দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ায় বসুন্ধরা গ্রুপ

  • অধ্যক্ষ মো. কামরুল হাসান মিলন, নায়েবে আমির, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ময়মনসিংহ জেলা শাখা
শেয়ার
দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ায় বসুন্ধরা গ্রুপ

আমার এলাকা ফুলবাড়িয়ার প্রান্তিক নারীসমাজের জন্য সেলাই মেশিন বিতরণের জন্য বসুন্ধরা শুভসংঘকে ধন্যবাদ। যেকোনো বিভাজনই সমাজকে পিছিয়ে দেয়। অগ্রসর সমাজ হতে হবে বিভাজনমুক্ত। অনেকভাবেই সমাজে বিভক্তি দেখা দেয়।

এর মধ্যে দরিদ্রতা অন্যতম। রাষ্ট্রের পাশাপাশি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কল্যাণে সমাজের বিত্তবান শ্রেণিকে এগিয়ে আসতে হবে। সেই দায়বদ্ধতা থেকে বসুন্ধরা শুভসংঘ যে ভূমিকা পালন করছে, তা অনুকরণীয়। জনসংখ্যা একটি দেশের জন্য বিপদ নয়, বরং তা সম্পদে পরিণত হবে যদি আমরা তাদের হাতে কাজ তুলে দিতে পারি।
ইদানীং প্রায় প্রতিটি বড় কম্পানি করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটির আওতায় অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে থাকে। বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের মধ্যে অন্যতম। সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে বসুন্ধরা শুভসংঘের মাধ্যমে নানা কাজ করছে বসুন্ধরা গ্রুপ। গ্রামীণ নারীদের উপহার হিসেবে সেলাই মেশিন দেওয়া মানেই সংসার সামলিয়ে অতিরিক্ত সময়ে কিছু রোজগারের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া।
এই মেশিনের মাধ্যমে আয় করে তারা এখন স্বাবলম্বী হতে পারবে। বাড়তি রোজগারের ফলে তারা স্বচ্ছন্দে চলাসহ ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করে দেশের সম্পদে পরিণত করতে পারে। শুধু সেলাই মেশিন দেওয়া হলে হয়তো তারা কাজ করতে পারবে কি না সন্দেহ থাকত। সেলাই মেশিন দেওয়ার আগে প্রতিটি নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলা হয়।

বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতি আমার প্রত্যাশা থাকবে, ভবিষ্যতে তারা আরো বেশি জনসেবামূলক কর্মসূচি হাতে নিয়ে এগিয়ে যাবে।

দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এই প্রতিষ্ঠানটি হয়ে উঠবে সবার আস্থাভাজন। আমরা বসুন্ধরা গ্রুপের মতো সমাজের বিত্তবান শ্রেণিকে দারিদ্র্য বিমোচনে আরো এগিয়ে আসার আহবান জানাই।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় মেডিক্যালে পড়ছেন তাঁরা

    দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে আছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। দারিদ্র্য যখন কোনো শিক্ষার্থীর চলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তখনই সেই বাধা দূর করতে এগিয়ে যায় বসুন্ধরা শুভসংঘ। দেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় তাঁদের পাশে দাঁড়ায় বসুন্ধরা শুভসংঘ। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া দুই হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীকে প্রতি মাসে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে ২১ জন মেডিক্যাল শিক্ষার্থী। বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে বৃত্তি পাওয়া সেই ২১ জন মেডিক্যাল শিক্ষার্থীর মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের অনুভূতি তুলে ধরেছেন জাকারিয়া জামান
শেয়ার
বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় মেডিক্যালে পড়ছেন তাঁরা
রাতুল হাসান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ

আমি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস অধ্যয়নরত। ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করার স্বপ্ন নিয়েই মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনা। সে লক্ষ্যেই ধাপে ধাপে এগিয়ে চলা। তবে চলার পথ সব সময় সহজ হয় না।

আসে অনেক রকম বাধা-বিপত্তি। সব বাধা অতিক্রমে সাহায্যকারী মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। এ ছাড়া আমি বসুন্ধরা গ্রুপের কথা বিশেষভাবে স্মরণ করছি এবং বসুন্ধরা শুভসংঘ পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমার মনে পড়ে, যেদিন এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট দেওয়া হয়, সেদিন আমার এক ভাই আমাদের বাড়িতে ফুল ও মিষ্টি নিয়ে আসেন।
ভাই ও আমার হাই স্কুল একই ছিল এবং ভাই বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্য। আমাদের বাড়ির কাছেই অনেকটা। আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা এবং বাবার অসুস্থতার কথা তাঁর জানা ছিল। তিনি বসুন্ধরা শুভসংঘের মাধ্যমে আমাকে বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে মাসিক বৃত্তির ব্যবস্থা করে দিলেন।
দেখতে দেখতে দুই বছর পার হয়ে গেল। আব্বু চাষাবাদ করে কোনো রকম সংসার চালাতেন। আমার ও আমার ভাইয়ের পড়ার খরচের চিন্তায় আব্বু-আম্মু দিন কাটাতেন। বসুন্ধরা গ্রুপ আমার পাশে দাঁড়ানোর পর থেকে এখন আমার আব্বু-আম্মুকে আর চিন্তা করতে হয় না। আমিও নির্বিঘ্নে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারছি এবং স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে চলছি।
বসুন্ধরা গ্রুপ আমার এই স্বপ্নপূরণে সহায়ক হয়েছে। তাদের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞতা।

 

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/03.March/15-03-2025/kalerkantho-ss-2a.jpgমেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষায় ভালো ফল করে যখন ভর্তির সুযোগ এলো, তখন আশপাশের মানুষ খুব খুশি হলো। আমি ও আমার পরিবারও অনেক খুশি ছিলাম। কিন্তু একটি দুশ্চিন্তা আমাদের গ্রাস করে বসল, পড়তে পারব তো! এত টাকা কোথায় পাব? অনেকের সহযোগিতা নিয়ে ভর্তি হলাম। প্রতি মাসের খরচ কোথায় পাবএই চিন্তায় আমার মা ঘুমাতে পারছিলেন না। মায়ের একার আয়ে আমাদের দুই ভাই-বোনের পড়ার খরচ চলে। বাবা কোনো কাজ করতে পারেন না। গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে দুধ কিনে নিয়ে বাজারে বিক্রি করেন মা। সেই আয়ে আমাদের খাওয়াদাওয়া আর পড়াশোনা চলে। বড় ভাই সরকারি একটি কলেজে ম্যাথমেটিকসে অনার্স শেষ করেছেন। তিনি টিউশনি করে নিজের পড়ার খরচ চালানোর চেষ্টা করছেন। আমার মেডিক্যালে ভর্তির পর থেকে মায়ের টেনশন বেড়েই চলছিল। কিভাবে ম্যানেজড হবে এত টাকা। মা আর ভাই মিলে নিজেদের যে সামান্য জমি আছে, তা বিক্রি করে দিতে চাইছিলেন। সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় তা করতে হয়নি। আমার পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে তারা আমার মেডিক্যালে পড়ার খরচ বহন করছে। প্রতি মাসে আমার অ্যাকাউন্টে টাকা চলে আসে। সেই টাকায় আমার পড়াশোনা চলছে। জমি আর বিক্রি করতে হয়নি। আমার মায়ের দুশ্চিন্তা কমে গেছে। আমার ও আমার পরিবারের সবার ইচ্ছা পূরণে বসুন্ধরা গ্রুপ এগিয়ে না এলে স্বপ্নটি অধরাই থেকে যেত। অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই বসুন্ধরা গ্রুপকে।

 

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/03.March/15-03-2025/kalerkantho-ss-2a.jpgআমি কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত আছি। প্রথমেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই বসুন্ধরা গ্রুপ ও বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতি। তাদের উদার সহায়তার জন্য আমি চিরকাল কৃতজ্ঞ, যা আমার শিক্ষাজীবনের জন্য অমূল্য। আমার শিক্ষাজীবনের আর্থিক চাপকে অনেকাংশে কমিয়ে দিয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ থেকে দেওয়া প্রতি মাসের বৃত্তি। আমি একটি ছোট্ট পরিবার থেকে এসেছি, যেখানে আমার বাবা মুদি দোকানদার হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তিনি অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রমী এবং তাঁর অদম্য ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে আমাদের চারজনের সংসারের সব দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর এই পরিশ্রমের পরও অনেক সময় আর্থিক চাপে পড়তে হয়েছে আমাদের। বসুন্ধরা গ্রুপের দেওয়া এই স্কলারশিপ আমার জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। এই সহায়তার মাধ্যমে আমার পড়াশোনার যে আর্থিক চাপ ছিল, তা অনেকটা কমে গেছে। এই বৃত্তি পেয়ে মেডিক্যালে পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় বইগুলো কিনতে সক্ষম হয়েছি। এই সহায়তা ছাড়া হয়তো আমার এই বইগুলো কেনা সম্ভব হতো না। আমার জীবনের মূল লক্ষ্য একজন দক্ষ চিকিৎসক হয়ে গরিব মানুষের সেবা করা। আমি এখন আরো আত্মবিশ্বাসী। কারণ বসুন্ধরা শুভসংঘের স্কলারশিপ আমাকে উদ্দেশ্য পূরণের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বসুন্ধরা গ্রুপ ও বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতি আমি চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব। এই স্কলারশিপ ছাড়া আমার চলার পথ অনেক কঠিন হতো।

 

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/03.March/15-03-2025/kalerkantho-ss-2a.jpgআমি ঢাকা কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। প্রতি মাসে বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে আমাকে বৃত্তি প্রদানের জন্য মনোনীত করার জন্য শুরুতেই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতি। বসুন্ধরা গ্রুপের দেওয়া এই বৃত্তি আমার অনেক উপকার করেছে। বসুন্ধরা শুভসংঘের মাধ্যমে বসুন্ধরা গ্রুপ শিক্ষার্থীদের দুঃসময়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রতিকূলতা যেন মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিকশিত হওয়ার পথে বাধা হতে না পারে তা নিশ্চিতে বৃত্তি প্রদান করছে এবং আমাদের মতো দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গঠনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে। বসুন্ধরা শুভসংঘের সার্বিক সহোযোগিতা ছাড়া হয়তো অনেকের পড়াশোনা ব্যাহত হতো বা অনেকের আর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভবই হতো না। তারা এখন বৃত্তির সহায়তায় খুব সুন্দরভাবে পড়াশোনা করার সুযোগ পাচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থীর পড়াশোনার সুযোগ নিশ্চিত হচ্ছে। এ ছাড়া বসুন্ধরা শুভসংঘ বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক, সচেতনতামূলক ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। দেশের বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে তারা। দিন দিন দেশব্যাপী বসুন্ধরা শুভসংঘের কার্যক্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমাজসেবা ও সমাজ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যকার মেধাবী শিক্ষার্থী নির্বাচন করে তাদের পড়াশোনাসহ সার্বিক বিষয়ে বসুন্ধরা শুভসংঘ সহযোগিতা করে আসছে।

 

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/03.March/15-03-2025/kalerkantho-ss-2a.jpgআমি মো. আব্দুর রহমান, পড়াশোনা করছি এমবিবিএস তৃতীয় বর্ষ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলায় বাড়ি হলেও একেবারেই ছোটবেলা থেকে আমি বড় হয়েছি মামার বাড়িতে। আমি নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। আমার আরো একটি ছোট বোন রয়েছে। সে এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখেছি বড় হয়ে ডাক্তার হব। এর পেছনে অবশ্য একটি কারণও রয়েছে। একমাত্র আমি ছাড়া আমার পরিবারের সবাই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তো সে কারণেই ছোটবেলা থেকে একটি ইচ্ছা ছিল। ২০২১-২২ সেশনে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধায় ১৮৩তম স্থান অর্জন  করি। ঢাকায় এর আগে আমার থাকা হয়নি। আর এখানকার ব্যয়ভার বহন করাও আমার পরিবারের জন্য কষ্টকর ছিল। ঠিক সেই সময় আমার পাশে পাই বসুন্ধরা শুভসংঘকে। অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি বসুন্ধরা গ্রুপ ও বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতি। কারণ আমার এই পথচলায় আমি তাদের পাশে পেয়েছি। বসুন্ধরা শুভসংঘ সব সময়ই আশ্বাস দেয়, তারা আমার পাশে আছে। সেই যে পথচলা শুরু, আজও বসুন্ধরা শুভসংঘ আমার সঙ্গে আছে। আশা করছি, পড়ালেখার শেষ সময় পর্যন্ত তাদের পাশে পাব। একজন ভালো ডাক্তার হয়ে আমিও বসুন্ধরা গ্রুপের মতো দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চাই।

মন্তব্য
বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে রমজান মাসব্যাপী নানা আয়োজন

মানবতার হাত বাড়িয়ে রোজাদারদের পাশে

শাহ্ মো. হাসিবুর রহমান হাসিব
শাহ্ মো. হাসিবুর রহমান হাসিব
শেয়ার
মানবতার হাত বাড়িয়ে রোজাদারদের পাশে
রাজধানীর মিরপুরে প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক মানুষকে ইফতার করায় বসুন্ধরা শুভসংঘ। ছবি : কালের কণ্ঠ

পবিত্র মাহে রমজান এলেই আমাদের চারপাশে অন্য রকম আবহ তৈরি হয়। প্রতিদিনই সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদ থেকে আজানের সুর ভেসে এলেও রমজানের আজানে এক আলাদা আনন্দ পরিলক্ষিত হয়। আজানের সুরের আহ্বানে রোজাদাররা মিলিত হন ইফতারির টেবিলে। খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেন অনেকে।

আবার কেউ বা কোনো রকমে ইফতার সারেন। ইফতারের সময় যখন কেউ কেউ বাড়ির খাবার টেবিলে বসেন, তখন কোনো রিকশাচালক হয়তো পথে ক্লান্ত শরীরে বিশ্রাম নিচ্ছেন, কোনো পথশিশু হয়তো অন্ধকার গলিতে শুকনা মুখে তাকিয়ে আছে অথবা কোনো শ্রমজীবী মানুষ হয়তো না খেয়ে পার করছে রোজার দীর্ঘ সময়।

এই বাস্তবতাকে বদলানোর স্বপ্ন নিয়েই বসুন্ধরা শুভসংঘ রাজধানীর মিরপুরের ইব্রাহিমপুরে আয়োজন করেছে এক অনন্য মানবিক কার্যক্রমরমজান মাসব্যাপী ইফতার মাহফিল। রাজধানীর মিরপুরের ইব্রাহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ প্রতিদিন বিকেল হলেই পরিণত হয় এক অনন্য মিলনমেলায়।

বসুন্ধরা শুভসংঘের স্বেচ্ছাসেবীরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন ইফতার প্রস্তুতির কাজে। কেউ খেজুর ও শরবত সাজাচ্ছেন আবার কেউ ব্যস্ত আছেন আগত রোজাদারদের বসার ব্যবস্থা করতে। ইফতারের সময়ের আগেই একে একে হাজির হয় সুবিধাবঞ্চিত মানুষ, রিকশাচালক, দিনমজুর, শ্রমিক, পথশিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা কিংবা অসহায় নারী-পুরুষ। সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ হয়ে ওঠে আরো আবেগময়।
কেউ শরবত এগিয়ে দিচ্ছেন, কেউ খাবারের থালা সারিবদ্ধভাবে সাজাচ্ছেন। সারা দিনের ক্লান্তি যেন হারিয়ে যায় পরস্পরের এই সহযোগিতার মাঝে। এখানে ধনী-গরিবের ভেদাভেদ নেই, নেই কোনো সামাজিক বৈষম্য। সবাই বসুন্ধরা শুভসংঘের উন্মুক্ত ইফতার বৈঠকে বসে একসঙ্গে দোয়া করে ইফতারি গ্রহণ করেন।

এর মধ্যেই একদিন উন্মুক্ত ইফতার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব মাসুদুর রহমান মান্না।

তিনি বলেন, সব ধরনের শুভ কাজের সঙ্গেই বসুন্ধরা শুভসংঘ কাজ করে যাচ্ছে। সারা দেশেই সংগঠনের কার্যপরিধি চলমান। আমরা চেষ্টা করছি সমাজের দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে। এরই মধ্যে বসুন্ধরা শুভসংঘ সেলাই মেশিন বিতরণ, বিভিন্ন চরাঞ্চালে স্কুল প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। এরই অংশ হিসেবে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য মাসব্যাপী ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

এক বৃদ্ধ রিকশাচালক বললেন, এই রকম ইফতারে বসার সুযোগ আমার জীবনে খুব কম এসেছে। এখানে সবাই আমাদের আপন করে নিয়েছে। মনে হচ্ছে, আমি কারো দয়া নয়, ভালোবাসার দাওয়াতে এসেছি। আয়োজকরা জানান, বসুন্ধরা শুভসংঘের এই আয়োজন কেবল ইফতারি দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি সমাজে এক নতুন বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে। বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগ যেন এক দীপশিখা, যা আলো ছড়িয়ে দিয়েছে বহু ক্ষুধার্ত মানুষের হৃদয়ে।

বসুন্ধরা শুভসংঘের মাসব্যাপী ইফতার কার্যক্রমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে কাজ করছে ইব্রাহিমপুরের স্বেচ্ছাসেবী গ্রুপ সৌল জাংশন। সৌল জাংশনের আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল মাহিনের নেতৃত্বে প্রায় প্রতিদিনই ইফতারে শামিল হচ্ছেন বসুন্ধরা শুভসংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রাফিউল আহমেদ বাপ্পি, তাহমিদ আরেফিন সাজিদ প্রমুখ।

আব্দুল্লাহ আল মাহিন বলেন, প্রতিবছরই আমরা এই আয়োজন করে থাকি। আমাদের নিজস্ব অর্থায়নের পাশাপাশি কিছু মহানুভব মানুষ আমাদের ইফতার আয়োজনে নিয়মিত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন। এবারই প্রথম পুরো আয়োজনের অর্থায়ন করছে দেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ। বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যরা আমাদের সঙ্গে মিলে প্রতিদিনের ইফতার আয়োজন সম্পন্ন করছেন। এভাবেই প্রতিবছর আমরা এই রোজাদারদের পাশে থাকতে চাই। রাফিউল আহমেদ বাপ্পি বলেন, বসুন্ধরা শুভসংঘ প্রতিনিয়তই ভালো কাজে অংশ নেয়। আমাদের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/03.March/15-03-2025/kalerkantho-ss-1a.jpg

 

মন্তব্য

বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগ অনেক অনুপ্রেরণাদায়ক

    আব্দুল্লাহ আল বাকীউল বারী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ
শেয়ার
বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগ অনেক অনুপ্রেরণাদায়ক

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/03.March/08-03-2025/kalerkantho-ss-4a.jpgবাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি যাদের সামর্থ্য আছে, তারা যদি এগিয়ে আসে, তাহলে অতিদরিদ্র আর অসহায়দের স্বাবলম্বী করা সহজতর হবে। অসহায় দুস্থদের জন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে সহায়তা করলে সামাজিকভাবে তাদের প্রতিষ্ঠিত হতে ব্যাপক সহায়ক হবে ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। ২০ জন দরিদ্র মহিলাকে বিনা মূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ ও মেশিন বিতরণ তাঁদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বসুন্ধরা গ্রুপের এই উদ্যোগ অনেক মহতী এবং অনুপ্রেরণাদায়ক।

তাদের এই সহযোগিতার ফলে ২০টি পরিবার নতুন করে ভালোভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন খুঁজে পেল। এই মেশিন চালিয়ে তারা স্বাবলম্বী হবে। মহিলারা নিজেদের সংসারে ভূমিকা রাখবেন। যাঁরা স্বাবলম্বী হবেন, তাঁরা দেশের অর্থনীতির উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবেন।
এতে আরো মানুষ অনুপ্রেরণা পাবে। সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে এ ধরনের উদ্যোগ যত বেশি গ্রহণ করা হবে, দেশ তত সমৃদ্ধ আর উন্নত হবে। এ ছাড়া আমরা জেনেছি, বসুন্ধরা গ্রুপ শিক্ষার্থীদের বৃত্তিসহ নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকে। এটি খুবই ভালো উদ্যোগ।
শুভ কাজে সবার পাশে’—এই স্লোগানে তারা কাজ করে থাকে। বিশেষ করে তাদের সঙ্গে সব সময় নতুন প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীরা জড়িত থাকে। এটি দুই দিক থেকে অনুপ্রেরণাদায়ক। একটি হচ্ছে, যারা বর্তমানে শিক্ষার্থী, তাদের মধ্যে একটি ভালো কাজের স্পিরিট তৈরি হচ্ছে। তারা যখন ভবিষ্যতে কর্মজীবনে যাবে, সব সময় সামাজিক কার্যক্রমের সঙ্গে থাকবে।
পাশাপাশি আজকে যারা দুস্থ গ্রামীণ জীবনে থাকে, যাদের বড় কোনো স্থানে গিয়ে প্রশিক্ষণ বা উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ নেই, তাদের প্রশিক্ষিত করে জীবনে স্বাবলম্বী হওয়ার একটি সুযোগ হাতে তুলে দিচ্ছে। যদি কেউ সেলাইয়ের কাজে ফুলটাইম ব্যয় করেন, তবে তিনি সংসারের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি দেশের জিডিপিতে একটি ভালো ভূমিকা রাখবেন। বসুন্ধরা শুভসংঘকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

মন্তব্য

মানবিক কাজে ইতিহাস গড়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ

    সারমিনা সাত্তার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ
শেয়ার
মানবিক কাজে ইতিহাস গড়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/03.March/08-03-2025/kalerkantho-ss-4a.jpgতিন মাস আগে নান্দাইলে যোগ দিয়েছি। আগের কর্মস্থল ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত থাকা অবস্থায়ই বসুন্ধরা শুভসংঘের অনেক কাজে জড়িত ছিলাম। সেখানকার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মা-বাবাকে ডেকে এনে সবার সামনে পা ধুয়ে সম্মান দেখানোর ঘটনাটি ছিল অনুকরণীয়। এটি নৈতিক ও পারিবারিক শিক্ষা প্রদানের উত্কৃষ্ট উদাহরণ ছিল।

নান্দাইলে এসে বসুন্ধরা শুভসংঘের একই কর্মতৎপরতা দেখতে পেয়ে খুবই খুশি হয়েছি। এখানে তাদের পাশে থাকতে পারব ভেবে আমি অভিভূত। যত দূর জেনেছি, দেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের সামাজিক সংগঠন বসুন্ধরা শুভসংঘ বিভিন্ন কার্যক্রম করে যাচ্ছে। এর মধ্যে অসহায়দের জন্য ঘর নির্মাণ, বিনা সুদে ঋণ, মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি, গুরুতর রোগীদের চিকিৎসা ব্যয়ের প্রয়োজনীয় টাকা ছাড়াও বন্যার্তদের সাহায্য, শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ লক্ষণীয়।
অতিদরিদ্র ও অসহায় জনগোষ্ঠী এবং নারীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে বসুন্ধরা গ্রুপের আর্থিক সহায়তায় নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। এর মধ্যে বিনা মূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ এবং প্রশিক্ষণ শেষে সেলাই মেশিন বিতরণ কার্যক্রম অন্যতম। ৯০ দিন হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ শেষে দেওয়া হয় সেলাই মেশিন। সরকারের সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বসুন্ধরা সব সময়ই জোরালো ভূমিকা রেখে চলছে।
তা ছাড়া মানবিক কাজে নিজেদের বিলীন করে দিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ, যা ইতিহাসের পাতায় আজীবন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। অসহায় অতিদরিদ্র মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে তারা। অজপাড়াগাঁয়েও তাদের মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বসুন্ধরা শুভসংঘের মাধ্যমে মানবিক কাজে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ।

শিক্ষা খাতে বসুন্ধরা গ্রুপ ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।

অর্থের অভাবে যেখানে লেখাপড়া প্রায় বন্ধের পথে বা বই-খাতাও দেখেনি, সেখানেই উপস্থিত হয়েছে তারা। নির্মাণ করেছে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল, যে স্কুলে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে লেখাপড়া করার সুযোগ পাচ্ছে অতিদরিদ্র পরিবারের শিশুরা। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদসহ দোয়া করি, যেন এভাবে সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ