জুলাই আন্দোলনে শহীদ দুই পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার প্রদান

ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
শেয়ার
জুলাই আন্দোলনে শহীদ দুই পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার প্রদান

জুলাই আন্দোলনে ঢাকার যাত্রাবাড়িতে নিজ বাসায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন ভাঙ্গার মানিকদহ ইউনিয়নের পুখুরিয়া গ্রামের আবুল হাসান শান্ত ও কহিনূর আক্তার সুমী দম্পতির সন্তান আব্দুল আহাদ। আজ শুক্রবার (২৮ মার্চ) তার বাড়িতে গিয়ে কবর জিয়ারত ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে ঈদ উপহার ও শুভেচ্ছা পত্র তুলে দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল ইসলাম খান বাবুল। 

শুক্রবার দুপুরে ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের পুখুরিয়া গ্রামের আহাদের বাড়িতে ফরিদপুর -৪ আসনের ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে আহাদের বাড়িতে গিয়ে প্রথমে আহাদের কবর জিয়ারত করেন বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা। এরপর আহাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন।

 একই সময়ে তিনি জুলাই আন্দোলনে ঢাকার রামপুরায় শহীদ হওয়া চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র তামিম শিকদারের বাবা ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের খাপুরা গ্রামের জুয়েল শিকদার সহ পরিবারের সদস্যদের সাথে  কথা বলেন।

দুই পরিবারের সদস্যদের হাতেই তারেক রহমান পক্ষে শুভেচ্ছাপত্র ও ঈদ উপহার তুলে দেন এ নেতা। এ সময় ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম সহ বিএনপির নেতা-কর্মী ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।  

শহীদ আহাদের বাড়ির আঙিনায় উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে শহীদুল ইসলাম বাবুল বলেন, এই শহীদেরা জাতির বীর সন্তান।

এদের রক্ত বৃথা যাবে না। ২৪-এর শহীদেরা আমাদের অনুপ্রেরণা। আমরা তোমাদের ভুলবো না।

উল্লেখ্য, চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র তামিম শিকদার ১৯ শে জুলাই ঢাকার রামপুরায় বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলার সময় এবং ২০ শে জুলাই শিশু আহাদ ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে নিজ বাসায় চোখে গুলিবিদ্ধ হয়।

এদের দুজনেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ঈদের দিন বাবাকে খোঁজে নৌফা, দেখেনি রাইয়ান

শাহীন আলম, কুমিল্লা (উত্তর)
শাহীন আলম, কুমিল্লা (উত্তর)
শেয়ার
ঈদের দিন বাবাকে খোঁজে নৌফা, দেখেনি রাইয়ান
দেবীদ্বারের শহীদ আবদুর রজ্জাক রুবেলের পরিবার। ছবি : কালের কণ্ঠ

গত ঈদে যে স্বজনরা অপেক্ষা করেছিল তাদের প্রিয়জনের বাড়ি ফেরার, এবার তাদের সেই প্রিয়জন অনেকেই নেই। সেই তালিকায় জন্মের আগেই বাবাহারা মো. রাইয়ান। তার জন্মের দুইমাস আগেই বাবা শহীদ হয়েছেন। সাত বছর বয়সী নৌফাও বাবাহারা।

তারা ভাই-বোন উৎসুক চোখে এখন কেবল বাবাকেই খোঁজে। সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন নিহতের স্ত্রী হ্যাপী আক্তার। সংসারের একমাত্র উপর্জনোক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। 

গত বছরের ৪ আগস্ট ছাত্রআন্দোলন চলাকালে কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌরসভায় আওয়ামীলীগ-যুবলীগ কর্মীদের গুলিতে নিহত হন আবদুর রজ্জাক রুবেল।

 

রুবেলের স্ত্রী হ্যাপী আক্তার বলেন, ‘আমাদের কীসের ঈদ! ৭ বছরের নৌফা বারবার বাবাকে খুঁজে। সে এখনো জানে না তার বাবা নেই। কোলে পাঁচ মাসের মো. রাইয়ান বাবাকে দেখেনি। গত বছর ঈদে সবার জন্য নতুন জামা-কাপড় নিয়ে আসছিল নৌফার বাবা।

তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশীদের ঘরে নতুন জামা কাপড় দেখে ঘরে এসে কান্না করছিল। ওর বাবা বেঁচে থাকলে কিনে দিত। পাষণ্ডরা আমার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করেছে। আমাদের জীবনে আর কোনোদিন সেই ঈদের আনন্দ আসবে না। আর ঈদ নেই আমার পরিবারে।

আরো পড়ুন
মন ভালো নেই জুলাই শহীদ সাকিব পরিবারের

মন ভালো নেই জুলাই শহীদ সাকিব পরিবারের

 

সবার ঘরেই বইছে ঈদুল ফিতরের আমেজ। কিন্তু কুমিল্লায় জুলাই আন্দোলনে শহীদ হওয়া ৩৮ শহীদ পরিবারে নেই ঈদ আনন্দের ছিঁটেফোটা। গত বছরও যে পরিবারগুলোতে ঈদের আনন্দ ছিল আজ তা শুধুই স্মৃতি। তাদের পরিবারে এবারের ঈদ যেন বিষাদের ঈদ। এসব শহীদদের অনেকেই ছিলেন সংসারের একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তি। তাদের হারিয়ে দিশেহারা পরিবারগুলো। তাদের কেউ হারিয়েছেন বাবা, কেউবা সন্তান কেউ আবার স্বামী। জুলাই ছাত্র আন্দোলনে কুমিল্লা জেলায় ৩৮ শহীদের মধ্যে দেবিদ্বারেই শহীদ হয়েছেন ১৩ জন।

এছাড়াও বরুড়ায় ৩ জন, চান্দিনায় ২ জন, চৌদ্দগ্রামে ২ জন, দাউদকান্দিতে ৩ জন, হোমনায় ১ জন, লাকসাম ২ জন, মনোহরগঞ্জে ১ জন, মুরাদনগরে ৪ জন, নাঙ্গলকোটে ৩ জন, সদর দক্ষিণে ২ জন ও তিতাসে ১ জন শহীদ হয়েছেন।

বাড়ির পাশের একটি কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে ২০ জুলাই নিহত দেবিদ্বারের সূর্যপুর গ্রামের শহীদ কাদির হোসেন সোহাগকে। কবরের পাশে প্রায় সময়ই দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি করেন তার মা নাসিমা বেগম। কাদির হোসেন সোহাগের বাড়ি সূর্যপুর গ্রামে। 

তার মা নাসিমা বেগম বলেন, ‘স্বামীকে হারিয়েছি ২০ বছর আগে। মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করে দুই সন্তানকে বড় করেছি। কাদির হোসেন সোহাগ কুরিয়ার সার্ভিসের ডেলিভারিম্যান হিসেবে কাজ করে সংসার চালাত। আর ছোট ছেলে শহীদুল লেখাপড়া করত। গত ২০ জুলাই রাতে সাড়ে ৮টার দিকে গোপীবাগ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় সোহাগ। এরপর থেকে সংসারে আনন্দ বলতে কিছু নেই। গত বছর ঈদে আমাকে কাপড় কিনে দিয়েছে সোহাগ। এই ঈদে আমার বুকের ধন কাছে নেই। আমি কীভাবে সন্তান ছাড়া ঈদ করব!’

চৌদ্দগ্রামের শহীদ সাখাওয়াত হোসেন সাদাতের বাবা আব্দুল মজিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ছেলে হারানোর শোকে পুরো পরিবার স্তব্ধ। ঈদ বলতে কিছু নেই। সাদাতের মা এখনো ছেলের জন্য কান্নাকাটি করেন। তাকে সান্তনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।’

এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, ‘কুমিল্লার ৩৮ শহীদ পরিবারের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ঈদ উপহার ও খাদ্য সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও সরকারি অনুদানের সঞ্চয়পত্র প্রথম কিস্তির ১০ লাখ টাকা এসেছে। আমি নিজে এগুলো বিতরণ করেছি এবং যারা আহত আছেন তাদের জন্য ১ ক্যাটাগরিতে ২ লাখ ও ১ লাখ করে বিতরণ করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘যারা জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহত হয়েছেন আমরা তাদের পরিবারের সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখছি।’

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ঘটেছে দেশের ইতিহাসে অভূতপূর্ব রাজনৈতিক পটপরিবর্তন। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে গণঅভ্যুত্থান, ৩০ দিনের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পর অবসান হয় শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসন। 

মন্তব্য

ঈদের পর সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টহল

নীলফামারী প্রতিনিধি
নীলফামারী প্রতিনিধি
শেয়ার
ঈদের পর সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টহল
ছবি: কালের কণ্ঠ

নীলফামারীতে জন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও ঈদের পরেও সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং পুলিশের যৌথ টহল ও চেকপোষ্ট কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার (১লা এপ্রিল) জেলা সদরের উত্তরা ইপিজেড, পাঁচমাথা মোড়, সৈয়দপুর বাসটার্মিনাল, শুটকির মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে এ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। 

এ সময় বিভিন্ন যানবাহনে সন্দেহভাজন ব্যক্তি, হেলমেট ও লাইসেন্স বিহীন মোটরসাইকেল আরোহী, নছিমন, ভটভটি, প্রাইভেট কার ও বাসে তল্লাসী চালায় যৌথবাহিনী। 

সেনাবাহিনীর নীলফামারী ক্যম্পের ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফাহিম এহসান ও সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ওমর ফারুক এবং সৈয়দপুরে সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার মোস্তফা মজুমদারের নেতৃত্বে এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

অভিযানে নীলফামারী ইপিজেড পয়েন্টে পুলিশের উপপরিদর্শক প্রশান্ত রায় ও সৈয়দপুর পয়েন্টে উপপরিদর্শক সুজন অংশগ্রহন করেন।

সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফাহিম এহসান জানান, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সাধারণ জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করছে। যৌথ বাহিনীর চেকপোস্ট পরিচালনার মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যাতে মানুষ নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে।

তিনি জানান, গত ২মার্চ থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়। এ পর্যন্ত সদর ও সৈয়দপুর উপজেলায় ২৫২টি মামলায় আট লাখ ৩৬ হাজার ৫ শ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে নীলফামারী সদরে ১৪২ টি মামলায় চার লাখ ৭০ হাজার ৬০০ টাকা এবং সৈয়দপুরে ১১০টি মামলায় তিন লাখ ৬৫ হাজার ৯শ টাকা। 

তিনি আরো জানান, এ কার্যক্রমের ফলে জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

চেকপোস্টের মাধ্যমে লাইসেন্স ও হেলমেট বিহীন মোটরসাইকেল আরোহী এবং কার মাইত্রোবাসে অধিক যাত্রী পরিবহনে সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়াও বাস, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাসী হচ্ছে।

মন্তব্য

পর্যটনশিল্পে নতুন দিগন্ত হতে পারে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা বরগুনা

মিজানুর রহমান, বরগুনা
মিজানুর রহমান, বরগুনা
শেয়ার
পর্যটনশিল্পে নতুন দিগন্ত হতে পারে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা বরগুনা
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা বরগুনা

বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষা বরগুনা, যেখানে প্রকৃতি তার অপার সৌন্দর্যের হাতছানি দিয়ে ডাকছে ভ্রমণপিপাসুদের। অপার সম্ভাবনাময় এ জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ছড়িয়ে আছে সমুদ্রের গর্জন, সবুজ বনানীর শীতল পরশ, আর বন্যপ্রাণীর দুরন্তপনা।

বরগুনার তালতলীর আশারচর, সোনাকাটা, টেংরাগিরি সংরক্ষিত বনাঞ্চল, শুভ সন্ধ্যা কিংবা পাথরঘাটার লালদিয়ারচর, হরিণঘাটা, বিহঙ্গ দ্বীপ প্রতিটি স্থানেই প্রকৃতি তার নিজস্ব রূপে ধরা দিয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় বরগুনার এই পর্যটন স্পটগুলোতে বাড়ছে আগ্রহ।

তবে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে পর্যটন শিল্পকে আরো সমৃদ্ধ করতে প্রয়োজন সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ।

এসব পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পরখ করা যাবে বঙ্গোপসাগরের শোঁ শোঁ গর্জন। শ্যামল ছায়ার কোমল পরশ, মায়াবী চিত্রল হরিণের দুরন্তপনা, রাখাইন নৃগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবনচিত্র, চরাঞ্চলের মানুষের জীবনযুদ্ধ যে কাউকে মুগ্ধ করে তুলবে। একই স্থানে প্রকৃতির এমন বাহারি সৌন্দর্যের সমাহার খুব কম জায়গায়ই মেলে।

বরগুনায় এমন কিছু স্থান রয়েছে, যেখানে এলে প্রকৃতির এমন নিবিড় সান্নিধ্য পাওয়া যায়।

টেংরাগিরি বনাঞ্চল

বঙ্গোপসাগরের কোলে ঘেঁষে গড়ে ওঠা তালতলী উপজেলার ফকিরহাটে অবস্থিত টেংরাগিরি এক সময় সুন্দরবনের অংশ ছিল। প্রাকৃতিক এই বনকে স্থানীয় লোকজন ‘ফাতরা বন’ হিসেবে চেনে। সুন্দরবনের পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্বাসমূলীয় টেংরাগিরি বনাঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি পায় ১৯৬৭ সালে।

12

তালতলী থেকে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পর্যন্ত বিস্তৃত এই বনের আয়তন ১৩ হাজার ৬৪৪ একর। ২০১০ সালের ২৪ অক্টোবর ৪ হাজার ৪৮ দশমিক ৫৮ হেক্টর জমি নিয়ে গঠিত হয় টেংরাগিরি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। এই বনাঞ্চলের তিন দিকে বঙ্গোপসাগর। বনাঞ্চলের সখিনা বিটে ২০১১ সালে ইকোপার্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়। টেংরাগিরি বনাঞ্চলের অভয়ারণ্যে হরিণ, শূকর, চিতাবাঘ, অজগর, কুমির, বানর, সজারুসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী রয়েছে।

সারি সারি গেওয়া, জাম, ধুন্দল, কেওড়া, সুন্দরী, বাইন, করমচা, বলই কেওয়া, তাল, কাঁকড়া, হেতাল, তাম্বুলকাটা গাছের মধ্যে এখানে ঘুরে বেড়ায় কাঠবিড়ালি, বানর, ডোরাকাটা বাঘসহ হাজার প্রজাতির জীবজন্তু। তালতলীর ২৩টি পল্লীতে বসবাস করছে কয়েক শ বছরের পুরোনো রাখাইন সম্প্রদায়। তাদের বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবন, প্রাচীন উপাসনালয়, বুদ্ধমূর্তিগুলো পর্যটকদের ভিন্ন মাত্রার আনন্দ দিবে।

সোনাকাটা ও আশারচর

টেংরাগিরি বনের খুব কাছেই আরেক নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাকেন্দ্র সোনাকাটা ও আশারচর চরাঞ্চল। তালতলী সদর থেকে খুব কাছেই বঙ্গোপসাগরের কোলে সোনাকাটা। এর একদিকে টেংরাগিরি বনের সবুজ নৈসর্গ আর অন্যদিকে বিশাল সৈকতের বুকে কান পাতলে শোনা যাবে বঙ্গোপসাগরের কুল কুল ধ্বনি। সোনাকাটায় দেখা যাবে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের সৌন্দর্য। বালিহাঁস, গাঙচিল, পানকৌড়িসহ হরেক পাখির কুজনে সব সময় মুখর থাকে আশারচর। তালতলী সদর থেকে আট কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত আশারচরে আছে শুঁটকির সাম্রাজ্য। রাতের নিস্তব্ধতার মধ্যে দূর সাগরের বুকে মাছ ধরতে নামা ছোট ছোট ডিঙিনৌকার টিপটিপ আলোর মিছিল দূর থেকে দেখলে মনে হবে ভাসমান কোনো শহর।

শুভ সন্ধ্যা সি বিচ

টেংরাগিরি বনের খুব কাছেই আরেক নৈসর্গিক সৌন্দর্যের স্থান শুভ সন্ধ্যা সি বিচ। তালতলী সদর থেকে খুব কাছেই বঙ্গোপসাগরের কোলে শুভ সন্ধ্যা সি বিচ। এর একদিকে টেংরাগিরি বনের সবুজ নৈসর্গ আর অন্যদিকে বিশাল সৈকতের বুকে কান পাতলে শোনা যাবে বঙ্গোপসাগরের গর্জন। এখান থেকে দেখা যাবে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত।

হরিণঘাটা বনাঞ্চল

মায়াবী হরিণের দল বেঁধে ছুটে চলা, চঞ্চল বানর আর বুনো শূকরের অবাধ বিচরণ, পাখির কলরবে সারাক্ষণ মুখর থাকে হরিণঘাটা বনাঞ্চল। পাথরঘাটা উপজেলায় বঙ্গোপসাগরের মোহনায় পায়রা-বিষখালী-বলেশ্বর তিন নদ-নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত হরিণঘাটা। সৃজিত এই বনে হরিণ, বানর, শূকর, কাঠবিড়ালি, মেছো বাঘ, ডোরাকাটা বাঘ, সজারু, উদ, শৃগালসহ অসংখ্য বুনো প্রাণীর বিচরণ। সুন্দরবনের চেয়ে আকৃতিতে বড় প্রজাতির মায়াবী চিত্রল হরিণের বিচরণস্থল হওয়ায় এই বনের নামকরণ হয়েছে হরিণঘাটা। দৃষ্টিনন্দন ঘন বন আর সবুজে ছাওয়া হরিণঘাটা বনের সৌন্দর্যকে আরো আকর্ষণীয় করেছে পাশাপাশি সুবিশাল তিনটি সৈকত লালদিয়া, পদ্মা, লাঠিমারা। এই বনাঞ্চল ৫ হাজার ৬০০ একর আয়তন নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে। ‘লালদিয়া সংরক্ষিত বনাঞ্চলে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও ইকো ট্যুরিজম সুযোগ বৃদ্ধি প্রকল্পের’ আওতায় ৯৫০ মিটার ফুটট্রেল (পায়ে হাঁটার কাঠের ব্রিজ) স্থাপন করা হয়েছে। রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার বেঞ্চ, ঘাটলা ও ইটের রাস্তা। মিঠাপানির জন্য খনন করা হয়েছে পুকুর।

9

গোড়া পদ্মা ইকো ফরেস্ট-মোহনা পর্যটন কেন্দ্র

বিষখালী-পায়রা-বলেশ্বর বঙ্গোপসাগরে মিলেছে সোনাতলা এলাকায়। তিন নদনদীর সঙ্গমস্থলে গড়ে উঠেছে প্রাকৃতিক নৈসর্গের আরেক লীলাভূমি গোড়া পদ্মা ইকো ফরেস্ট-মোহনা পর্যটন কেন্দ্র। সৃজিত এই বনভূমির আয়তন ৪ হাজার ৬০০ একর।

সারি সারি কেওড়া, গেওয়া গাছে ছাওয়া এই বনে শূকর, বিভিন্ন প্রজাতির সাপ, মেছো বাঘসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণি রয়েছে। রয়েছে একটি পিকনিক স্পট, কয়েকটি গোলঘর, একটি ডাকবাংলো ও পুকুর।

বরগুনা পর্যটন উদ্যোক্তা আরিফুর রহমান বলেন, সাগর, নদী ও সবুজ বনানীর মেলবন্ধনে গড়ে ওঠা বরগুনা জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর। তবে বরগুনার এই সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে প্রয়োজন যথাযথ পরিকল্পনা ও সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, বরগুনার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পর্যটন সম্ভাবনা উন্নয়নে জেলা প্রশাসন বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে, যা পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় পরিবেশ তৈরি করবে।

মন্তব্য

মিরসরাইয়ে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
শেয়ার
মিরসরাইয়ে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ঈদের দিন টেলিভিশন দেখতে যাওয়ার পর ৭ বছরের এক কন্যা শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বাড়ির মালিক দুলালের (৪৭) বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদের দিন বিকাল সাড়ে ৪টায় উপজেলার বারইয়ারহাট পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের চিনকি আস্তানা এলাকার শফী সওদাগর বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

দুলাল ওই বাড়ির মৃত ফকির আহমদের ছেলে। ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারে ৩০ বছর যাবৎ বারইয়ারহাট পৌরসভায় ভাড়াবাসায় থাকেন।

আরো পড়ুন
গোপালগঞ্জ কারা ফটকে স্বজনদের ভিড়

গোপালগঞ্জ কারা ফটকে স্বজনদের ভিড়

 

শিশুটির চাচা বলেন, ‘আমার বড় ভাই ও তার পরিবারসহ আমরা দুলাল ড্রাইভারের বাড়িতে টিনসেড ঘরে ভাড়া থাকি। ঈদের দিন (সোমবার) বিকেলে দুলাল প্রথমে আমার ভাতিজিকে চকলেট খাওয়ার জন্য ডাকে। তখন সে যায়নি। পরবর্তীতে আমার ভাতিজি যখন টেলিভিশন দেখার জন্য তাদের ঘরে যায় তখন দুলাল তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

পরবর্তীতে সে চিৎকার দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে চলে আসে। এ সময় দুলালের ঘরে কেউ ছিল না।’

তিনি আরো বলেন, ‘রাতে আমার ভাবিকে ভাতিজি সবকিছু খুলে বলে। আজ মঙ্গলবার সকালে আমার ভাবিসহ আমরা জোরারগঞ্জ থানায় গেলে সেখান থেকে পুলিশ আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়।

দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আমাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বলেন চিকিৎসক।’

আরো পড়ুন
ভাঙ্গায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ইউনিয়ন ওলামা দলের সভাপতি নিহত

ভাঙ্গায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ইউনিয়ন ওলামা দলের সভাপতি নিহত

 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক বাঁধন দাশ বলেন, ‘আজ মঙ্গলবার দুপুরে ৭ বছরের এক কন্যা শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে তার পরিবার নিয়ে আসে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা শেষে ধর্ষণের বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।’

জোরারগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার এসআই মো. ওয়াদুদ বলেন, ‘আজ মঙ্গলবার সকালে ধর্ষণের অভিযোগ এক কন্যা শিশুকে থানায় আনা হয়েছিল।

তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।’

আরো পড়ুন
৪১.৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা উঠতে পারে এপ্রিলে

৪১.৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা উঠতে পারে এপ্রিলে

 

জোরারগঞ্জ থানার ওসি সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘অভিযুক্ত দুলালকে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে মুহুরী প্রজেক্ট এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ