বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, বাংলাদেশ রাজনৈতিকভাবে এমন অবস্থানে এসে উপনীত হয়েছে, আমরা সম্মিলিতভাবে একটি সুন্দর দেশ গড়ে তুলতে পারব। তবে সর্বত্রই একটি আশঙ্কা তাড়া করে বেড়াচ্ছে, না জানি পরাজিত শক্তি বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়ে যায়।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর পল্টনস্থ ফার্স হোটেল এন্ড রিসোর্টসে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। দেশের রাজনীতিবিদ, বিদেশী কূটনীতিবিদ, উলামায়ে কেরাম ও বিশিষ্টজনদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।
মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে মামুনুল হক বলেন, আজকে একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন পরিবেশে রমজানুল মোবারক উৎযাপন করছি। দীর্ঘদিন স্বদেশে পরবাসীর মতো আমাদের জীবনযাপন করতে হয়েছে। মুক্ত অবস্থায়ও বন্দিত্বের অভিশাপ নিয়ে আমাদের চলাফেরা করতে হয়েছে। অসংখ্য অগণিত রাজনৈতিক নেতা কর্মী গুম, খুন ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
অনেককে দিনের পর দিন মাসের পর মাস ফেরারি জীবন যাপন করতে হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে, রাজনীতি করা কতটা অপরাধ। শুধু রাজনীতি করার অপরাধে হাজার-হাজার নেতাকর্মীকে বন-বাজারে ঘুরে বেড়াতে হয়েছে।
আরো পড়ুন
রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে আঞ্চলিক ভাষায় কথা বললেন প্রধান উপদেষ্টা
তিনি বলেন, একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপর আমরা আস্থা রাখতে চাই।
ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আগামী বিনির্মাণের লক্ষ্যে সংস্কারের ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যে উদ্যোগকে দলমত নির্বিশেষে সকল রাজনৈতিক পক্ষ স্বাগত জানিয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারকে সকলেই সহযোগিতা করে যাচ্ছে। সংবিধানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমে আমরা আশা করছি আগামী বাংলাদেশে বহুদল ও মতের সম্মিলনে একটি সহনশীল রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে ওঠবে। একটি বিষয়ে বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক পক্ষকে একমত হওয়ার আহ্বান জানাই, এইসময়ে আমরা লক্ষ্য করছি, বাংলাদেশে অনেক সংকট আছে। তারপরও এক ধরনের স্বস্তির আবহ সৃষ্টি হয়েছে। এই রমজানে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীনতা রোধ করা গেছে। রাজধানীসহ সারাদেশে লোডশেডিং একেবারে কম হচ্ছে। সেইসাথে আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি বিষয়ে আমাদের সম্মিলিত পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশকে পুনর্গঠনের যুদ্ধে আমরা বিজয়ী হতে চাই।
শিশু আসিয়াসহ সকল ধর্ষণকাণ্ডের বিচার দাবি করে এই নেতা বলেন, আইনের অনেক ফাঁকফোকর রয়েছে। অনেক ছোট খাটো বিষয়কে এইসব আইনের সাথে গুলিয়ে ফেলে কঠোরতর অপরাধকে হালকা করে ফেলা হচ্ছে। নারী শিশু ও সমাজের দুর্বল মানুষদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
ইফতার মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশের আমীর ডা. শফিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, এবি পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মুফতী মনীর হোসাইন কাসেমী প্রমুখ।
আরো পড়ুন
আছিয়ার খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এবি পার্টির
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, নায়েবে আমীর মাওলানা রেজাউল করীম জালালী, মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা হেলালুদ্দীন, মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা কুরবান আলী কাসেমী, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা আব্দুল আজীজ, মুফতি শরাফত হোসাইন প্রমুখ।
ইফতার মাহফিলে কূটনৈতিকদের মধ্যে চীন, ইরান, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান হাইকমিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।