অতিথিদের কথা

বসুন্ধরা শুভসংঘের কাজগুলো মহৎ

শেয়ার
বসুন্ধরা শুভসংঘের কাজগুলো মহৎ
মো. কামরুজ্জামান, উপজেলা নায়েবে আমির, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জলঢাকা, নীলফামারী

দেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ, যারা দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত। তাদেরই একটি সামাজিক সংগঠন বসুন্ধরা শুভসংঘ। নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায় অনেক বছর ধরে সংগঠনটি তাদের বিভিন্ন মানবিক ও মহৎ কাজগুলো অব্যাহত রেখেছে। যেমনঅসহায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান, করোনাকালে নিম্ন আয়ের দরিদ্র পরিবারগুলোর মাঝে খাবার বিতরণ, শীতবস্ত্র বিতরণ এবং অবহেলিত চর এলাকায় অনগ্রসর দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদান।

এ ছাড়া আজকের দিনটি স্মরণ রাখার মতো। চর এলাকার অসচ্ছল নারীদের উন্নয়ন ও স্বাবলম্বীর কথা আমাদের অনেকেরই ভাবনা থেকে বাদ পড়ে যায় আর বসুন্ধরা শুভসংঘ তাদের খুঁজে বের করে প্রশিক্ষণসহ আজ বিনামূল্যে সেলাই মেশিন বিতরণ করল। নিঃসন্দেহে তাদের কাজগুলো প্রশংসার দাবি রাখে। আমি মনে করি, আজকে যাদের সেলাই মেশিন দেওয়া হলো, তাদের ওই এলাকায় একটি স্থায়ী সেন্টার  স্থাপন করে দেওয়ার প্রয়োজন ছিল।
এ জন্য একটি টিনের ঘর কিংবা টিনের চালা তৈরি করে দিলে ভালো হতো। তারা নাম দিতে পারত বসুন্ধরা শুভসংঘ সেলাই সেন্টার। তাহলে দ্রুত সেলাই সেন্টারের পরিচিতি পাওয়াসহ তাদের গ্রাহকসংখ্যা বৃদ্ধি পেত। আমি জেনেছি, বসুন্ধরা গ্রুপ দরিদ্র পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করছে।
যাদের সেলাই মেশিন দেওয়া হয়েছে, সেই পরিবারগুলোর জন্য সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করলে তারা আরো দ্রুত এগিয়ে যেতে পারত। জলঢাকা উপজেলার দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি আন্তরিকভাবে বসুন্ধরা গ্রুপের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগ প্রশংসনীয়

শেয়ার
বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগ প্রশংসনীয়
মো. কামরুজ্জামান, সমাজসেবা কর্মকর্তা, জলঢাকা, নীলফামারী

নারীর ক্ষমতায়ন একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান শর্ত। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে নারী উদ্যোক্তা সহায়তা, প্রশিক্ষণ এবং ঋণ সুবিধা। তবে শুধু সরকারি উদ্যোগই যথেষ্ট নয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠনগুলোরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। দেশসেরা সামাজিক সংগঠন বসুন্ধরা শুভসংঘ এ ক্ষেত্রে এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

দেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় বসুন্ধরা শুভসংঘ দেশের অসহায়, দুস্থ এবং সুবিধাবঞ্চিত নারীদের স্বাবলম্বী করতে কাজ করছে। শিক্ষা বিস্তারে নানা ধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তাদের অন্যতম উদ্যোগ হলো গ্রামীণ দরিদ্র নারীদের জন্য বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ, বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল কার্যক্রম। এ ছাড়া বসুন্ধরা গ্রুপ গ্রামীণ নারীদের স্বাবলম্বী করতে সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করছে।
তাদের এই উদ্যোগের সুফল ভোগ করছে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থী ও গ্রামীণ দরিদ্র পরিবারের নারীরা। বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন তাদের আয়-রোজগারের পথ সুগম করে। এরই মধ্যে সারা দেশে অনেক নারী স্বাবলম্বী হয়েছেন। অনেক নারী শুধু অর্থের অভাবে উদ্যোগ নিতে পারেন না।
বসুন্ধরা গ্রুপ সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ প্রদান করে তাঁদের পাশে দাঁড়ায়। বসুন্ধরা শুভসংঘের মতো সংগঠনগুলোর ভূমিকা সরকারের পাশাপাশি নারীর উন্নয়নে বিশাল অবদান রাখছে। এ ধরনের উদ্যোগকে আরো প্রসারিত করা প্রয়োজন, যাতে প্রত্যেক নারী নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন এবং সম্মানের সঙ্গে জীবন যাপন করতে পারেন।

মন্তব্য

সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ

শেয়ার
সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ
কৃষ্ণা কাবেরী বিশ্বাস, সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জলঢাকা, নীলফামারী

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার আলোতে আলোকিত করতে দেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় জলঢাকা উপজেলায় বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। গোলমুন্ডা ইউনিয়নের চারআনী গ্রামের নদীবেষ্টিত একটি প্রত্যন্ত এলাকায় এই শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে তারা। বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের শিক্ষার্থীরা মূলত নিম্ন আয়ের বা দিনমজুর পরিবারের সন্তান, যারা সাধারণ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সরকারি বই সরবরাহের পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপ শিক্ষার্থীদের পোশাক, প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ ও শিক্ষকদের বেতন প্রদান করে। উপজেলার অন্যান্য বিদ্যালয়ের মতোই বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত উপস্থিত থাকে এবং আনন্দের সঙ্গে শিক্ষা গ্রহণ করে। শুধু শিক্ষা বিস্তারেই নয়, বসুন্ধরা শুভসংঘ চর এলাকার অসচ্ছল নারীদের স্বাবলম্বী করে তোলার উদ্যোগও নিয়েছে। তাদের জন্য বিনামূল্যে মানসম্মত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে তারা কারিগরি জ্ঞান অর্জন করতে পারে এবং দক্ষ হয়, যাতে তারা নিজেরা স্বনির্ভর হতে পারে এ জন্য বসুন্ধরা গ্রুপ প্রত্যেককে প্রশিক্ষণ শেষে একটি করে সেলাই মেশিন দিয়েছে।
এখন এই নারীরা অবশ্যই স্বাবলম্বী হতে পারবে। তারা প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান দিয়ে নিজেরা আয় করবে। সংসারে সচ্ছলতা আসবে। শিক্ষা ও জীবিকার এই জয়যাত্রায় বসুন্ধরা গ্রুপের ভূমিকা অনেক প্রশংসনীয়।
তাদের এমন সব উদ্যোগ সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষিত করে গড়ে তুলবে, নারীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করবে। একদিন এই শিক্ষার্থী ও আত্মনির্ভরশীল নারীরাই দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

মন্তব্য

এই মেশিনে জীবন বদলে যাবে নূপুরের

মো. নাঈম শাহ্
মো. নাঈম শাহ্
শেয়ার
এই মেশিনে জীবন বদলে যাবে নূপুরের

নীলফামারী সদর উপজেলার টেপুর ডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী নূপুর আক্তার। ছোট থেকেই দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বড় হয়েছে সে। বাবা অটোরিকশা চালান এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাঁর একার আয়ে সংসারের খরচ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছিল।

নূপুরের শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে যায়। তবে নূপুর কখনো হার মানেনি। সে চেয়েছিল নিজের পায়ে দাঁড়াতে; পরিবারের বোঝা নয়, বরং সহায় হয়ে উঠতে। কিন্তু কিভাবে? তার মতো গ্রামের এক দরিদ্র মেয়ের সামনে কোনো সুস্পষ্ট পথ খোলা ছিল না।
এই কঠিন সময়ে নূপুরের পাশে দাঁড়ায় বসুন্ধরা শুভসংঘ। নূপুরের স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে তারা বিনামূল্যে তিন মাসের সেলাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেয়। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নূপুর সেলাইয়ের কাজ শেখে, বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক তৈরি করার দক্ষতা অর্জন করে। প্রশিক্ষণ শেষে বসুন্ধরা শুভসংঘ বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে তাকে একটি নতুন সেলাই মেশিন উপহার দেয়।
এটি আসলে তার জীবন বদলে দেওয়ার মতো একটি উপহার। এখন নূপুর নিজের হাতে জামাকাপড় তৈরি করতে পারবে এবং সেলাইয়ের কাজ করে আয় করতে পারবে। এই আয় দিয়ে সে নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতে পারবে এবং পাশাপাশি পরিবারের জন্যও কিছু করতে পারবে। নূপুর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলে, এই সেলাই মেশিনটি আমার জীবনে নতুন আশার আলো এনে দিয়েছে। আমি এখন নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখতে পারছি।
বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ তারা আমার মতো অসহায় মেয়ের পাশে দাঁড়িয়েছে, আমার স্বপ্নপূরণে সাহায্য করেছে।

মন্তব্য

সেলাই মেশিনের চাকায় আগামীর স্বপ্ন ঘুরছে

আসাদুজ্জামান স্টালিন
আসাদুজ্জামান স্টালিন
শেয়ার
সেলাই মেশিনের চাকায় আগামীর স্বপ্ন ঘুরছে

বসুন্ধরা গ্রুপের উপহার পেয়ে আশায় বুক বেঁধেছেন চর এলাকার দরিদ্র পরিবারের সুবিধাবঞ্চিত নারীরা। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। এই নারীদের জীবন হরেক রকম দুঃখগাথা এক মহাকাব্য। আয়ের উৎস বলতে গেলে তাঁদের কায়িক শক্তি।

প্রত্যেকের স্বামী দিনমজুর। হাতে রোজগার করলে মুখে খাবার জোটে, নয়তো অনাহারে-উপবাসে দিন পার করেন। কয়েকজনের স্বামী আবার জটিল রোগে আক্রান্ত। তাঁদের মধ্যে মানসিক রোগী, রক্তশূন্যতা, কিডনি রোগসহ পারিবারিক নির্যাতনের শিকার নারীও আছেন।
সেলাই মেশিন দেওয়ার পর সরেজমিনে জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা চারআনী এলাকায় গেলে দেখা যায়, শাহিন মিয়া নামের একজনের উঠানে সবাই কাজে ব্যস্ত। কেউ কাপড় মাপছে, কেউ কাটছে, কেউ বা সেলাইয়ে ব্যস্ত।

জিয়ারা বেগম, মিষ্টি রানী ও নুরজাহান বলেন, আসন্ন ঈদে আমরা সাময়িকভাবে এক স্থানে সেলাইয়ের কাজগুলো করব। বেশি মেশিন দেখলে গ্রাহক বেশি পাওয়া যাবে।

পরিচিতি বাড়বে। পাশাপাশি মাপ ও কাটায় ভুলত্রুটিগুলো শুধরানোসহ দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। আমরা আশা করছি, এই গ্রামের নারী ও শিশুদের ঈদে কেনা কাপড়গুলো সেলাই করতে পারব। এ জন্য আমাদের মধ্য থেকে প্রচারণাও চলছে। নমিতা রানী বলেন, ১৮ বছর আগে পারিবারিক সিদ্ধান্তে আমার বিয়ে হয়।
তখন আমি দশম শ্রেণিতে পড়তাম। এখন আমার তিন সন্তান। দুই মেয়ে ও এক ছেলে। কয়েক বছর ধরে আমার স্বামী কিডনি রোগে ভুগছে। চরম অভাবের মধ্যে দিন কাটছে। অন্যের নিকট খুঁজে ধারদেনা করে মেয়েদের শিশুকালেই বিয়ে দিতে হয়েছে। তারাও স্বামীর বাড়িতে নানান রোগ নিয়ে সংসারের ঘানি টানছে। স্বামী-সন্তানের জন্য মানুষের ক্ষেতখামারে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে হয়। কখনো দলবদ্ধ, কখনো বা একাই কাজ করতে হয়। একদিন নিজ পায়ে দাঁড়াব, স্বাবলম্বী হবএমন স্বপ্ন থাকলেও কী আর করার? সাধ থাকলেও তো সাধ্য তো ছিল না। আমার একমাত্র ছেলেসন্তান সুরঞ্জন সবার ছোট। সে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিন শিক্ষক আপা সেলাই প্রশিক্ষণের কথা জানান। অসচ্ছল পরিবারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। আমার মতো অসচ্ছল ২০ নারীকে বিনামূল্যে কাপড় কাটা ও সেলাই প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত করা হয়। তিন মাস প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে গত সপ্তাহে আমাদের প্রত্যেককে পরিবহন খরচসহ একটি করে সেলাই মেশিন বিনামূল্যে দেওয়া হয়। টাকার অভাবে মেয়েদের পড়ালেখা শেখাতে পারিনি। অসময়ে তাদের বিয়ে দিতে হয়েছে। সেই দিনগুলোর কষ্ট মাড়িয়ে এখন বসুন্ধরার দেওয়া সেলাই মেশিন আমার আগামী দিনের স্বপ্নপূরণে সহায়ক হবে। স্বামী সিভেন্দ্র রায়ের চিকিৎসা ও সন্তান সুরঞ্জনের পড়ালেখাসহ পরিবারে যেন শান্তির বাতাস বয়, সেই আশায় সেলাই মেশিনের চাকায় আমার আগামীর স্বপ্ন ঘুরছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ