্যান থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল বের করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মিছিলটি নাসিরাবাদ অতিক্রম করার পরপরই সানমার ওশান সিটির পাশে থাকা কেএফসি রেস্তোরাঁ লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ও জুতা নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীরা। এতে রেস্তোরাঁর কাচ ভেঙে যায়। এ ছাড়া  চট্টগ্রামের জিইসি এলাকায় পিৎজা হাটের শাখার সামনের কাচ ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা।
পরে জিইসি মোড়ে হোটেল জামানে কোকা-কোলার সাইনবোর্ড থাকায় সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। পরে তারা পিৎজা হাটেও ভাঙচুর চালায়। 

আরেকটি মিছিল থেকে লালখান বাজার এলাকায় স্পোর্টস ব্র্যান্ড পুমার সাইনবোর্ড, বাটার সাইনবোর্ড ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া নগরীর কাজীর দেউড়ি মোড় থেকে জামালখান অভিমুখী আরেকটি মিছিল থেকে রাস্তার পাশের বিভিন্ন দোকানে থাকা কোকা-কোলা ও পেপসিকোলা কম্পানির ফ্রিজ ও সাইনবোর্ড ভাঙচুর করা হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা ফ্রিজে থাকা পেপসি, সেভেন আপসহ বিভিন্ন কোমল পানীয় রাস্তায় ছিটিয়ে দেয়।

কক্সবাজার : কক্সবাজার থেকে বিশেষ প্রতিনিধি জানান, গতকাল কক্সবাজার শহরে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ মিছিলে রোষের শিকার হয়েছে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকার মালিক ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠান কেএফসি ও পিৎজা হাট। মিছিল থেকে ক্ষুব্ধ লোকজন সাগর পারের হোটেল-মোটেল জোনের কলাতলী সড়কের প্রতিষ্ঠান দুটি দেখতে পেয়ে ক্ষোভে চিৎকার দিতে দিতে ইটপাটকেল ছোড়ে। হামলার পরিপ্রেক্ষিতে কেএফসি আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিল থেকে কক্সবাজার শহরের পর্যটন জোন কলাতলীতে কেএফসিসহ ইসরায়েলি পণ্যের সাইনবোর্ড থাকা অন্তত ১৫ থেকে ২০টি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালানো হয়। এর মধ্যে মূলত কেএফসি ও পিৎজা হাটের ওপর বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভ বেশি ছিল। 

দুপুর ১২টায় পর্যটননগরী কক্সবাজারের পাবলিক হল ময়দান থেকে দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা কর্মসূচির বিশাল বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষাও হয়নি। মিছিল হয়েছে টেকনাফ, উখিয়া, রামু, চকরিয়াসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায়ও।

শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মিছিলটি কলাতলী গোলচত্বরের দিকে যাওয়ার পথে ট্রান্সকম গ্রুপের পরিচালনাধীন প্রতিষ্ঠান কেএফসি ও পিৎজা হাটের সামনে গিয়েই মিছিলকারীরা চড়াও হয়। মিছিলে নেতৃত্বদানকারী লোকজন তাদের নিবৃত্ত করার শত চেষ্টা করলেও রেহাই মেলেনি। ইটপাটকেলের আঘাতে প্রতিষ্ঠানগুলোর কাচের গ্লাস ভেঙে যায়।

ছাত্র প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলম গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ইসরায়েলের কম্পানিগুলো বাংলাদেশে চালায় প্রথম আলো এবং ট্রান্সকম কম্পানি (গ্রুপ)। দেশের মানুষকে একতাবদ্ধ হয়ে কেএফসি, পিৎজা হাট, সেভেন আপ, কোকা-কোলা কম্পানিগুলো বয়কট করতে হবে। দেশের মানুষকে প্রথমে প্রথম আলো এবং ট্রান্সকম কম্পানিকে বয়কট করতে হবে। তাহলেই আমরা ফিলিস্তিনের পক্ষে যে একাত্মতা পোষণ করতে চাচ্ছি সেই একাত্মতা পোষণ করতে পারব।

কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ ইকবাল জানান, কেএফসি, পিৎজা হাটের পাশাপাশি কাঁচা লংকা, পানসি রেস্টুরেন্ট এবং মেরিন ফুড রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় কাচের আঘাতে কয়েকজন পর্যটকও আহত হন। কলাতলীর মোড় থেকে পর্যটন জোনের যেখানে এমন সাইনবোর্ড ছিল তার সব কটিতে ভাঙচুর চালানো হয়। যেখানে অন্তত ২০টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জাবেদ ইকবাল বলেন, আমাদের ফিলিস্তিনের প্রতি সব সময় সংহতি রয়েছে। আজকের বিক্ষোভ মিছিলেও আমাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ রয়েছে। তবে কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোকজনের এমন ঘটনা কক্সবাজার পর্যটনের জন্য অশনিসংকেত। আমরা ইসরায়েলের পণ্য যথাসম্ভব বর্জন করছি। তারা যদি সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলতে বলত তাহলে সুন্দর একটা সমাধান হতো।

কক্সবাজার পিৎজা হাটের ইনচার্জ পারভেজ মিয়া বলেন, মূলত কেএফসির ওপর মানুষের ক্ষোভ বেশি। তারা হঠাৎ মিছিল থেকে ইটপাটকেল মারা শুরু করে কেএফসি লক্ষ্য করে। তবে কেএফসি ওপরের ফ্লোরে হওয়ায় এগুলো এসে পড়ে পিৎজা হাটে। আমাদের বেশ কিছু কাচ এবং যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা আপাতত রেস্টুরেন্ট বন্ধ রেখেছি।

কাঁচা লংকা রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক ফিরোজ আহমেদ বলেন, রেস্তোরাঁর সাইনবোর্ডে সেভেন আপের বিজ্ঞাপন ছিল। এই অজুহাতে আমাদের রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর চালানো হয়। কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. ইলিয়াস খান জানিয়েছেন, মিছিল বড় হওয়ায় মাঝখান থেকে কিছু অতি উৎসাহী মানুষ কয়েকটি রেস্টুরেন্টে হামলা ও পেপসির সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলেছে। ওসি বলেন, এ সময় কিছু ঢিল ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে, তবে মিছিলে উপস্থিত মুরব্বিরা তাদের তত্ক্ষণাৎ নিয়ন্ত্রণ করায় অন্তত ব্যাপক ক্ষতি থেকে রক্ষা মিলেছে।

গাজীপুর : বিকেল সাড়ে ৩টায় গাজীপুরের বোর্ডবাজারে বাটা শোরুমসহ বিভিন্ন দোকানের সামনে বিলবোর্ড-ব্যানার ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। সড়কের পাশে তিন-চারটি দোকানের সামনে বিলবোর্ড-ব্যানারে ভাঙচুর করা হয়।

খুলনা অফিস জানায়, খুলনায় ইসরায়েলবিরোধী মিছিল থেকে বিক্ষুব্ধরা নগরীর ময়লাপোতা মোড়ে কেএফসি রেস্তোরাঁ ভাঙচুর করে। বিক্ষোভকারীরা সেখান থেকে ইসরায়েলি পণ্যসহ বিভিন্ন কোমল পানীয় বের করে রাস্তায় এনে ভেঙে ফেলে।

ময়লাপোতা থেকে একাধিক মিছিল যাওয়ার সময় কেএফসি রেস্তোরাঁ লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।

নো ওয়ার্ক নো ক্লাস কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সিলেটে সর্বস্তরের মানুষের বিক্ষোভ মিছিলের সুযোগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় নিন্দার ঝড় বইছে। দাবি উঠেছে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির। এদিকে লুটপাটে জড়িত সন্দেহে পুলিশ এ পর্যন্ত তিনজনকে আটক করেছে।

বরিশালে কর্মসূচি চলাকালে বিক্ষুব্ধরা কেএফসির বরিশাল শাখায় ভাঙচুর চালায়। ছাত্র-জনতা কেএফসির কার্যক্রম বরিশাল থেকে সরিয়ে নেওয়ার দাবি তোলে। বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে নগরীর প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কবি জীবনানন্দ দাশ সড়কে কেএফসির সামনে বিক্ষুব্ধ জনতা অবস্থান নেয়। তখন তারা কেএফসি বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানায়। বিকেল সোয়া ৩টায় কয়েকজন বিক্ষোভকারী প্রতিষ্ঠানটির ছাদে উঠে কেএফসির লোগো ভেঙে ফেলে।

বগুড়ায় দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টার মধ্যে শহরের সাতমাথায় বাটার শোরুমে ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধরা।

গত সন্ধ্যায় কুমিল্লা নগরীর রানীর বাজার এলাকায় কেএফসি রেস্টুরেন্ট ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। সেখানে এম আলী টাওয়ারের সামনে গিয়ে বিভিন্ন মিছিল থেকে জড়ো হয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা কেএফসিতে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায়।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপ

যুক্তরাষ্ট্রের ১০৪%, জবাবে চীনের ৮৪%

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
যুক্তরাষ্ট্রের ১০৪%, জবাবে চীনের ৮৪%

কয়েক ডজন দেশের ওপর চাপানো প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক গতকাল বুধবার থেকে কার্যকর হয়েছে। এর মধ্যে চীনের পণ্যে আরোপিত ১০৪ শতাংশ শুল্কও রয়েছে।

এদিকে চীনা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১০৪ শতাংশ শুল্কারোপের জবাবে এবার সব ধরনের মার্কিন পণ্যে ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয়। আজ বৃহস্পতিবার থেকে নতুন এই শুল্ক কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে চীন সরকার।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২ এপ্রিল বিশ্বের প্রায় সব দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। ওই দিন বাংলাদেশি পণ্যেও ৩৭ শতাংশ শুল্কারোপ করা হয়। ট্রাম্পের আরোপ করা শুল্কের একাংশ সেদিনই কার্যকর হয়ে যায়। বাংলাদেশসহ বাকি অংশ গতকাল থেকে কার্যকর হলো।

বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধের আঁচ

এদিকে বিশ্লেষকদের মতে এর মধ্য দিয়ে বিশ্বে পুরোদমে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, চীন পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের এই ঘটনার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে আবারও বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বিষয়টি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও মনে করছেন তাঁরা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তুতি নিলেও বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধ এড়ানো যায়নি।

ট্রাম্পের এই শাস্তিমূলক শুল্ক কয়েক দশক ধরে বিরাজমান বিশ্ব বাণিজ্যের ধারায় ভূমিকম্প ঘটিয়েছে।  বিশ্বব্যাপী মার্কিন পাল্টা শুল্ক কার্যকর হওয়ার প্রথমদিনেই এর আঁচ লেগেছে বিশ্ববাজারে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। গতকাল ব্রেন্টের অপরিশোধিত তেলের দাম কমে ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারে বিক্রি হয়েছে, যা করোনাকালে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর সর্বনিম্ন। বিশ্লেষক অ্যাশলে কেলি বলছেন, হোয়াইট হাউস চায় তেলের দাম আরো কমে যাক।
কারণ এটাই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লাভজনক হবে।

ট্রাম্পের চালু করা নতুন শুল্কের ধাক্কায় শেয়ারবাজারেও উথালপাথাল দেখা যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে স্টক এক্সচেঞ্জগুলোতে দরপতন হচ্ছে। গতকাল সকালে এশিয়ার শেয়ারবাজারে আবারও পতন হয়েছে। মূলত ট্রাম্প চীনের প্রতিশোধমূলক শুল্কের জবাবে চীনের পণ্যে অতিরিক্ত, অর্থাৎ মোট ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘটনার জেরে গতকাল সকালেই এশিয়ার শেয়ারবাজারে পতন হয়েছে।

এরপর ইউরোপের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার পর পরই সূচকের পতন হয়। যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক আঞ্চলিক সূচক প্যান-ইউরোপীয় স্টকস ৬০০ কমেছে ৩.৪ শতাংশ। আঞ্চলিক এই সূচকের অন্তর্ভুক্ত সব খাতের শেয়ারের দামেই নেতিবাচক প্রবণতা চলছে। এ ছাড়া আঞ্চলিক স্বাস্থ্যসেবা, খনি ও তেল ও গ্যাস খাতের সূচকগুলো ব্যাপক হারে পড়ে গেছে। এর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা, খনি, তেল ও গ্যাস খাতের শেয়ারের দাম যথাক্রমে ৫.৩ শতাংশ, ৩.৩ শতাংশ ও ৪.৬ শতাংশ কমেছে। এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য বাজারেও। মন্দা দেখা দেবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইউরোর বিপরীতে কমেছে ডলারের দাম।

এদিকে বিশ্ববাজারে গতকাল সোনার দাম বেড়েছে। অবশ্য ২ এপ্রিলে সোনার দাম পড়ে গিয়েছিল।

বিভিন্ন দেশের প্রতিক্রিয়া

চীন জানিয়েছে, এই দ্বন্দ্ব্ব সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করতে ইচ্ছুক। এই লক্ষ্যে চীন গতকাল বাণিজ্য বিষয়ক শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে। শ্বেতপত্রে চীন বলেছে, চীন সব সময়ই চেষ্টা করেছে, মার্কিন-চীন বাণিজ্য যেন সব সময় উভয়ের জন্য লাভজনক হয়। শ্বেতপত্রে আরো বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পাল্টা শুল্কের বৈশ্বিক বাণিজ্যব্যবস্থা, নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থার স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হবে।

এদিকে ট্রাম্পের চাপিয়ে দেওয়া শুল্কের ধাক্কা সামাল দিতে ভিয়েতনাম, ইসরায়েল, আর্জেন্টিনার মতো কিছু দেশ মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক কম করেছে। ভারতও কিছু পণ্যে শুল্ক কম করেছে।

তবে ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্কারোপের প্রতিক্রিয়ায় এবার পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইউরোপের ২৭টি দেশের এই জোট যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন, মোটরসাইকেল ও সৌন্দর্যপণ্যেও পাল্টা শুল্ক আরোপের বিষয়টি গতকাল অনুমোদন দিয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা কয়েকটি যানবাহনের ওপর গতকাল থেকে ২৫ শতাংশ হারে শুল্কারোপ করেছে কানাডা।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়ম লঙ্ঘিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। বিশেষ করে, চীনা পণ্য আমদানির ওপর ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করাটা কোনোভাবেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের রীতির মধ্যে পড়ে না বলে মনে করে দেশটি।

 

মন্তব্য

রাজশাহীর নবগঙ্গা পদ্মার পার থেকে তোলা

শেয়ার
রাজশাহীর নবগঙ্গা পদ্মার পার থেকে তোলা
একসময়ের প্রমত্তা পদ্মার রূপ এখন আর নেই। পানি শুকিয়ে কঙ্কালসার অবস্থা। জেগেছে ছোট-বড় অসংখ্য চর। অনেক জায়গায় নৌকা লাগে না, হেঁটেই পার হওয়া যায় নদী। রাজশাহীর নবগঙ্গা পদ্মার পার থেকে তোলা। ছবি : সালাহ উদ্দিন
মন্তব্য
সালাহউদ্দিন আহমদ

ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদে একমত নয় বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদে একমত নয় বিএনপি
সালাহউদ্দিন আহমদ

রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদ-এর সঙ্গে একমত নয় বিএনপি। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন খবর প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার দুপুরে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বিষয়টি পরিষ্কার করেন।

সালাহউদ্দিন বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের স্প্রেড শিটের ৫, ৬ ও ৭-এ সংবিধানের মূলনীতি এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে বহুত্ববাদের কথা বলা হয়েছে, সাম্য-মানবিক মর্যাদার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বহুত্ববাদসহ অন্য বিষয়গুলোর সঙ্গে বিএনপি একমত নয়।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিগুলো সংবিধানের ৮, ৯, ১০ এবং ১২এই অনুচ্ছেদগুলোতে বিধৃত আছে। সেই অনুচ্ছেদগুলোর বিষয়ে সংস্কার কমিশনে সুপারিশ করা হয়েছে যে তারা এই বিষয়গুলো পুনস্থাপন করতে চেয়েছে। যেমনএকটা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাদি বিলুপ্ত করা হোক। আমরা সেখানে বলেছি, এটাতে (ধর্মনিরপেক্ষতা) একমত নই।

কিন্তু কী কী চাই সেটাও আমরা বলেছি।

এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন,  আমরা চেয়েছি, পঞ্চম সংশোধনীতে যেটা গৃহীত হয়েছে, সেটা পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বাবস্থা, সেটা বহাল করা হোকআমরা চেয়েছি। কিন্তু সবাই মনে করেছে, ধর্মনিরপেক্ষতা বাতিলের কথা বলেছি। বিষয়টা তা নয়।

আমরা পরিষ্কার করার জন্য বলেছি, আপনাদের (সংস্কার কমিশনের) প্রতিস্থাপন বহুত্ববাদসহ অন্যান্য বিষয় এক সঙ্গে আসতে হবে। অর্থাৎ রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে মহান আল্লাহর ওপর আস্থা-বিশ্বাস, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র অর্থাৎ সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার’—এ বিষয়গুলো রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গণ্য হবে। যেটা গৃহীত হয়েছিল বাকশাল বিলুপ্তির পরে। আশা করি এ নিয়ে আর কোনো বিভ্রান্তি থাকবে না।

রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সংবিধানের মূলনীতি, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বিষয়ে কথা বলছি।

আমরা উপরাষ্ট্রপতি, উপপ্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব করেছি, দুই কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রস্তাব করেছি, উভয় কক্ষে ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দল থেকে নিয়ে আসার প্রস্তাব করেছি। আমরা রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনার প্রস্তাব করেছি, নতুন করে কিছু ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে দেওয়ার প্রস্তাব করেছি, সংসদে সংরক্ষিত ৫০ মহিলা আসন থেকে ১০০-তে উন্নীত করার প্রস্তাব করেছিএ ধরনের অনেক প্রস্তাব করেছি।

 

মন্তব্য

দুদকে ‘অতিগোপনীয়’ অভিযোগ নিয়ে হাসনাত-সারজিস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দুদকে ‘অতিগোপনীয়’ অভিযোগ নিয়ে হাসনাত-সারজিস

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। সেখানে তাঁরা লিখিতভাবে কিছু অভিযোগ জানিয়েছেন।

গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে এই দুই নেতা সাক্ষাৎ করেন। সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা।

সাংবাদিকদের হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা কিছু অভিযোগ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে এসেছি। অভিযোগগুলো আমরা লিখিতভাবে জানিয়েছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভেরি কনফিডেনশিয়াল (অতিগোপনীয়)। কাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে হাসনাত বলেন, কনফিডেনশিয়াল বিষয় বলে দিলে তো আর কনফিডেনশিয়াল থাকল না।

এ ছাড়া অপরাধীরা এতে সতর্ক হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে সারজিস আলম সাংবাদিকদের বলেন, অতীতে দুদককে ব্যবহার করে অনেকে সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। অনেক সাধারণ মানুষকে আবার বিনা অপরাধে হয়রানি করা হয়েছে। এ সময়ে এসেও এখন আমরা সেটি প্রত্যাশা করি না।

আমাদের কিছু অভিযোগ ছিল, সেটি জানাতেই এখানে এসেছি। এর বেশি কিছু বলছি না এখন।

 

 

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ