<p style="text-align:justify">‘কোনো টাকা-পয়সা আর ধন-দৌলতের জন্য নয়। মা-মাটি ও দেশকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা করতে জীবন বাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। যুদ্ধে যেতে অনেক কষ্টে মাকে রাজি করতে হয়েছিল। মায়ের দেওয়া ৫ টাকা নিয়ে যুদ্ধে গিয়েছিলাম।’ কালের কণ্ঠ’র সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবু সাইয়িদ মিয়া। </p> <p style="text-align:justify">তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের আমোদাবাদ গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে। আখাউড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. আবু সাইয়িদ মিয়া। </p> <p style="text-align:justify">তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বেশ কয়েকটি জায়গা আক্রমণ শুরু করে, তখন আমাদের এলাকার অনেকে বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল বাজারে জড়ো হয়। এ অবস্থায় লোকজন বলতে শুরু করল তোমরা এখান থেকে চলে যাও। মানুষের ভিড় দেখলে পাকিস্তানিরা এসে এখানে আক্রমণ করবে। তখন অনেক মানুষ সীমান্ত দিয়ে ভারতের শরণার্থী শিবিরে চলে যেতে শুরু করে। বন্ধু ইলিয়াস ও সামাদকে নিয়ে আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে যাই। সঙ্গে ছিল মায়ের দেওয়া ৫ টাকা।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বিজয় দিবসে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পূর্ণ বিবরণ" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/16/1734326958-b241da9913cc47a13520f344e699f661.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বিজয় দিবসে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পূর্ণ বিবরণ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/12/16/1458016" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবু সাইয়িদ মিয়া বলেন, ‘সিঙ্গারবিলের নোয়াবাদী সীমান্তের ওপারের নরসিংঘর দিয়ে আগরতলা চলে যাই। খবর পাই কংগ্রেস ভবনে মুক্তিযোদ্ধা ভর্তি করানো হচ্ছে। সেখানে গেলে অন্যান্যদের সঙ্গে আমাকে প্রথমে আগরতলার কাতলামারা নামক স্থানে লে. কর্নেল ইব্রাহীমের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে ১১ দিন থাকার পর আসামে পাঠিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি।’ </p> <p style="text-align:justify">যুদ্ধকালের স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘১৪ আগস্টে আমি সিলেটের জকিগঞ্জে। খবর আসে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে পাকিস্তানি এক ক্যাপ্টেন অতিথি হয়ে আসছেন। সকাল ৯ টায় ওই বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠান হবে। এর আগেই আমরা আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখি। ৮টার দিকে একটি গাড়ি বিদ্যালয়ের দিকে আসতে থাকে। পূর্ব প্রস্তুতি অনুযায়ী আমরা পাহাড়ের ওপর থেকে হামলা চালাই। গাড়ির চালকসহ বেশ কয়েকজন মারা যান। তবে ক্যাপ্টেন সেখান থেকে পালিয়ে প্রাণে বেঁচে যায়।’</p> <p style="text-align:justify">বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবু সাইয়িদ মিয়া ১৯৭১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার সৈয়দাবাদ আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর। তার বর্তমানে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। আট বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম।</p>