<p style="text-align:justify">প্রেমের ফাঁদে পড়ে পরিবারের অমতে পালিয়ে গিয়ে বয়স বাড়িয়ে বিয়ে করে স্কুলছাত্রী রিমা আক্তার ((১৫)। বিয়েতে মেহেদি রাঙানো এবং কোনো গহনা পরতে না পারলেও তার শখ ছিল হাতে পরবে সোনার চুড়ি। তবে স্বামী কিনে দিতে চাইলেও তার আর হাতে পরা হয়নি সোনার চুড়ি। অবশেষে স্বামীর নির্যাতন-অত্যাচারে না ফেরার দেশে চলে যায় রিমা।  </p> <p style="text-align:justify">চিকিৎসকরা রিমা আক্তারকে মৃত ঘোষণার পরপরই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে লাশ ফেলে পালিয়ে যান স্বামী। ঘটনাটি ময়মনসিংহের নান্দাইলের। এ ঘটনায় মামলার পর আজ বৃহস্পতিবার পুলিশ নিহতের সতীনসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">স্থানীয় সূত্র ও নিহতের পরিবার জানায়, নিহত রিমা আক্তার উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের কোনাডাংগর গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে। স্থানীয় দিলালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ত সে। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে তাকে উত্ত্যক্ত করতেন পাশের শিরবনগর গ্রামের আহম্মদ হোসেনের ছেলে মো. পারভেজ মিয়া (২৬)। </p> <p style="text-align:justify">এ নিয়ে প্রথম দিকে রিমা এড়িয়ে গেলেও একসময় পারভেজের ফাঁদে পা দেয় সে। গত আগস্ট মাসে দুজন প্রেমের সর্ম্পকে জড়িয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। বাড়িতে না নিয়ে পারভেজ নান্দাইল পৌর সদরের নাথপাড়া মহল্লায় ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। এক পর্যায়ে জানতে পারে স্বামী পারভেজের স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। তখন যেন আকাশ ভেঙে পড়ে রিমার মাথায়। ততক্ষণে সবই শেষ তার। </p> <p style="text-align:justify">স্থানীয়রা জানায়, রিমা বিষয়টি জানার পর বাড়ি যেতে চায়। কিন্তু পারভেজ তাকে অন্যত্র রেখেই সংসার করবে।</p> <p style="text-align:justify">নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিবেশী এক নারী জানান, কয়েক দিন আগে রিমা স্বামীর কাছে বায়না ধরে তাকে এক জোড়া সোনার চুড়ি বানিয়ে দিতে। তার এই আবদারের কথা শুনে স্বামী চুড়ি দিচ্ছি দেবে বলে সময় পার করে আসছিলেন। এর মধ্যে অনেক বিবাদের সৃষ্টি হলে তার স্বামী তাকে নির্যাতন করতেন। এরপর বুধবার ভোরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রিমাকে মৃত ঘোষণা করেন। </p> <p style="text-align:justify">তিনি আরো জানান, রিমার মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বামী পারভেজ লাশ রেখেই দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। রাতেই স্বামী-সতিনসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের বড় ভাই।</p> <p style="text-align:justify">জানা যায়, রিমার বয়স কম হওয়ায় কৌশলে বয়স বাড়িয়ে কথিত কাজী দিয়ে বিয়ে নিবন্ধন করানো হয়।</p> <p style="text-align:justify">নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মেদ জানান, অভিযুক্ত স্বামী পারভেজকে ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হচ্ছে।</p>