<p>দ্বিতীয় বিয়ের জন্য অনুমতি না দেওয়ায় তার মাকে নির্যাতন করেন বাবা। এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলেও কোনো লাভ হয়নি। অন্যত্র বিয়ে করেন তিনি। এ ঘটনায় বাবার হাত-পা বেঁধে মারধর করেছেন সন্তানরা। ‌এ ঘটনার পর তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। স্ত্রী, সন্তান, পুত্রবধূ বিয়াইসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) মামলা করেন ভুক্তভোগী। ঘটনাটি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামে ঘটে।</p> <p>স্থানীয় সূত্র ও মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ওই গ্রামের আক্তার হোসেন (৫৫) নামের এক কৃষক ৩০ বছর আগে বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের চার ছেলে ও দুই মেয়ে। তাদের মধ্যে দুই ছেলে প্রবাসী। ছেলে মেয়েদের অন্যত্র বিয়ে দিয়েছেন।</p> <p>তারা আরো জানায়, বেশ কয়েক বছর ধরে আরেকটি বিয়ে করবে বলে স্ত্রীর কাছে অনুমতি চান আক্তার। স্ত্রী অনুমতি না দেওয়ায় দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে সামাজিকভাবে দেনদরবারও হয়। পরে স্ত্রী-সন্তানরা সম্পদের ভাগ চান। কিন্তু তা নিয়ে সমঝোতা না হওয়ায় বিরোধ চরমে পৌঁছায়। </p> <p>এ নিয়ে প্রায়ই মারধরের মতো ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা প্রবাস থেকে দুই ছেলে জানতে পেরে বিভিন্ন সময় মোবাইলে ফোন করে বাবাকে সতর্ক করেন। এর মধ্যে বছর খানেক আগে অন্যত্র বিয়ে করেন আক্তার। এতে স্ত্রী, তিন ছেলে ও মেয়েরা ক্ষিপ্ত হয়ে বাবাকে বাড়িতে প্রবেশ নিষেধ করেন। </p> <p>আক্তার এসব কথায় কর্ণপাত না করায় দুই ছেলেকে দেশে আসতে বলেন স্ত্রী মাসুদা বেগম। ১৫ দিন আগে এক ছেলে আকরাম হোসেন ওমান থেকে বাড়িতে আসেন। তার কয়েকদিন পর দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে বাবার সঙ্গে বিবাদে জড়ান তিনি। এক পর্যায়ে বুধবার বিকেলে বাবাকে ঘরে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করেন তারা। প্রায় ৭ ঘণ্টা পর নির্যাতনের শিকার আক্তার হোসেনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।</p> <p>প্রথম স্ত্রী মাসুদা বেগম জানান, অযথা তাকে অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে। তা ছাড়া তার কোনো অনুমতি না নিয়েই আরেকটি বিয়ে করেন আক্তার। ছেলে এসব ঘটনার কারণ জানতে চাইলে দা দিয়ে কোপানোর চেষ্টা করেন তার বাবা। এক পর্যায়ে আত্মরক্ষার্থে সবাই মিলে তাকে ঘরে নিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।</p> <p>আক্তার হোসেন জানান, ছেলে ও অন্য ছেলের শ্বশুর ও বিয়াই তাকে (আক্তার) বেঁধে মারধর করেছেন। পরে ছোট ছেলে জামানের ফোনে পুলিশ এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। মারধরে তার তিনটি দাঁত ভেঙে গেছে। </p> <p>ঈশ্বরগঞ্জ আঠাবাড়ী রায়ের বাজারের পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এএসআই) শহিদুল বারী জানান, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আক্তারকে উদ্ধার করে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।</p> <p>ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উবায়দুর রহমান জানান, ওই ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়ে তদন্তের জন্য একজন কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে। সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p>