<p>মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের সংবর্ধনা দিয়েছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা প্রশাসন। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) উপজেলা প্রশাসন হলরুমে দুই শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বয়সে ন্যুব্জমান বীর মুক্তিযোদ্ধারা প্রশাসনের দেওয়া রজনিগন্ধা স্টিক, উপঢৌকন ও দুপুরের খাবার নিয়ে বের হন।</p> <p>এ সময় কথা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান ও গাজী আব্দুল কাদিরের সঙ্গে। বীর মুক্তিযোদ্ধা কাদিরের বের হওয়ার হাতে কী, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কী আর, সব সময় যা দেয়- এর বেশি কিছু না।’</p> <p>কেমন আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শরীর খুবই খারাপ। শুয়ে-বয়ে থাকি। কিন্তু প্রতিবছর এখানে আই, তাই চইল্যা আইলাম। আগামী বছর আর আইতাম পারবাম কি না, জানি না। মনডা দুর্বল অইয়া আইছে।’ </p> <p>তিনি জানান, ১১ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন কাদির। মরতে মরতে বেঁচে আছেন। সঙ্গের যোদ্ধারা কেউই আর বেঁচে নেই। গত বছরও চার সহযোদ্ধা তার সঙ্গে উপজেলা প্রশাসনের আমন্ত্রণে এসেছিলেন। আজ তিনি একা এসেছেন।</p> <p>আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমি চোখে কম দেখি এবং কানেও কম শুনি। তা ছাড়া লাঠি ছাড়া হাঁটতে পারি না। প্রশাসনের ডাকে আসি, শুধু অনেককে দেখব বলে। যে কতক্ষণ এখানে অবস্থান করি ততক্ষণই অনেক স্মৃতি মনে পড়ে।’</p> <p>তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এখন আর এমন জৌলুস নেই। সব কেমন জানি ম্যাড়মেড়ে হয়ে গেছে। গতানুগতিক সংবর্ধনা এখন আর ভালো লাগে না। তার পরও বেঁচে থাকলে আবার আসার ইচ্ছা আছে। জানি না কত দিন বাঁচব।’</p> <p>সোমবার উপজেলার গাঙাইল ইউনিয়নের গাঙাইল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আনোয়ার মাস্টার মারা গেছেন। তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে।</p> <p>বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক জানান, নান্দাইলে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন ২৬৪ জন। বর্তমানে জীবিত আছেন ৮৬ জন। তাদের মধ্যে অনেকেই বয়সের ভারে ও বিভিন্ন রোগ-শোকে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী।</p>