<p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মূলত যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি-পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশের আনুক্রমিক সরকারগুলো অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন করেছে, তার নাম </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইনভারটেড ইউ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বা </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কুজনেটস হাইপোথেসিস</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। নোবেলজয়ী সাইমন কুজনেটের তত্ত্ব অনুযায়ী, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল প্রথম দিকে বৈষম্য সৃষ্টি করে; কারণ যারা পুঁজিপ্রবাহ ঘটায় তারা অধিকতর লাভবান হয়। কিন্তু ত্বরান্বিত প্রবৃদ্ধির প্রভাব একসময় দরিদ্রের ডেরায় চুইয়ে পড়ার ফলে বৈষম্য কমতে থাকে। সুতরাং প্রথমে প্রবৃদ্ধি, তারপর বিতরণের বিতর্ক। সন্দেহ নেই যে এই বটিকা সেবনে বাংলাদেশে বিশেষত গেল দেড় দশকে যেমন </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঈর্ষণীয়</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> প্রবৃদ্ধি ঘটেছে, তেমনি বেড়েছে নিন্দনীয় আয়বৈষম্য। বর্তমান বাংলাদেশে আয়বৈষম্য মাপার মাধ্যম গিনি সহগ প্রায় ৫-এ পৌঁছে বিপত্সীমার কাছাকাছি বলা চলে। অন্যদিকে সময়ের আবর্তনে সম্পদের অকল্পনীয় বৈষম্যের পিঠে সওয়ার বাংলাদেশ। সুতরাং সন্দেহাতীতভাবে ধরে নেওয়া যায় যে কুজনেটস সাহেবের উপচে পড়া প্রভাব নিয়ে তত্ত্বটি (ট্রিকল ডাউন এফেক্ট) অন্তত বাংলাদেশে অসার প্রমাণিত হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="আব্দুল বায়েস" height="392" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/1.january/11-01-2025/mk/kk-NEW-M-11-07a.jpg" style="float:left" width="350" />দুই.</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তবে এমন পরিস্থিতি এড়ানো যেত বলে ধারণা বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানীদের। তাঁরা বলছেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হওয়ার কালে বৈষম্য হজম করতেই হবে, এর পক্ষে সাক্ষী-সাবুদ খুব কম।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সমতা নিশ্চিতকরণ ছিল, বাংলাদেশে এর ঠিক উল্টোটা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অবিচার, অন্যায়, অসমতার উল্লম্ফন লক্ষণীয়। ঢাকা শহরে ধনকুবের গুলশানের পাশেই দরিদ্রের কুড়িল বস্তি দাঁড়িয়ে থেকে যেন উন্নয়নকে উপহাস করে। ভুলে গেলে বোধ হয় ঠিক হবে না যে বাংলাদেশে পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়কালের উন্নয়ন কৌশলের প্রায় পুরোটাই কুজনেটস প্রতিপাদ্যের প্রতিফলন দেখেছে। তবে স্বীকার করতেই হয়, গেল ১৫ বছর সমাজে বিরাজিত </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অতি মাত্রায়</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> দুর্নীতি, রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন বৈষম্যকে তির্যক করে তুলে আর্থিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা উসকে দিয়েছে। এমন না হলে বোধ হয় ৫ আগস্টের জন্ম হতো না।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিন.</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কথায় বলে, ব্রিটিশরা অন্য দেশ থেকে লুট করা অর্থ নিজ দেশে পাচার করে ব্রিটেনে উন্নয়ন ঘটিয়েছে। আর বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে বাংলাদেশের উন্নয়ন ব্যাহত করেছে। অনেকে মনে করেন, পাচার করা প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশে বিনিয়োগ থাকলে দেশের অবস্থা অনেক ভালো থাকত। এক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে : </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের ১৭টি শাখা থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। শুধু টাকাই নেয়নি, আন্তর্জাতিক ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকের যে সম্পর্ক ছিল, সেটাও ধ্বংস করে দিয়েছে...গত দেড় দশকে দেশের ব্যাংক খাতে নজিরবিহীন অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও লুণ্ঠন হয়েছে। সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট ব্যবসায়ী তথা অলিগার্করাও ব্যাংক থেকে বাছবিচার ছাড়াই ঋণের নামে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে লুটেরাদের সহযোগীর ভূমিকায় ছিল আওয়ামী লীগ সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> কিছুদিন আগে এফটিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর অভিযোগ করেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো থেকে অন্তত এক লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা (১০ বিলিয়ন ডলার) পাচার করেছে সাইফুল আলম ও তাঁর সহযোগীরা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (অর্থসূচক, ২০ নভেম্বর ২০২৪)।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একটি সূত্র বলছে, এবং জাতিসংঘও এতে একমত যে বাংলাদেশ থেকে বছরে প্রায় ৭০০ কোটি ডলার পাচার হয়। তার মানে সাত বিলিয়ন ডলার বা মোট প্রায় চার মাসের রেমিট্যান্স আয়ের সমান। গত দুই বছরে (২০২২-২৩) লোমহর্ষক কয়েকটি মানি লন্ডারিংয়ের ঘটনা খবরের কাগজে এলেও সরকারি মহলে তেমন নড়াচড়া কিংবা উদ্বেগের উচ্ছিষ্ট ছিল বলে মনে হয় না এবং বেগমপাড়া, সেকেন্ড হোম ইত্যাকার বিষয়ে দুর্বলকণ্ঠ বক্তৃতা-বিবৃতির বদলে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো রকম উদ্যোগ দৃশ্যমান ছিল না। একজন সাবেক মন্ত্রীর বিদেশে ২৫০টি বাড়ির মালিকানা এবং ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড স্টার্লিং (রিজার্ভের ১ শতাংশ) দেশান্তরিত হওয়ার যে খবর ব্লুমবার্গ দিয়েছে তার সঙ্গে অন্যান্য মুদ্রাপাচার, করমুক্ত দ্বীপরাষ্ট্রে সম্পদের নোঙর করা বৈদেশিক মুদ্রা ফিরিয়ে আনতে পারলে রিজার্ভ শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা ছিল (এবং এখনো আছে বৈকি)।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="আব্দুল বায়েস" height="506" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/1.january/11-01-2025/mk/kk-NEW-M-11-07b.jpg" style="float:right" width="350" />চার.</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুর্ভাগ্যবশত দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশের ব্যবসা পরিবেশের ক্রমাবনতি ঘটে চলছে। নির্ভরযোগ্য এক সমীক্ষা জানায়, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চলতি বছরের মে মাসে ব্যবসা পরিবেশ সূচক (বিবিএক্স) ২০২৩-২৪ জরিপে উল্লেখ করা হয়, সার্বিকভাবে ২০২৩ সালে দেশের ব্যবসা পরিবেশের সূচকে ১০০ স্কোরের মধ্যে অর্জন ৫৮.৭৫, যা ২০২২ সালে ছিল ৬১.৯৫। ব্যবসার পরিবেশ নিশ্চিতেও দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান সবচেয়ে পিছিয়ে। চলতি বছরও এর খুব একটা উন্নতি হয়নি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> তবে দেশের ১৭ শতাংশ ব্যবসায়ী মনে করে, এ বছর ব্যবসা পরিবেশের এমন করুণ দশার জন্য প্রধানতম দায়ী দুর্নীতি। সম্প্রতি বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক জরিপে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, দুর্নীতির পাশাপাশি আমলাতন্ত্রের অদক্ষতা, মূল্যস্ফীতি, অর্থায়নের সীমাবদ্ধতা, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো প্রভৃতিও ব্যবসার প্রধান অন্তরায় ছিল। সুতরাং দেশে ব্যবসার প্রসার করতে হলে দুর্নীতি রোধ করা আবশ্যক হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি ব্যবসার সার্বিক পরিবেশ সুষ্ঠু করতে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধানের দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তেমনি গত দেড় দশকে রাজনৈতিক মদদে কিছু অলিগার্ক ব্যবসায়ী শ্রেণি তৈরি হয়েছে, যাদের রয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ। এসব ব্যবসায়ী দেশের ব্যাংক খাতকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়েছে। একই সঙ্গে বিপুল পরিমাণ অর্থও পাচার করেছে। আবার ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণেও অনেক ব্যবসায়ীকে অযথা হয়রানির শিকার হতে হয়েছে, যা ব্যবসার প্রসারে বিঘ্ন ঘটিয়েছে। উপরন্তু গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর শিল্পাঞ্চলে অসন্তোষ ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের মতো ঘটনাও ঘটেছে, যা ব্যবসা-বিনিয়োগের জন্য মোটেও উপযুক্ত নয়। এমন আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় মানুষের মধ্যে আস্থার সংকট তীব্র হয়েছে। এ অবস্থায় দুর্নীতি রোধ করে মানুষের আস্থা ফেরাতে হবে, যাতে ব্যবসা-বিনিয়োগের প্রসার ঘটে। একই সঙ্গে আমলাতান্ত্রিক জটিলতাসহ অন্য সমস্যাগুলোও সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করায় মনোযোগ দিতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের মধ্যে দুর্নীতির পক্ষে এবং সংস্কারের বিপক্ষে অদ্ভুত এক ধরনের কোয়ালিশন হয়েছে। সেই কোয়ালিশনে রাজনীতিবিদ, আমলা ও ব্যবসায়ীরা আছে। এদের সমন্বিতভাবে অলিগার্ক তৈরি হয়েছিল। অর্থনীতির প্রধান দুটি খাত</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ব্যাংকিং খাতে ও এনার্জি খাতে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। এই দুটি খাত পুরো খেয়ে ফেলেছে অলিগার্করা। অলিগার্করা মাসোহারা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রতিনিধি রেখেছে। ব্যাংক খাতের করপোরেট গভর্ন্যান্স পুরো ভেঙে ফেলা হয়েছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় অলিগার্কদের সুবিধার্থে ব্যাংকে পরিচালক নিয়োগ করা হয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পাঁচ.</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশে ব্যবসার ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ নিম্নমুখী, বিশেষ করে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)। এফডিআই নিম্নমুখী হওয়ার অন্যতম কারণ ব্যবসা পরিবেশের সূচকে অবনতি। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহ হয়েছেন নতুন বিনিয়োগে। উপরন্তু রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে নতুনভাবে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়া বিনিয়োগ পরিবেশকে আরো অস্থিরতার দিকে নিয়েছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না ফিরলে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা আরো কঠিন হয়ে উঠবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশিষ্টজনের অভিমত এই যে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করায় আরেকটি গুরুতর সমস্যা হলো পর্যাপ্ত জ্বালানির অভাব, যার সমাধানও তাই অধিক গুরুত্বপূর্ণ। জ্বালানি নিরাপত্তা ছাড়া নিরবচ্ছিন্ন শিল্পোৎপাদন সম্ভব নয়। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও এটি গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য নতুন গ্যাসকূপ অনুসন্ধানে গতি বাড়াতে হবে। অফশোর ও অনশোরে গ্যাস অনুসন্ধানে জোর দিতে হবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতাগুলোও দূর করতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছয়.</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মূলত রাজনীতি হচ্ছে অর্থনীতির প্রধান চালক। রাজনীতি মানে হচ্ছে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে দেশের উন্নয়নকল্পে নীতিমালা প্রণয়ন; এবং রাজনীতি ভালো থাকলে অর্থনীতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। বাংলাদেশের রাজনীতি নির্বাচননির্ভর, অথচ গেল তিন-তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণ তাদের সুচিন্তিত রায় দিতে পারেনি। এর ফলে আবির্ভাব ঘটে কর্তৃত্ববাদী শাসনের, জবাবদিহির জায়গা থাকে শূন্য। দেশ পরিচালিত হয় আমলা, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা ও ব্যবসায়ী অলিগার্ক দ্বারা। বলাবাহুল্য, বাংলাদেশের অর্থনীতির ও রাজনীতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসা এই দুষ্টচক্রের অবসান ঘটাতে একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। তবে তার আগে চাই নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত সংস্কার। আপাতত এই তিনটি সংস্কার শেষে জনপ্রতিনিধিদের সরকার ক্ষমতায় এসে জবাবদিহিমূলক প্রশাসন চালালে দেশের অর্থনীতির মানবসৃষ্ট দৈন্যদশা দূর হবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস।</span></span></span></span></span></p>