<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই বিশাল দিগন্তের কোনো প্রান্তেই অকারণে মেঘ জমে ওঠে না। এর পেছনেও অনেক কার্যকারণ নিহিত থাকে। প্রায় এক বছর পর ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি সম্প্রতি এক দিনের জন্য বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। এর আগে গত বছর নভেম্বরে দিল্লিতে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে একটি দ্বিপক্ষীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক সফরটি অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে আয়োজিত হয়েছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। ভারত সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী তাদের অত্যন্ত পরীক্ষিত ও নির্ভরযোগ্য বন্ধু বাংলাদেশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আকস্মিক পতনে তারা বিস্ময়াভিভূত।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভারতের বর্তমান পররাষ্ট্রসচিবের মতে, দুই দেশের দিগন্তে কিছু কালো মেঘ জমে উঠেছে। এর কারণ কী? এই কালো মেঘ কি হঠাৎ করেই জমে উঠল? এই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক সংবাদ বিশ্লেষকরা মোটেও কোনো ধন্দে পড়েননি। তাদের মতে, বাংলাদেশ ও ভারতের আকাশে একটি দুর্যোগের কালো মেঘ জমতে শুরু করেছিল প্রায় দেড় দশক আগে থেকে। ভারত সরকার যখন বাংলাদেশের জনগণের ওপর থেকে তাদের প্রতিবেশীসুলভ বন্ধুত্বের দৃষ্টি একমাত্র তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপরই নিবদ্ধ করেছিল, তখন থেকেই অন্তরীক্ষে, হয়তো বা অনেকের অজান্তে, একরাশ কালো মেঘের সৃষ্টি হতে শুরু করেছিল। বন্ধুত্ব জনগণের পর্যায়ে নয়, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বার্থ ছিল বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন কায়দায় ফায়দা আদায় করে তার হিন্দুত্ববাদী শাসনের ভিত মজবুত করা। আর শেখ হাসিনার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতায় তার অবস্থান দীর্ঘস্থায়ী কিংবা নিশ্চিত করা। ওয়াকিফহাল মহলের ধারণা, বাংলাদেশ কিংবা তার জনগণের স্বার্থ শেখ হাসিনার কাছে কোনো বিবেচ্য বিষয়ই ছিল না। নরেন্দ্র মোদির কাছে অন্যতম প্রধান বিবেচনার বিষয় ছিল শেখ হাসিনার শাসন। তিনি মনে করতেন, শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে একচ্ছত্র অধিপতি না থাকতে পারলে সে বাংলাদেশ বা জনগণ দিয়ে তার কী হবে? কারণ বাংলাদেশের সৃষ্টিটাই শেখ মুজিবুর রহমানের কারণে হয়েছে। এটি শেখ হাসিনার একটি বদ্ধমূল ধারণা ছিল বলে রাজনৈতিক ওয়াকিফহাল মহলের বিশ্বাস। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/12 December/15-12-2024/2/kalerkantho-ed-1a.jpg" height="309" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/12 December/15-12-2024/2/kalerkantho-ed-1a.jpg" style="float:left" width="350" />ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিবের সাম্প্রতিক সফরটি সংক্ষিপ্ত হলেও তাকে অনেক তাৎপর্যপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। কারণ তিনি বলেছেন, ভারত এই দুটি প্রতিবেশী দেশের সম্পর্ক আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায়। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক রীতিনীতি এবং কূটনৈতিক ভব্যতা পূনঃপ্রতিষ্ঠা করতে তারা আগ্রহী। সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যা দুটি দেশের জনগণের কাছেই হবে গ্রহণযোগ্য। সে কারণে তিনি খোলামেলাভাবেই বলেছেন, শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়েই তারা সামনে এগোতে প্রস্তুত। কিন্তু সচিব কিংবা আমাদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান পর্যায়ে তার প্রতিক্রিয়া কী হয়েছে, আমরা ওয়াকিফহাল নই। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার কৃতকর্ম কিংবা অপরাধের জন্য দেশে ফিরিয়ে এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচার করার প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়েছে বলে সবাই অবগত রয়েছে। তার পরও দিল্লিতে বসে তিনি তার বিভিন্ন দলীয় ষড়যন্ত্রে তৎপর হয়ে উঠেছেন। শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে এখন তার দলীয় নেতাকর্মীদের </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভার্চুয়ালি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ভাষণ দেওয়া শুরু করেছেন, যেগুলো পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বাঞ্ছিত হতে পারে না। ভারত এই নির্দিষ্ট বিষয়টি নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি, বরং নীরবতা পালনের পথ অনুসরণ করছে। এই বিষয়টি কি ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক কিংবা শান্তিপূর্ণ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াবে না? তা ছাড়া এই বিষয়টি বাংলাদেশের সংগ্রামী মানুষের মধ্যেও যথেষ্ট ক্ষোভের সৃষ্টি করছে। এর পাশাপাশি অন্য যে বিষয়টি শান্তিপ্রিয় বাংলাদেশিদের মধ্যে যথেষ্ট উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করছে, তা হলো দেশের সংখ্যালঘুদের ওপর চালানো নির্যাতনের মিথ্যা ভারতীয় বয়ান। সরকারের প্ররোচনায় ভারতের </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গদি মিডিয়া</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এই স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে অপপ্রচার চালিয়েই যাচ্ছে। সংবাদ বিশ্লেষকদের মতে, এটি ভারতের একটি অতিরঞ্জিত কিংবা অতিকল্পিত সাম্প্রদায়িক বিষোদগার ছড়ানোর কৌশল বা ফাঁদ। সে কারণে দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার যে ভারতীয় অভিব্যক্তি কিংবা বক্তব্য, তাকে সহজভাবে বিশ্বাসযোগ্যতার মধ্যে স্থান দিতে পারছে না বাংলাদেশিরা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আন্তর্জাতিকভাবে এবং এমনকি ভারতেও তাদের বাংলাদেশবিরোধী সাম্প্রদায়িক অপপ্রচার নিয়ে জনগণ যথেষ্ট বিরক্তি প্রকাশ করতে শুরু করেছে। কারণ তাদের (ভারতীয় মিডিয়ার) কোনো কোনো বিশেষ গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদগুলো বারবার মিথ্যা কিংবা ভিত্তিহীন হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও তারা সে অপপ্রচার অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ভারতের রিপাবলিক টিভি চ্যানেলটি। তাদের ভিত্তিহীন কিংবা বারবার মিথ্যা সংবাদ প্রচারের বিরুদ্ধে সরকারের দৃশ্যত কোনো বিধি-নিষেধ আছে বলে মনে হচ্ছে না। অথচ ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে তার গণমাধ্যমকে নিয়ে একসময় গর্ব করত। বর্তমানে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার ও তাদের বশংবদ গণমাধ্যম সে পথে আর মোটেও হাঁটছে বলে মনে হয় না। এ ক্ষেত্রে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শে বিশ্বাসী ভারত বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শে বিশ্বাসী দেশগুলোর সঙ্গে কিভাবে তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখতে পারে? বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের সাম্প্রদায়িক মিথ্যা প্রচার-প্রপাগান্ডা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সমগ্র বিশ্ববাসীর কাছে দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে। কারণ বাংলাদেশ প্রকৃতপক্ষেই একটি অসাম্প্রদায়িক এবং শান্তিপ্রিয় দেশ। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে শেখ হাসিনার ভারতে পলায়নকে কেন্দ্র তারা সাম্প্রদায়িকতার অপবাদ দিয়ে কিংবা অপপ্রচার চালিয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করার যে ফাঁদ পেতেছিল, তা সফল হয়নি। এতে ভারতের মোদি সরকারের স্বরূপ আরো উদঘাটিত হয়েছে বিশ্ববাসীর সামনে। এর সঙ্গে সঙ্গে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গদি মিডিয়ার</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ভাড়া খাটা সাংবাদিকদের কুিসত চেহারাও এরই মধ্যে উন্মোচিত হয়েছে সবার কাছে। মোদি সরকারের কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি যে এক দিন তাদের জন্যও শেখ হাসিনার পরিণতি ডেকে আনবে না, তা নিশ্চিত করে কে বলতে পারে। সুতরাং বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক আবার আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নেওয়ার যে আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন বিক্রম মিশ্রি, তাতে বাংলাদেশিরা খুব একটা ভরসা পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভারত নিজের দেশের মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুর প্রতি যে নজিরবিহীন আচরণ করছে, তা নিয়ে এখন ভারতের ভেতরেই প্রতিদিন সংখ্যাতীত অভিযোগ উত্থাপিত হচ্ছে। অথচ সে ভারতই এখন বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ বা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি প্রভাবশালী গণমাধ্যম সম্প্রতি এক সমীক্ষায় বলেছে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা আগের তুলনায় অনেক ভালো আছে। তারা এটিও উল্লেখ করেছে যে শেখ হাসিনার আমলে রাজনৈতিক কারণে তার নিজ দেশের হিন্দু বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অনেক নির্যাতন চালিয়েছে। এর পেছনে মোদি সরকারের যথেষ্ট প্রশ্রয় ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক বোঝাপড়া কিংবা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্টতার কারণে মোদি সরকার ভারতে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর এত দিন যে অকথ্য জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে, তার বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিংবা তার দল আওয়ামী লীগ। অথচ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি এবং এমনকি জাপানের বিধায়কদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সভায় তার নিন্দা করে হুঁশিয়ারি জানানো হয়েছে। শেখ হাসিনার পালিয়ে দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়ার পর ভারতের হিন্দুত্ববাদী বিজেপি ও অন্যান্য সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী দলের সমর্থকরা কলকাতা ও ত্রিপুরার আগরতলায় স্থাপিত বাংলাদেশের দূতাবাসের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। কলকাতায় বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যে বাংলাদেশের উপদূতাবাস ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে এবং বাংলাদেশের পতাকা পোড়ানো হয়েছে। আগরতলায় উপদূতাবাস ভবনটি আক্রমণ করে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রধান দূতাবাসটি হচ্ছে দিল্লিতে। শেখ হাসিনার পতনকে তার অন্যায়, অবিচার ও শোষণ-শাসনের দোসর কর্তৃত্ববাদী মোদি সরকার সহজভাবে নিতে পারেনি। কারণ ক্ষমতা ছেড়ে হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার কারণে তাদের সমূহ ক্ষতি সাধিত হয়েছে। সে কারণে তারা চট্টগ্রামে সনাতন জাগরণ মঞ্চের ব্রহ্মচারী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধাতে চেয়েছিল বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী সাধারণ নাগরিকদের কারণে তা সম্ভব হয়নি। অথচ এতে প্রাণ হারিয়েছেন একজন নির্দোষ মুসলিম আইনজীবী। সেটি নিয়ে ভারতে কোনো উচ্চবাচ্য নেই। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভারতের মোদি সরকার তাতেও থেমে থাকেনি। পর্দার অন্তরালে থেকে উসকানি দিয়ে গেছে সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং দাঙ্গাবাজদের। এই সম্পূর্ণ বিষয়টি অত্যন্ত সহনশীলতার সঙ্গে মোকাবেলা করেছে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। এই সম্পূর্ণ বিষয়টি শেষ পর্যন্ত যখন সমগ্র বিশ্ববাসীর কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে, তখনই দিল্লি থেকে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ছুটে এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে যেন হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কোনো নির্যাতন না হয়। কিন্তু কোথায় কোথায় তার উল্লিখিত নির্যাতন চলছে সে বিষয়ে কিছুই বলতে পারেননি তিনি। সেসব কারণে ভারতের ওপর একটা বড় ধরনের আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে বাংলাদেশিদের মধ্যে। গত ১১ ডিসেম্বর বিএনপির তিনটি অঙ্গসংগঠন ভারতের আগরতলা সীমান্ত পর্যন্ত লং মার্চ করেছে। সেই বিশাল লং মার্চে অংশগ্রহণকারীদের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় হুমকি-ধমকি, অপপ্রচার ও সাম্প্রদায়িক উসকানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো। জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী কোনো দেশের দূতাবাসের ওপর হামলা করা আন্তর্জাতিক আইনের বরখেলাপ। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার চাইতে পারে। আগরতলায় বাংলাদেশের দূতাবাসের ওপর হামলার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশিরা কারো ভয়ে ভীত নয়। লং মার্চে নেতৃত্বদানকারী নেতারা লং মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন জনসমাবেশে বলেছেন, তারা কারো দাসত্ব মেনে নেবেন না। ভারতীয় আগ্রাসন কিংবা আধিপত্যবাদ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কোনোটিই মেনে নেবেন না তারা। একটি সার্বভৌম দেশের নাগরিক হিসেবে তারা চান তাদের প্রতি সমান ও মর্যাদাপূর্ণ আচরণ। লং মার্চে নেতৃত্বদানকারী নেতারা বলেছেন, বাংলাদেশ পরিচালিত হবে এ দেশের জনগণের গণতান্ত্রিক ও নাগরিক অধিকারের ভিত্তিতে, কারো নির্দেশে নয়। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাঁবেদারির দিন শেষ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">, বলেছেন তারা। সুতরাং এই পরিস্থিতিতে আকাশে ঘনীভূত কথিত কালো মেঘ সরাতে হলে প্রথমেই পারস্পরিক আস্থার সংকটটি কাটিয়ে উঠতে হবে। এই বিষয়টি ভারতই ভালো জানে কিভাবে সামলাতে হবে। নতুবা দক্ষিণ এশিয়ার এই বিস্ফোরণোন্মুখ অঞ্চলটিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা একটি দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। এতে শেষ পর্যন্ত কেউ লাভবান হবে না।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">gaziulhkhan@gmail.com</span></span></span></span></p>