<p>ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও জনগণের ভাগ্য বদল হয় না, এমনটাই মনে করেন জনপ্রিয় অভিনেতা আফজাল হোসেন। উল্টো জনগণ দিনের পর দিন কয়েদ খাটে। আজ এসব বিষয় তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা দীর্ঘ পোস্ট করেছেন এই অভিনেতা। তিনি লেখেন, ‘বিনা দোষে কয়েদ খেটে চলেছে জনগণ। সেই কবে থেকে। একাত্তরে রক্ত-অশ্রুর বিনিময়ে দেশটা স্বাধীন হলো। দেশবাসী খুশিতে কেঁদে ফেলে- পেয়েছি প্রাণের দেশ। দিন যায়- খুশির কাঁন্দন আপনাআপনিই শুকিয়ে যায় আপন আপন গালে। নিজের দেশ হয়েছে ভেবেছিল যারা, তারা পদে পদে হোঁচট খেয়ে বুঝতে পারে, দেশটা নিজের বলে ভেবেছিল কিন্তু নিজের হয়নি। অনেক বছর ধরে জনগণ বা দেশবাসী দেখেছে, বুঝেছে। দেশবাসী চাইলেই দেশ নিজের হয়ে যায় না।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘দেশবাসী বারবার দেখেছে, দেশ তাদের- এটা শুধু মুখের কথা, কেবলই মুখে মুখে মালিকানা। সান্ত্বনা পুরস্কারের মতো। দেশকে পুরস্কার হিসেবে অন্যরা নিয়ে নেয়। অন্যরা মানে দলের নামে বিভিন্ন গোষ্ঠী। দেশ দলের হয়ে যায়, হয়ে যায় যে যখন সিংহাসনের দখল পায়- তাদের আর দলীয় কর্মীদের। কেউই কখনো দেশকে দেশের প্রকৃত মালিক জনগণের হতে দেয়নি। একদল চোখ-কান বুজে জীবনেও নামবে না ভেবে সিংহাসনে গ্যাট হয়ে বসে থেকেছে- অন্যরা ক্রমাগত ঠ্যালা-গুতো মেরেই চলেছে- নাম রে তোরা, আর কত দিন!  একেকটা দল বা গোষ্ঠী দেশটাকে নিজের করে পেতে জনগণ, দেশবাসীর দোহাই দিয়ে গেছে চিরকাল। জনগণের দেশ জনগণের হাতে আমরাই ফিরিয়ে দেব বলেছে- তা কথার কথা হয়েই থেকেছে শেষ পর্যন্ত।’</p> <p>সময় আর সরকার বদলালে কী হয় সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশবাসী বা জনগণ একবার নয়, বহুবার দেখেছে- যখন সময় বদলে গেছে, একদল নেমেছে, আর একদল জনগণের জয় হয়েছে বলে চড়ে বসেছে সিংহাসনে। নতুন মালিক এসে শাসন শুরু করেছে পুরাতনদের জেলে পাঠিয়ে। দেশবাসী ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দ্যাখে একদল চোখ মুছতে মুছতে জেলে গেল। তারপর ফিরল একদিন। তারা ফেরে হাসতে হাসতে বীরের বেশে। তত দিনে ক্ষমতায় থাকাদের নাট-বল্টু ঢিলা হয়ে গেছে। জেলে যাওয়ারা ফিরে এসে হালুমহুলুম করে- সর তোর, জনগণের দেশ জনগণের হাতে ফেরত দিতে এসেছি। সিংহাসন উল্টে গেলে হাজারটা কারণে পুরাতনদের যেতে হয় জেলে, জেলখানায়।’</p> <p>তিনি পোস্ট শেষ করেছেন এভাবে, ‘এই সিংহাসন টু জেলখানা, জেলখানা টু সিংহাসন চলছে ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে। দেশের এই মহাজনদের জেলখাটা বোধ হয় খুব কষ্টের হয় না, কারণ জেলযাপন শেষ হলে কপালে আবার ফিরে আসবে সিংহাসন- এই মুলাখানা নাকের ডগায় ঝুলতে থাকে। এ আমল যায়, সে আমল আসে- আমলের মানুষ যারা, তারাই দেশের মালিকানা পায়। দেশ পাওয়ার আনন্দ ভোগ করতে পারে। কোনো দলের না হওয়া জনগণের কাছে সারা জীবন দেশটা কারাগার, জেলখানা হয়েই থাকে। আমল থেকে আমলে তাদের জেলখাটা চলে- চলছেই। মুক্তি নেই তাদের। মুক্তি মেলে না। জেনেছে, সিংহাসন, দেশ কোনো দিনই তাদের হওয়ার নয়। এই যাবজ্জীবন কয়েদবাস সবচেয়ে মর্মান্তিক।’</p>