বাংলাদেশে বাণিজ্যে ঘুষ, দুর্নীতিসহ নানা অশুল্ক বাধা দেখছে যুক্তরাষ্ট্র

মাসুদ রুমী
মাসুদ রুমী
শেয়ার
বাংলাদেশে বাণিজ্যে ঘুষ, দুর্নীতিসহ নানা অশুল্ক বাধা দেখছে যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনাকারী মার্কিন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষতি করছে উচ্চ শুল্ক। আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা ঘুষ, দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতাকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে বাধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তর (ইউএসটিআর) তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

২০২৫ ন্যাশনাল ট্রেড এস্টিমেট রিপোর্ট অন ফরেন ট্রেড ব্যারিয়ার শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে ইউএসটিআর।

সংস্থাটি বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কিত অশুল্ক বাধাগুলোকে চিহ্নিত করে বলেছে, বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যেসব বিষয় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, সেগুলোসহ কঠোর ডিজিটাল আইনের ব্যাপারে সতর্ক করা হয়। রিপোর্টে বলা হয়, এ ধরনের দমনমূলক নীতি আন্ত সীমান্ত ডিজিটাল বাণিজ্যের পথ রুদ্ধ করতে পারে।

যদিও বাংলাদেশ ২০১৬ সালে ডব্লিউটিওর বাণিজ্য সুবিধা চুক্তি অনুমোদন করেছে, তবু তারা এখনো আমদানি, রপ্তানি ও ট্রানজিট বিধিমালার স্বচ্ছতা বিজ্ঞপ্তি জমা দেয়নি, যা ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দেওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশ তার শুল্ক মূল্যায়ন আইন সম্পর্কে ডব্লিউটিওকে অবহিত করেনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বেশির ভাগ খাতে ১০০ শতাংশ বিদেশি মালিকানার অনুমতি দেয়। তবে পেট্রোলিয়াম, গ্যাস ও টেলিযোগাযোগের জন্য ইকুইটি ক্যাপ বহাল রয়েছে। তা ছাড়া ২২টি খাতে বিনিয়োগকারীদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে অনাপত্তি সনদ গ্রহণ করতে হয়। যদিও মুনাফা প্রত্যাবাসন আইনত অনুমোদিত, আমেরিকান বিনিয়োগকারীরা প্রায়ই দীর্ঘ বিলম্ব এবং অস্বচ্ছ পদ্ধতির কথা জানান।

ইউএসটিআর উল্লেখ করেছে, অন্তর্বর্তী সরকার মার্কিন সংস্থাগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিশোধ ব্যবস্থায় সম্মত হয়েছে এবং প্রত্যাবাসনপ্রক্রিয়ার উন্নতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ জাতীয় ইলেকট্রনিক প্রকিউরমেন্ট পোর্টাল চালু করলেও যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদাররা বিভিন্ন দরপত্রে প্রত্যাশিত পণ্যের পুরনো কারিগরি মান নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। এ ছাড়া কারিগরি মান পছন্দের দরদাতাদের কাজ দেওয়ার উদ্দেশ্যে নির্ধারণ করা হয় কি না, তা নিয়ে মার্কিন অংশীদারদের সন্দেহ আছে। একই সঙ্গে স্বচ্ছতার অভাব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

এতে আরো বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি কম্পানির দাবি, ক্রয়প্রক্রিয়ায় প্রভাব খাটাতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কম্পানির দরপত্র ঠেকাতে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বিদেশি প্রতিদ্বন্দ্ব্বীরা স্থানীয় অংশীদারদের ব্যবহার করে।

এমনকি দরপত্র বাছাইয়ে কারচুপির অভিযোগও উঠে এসেছে। ডব্লিউটিওর সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত চুক্তির অংশীদার নয় বাংলাদেশ। ডব্লিউটিওর এসংক্রান্ত কমিটির পর্যবেক্ষক হয়নি দেশটি।

মেধাস্বত্ব সুরক্ষায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কিছু আইনগত উদ্যোগ নিলেও বাংলাদেশে এর কার্যকর প্রয়োগ অনিশ্চিত। মার্কিন প্রতিবেদনে উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, সারা বাংলাদেশেই নকল ও পাইরেটেড পণ্য সহজলভ্য। ভোগ্যপণ্য, পোশাক, ওষুধ ও সফটওয়্যার খাতের পণ্যগুলো বাংলাদেশে নকল হচ্ছে বলে মার্কিন অংশীদাররা অভিযোগ করেছে। প্রতিবেদনে বিশ্ববাজারে জাল পণ্য প্রবেশের উৎস দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান ভূমিকার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

শ্রম ইস্যুতে উদ্বেগের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৩ সালে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) পাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষণা করে। এটি এখনো বহাল রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে দুর্নীতি একটি বিস্তৃত ও দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা এবং দুর্নীতি দমন আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হয় না। সুবিধা প্রদান এবং উপহারের অবৈধতা সত্ত্বেও বাণিজ্যিক লেনদেনে ঘুষ ও চাঁদাবাজি ব্যবসার সাধারণ বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ চাওয়ার কারণে মার্কিন কম্পানিগুলো লাইসেন্স ও বিডের অনুমোদন পেতে দীর্ঘ বিলম্বের অভিযোগ করেছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি এবং মার্কিন পণ্যে শুল্কহার অনেক বেশিএমন যুক্তি দেখিয়ে বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেটি মোকাবেলা করতে এই কৌশল প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সরকার। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রপ্তানি বাজারের মধ্যে একক দেশ হিসেবে বৃহত্তম, এই রপ্তানিকে পাল্টা শুল্কারোপের আঘাত থেকে সুরক্ষিত রাখতে এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত শনিবার বিডার এক সভায় নন-ট্যারিফসংক্রান্ত ইস্যুও দ্রুত সমাধানের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের চলমান সংস্কার কর্মসূচি, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, ব্যবসার খরচ কমানো, বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করার জন্য যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা জোরালোভাবে চালিয়ে যেতে হবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এর কোনো বিকল্প নেই।

বিশ্বব্যাংক ঢাকা মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে ব্যবসা করতে গেলে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয় বলে তাঁরা জানিয়েছেন। এর মধ্যে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট, ডিজিটাল সার্ভিস ট্রেড, এক্সপোর্ট সাবসিডি, ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস, দুর্নীতি অন্যতম।

লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, একটি বিষয়ে সবাই একমত হব, বাংলাদেশ যেন প্রতিযোগিতার সক্ষমতা না হারায়। এখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকলে বেসরকারি খাত থেকে সেটি অর্জন সম্ভব। আর লেভেল প্লেয়িং ফ্লিড তৈরির দায়িত্ব সরকারের। এ জন্য একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা লাগবে।

বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল কালের কণ্ঠকে বলেন, ইউএসটিআরের প্রতিবেদনে উঠে আসা বাণিজ্য বাধাগুলো দূর করতে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। এগুলো করতে পারলে আমাদের সক্ষমতা আরো বাড়বে, যা শুধু যুক্তরাষ্ট্রে্ নয়, অন্য দেশেও রপ্তানি বাড়াতে সহায়ক হবে। সামনে আমাদের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন আছে, সে জন্যও আমাদের ব্যবসা ও বিনিয়োগের বাধা দূর করা জরুরি।

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপ

যুক্তরাষ্ট্রের ১০৪%, জবাবে চীনের ৮৪%

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
যুক্তরাষ্ট্রের ১০৪%, জবাবে চীনের ৮৪%

কয়েক ডজন দেশের ওপর চাপানো প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক গতকাল বুধবার থেকে কার্যকর হয়েছে। এর মধ্যে চীনের পণ্যে আরোপিত ১০৪ শতাংশ শুল্কও রয়েছে।

এদিকে চীনা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১০৪ শতাংশ শুল্কারোপের জবাবে এবার সব ধরনের মার্কিন পণ্যে ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয়। আজ বৃহস্পতিবার থেকে নতুন এই শুল্ক কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে চীন সরকার।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২ এপ্রিল বিশ্বের প্রায় সব দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। ওই দিন বাংলাদেশি পণ্যেও ৩৭ শতাংশ শুল্কারোপ করা হয়। ট্রাম্পের আরোপ করা শুল্কের একাংশ সেদিনই কার্যকর হয়ে যায়। বাংলাদেশসহ বাকি অংশ গতকাল থেকে কার্যকর হলো।

বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধের আঁচ

এদিকে বিশ্লেষকদের মতে এর মধ্য দিয়ে বিশ্বে পুরোদমে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, চীন পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের এই ঘটনার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে আবারও বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বিষয়টি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও মনে করছেন তাঁরা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তুতি নিলেও বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধ এড়ানো যায়নি।

ট্রাম্পের এই শাস্তিমূলক শুল্ক কয়েক দশক ধরে বিরাজমান বিশ্ব বাণিজ্যের ধারায় ভূমিকম্প ঘটিয়েছে।  বিশ্বব্যাপী মার্কিন পাল্টা শুল্ক কার্যকর হওয়ার প্রথমদিনেই এর আঁচ লেগেছে বিশ্ববাজারে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। গতকাল ব্রেন্টের অপরিশোধিত তেলের দাম কমে ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারে বিক্রি হয়েছে, যা করোনাকালে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর সর্বনিম্ন। বিশ্লেষক অ্যাশলে কেলি বলছেন, হোয়াইট হাউস চায় তেলের দাম আরো কমে যাক।
কারণ এটাই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লাভজনক হবে।

ট্রাম্পের চালু করা নতুন শুল্কের ধাক্কায় শেয়ারবাজারেও উথালপাথাল দেখা যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে স্টক এক্সচেঞ্জগুলোতে দরপতন হচ্ছে। গতকাল সকালে এশিয়ার শেয়ারবাজারে আবারও পতন হয়েছে। মূলত ট্রাম্প চীনের প্রতিশোধমূলক শুল্কের জবাবে চীনের পণ্যে অতিরিক্ত, অর্থাৎ মোট ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘটনার জেরে গতকাল সকালেই এশিয়ার শেয়ারবাজারে পতন হয়েছে।

এরপর ইউরোপের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার পর পরই সূচকের পতন হয়। যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক আঞ্চলিক সূচক প্যান-ইউরোপীয় স্টকস ৬০০ কমেছে ৩.৪ শতাংশ। আঞ্চলিক এই সূচকের অন্তর্ভুক্ত সব খাতের শেয়ারের দামেই নেতিবাচক প্রবণতা চলছে। এ ছাড়া আঞ্চলিক স্বাস্থ্যসেবা, খনি ও তেল ও গ্যাস খাতের সূচকগুলো ব্যাপক হারে পড়ে গেছে। এর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা, খনি, তেল ও গ্যাস খাতের শেয়ারের দাম যথাক্রমে ৫.৩ শতাংশ, ৩.৩ শতাংশ ও ৪.৬ শতাংশ কমেছে। এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য বাজারেও। মন্দা দেখা দেবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইউরোর বিপরীতে কমেছে ডলারের দাম।

এদিকে বিশ্ববাজারে গতকাল সোনার দাম বেড়েছে। অবশ্য ২ এপ্রিলে সোনার দাম পড়ে গিয়েছিল।

বিভিন্ন দেশের প্রতিক্রিয়া

চীন জানিয়েছে, এই দ্বন্দ্ব্ব সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করতে ইচ্ছুক। এই লক্ষ্যে চীন গতকাল বাণিজ্য বিষয়ক শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে। শ্বেতপত্রে চীন বলেছে, চীন সব সময়ই চেষ্টা করেছে, মার্কিন-চীন বাণিজ্য যেন সব সময় উভয়ের জন্য লাভজনক হয়। শ্বেতপত্রে আরো বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পাল্টা শুল্কের বৈশ্বিক বাণিজ্যব্যবস্থা, নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থার স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হবে।

এদিকে ট্রাম্পের চাপিয়ে দেওয়া শুল্কের ধাক্কা সামাল দিতে ভিয়েতনাম, ইসরায়েল, আর্জেন্টিনার মতো কিছু দেশ মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক কম করেছে। ভারতও কিছু পণ্যে শুল্ক কম করেছে।

তবে ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্কারোপের প্রতিক্রিয়ায় এবার পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইউরোপের ২৭টি দেশের এই জোট যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন, মোটরসাইকেল ও সৌন্দর্যপণ্যেও পাল্টা শুল্ক আরোপের বিষয়টি গতকাল অনুমোদন দিয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা কয়েকটি যানবাহনের ওপর গতকাল থেকে ২৫ শতাংশ হারে শুল্কারোপ করেছে কানাডা।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়ম লঙ্ঘিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। বিশেষ করে, চীনা পণ্য আমদানির ওপর ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করাটা কোনোভাবেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের রীতির মধ্যে পড়ে না বলে মনে করে দেশটি।

 

মন্তব্য

রাজশাহীর নবগঙ্গা পদ্মার পার থেকে তোলা

শেয়ার
রাজশাহীর নবগঙ্গা পদ্মার পার থেকে তোলা
একসময়ের প্রমত্তা পদ্মার রূপ এখন আর নেই। পানি শুকিয়ে কঙ্কালসার অবস্থা। জেগেছে ছোট-বড় অসংখ্য চর। অনেক জায়গায় নৌকা লাগে না, হেঁটেই পার হওয়া যায় নদী। রাজশাহীর নবগঙ্গা পদ্মার পার থেকে তোলা। ছবি : সালাহ উদ্দিন
মন্তব্য
সালাহউদ্দিন আহমদ

ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদে একমত নয় বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদে একমত নয় বিএনপি
সালাহউদ্দিন আহমদ

রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদ-এর সঙ্গে একমত নয় বিএনপি। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন খবর প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার দুপুরে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বিষয়টি পরিষ্কার করেন।

সালাহউদ্দিন বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের স্প্রেড শিটের ৫, ৬ ও ৭-এ সংবিধানের মূলনীতি এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে বহুত্ববাদের কথা বলা হয়েছে, সাম্য-মানবিক মর্যাদার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বহুত্ববাদসহ অন্য বিষয়গুলোর সঙ্গে বিএনপি একমত নয়।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিগুলো সংবিধানের ৮, ৯, ১০ এবং ১২এই অনুচ্ছেদগুলোতে বিধৃত আছে। সেই অনুচ্ছেদগুলোর বিষয়ে সংস্কার কমিশনে সুপারিশ করা হয়েছে যে তারা এই বিষয়গুলো পুনস্থাপন করতে চেয়েছে। যেমনএকটা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাদি বিলুপ্ত করা হোক। আমরা সেখানে বলেছি, এটাতে (ধর্মনিরপেক্ষতা) একমত নই।

কিন্তু কী কী চাই সেটাও আমরা বলেছি।

এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন,  আমরা চেয়েছি, পঞ্চম সংশোধনীতে যেটা গৃহীত হয়েছে, সেটা পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বাবস্থা, সেটা বহাল করা হোকআমরা চেয়েছি। কিন্তু সবাই মনে করেছে, ধর্মনিরপেক্ষতা বাতিলের কথা বলেছি। বিষয়টা তা নয়।

আমরা পরিষ্কার করার জন্য বলেছি, আপনাদের (সংস্কার কমিশনের) প্রতিস্থাপন বহুত্ববাদসহ অন্যান্য বিষয় এক সঙ্গে আসতে হবে। অর্থাৎ রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে মহান আল্লাহর ওপর আস্থা-বিশ্বাস, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র অর্থাৎ সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার’—এ বিষয়গুলো রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গণ্য হবে। যেটা গৃহীত হয়েছিল বাকশাল বিলুপ্তির পরে। আশা করি এ নিয়ে আর কোনো বিভ্রান্তি থাকবে না।

রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সংবিধানের মূলনীতি, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বিষয়ে কথা বলছি।

আমরা উপরাষ্ট্রপতি, উপপ্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব করেছি, দুই কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রস্তাব করেছি, উভয় কক্ষে ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দল থেকে নিয়ে আসার প্রস্তাব করেছি। আমরা রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনার প্রস্তাব করেছি, নতুন করে কিছু ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে দেওয়ার প্রস্তাব করেছি, সংসদে সংরক্ষিত ৫০ মহিলা আসন থেকে ১০০-তে উন্নীত করার প্রস্তাব করেছিএ ধরনের অনেক প্রস্তাব করেছি।

 

মন্তব্য

দুদকে ‘অতিগোপনীয়’ অভিযোগ নিয়ে হাসনাত-সারজিস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দুদকে ‘অতিগোপনীয়’ অভিযোগ নিয়ে হাসনাত-সারজিস

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। সেখানে তাঁরা লিখিতভাবে কিছু অভিযোগ জানিয়েছেন।

গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে এই দুই নেতা সাক্ষাৎ করেন। সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা।

সাংবাদিকদের হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা কিছু অভিযোগ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে এসেছি। অভিযোগগুলো আমরা লিখিতভাবে জানিয়েছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভেরি কনফিডেনশিয়াল (অতিগোপনীয়)। কাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে হাসনাত বলেন, কনফিডেনশিয়াল বিষয় বলে দিলে তো আর কনফিডেনশিয়াল থাকল না।

এ ছাড়া অপরাধীরা এতে সতর্ক হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে সারজিস আলম সাংবাদিকদের বলেন, অতীতে দুদককে ব্যবহার করে অনেকে সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। অনেক সাধারণ মানুষকে আবার বিনা অপরাধে হয়রানি করা হয়েছে। এ সময়ে এসেও এখন আমরা সেটি প্রত্যাশা করি না।

আমাদের কিছু অভিযোগ ছিল, সেটি জানাতেই এখানে এসেছি। এর বেশি কিছু বলছি না এখন।

 

 

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ