<p>সিরাজগঞ্জের তাড়াশে চলতি বছরে দুই শতাধিক মানুষ বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছে। কুকুরের পাশাপাশি শেয়ালেরও উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। ভ্যাকসিন অপ্রতুলতায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা বাজার থেকে এ্যান্টি-র‌্যাবিশ ভ্যাকসিন কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। সম্প্রতি তাড়াশ উপজেলা পরিষদের এডিবি’র অর্থায়নে ভ্যাকসিনের একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাত্র ১৫০ পিস ভ্যাকসিন বরাদ্দ এসেছে। তবে ভুক্তভোগীরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল।</p> <p>বেওয়ারিশ কুকুরকে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও প্রাণি সম্পদ বিভাগ কর্তৃক সারা দেশে একটি প্রকল্প চালু ছিল। কিন্তু কভিটের পর সে প্রকল্প বাতিল হয়ে যায়। এখন উপজেলাজুড়ে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা নির্বিঘ্নে হাট-বাজার, রাস্তাসহ বিভিন্ন এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে যেখানে-সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিশেষ করে প্রজনন মৌসুমে আক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে।</p> <p>তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, চলতি বছরে এ উপজেলায় দুই শতাধিক আক্রান্ত ব্যক্তি এখানে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদেরকে হাসপাতাল ও উপজেলা পরিষদের এডিবি’র প্রকল্প থেকে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় ভ্যাকসিনের সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় অনেককেই বাজার থেকে কিনে নিতে হয়েছে। </p> <p>তাড়াশ উপজেলা পরিষদের সিএ মো. মাসুদ রানা সূর্য জানান, এ পর্যন্ত মোট ৭৭ জন রোগীকে এডিবির প্রকল্প থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। </p> <p>তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী মো. ফিরোজ আহম্মেদ জানান, সিভিল সার্জন অফিস থেকে গতকালই ১৫০ পিস ভ্যাকসিন এ হাসপাতালে এসেছে।</p> <p>পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ও সাংবাদিক এম,আতিকুল ইসলাম বুলবুল জানান, বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় শিয়ালের মতো প্রাণিও লোকালয়ে হানা দিচ্ছে খাদ্যের সন্ধানে। পাশাপাশি বেওয়ারিশ কুকুরকে নিয়মিত ভ্যাকসিন না দেওয়ায়, আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে এসব বেওয়ারিশ কুকুরকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে হবে।</p> <p>উপজেলার দেশীগ্রামের গৃহবধূ পাপিয়া খাতুন (৩৫) জানান, তাকে গত বৃহস্পতিবার সকালে একটি কুকুর এসে আক্রমণ করে। তার পায়ে তিনটি কামড় বসিয়ে রক্তাক্ত করে। পরে লোকজন লাঠি নিয়ে তাড়া করলে কুকুরটি পালিয়ে যায়।</p> <p>তাড়াশ উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বেওয়ারিশ কুকুরকে ভ্যাকসিন না দেওয়ায় এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আগে পৌরসভা কুকুর নিধন করলেও নানা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে। কভিটের পরবর্তী বেওয়ারিশ কুকুরের ভ্যাকসিন দেওয়াও বন্ধ রয়েছে। তবে পোষা কুকুরকে টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।’</p>