জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মিজানুর রহমানের পৃথক দুই ধারায় আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে উভয় ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বিধায় তার পাঁচ বছরের সাজাভোগ করতে হবে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মুহাম্মদ আবু তাহের এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ধারায় তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো তিন মাস কারাদণ্ড এবং একই আইনের ২৭(১) ধারায় পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩০ হাজা টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
উভয় দণ্ড একত্রে চলবে। মিজানুর রহমানের জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত এক কোটি ৪৪ লাখ লক্ষ ৫০ হাজার ৯৮৯ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়।
আরো পড়ুন
শনিবার শুরু হচ্ছে জাতীয় কবিতা উৎসব
আদালত সূত্রে জানা গেছে, এদিন তাকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর সকাল ১০ টা ৩৫ মিনিটে তাকে আদালতে তোলা হয়।
এসময় তাকে আদালতের ভেতরের বেঞ্চে বসতে দেওয়া হয়।
তখন তিনি আইনজীবীর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। এসময় তিনি কফি ও হাফ লিটারপানি পান করেন। পরে সকাল ১১ টা ৩২ মিনিটে বিচারক এজলাসে উঠেন।
তখন পুলিশ তাকে কাঠগড়ায় উঠতে বলেন। তার উত্তরে তিনি বলেন, আগে মামলা ডাকুক; তারপর কাঠগড়ায় উঠব। এরপর তিনি সেখানে বসেই থাকেন। এরপর শুরু হয় আদালতের বিচারিক কার্যক্রম। তখন রায়ের অপেক্ষায় বসে থেকে তিনি আরো দুই লিটার বোতলের পানি পান করা শুরু করেন। সেই বোতলের অর্ধেক পানি তিনি পান করেন। এসময় তাকে বরই খেতে দেওয়া হয়। অন্যান্য মামলার বিচার কার্যক্রম শেষে তাকে বেলা ১ টা ৩৯ মিনিটে কাঠগড়ায় তোলা হয়। পরে বিচারক রায় ঘোষণা করেন। সাজা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আসামিপক্ষের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন খান বলেন, আসামির দাবি শেখ পরিবারের রোষানলে তাকে রাজনৈতিক মাঠ থেকে মাইনাস করতেই এই মামলা করা হয়েছে। তিনি একজন সংসদ সদস্য ছিলেন, তার বিরুদ্ধে মাত্র এক কোটি ৫৮ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছে। যা মোটেও সত্য নয়। এ রায়ে আমরা ন্যায় বিচার বঞ্চিত হয়েছি। এ সাজার বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।
আরো পড়ুন
লালমাইয়ে যুবদলের দুই নেতাকে শোকজ
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন সংস্থাটির পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদ। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৩ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তিনি। অভিযোগপত্রে আসামির বিরুদ্ধে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৫৭ হাজার ৯৮১ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ২০ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। এ মামলার বিচার চলাকালীন ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।
আরো পড়ুন
চুরি করে স্বামীকে আইফোন ও প্রেমিককে সোনার চেইন দিলেন তরুণী
গত ২৩ জানুয়ারি দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্য ৩০ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। ওইদিন আদালত তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।