কিংকর্তব্যবিমূঢ় ও এই শহরে
শাফায়াত মনসুর রানা নির্মাতা
প্রথমটা ইফতেখার আহমেদ ফাহমির ‘কিংকর্তব্যবিমূঢ়’। সামাজিক প্রেক্ষাপটেরই গল্প। তবে উপস্থাপনে ভিন্নতা আছে, আছে চমক। কয়েকটা লেয়ার আছে গল্পে, দর্শককে এসব ভাবাবেই।
কিংকর্তব্যবিমূঢ় ও এই শহরে
শাফায়াত মনসুর রানা নির্মাতা
প্রথমটা ইফতেখার আহমেদ ফাহমির ‘কিংকর্তব্যবিমূঢ়’। সামাজিক প্রেক্ষাপটেরই গল্প। তবে উপস্থাপনে ভিন্নতা আছে, আছে চমক। কয়েকটা লেয়ার আছে গল্পে, দর্শককে এসব ভাবাবেই।
আশফাক নিপুণের ‘এই শহরে’ও ভালো লেগেছে। বেশি ভালো লেগেছে আফরান নিশোর অভিনয়। নিশোর অনেক নাটক চোখে পড়ে। অন্য সব নাটকে তাঁকে কেমন লাগে আর নিপুণের নাটকে কেমন লাগে, আশা করি নিশো নিজেও তা জানেন।
আমাদের সমাজ বিজ্ঞান ও লিডার
নাজিয়া হক অর্ষা অভিনয়শিল্পী
শাফায়াত মনসুর রানার ‘আমাদের সমাজ বিজ্ঞান’-এর কথাই বলব আগে। খুবই ভালো লেগেছে আমার। সমাজের এই সময়ের ক্রাইসিসগুলো একটা ইয়াং ছেলের মধ্য দিয়ে খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ‘আমাদের সমাজ বিজ্ঞান’-এ। নাটক দেখে মনে হবে চরিত্রটা আমি ও আমার মতো আরো যারা এই সমাজকে নিয়ে ভাবে। শাফায়াত মনসুর রানার গল্প বলার ঢংটা আমার খুব পছন্দ। বরাবরের মতোই উনার কাজে একটা আলাদা ব্যাপার থাকে। কম কাজ করেন বলেই মনে হয় কাজে প্রপার মনোযোগ দিতে পারেন উনি।
আরেকটা রাফসান আহসানের ‘লিডার’। একটু সিনেমাটিক অ্যাকশন বেইজড গল্প। টেলিভিশনে তো আসলে এ ধরনের কাজ কম হয়। দুঃখ, প্রেম, ভালোবাসা, অ্যাকশন সবই ছিল গল্পটায়। মনে হয়েছে ছোট পর্দায় সিনেমা দেখছিলাম। শতাব্দী ওয়াদুদ, অর্চিতা স্পর্শিয়া, অন্তুরা গল্পটা বেশ ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলেছে।
কেস ৩০৪০ ও আমাদের সমাজ বিজ্ঞান
আশফাক নিপুণ নির্মাতা
মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘কেস ৩০৪০’ ভালোলাগার প্রথম কারণ অপি করিম। অপি আপাকে নিয়ে আমি যে ধরনের কাজ করি, যেভাবে চিন্তা করি, এখানকার অপি পুরোপুরি তার বাইরের। ওনার যে বয়স, চাইলেই তো কলেজ স্টুডেন্ট হতে পারবেন না। এখানে তাঁর বয়সটাকে প্রপারলি ব্যবহার করা হয়েছে। এমনিতেই আমি অপি আপার ফ্যান। পুলিশ অফিসারের চরিত্রে দেখে আরো বেশি ভালো লেগেছে। ভারতে রানী মুখার্জি, শেফালী শাহদের এমন চরিত্র করতে দেখেছি। ভালোলাগার দ্বিতীয় কারণ, মিজানুর রহমান আরিয়ান। এই ঈদে সম্ভবত তার সবচেয়ে আলোচিত নাটক ‘লাইফ ইন্সুরেন্স’। অপূর্ব ও মিথিলাকে নিয়ে যে গল্পটা করেছে ‘লাইফ ইন্সুরেন্স’-এ, এটা আরিয়ান ভালোই পারে। চেনা ছক থেকে বের হয়ে ডিটেকটিভ থ্রিলার করেছে, এটাই আমার আগ্রহের মূল জায়গা। কিছু কিছু জায়গায় প্লট হোল আছে, তবু এটা একটা বড় প্রডাকশন। অভিনয় পছন্দ থেকে ক্যামেরার কাজ সব কিছুই প্রপার হয়েছে।
আরেকটা শাফায়াত মনসুর রানার ‘আমাদের সমাজ বিজ্ঞান’। রানার কাজ এমনিতেই আমার ভালো লাগে। ওকে আমরা প্রায় সময়ই দেখি জন কবির ও অপর্ণা ঘোষকে নিয়ে কাজ করতে। এখানে সে নিল ইয়াশ রোহানকে। ইয়াশের সঙ্গে আমি বেশ কিছু কাজ করেছি, এবার ঈদেও করেছি ‘আগন্তুক’। ‘আমাদের সমাজ বিজ্ঞান’-এ অনেক প্লট হোল আছে। যেমন—শেষে রানার ভয়েস দেওয়াটা আমার মনে হয়েছে দরকার ছিল না। সেটা রানাকে পার্সোনালি বলেছিও। নাটকটা ভালোলাগার কারণ, গল্পে কামিং অব এজ বলে একটা ব্যাপার আছে। ওভার ড্রামাটিক না। পুরোটাই এখনকার ছেলে-মেয়েদের মানসিকতার সঙ্গে মিলিয়ে করা। জিনিসটা এমনভাবেও তুলে ধরেনি যে নেগেটিভিটির চরমে নিয়ে গেছে। থার্ড অ্যাঙ্গেলের বিবেচনাবোধ থেকে ও চরিত্রটা দেখিয়েছে। ‘এই শহরে’-তে আমি নিশো-মেহজাবীনের চরিত্র ক্রিয়েট করেছি। রানা এখানে ইয়াশের চরিত্রটা ক্রিয়েট করেনি, মনে হয়েছে ইয়াশ ওর পাশের বাসায় ছিল। ও জাস্ট ক্যামেরা নিয়ে গিয়ে ওকে তুলে এনেছে। খুবই ক্যাজুয়াল স্টাইলে কাজটা করেছে। এই সময়ে দেশের নাগরিকরা কী ফিল করছে, সেটা ও খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে। সাউন্ড খুবই ভালো ছিল। দেখতে বসলে এখন ব্যাকগ্রাউন্ডটাও খুব বিবেচনায় রাখি। সে বিবেচনায়ও খুব ভালো কাজ। পুরো নাটক এক বসায় দেখেছি, বিরতির সময়ও উঠিনি।
সাবলেট ও বুকভরা ভালোবাসা ২
মৌসুমী হামিদ অভিনয়শিল্পী
মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘সাবলেট’ খুবই ভালো লেগেছে। বিশেষ করে অপূর্ব ভাইয়া আর পূর্ণিমা আপুর অভিনয়। কিছু কিছু নাটক আছে না যে দেখা শেষেও রেশ থেকে যায়, গল্পটা সে ধরনের। নাটকটি দেখতে বসে মনের মধ্যে বারবার মোচড় দিয়েছে, শূন্যতা তৈরি হয়েছে। পূর্ণিমা আপুর ছোট ছোট অভিব্যক্তিগুলো আমাকে ভীষণ স্পর্শ করেছে।
আরেকটা মুহম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ‘বুকভরা ভালোবাসা ২’। শবনম ফারিয়ার অভিনয় আমার এমনিতেই ভালো লাগে। ওর ‘বুকভরা ভালোবাসা’ দেখেছিলাম। এর সিক্যুয়েলটাও ভালো লেগেছে। ফারিয়া ও তৌসিফ খুবই ভালো অভিনয় করেছে। এ গল্পটাও আমার খুব আপন মনে হয়েছে। সহজ-সরল গল্প, সাধারণ দর্শক হিসেবে আমার ভালো লেগেছে। বাংলাদেশের পরিবারগুলো সুখী হোক, পরিবারের স্বামী-স্ত্রীর যে বোঝাপড়া সেটা খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
কীটনাশক ও রাজন দ্য কিং
মাবরুর রশীদ বান্নাহ নির্মাতা
ঈদে বেশির ভাগ সময়ই রোমান্টিক বা কমেডি নাটক হয়। অফট্র্যাকের গল্প কম হয়। এই জায়গা থেকে তৌহিদ আশরাফের ‘কীটনাশক’ আমার বেশ লেগেছে। নতুন পরিচালক কিন্তু তার গল্প বলার ধরন ও উদ্দেশ্যটা সৎ। মুশফিক ফারহানও বেশ ভালো অভিনয় করেছেন। একই সঙ্গে নাটকে তাঁর দুই রূপ দেখা গেছে। দুটিই ভালোভাবে করতে পেরেছেন।
মুরসালিন শুভর ‘রাজন দ্য কিং’ও ভালো লেগেছে। একজন খেটে খাওয়া মানুষ কিভাবে পরিস্থিতির শিকার হয়ে খারাপ হয়ে যায়, সেটা নিয়ে গল্প। অনেক সময় বাংলা ছবিতে আমরা এমন গল্প দেখেছি। কিন্তু এখানে খুব রিয়েলিস্টিক গল্পটা তুলে এনেছেন পরিচালক। এমন গল্প খুব কমই আমার চোখে পড়েছে। হাবাগোবা এক ছেলে, বস্তিতে বেড়ে ওঠা। সেই হাবাগোবা ছেলেটি হয়ে ওঠে অপরাধজগতের ডন। মূল চরিত্রে মোশাররফ করিম ভাই তো দুর্দান্ত অভিনয় করেছেনই, সঙ্গে শামিম হাসান সরকার, অর্ষাসহ অন্যরাও বেশ ভালো করেছেন।
সম্পর্কিত খবর
তুমুল জনপ্রিয় এক চলচ্চিত্র তারকার হত্যাকাণ্ড নিয়ে ওয়েব সিরিজ। ভক্ত অপূর্ব নামছেন হত্যা রহস্য উদঘাটনে। সেই তারকা যে প্রয়াত সালমান শাহ, সেটা অবশ্য কোথাও উল্লেখ নেই। তবু ভক্তরা দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে নিয়েছেন।
এ সপ্তাহে যাঁদের জন্মদিন
(২৬ জানুয়ারি—১ ফেব্রুয়ারি)
সারিকা সাবরিন, দেবাশীষ বিশ্বাস, সাবিনা বারী লাকী (২৭ জানুয়ারি)
কোনাল, কল্যাণ কোরাইয়া, নিঝুম রুবিনা, শাওন জামান (২৮ জানুয়ারি)
খন্দকার বাপ্পী (৩০ জানুয়ারি)
কৃষ্ণকলি ইসলাম, কামরুজ্জামান কামু
(৩১ জানুয়ারি)
অনন্ত হীরা, সায়রা রেজা (১ ফেব্রুয়ারি)
।৯ হাজার পর্দায় ‘পাঠান’
সারা দুনিয়ার ৯ হাজার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। এর মধ্যে ভারতে চলছে সাড়ে পাঁচ হাজার হলে। হিন্দি ভাষায় পাঁচ হাজার এবং তামিল ও তেলুগুতে চলছে ৪৫০ প্রেক্ষাগৃহে।
প্রথম সপ্তাহেই ৩০০ কোটি?
আজ ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস।
প্রতিক্রিয়া ও ফাঁস
ভারতের বিভিন্ন শহরে শাহরুখ ভক্তরা মিছিল নিয়ে রীতিমতো ভিড় করেছে প্রেক্ষাগৃহে। বাংলাদেশ থেকেও কয়েকজন ভক্ত কলকাতায় গিয়ে প্রথম দিনের প্রথম শো দেখেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই খবর ও ছবি শেয়ার করেছেন তাঁরা।
‘বয়কট’ তুলে নিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ
‘আমাদের আপত্তিতে সিনেমাটিতে যে যে পরিবর্তন করা হয়েছে, তা একদম সঠিক। যদি আবার কিছু সমস্যা পাই, তাহলে আপত্তি করব।’ এই মন্তব্য করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে তুলে নেওয়া হলো ‘বয়কট’।
আলিয়ার শুভেচ্ছা
কোনো ছবি নিয়ে নাকি এর আগে এত উত্তেজিত হননি আলিয়া ভাট, দাবি করেছেন খোদ ‘হাইওয়ে’ অভিনেত্রী। ‘পাঠান’-এর জন্য শুভেচ্ছাবার্তাও পাঠিয়েছেন অভিনেত্রী।
জাহান শান্ত স্বভাবের মেয়ে। স্বামী শিহাবকে নিয়ে তার সংসার। পোস্ট ট্রমাটিক ডিস-অর্ডারের কারণে প্রায়ই কল্পনা আর বাস্তব গুলিয়ে ফেলে। একদিন একটা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে জাহান।
গত বছর মার্চে আশফাক নিপুণের ওয়েব সিরিজ ‘সাবরিনা’র নাম ভূমিকায় মেহজাবীন ও অর্ষা বেশ আলোচিত হয়েছিলেন। মুক্তির পর হঠাৎ ডুব দিয়েছিলেন অর্ষা। ডুবেছিলেন আতিক জামানের ‘জাহান’-এ।
অর্ষা বলেন, ‘চরিত্রটার জন্য ওজন বাড়িয়েছি। যতগুলো সাইকোলজিক্যাল ডিস-অর্ডার আছে, এগুলোর অসুস্থতায় বিভিন্ন ধরনের লেয়ার থাকে। জাহান আসলে কোন জনরার পেশেন্ট।
তবে এই ‘চ্যালেঞ্জিং’ ছবিটি ঘিরে অর্ষার কোনো প্রত্যাশা নেই, আছে শুধু আবদার। অর্ষা যা বললেন, ‘কাজটি করতে আমার বেশ কষ্ট হয়েছে। জাহান চরিত্রটির ইনার সাইট ডার্ক, আবার কিছুটা ইনোসেন্ট। জাহান অনেক কিছু ইনোসেন্সের জায়গা থেকে করে বসে, তবে সচেতন অবস্থায় তা ব্যালান্স করতে পারে না। ছবিটি নিয়ে দর্শকের কাছে তেমন প্রত্যাশা নেই আমার, গল্প সহজে সবাই বুঝবে কি না সেটাও একটা ব্যাপার। যে ওয়েতে গল্পটা উপস্থাপন করা হয়েছে সেটা ডিফারেন্ট। আমি চাই সবাই যেন কনটেন্টটা দেখে তারপর প্রতিক্রিয়া জানায়।’
‘জাহান’-এ অর্ষার স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোস্তাফিজ নূর ইমরান। এর আগে ‘সাহস’ ছবিতেও স্বামী-স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন দুজন। এবার কাজ করে কেমন লাগল?
অর্ষা বলেন, ‘পেশাদারির জায়গায় সহকর্মীদের আমরা সব সময় কমফোর্ট জোনে রাখার চেষ্টা করি। চ্যালেঞ্জিং ক্যারেক্টার এলে সেটাকে কিভাবে পোট্রে করব সেটা নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করতে হয়। উনি সেই সময়টা দেওয়ার চেষ্টা করেন। উনি তো মেথড অ্যাক্টিংয়ের প্র্যাকটিস করেন। সব সময় চরিত্রের মধ্যে থাকার চেষ্টা করেন। আমিও চেষ্টা করি শুটিংয়ের সময় চরিত্রের মধ্যে থাকতে। এমন ভালো বন্ডিং আছে বলেই আমরা উত্তর মেরু, দক্ষিণ মেরু দুই ধরনের দুই কাজ করতে পারলাম।’
জাহান-এর শুটিংয়ের পর অভিনয় থেকে কিছুটা ‘বিরতি’ নিয়েছিলেন অর্ষা। কারণ বললেন, ‘আমার বিশ্রাম নিতে হয়েছে। শুটিং করার পর ভয়ংকর মানসিক প্রেসার তৈরি হয়েছিল। এত ডার্ক শেড চরিত্রটাতে, সেটার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত অবস্থাও কখনো ম্যাচ হয়, কখনো হয় না। বিরতি নিয়ে চরিত্রটা থেকে বের হতে হয়েছে আমাকে।’
‘জাহান’-এর পর করেছেন দুটি কাজ। একটি পঙ্কজ চৌধুরীর ‘বনফুল’। আগামীকাল মাছরাঙা টেলিভিশনে প্রচারিত হবে নাটকটি। এখন অর্ষা ব্যস্ত রয়েছেন আবু হায়াত মাহমুদের পরিচালনায় ওটিটি প্ল্যাটফরম দীপ্ত প্লের সিরিজ ‘হৃদমাঝারে’ নিয়ে।