<p>ভারতের পানি আগ্রাসন বন্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ‘রিভারাইন পিপল’ নামের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। রবিবার (জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এক মানববন্ধনে এই দাবি আহ্বান জানান তারা।</p> <p>রিভারাইন পিপলের পরিচালক ও রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, তিস্তা আন্ত সীমান্ত নদী। এই নদীতে উজানের দেশ যদি কোনো কাজ করতে চায় তাহলে ভাটির দেশের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে, এটি আন্তর্জাতিক নিয়ম। ভারত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে একতরফাভাবে যে পানি প্রত্যাহার করেছে তা ইতিহাসের বর্বরতা। এটি অমানবিক। এটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে শত্রুভাবাপন্ন আচরণ।</p> <p>ড. তুহিন বলেন, তিস্তা ভারত-বাংলাদেশের অভিন্ন নদী। কিন্তু তিস্তা নদী বর্তমানে পানিশূন্য। নদীর ওপর নির্ভরশীল এই অঞ্চলের মানুষ, জনজীবন, জীববৈচিত্র্য, অর্থনীতি। নদীভাঙনে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ নিঃস্ব হচ্ছে। ভারতের এমন একতরফা পানি প্রত্যাহারের ফলে বাংলাদেশের ভূ-প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে তার ক্ষতিপূরণ এবং তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বুঝে পেতে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে হবে। </p> <p>তিনা আরো বলেন, ‘নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে ভারত পানিটুকু ঠিকমতো দেয় না। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আবেদন জানাই, জোর দাবি জানাই, আন্তর্জাতিক আদালতে এর প্রতিকার চাওয়া হোক।’</p> <p>অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান উমর ফারুক বলেন, ‘তিস্তা নদীর সঙ্গেই আমাদের উত্তরাঞ্চল তথা বাংলাদেশের জনজীবন, জীবিকা এবং জীবন বৈচিত্র্য সবটাই গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। একটি দেশ যখন আন্তর্জাতিক নদীর পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নেয় তখন ভাটি অঞ্চলের মানুষের জীবন জীবিকা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমান সময়ে আমাদের কৃষি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আমাদের অঞ্চল মরুভূমি হচ্ছে এবং একই সময়ে বর্ষা সময় অতি প্লাবন দেখে দিচ্ছে।’</p> <p>অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক আছে সেই সম্পর্কের আলোকে আলোচনার টেবিলে বসে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করা না হয় তাহলে দ্রুত সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়ে এই নদীর বাংলাদেশের যে অধিকারটা আছে সেই অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’</p> <p>মানববন্ধনে রিভারাইন পিপল ক্লাবের সদস্যসচিব শিহাব প্রধানের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন রিভারাইন পিপল ক্লাবের সংগঠক ও বাংলা বিভাগের শিক্ষক খাইরুল ইসলাম পলাশ, নদী কর্মী ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামসুর রহমান সুমন, রহমত আলীসহ অনেকে।</p>