<p>ছোট পর্দার অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন ‘অভিনয়শিল্পী সংঘ’। সাম্প্রতিক বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া গণ-অভ্যুত্থানের সূত্র ধরে দারুণভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন সংগঠনটির বেশ কয়েকজন শিল্পী ও নেতৃস্থানীয়রা। এরপর সংগঠনটির সংস্কার চেয়ে নেতাদের সঙ্গে বসতে চেয়েছিলেন সংস্কারকামী শিল্পীরা। কিন্তু নেতারা সেটা করেন করেননি। এরপর ১০ সেপ্টেম্বর অভিনয়শিল্পী সংঘের কমিটি বিলুপ্ত করার কথা বলেন শিল্পীরা। সেটাও হয়নি।</p> <p>তবে থেমে নেই সংস্কারকামী শিল্পীদের প্রতিবাদের ভাষা। ‘দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পী সমাজ’-এর ব্যানারে আজ বিকেল ৩টায় ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবরে উপস্থিত হয়েছিল শিল্পীদের একাংশ। ‘কথা বলতে চাই, কথা শুনতে চাই’ শিরোনামে ওই জমায়েতে অভিনয়শিল্পীরা সংস্কার নিয়ে নানা মতামত তুলে ধরেন।</p> <p>এ সময় উপস্থিত ছিলেন আজমেরী হক বাঁধন, শ্যামল মাওলা, খায়রুল বাসার, মনোজ প্রামাণিক, সাবেরী আলম, সোহেল মণ্ডল, নাজিয়া হক অর্ষা, মোস্তাফিজুর নূর ইমরান, ইমতিয়াজ বর্ষণ, সমাপ্তি মাসুক, এলিনা শাম্মি, নির্মাতা ইমেল হকসহ অনেকেই উপস্থিত হয়েছিলেন।</p> <p>খায়রুল বাসার বলেন, “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা নজিরবিহীন। জুলাই-আগস্ট মাসে ৬ শতাধিক প্রাণ ঝরেছে। এই আন্দোলনে স্বৈরাচারী সরকারের পক্ষ নিয়ে আমাদের শিল্পীদের সংগঠন ‘অভিনয়শিল্পী সংঘ’র কিছু নেতা ও সদস্য আলো আসবেই গ্রুপ খুলেছিলেন। এখন আমরা রাস্তা দিয়ে চলতে গেল বন্ধুরা আলো আসবেই বলে আমাদের অপমান করে।  সরকার পতনের পর পুরো দেশে যখন সংস্কার চলছে তখন আমরা আমাদের শিল্পীদের সংগঠন ‘অভিনয়শিল্পী সংঘ’র সংস্কার চেয়েছি। আমরা তাদের সঙ্গে বসতে চেয়েছি। কিন্তু শিল্পী-অশিল্পী দোহাই দিয়ে তারা আমাদের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন, তা শিল্পীসুলভ বলে আমরা মনে করি না। তাই তাদের সসম্মানে বিদায় নেওয়া উচিত।’</p> <p>শ্যামল মাওলা বলেন, ‘কয়েক দিন হলো শিল্পীদের একটি রাজনীতি পক্ষ প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু এটা তো আমরা চাই না। আমরা একই পরিবার, এক ছাতার নিচে সবাই থাকতে চাই। আমাদের কোনো পক্ষ থাকতে পারে না। কারণ শিল্পীদের কোনো পক্ষ নেই। শিল্পীদের সব বিষয় নিয়ে আমরা শিল্পী সংঘের নেতাদের সঙ্গে আলাপে বসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে বসছেন না। আমরা কি তাহলে শিল্পী না? এটা আসলে কিসের কারণ।’</p> <p>নাজিয়া হক অর্ষা বলেন, ‘৫ আগস্টের পর নতুনভাবে আমাদের দেশের পথচলা শুরু হয়েছে। আমাদের সিনিয়র শিল্পীরা গত দুই মাসে যেসব কুকর্ম করেছেন তার কটুকথা আমাদেরও হজম করতে হয়েছে। এখন দেশের সবখানে সংস্কার চলছে। আমরা মনে করি, আমাদের শিল্পীদের জন্য সেটা আগে জরুরি। শিল্পী হিসেবে আমি তো কোনো দলভিত্তিক কাজে ছিলাম না। আমি তো ন্যায়কে ন্যায় বলব, অন্যায়কে বলব অন্যায়। যদি সেটা না করতে পারি তাহলে আমি কিসের শিল্পী। কিন্তু আমাদের সংগঠনের কিছু শিল্পী-নেতাদের কারণে আজ আমরা জনগণের প্রশ্নে মুখে পড়েছি। সে জন্য আমরা শিল্পী সংঘের কিছু বিষয় নিয়ে নেতাদের সঙ্গে বসতে চেয়েছি। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে বসতে নারাজ। শেষে আমি বলতে চাই, আপনার যদি আমাদের সঙ্গে না বসেন তবে এত দিন আপনারা যা করেছেন সেগুলোর উত্তর আপনাদের দিতেই হবে।’</p>