ঢাকা, সোমবার ০৭ এপ্রিল ২০২৫
২৪ চৈত্র ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, সোমবার ০৭ এপ্রিল ২০২৫
২৪ চৈত্র ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৬

বাংলাদেশের বাচ্চাদের দখলে 'ইন্টারন্যাশনাল রোবট ডি চ্যালেঞ্জ' স্বর্ণপদক

টেক প্রতিদিন ডেস্ক
টেক প্রতিদিন ডেস্ক
শেয়ার
বাংলাদেশের বাচ্চাদের দখলে 'ইন্টারন্যাশনাল রোবট ডি চ্যালেঞ্জ' স্বর্ণপদক

দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত ‘ইন্টারন্যাশনাল রোবট ডি চ্যালেঞ্জ’ প্রতিযোগিতায় একটি স্বর্ণ ও ব্রোঞ্জ পদকসহ চারটি টেকনিক্যাল অ্যাওয়ার্ড জিতেছে বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীরা। আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াড কমিটি আয়োজিত এ প্রতিযোগিতার ‘রোবো স্কলার’ বিভাগে স্বর্ণপদক জিতেছে জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী রাফিহাত সালেহ চৌধুরী। ‘রোবট ইন মুভি’ বিভাগে ব্রোঞ্জ জিতেছে চিটাগাং গ্রামার স্কুলের কাজী মোস্তাহিদ লাবিব।

বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াডের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিকস বিভাগের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল বলেন, গত বছর ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েই বাংলাদেশ দল একটি স্বর্ণপদক জিতেছিল।

এবার আন্তর্জাতিক রোবট ডি চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায়ও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা নিজেদের সক্ষমতা দেখাল।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শর্টস ভিডিও নির্মাতাদের জন্য সুখবর দিল ইউটিউব

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
শর্টস ভিডিও নির্মাতাদের জন্য সুখবর দিল ইউটিউব
ফাইল ছবি : এএফপি

শর্টস ভিডিও নির্মাতাদের জন্য সুখবর দিয়েছে ইউটিউব। সহজে ভিডিও সম্পাদনার সুযোগ দিতে নতুন পাঁচটি টুল যুক্ত করতে যাচ্ছে ভিডিও ইউটিউব।

এক ব্লগ বার্তায় ইউটিউব জানিয়েছে, শর্টস এডিটরে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে।

নতুন এই সুবিধার আওতায় বিল্ট-ইন ভিডিও এডিটরের মাধ্যমে সহজেই ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ডে দৃশ্যের ধরন অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে গান, সুর ও বার্তা যুক্ত করা যাবে।

এ ছাড়া শর্টস ভিডিওর টেমপ্লেটে ছবি ও ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট যুক্তের পাশাপাশি ফোনের গ্যালারি থেকে ছবি সংগ্রহ করে বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে কাস্টম স্টিকার তৈরি করা যাবে।

নতুন টুলগুলো চালু হলে নির্মাতারা দ্রুত ভালো মানের মিউজিক ভিডিওর শর্টস তৈরি করতে পারবেন।

তবে টুলগুলো কবে নাগাদ চালু করা হবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ জানানো হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, শিগগিরই পর্যায়ক্রমে টুলগুলো উন্মুক্ত করা হবে।

মন্তব্য

পেশাদার শেফের চেয়েও ভালো রান্না করবে মাস্কের রোবট

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
পেশাদার শেফের চেয়েও ভালো রান্না করবে মাস্কের রোবট
সংগৃহীত ছবি

এবার ধনকুবের ইলন মাস্ক এমন একটি রোবট উন্মোচন করেছেন যা পেশাদার শেফদের চেয়েও ভালো রান্না করে। ৫,০০০ ডলার মূল্যের এই রোবটটির নাম কালিনা। এটি মাস্কের নতুন একটি উদ্যোগ, যা টেসলার অধীনে ফুড টেকনোলজি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে কাজ করছে। 

যখন আমরা রান্না করতে গিয়ে হাত পুড়াচ্ছি, খাবার নষ্ট করে ফেলছি, তখন মাস্কের এআই-চালিত শেফ যান্ত্রিক নিখুঁততায় উন্নতমানের খাবার তৈরি করছে।

 

কিছু প্রাথমিক ব্যবহারকারীদের মতে, 'কালিনা' আসলে পেশাদার শেফদের থেকেও ভালো রান্না করে। 

ফলে, খাদ্য শিল্পে কাজ করা যে কারো জন্য এটি এক ধরনের অস্তিত্ব সংকট ডেকে আনতে পারে।

কালিনা একটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় রান্নার রোবট, যেটা সব কিছু করতে পারে। যেমন— রান্নার বিভিন্ন উপকরণ কাটা থেকে শুরু করে তৈরি করা খাবার প্লেটে উপস্থাপন পর্যন্ত।

এটি হাজার হাজার রেসিপি নিখুঁতভাবে প্রস্তুত করা, এআই আপডেটের মাধ্যমে নতুন রান্নার কৌশল শিখে ফেলা, আপনার পছন্দের স্বাদ অনুযায়ী ফ্লেভার অ্যাডজাস্ট করা।

এটি একেবারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে। এমনকি এতে ভয়েস কমান্ডও আছে, তাই আপনি আরামে বলতে পারেন, ‘কালিনা, আমাকে এই রান্নাটা করে দাও’, আর সেটা নিজে থেকেই করে ফেলবে।

এখন আসল প্রশ্নটা হলো: কালিনা কি মানুষের চেয়ে ভালো শেফ? তাহলে কি পেশাদার শেফদের চাকরি আর থাকবে না।

এমন প্রশ্নের জবাবে কালিনার প্রাথমিক ব্যবহারকারীরা বলছেন, কালিনার রান্না এতটাই নিখুঁত, ধারাবাহিক, আর অবিশ্বাস্যভাবে সুস্বাদু যে, এটা সত্যিই হয়তো মানব শেফদের ব্যবসা বন্ধ করে দিতে পারে। আপনি যদি চান রান্নাটা একদম আপনার পছন্দ অনুযায়ী হোক, কালিনা সেটাই করবে। কালিনা রোবটটি সাধারণ মানুষের মতো রান্নায় কোনো ধরণের ভুলও করে না। না লবণ কম, না অতিরিক্ত সেদ্ধ, না লবণ বেশি, ঝাল কম– এরকম কিছুই না।
প্রতিটি ডিশ প্রতিবারই নিখুঁতভাবে প্রস্তুত করে।

মাস্কের এই রোবটটি নিয়ে চিন্তিত সারা বিশ্বের রান্নাঘরে কাজ করা শেফরা। তবে কেউ কেউ বলছেন, কালিনা শেফদের জায়গা নেবে না, বরং তাদের সহকারী হিসেবে কাজ করবে—পেঁয়াজ কাটা বা সস নাড়ার মতো একঘেয়ে কাজগুলো করে দেবে, যাতে মানুষ সৃজনশীলতার ওপর বেশি মনোযোগ দিতে পারে।

আবার কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, রেস্তোরাঁ মালিকরা যদি বুঝে ফেলে যে, এইভাবে তারা লেবার খরচ বাঁচাতে পারবে, তাহলে ‘অটোমেটেড গ্যাস্ট্রোনমি’ বলার আগেই তারা মানুষকে বাদ দিয়ে রোবটে চলে যাবে।

আরো পড়ুন
ঈদের ছুটি শেষে চেনা রূপে রাজধানী

ঈদের ছুটি শেষে চেনা রূপে রাজধানী

 

তবে ইলন মাস্ক বলেছেন, কালিনা কারো কাজের জায়গা নিতে আসেনি, বরং আমাদের রান্নার ধরণকে উন্নত করতে এসেছে। সারাদিনের কাজ শেষে ক্লান্ত হয়ে গরম চুলার সামনে না দাঁড়িয়ে, মানুষ চাইলে একটা বাটনে চাপ দিয়ে রেস্টুরেন্ট-মানের খাবার খেতে পারবে।

মন্তব্য

কিভাবে ল্যাপটপের যত্ন নিলে দীর্ঘদিন ভালো থাকবে?

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
কিভাবে ল্যাপটপের যত্ন নিলে দীর্ঘদিন ভালো থাকবে?
সংগৃহীত ছবি

ল্যাপটপের সঠিক যত্ন নিলে তা অনেক দিন ভালো থাকে। তবে আমরা অনেকেই কাজের পর ল্যাপটপ বন্ধ করি না, একগাদা অ্যাপ্লিকেশন খোলা রাখি, কিংবা বিছানায় রেখে কাজ করি। এসব কারণে ল্যাপটপ দ্রুত গরম হয়ে যায় এবং এর আয়ু কমে যায়। তবে কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে আপনার ল্যাপটপ দীর্ঘদিন ভালো থাকতে পারে।

চলুন, জেনে নেওয়া যাক কিভাবে ল্যাপটপের যত্ন নেবেন।

নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন : ল্যাপটপে অতিরিক্ত ধুলা জমলে তা গরম হয়ে যেতে পারে। তাই নিয়মিত ল্যাপটপ পরিষ্কার রাখুন এবং ময়লা জমতে দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

সতর্কতার সাথে পরিষ্কার করুন : নরম সুতির কাপড় দিয়ে ল্যাপটপ মুছুন।

কি-বোর্ড পরিষ্কার করতে ব্রাশ ব্যবহার করুন, কিন্তু কখনো পানি বা গ্লাস ক্লিনার দিয়ে ল্যাপটপ পরিষ্কার করবেন না।

উষ্ণ জায়গা থেকে দূরে রাখুন : গরম জায়গা, হিটার, রান্নাঘরের কাছে ল্যাপটপ রাখা উচিত নয়। গাড়িতে ল্যাপটপ ফেলে রাখা ও বিছানায় ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করবেন না। এতে ল্যাপটপ দ্রুত গরম হয়ে যেতে পারে এবং ক্ষতি হতে পারে।

তরল পদার্থ থেকে সাবধান থাকুন : চা, কফি বা ঠাণ্ডা পানীয় ল্যাপটপের কাছে রাখবেন না। তরল পদার্থ পড়ে গেলে যন্ত্রাংশের ক্ষতি হতে পারে।

সঠিকভাবে সরান : ল্যাপটপ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়ার সময় ডিসপ্লে ধরবেন না। ল্যাপটপের নিচের অংশ ধরে সাবধানে সরান। ডিসপ্লে ধরে নিলে জয়েন্ট আলগা হয়ে যেতে পারে।

ল্যাপটপ কভার ব্যবহার করুন : ল্যাপটপ কভার ও উপযুক্ত ল্যাপটপ ব্যাগ ব্যবহার করুন। এতে ধুলা, ময়লা ও আঘাত থেকে ল্যাপটপ নিরাপদ থাকবে।

বার্ষিক সার্ভিসিং করুন : প্রতিবছর একটি নির্ভরযোগ্য সার্ভিস সেন্টারে ল্যাপটপ সার্ভিসিং করিয়ে নিন। এতে ল্যাপটপ দীর্ঘদিন ভালো থাকবে।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

মন্তব্য

আসলেই কি অতীত কিংবা ভবিষ্যৎ ঘুরে আসা সম্ভব?

বিবিসি বাংলা
বিবিসি বাংলা
শেয়ার
আসলেই কি অতীত কিংবা ভবিষ্যৎ ঘুরে আসা সম্ভব?
সংগৃহীত ছবি

কোনোভাবে কি অতীতে ফিরে যাওয়া যায়? অথবা ঘুরে দেখে আসা সম্ভব ভবিষ্যতের কোনো একটা সময়ে কী ঘটবে? বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী বা সিনেমায় এমন দৃশ্য মূর্ত হয়ে ওঠে প্রায়শ। কিন্তু বিষয়টি বহু বছর ধরে পদার্থবিজ্ঞানীদের চিন্তার জগতকেও আচ্ছন্ন করে রেখেছে।

টাইম ট্রাভেল নিয়ে এখন পর্যন্ত যত বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী রচিত হয়েছে, 'ডক্টর হু' সেগুলোর মধ্যে নিঃসন্দেহেই সবচেয়ে বিখ্যাত কাহিনীগুলোর একটি। 'দ্য টাইম মেশিন' ও 'ব্যাক টু দ্য ফিউচার' নামের কল্পকাহিনীতেও টাইম ট্রাভেলের মূল আকর্ষণগুলোর পাশাপাশি বিরোধগুলো তুলে ধরার প্রচেষ্টা দেখা গেছে।

টাইম ট্রাভেলকে মূল বিষয়বস্তু রেখে নির্মিত টিভি সিরিজ 'ডক্টর হু'তে টার্ডিস নামের বিশেষ এক ধরনের যান দেখা যায়, যেটি ব্যবহার করে একজন ব্যক্তি মুহূর্তেই যেকোনো স্থানে চলে যেতে পারেন। বিশেষ এই যানে চড়েই গল্পের প্রধান চরিত্র তথা ডক্টর টাইম ট্রাভেল করে থাকেন।

কিন্তু বাস্তবে বিজ্ঞানীরা কি কখনো এমন একটি যন্ত্র তৈরি করতে পারবেন, যেটিতে চড়ে আমরা মুহূর্তেই অতীতে ফিরে গিয়ে আমাদের পূর্বপুরুষদের কিংবা ভবিষ্যতে গিয়ে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে দেখে আসতে পারব?

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে আমাদের জানতে হবে যে, সময় আসলে কীভাবে কাজ করে। এখন পর্যন্ত যে কথাটি আমরা বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি, সেটি হলো: ভবিষ্যৎ ঘুরে আসা হয়তো সম্ভব, কিন্তু অতীতে ফিরে যাওয়া ভীষণ কঠিন কিংবা একেবারেই অসম্ভব।

আপেক্ষিকতা তত্ত্ব
আলবার্ট আইনস্টাইনের 'আপেক্ষিকতা তত্ত্ব' দিয়েই তাহলে আলোচনাটা শুরু করা যাক। এই তত্ত্বে স্থান, কাল, ভর এবং মধ্যাকর্ষণ শক্তি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট একটি বর্ণনা পাওয়া যায়।

আইনস্টাইনের এই তত্ত্বের গুরুত্বপূর্ণ একটি বক্তব্য হলো– সময়ের প্রবাহ ধ্রুব বা অপরিবর্তনীয় কিছু নয়, বরং পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে সময়ের গতি বাড়তে বা কমতে পারে।

"এখানেই টাইম ট্রাভেলের বিষয়টি আসতে পারে যেটি বৈজ্ঞানিকভাবে সঠিক এবং এর মধ্যে বাস্তববিশ্বের প্রতিফলন রয়েছে," বলছিলেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ইয়র্কের জ্যোর্তিপদার্থবিজ্ঞানী ড. এমা ওসবোর্ন।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, আপনি যদি দ্রুত গতিতে ভ্রমণ করেন, তাহলে সময় আরো ধীরে যায়। অর্থাৎ সময়ের গতি কমে আসে। তবে এর প্রভাব দৃশ্যমান হওয়ার জন্য আপনাকে ছুটতে হবে আলোর গতিতে।

এটি টুইন বা যমজ প্যারাডক্সের জন্ম দেয়, যেখানে যমজ দুই ভাইয়ের একজন নভোচারী হয়ে আলোর গতিতে মহাকাশে ভ্রমণ করেন এবং অন্যজন একই সময়ে পৃথিবীতে অবস্থান করেন। এক্ষেত্রে পৃথিবীতে থাকা ভাইয়ের চেয়ে ধীরগতিতে বয়স বাড়বে নভোচারী ভাইটির।

যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানী ভ্লাটকো ভেড্রাল বলেন, "যদি আপনি মহাকাশে ভ্রমণ করেন এবং ফিরে আসেন, তাহলে আপনি প্রকৃতপক্ষেই আপনার যমজ ভাইয়ের চেয়ে ছোট।"

একইভাবে, আপনি যদি ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ গহ্বরের মতো তীব্র মহাকর্ষীয় কোনো জায়গায় থাকেন, তাহলেও দেখা যাবে সময় ধীরগতিতে যাচ্ছে।

"সেখানে পায়ের তুলনায় আপনার মাথা দ্রুত বুড়িয়ে যাবে, কারণ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ আপনার পায়ের কাছে বেশি শক্তিশালী," বলেন জ্যোর্তিপদার্থবিজ্ঞানী ওসবোর্ন।

আর এটিই ডক্টর হু টিভি সিরিজের ১০ নম্বর সিজনের শেষ পর্ব 'ওয়ার্ল্ড এনাফ অ্যান্ড টাইমে' দেখানো হয়েছে।

পর্বটিতে ডক্টর ও তার বন্ধুরা কৃষ্ণ গহ্বরের কাছে একটি মহাকাশযানে আটকা পড়েন। মহাকাশযানটির সামনের দিকটি কৃষ্ণ গহ্বরের বেশ কাছাকাছি ছিলো। ফলে পেছনের অংশের তুলনায় এর সামনের অংশে সময় ধীরগতিতে পার হতে দেখা যায়।

পৃথিবীতে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এসব আপেক্ষিক প্রভাব এতটাই কম যে সচরাচর সেগুলো আমাদের চোখে পড়ে না। কিন্তু গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমের (জিপিএস) জন্য আমরা যে স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহার করি, সেগুলোকে এটি প্রভাবিত করে থাকে।

"আকাশের ঘড়িগুলো পৃথিবীতে স্থাপিত ঘড়িগুলোর চেয়ে দ্রুত বেগে চলে এবং বিরামহীনভাবে সেগুলোর পুনর্বিন্যাস করতে হয়," বলছিলেন ওসবোর্ন।

তিনি আরো বলেন, "যদি আমরা এটি (পুনর্বিন্যাস) না করি, তাহলে গুগলম্যাপ প্রতিদিন প্রায় ১০ কিলোমিটার (ছয় মাইল) পর্যন্তও ভুল নির্দেশনা দিতে পারে।"

কাজেই আপেক্ষিকতা তত্ত্ব অনুসারে ভবিষ্যতে যাওয়া সম্ভব এবং এর জন্য আমাদের কোনো টাইম মেশিনের প্রয়োজন নেই। আমাদের হয় আলোর গতির কাছাকাছি গতিতে ভ্রমণ করতে হবে, অথবা তীব্র মহাকর্ষীয় কোনো জায়গায় সময় কাটাতে হবে।

অতীতে ফিরে যাওয়া কঠিন
তবে অতীতে ফিরে যাওয়া অনেক কঠিন। "এটি সম্ভবও হতে পারে, আবার নাও হতে পারে," বলেন কানাডার সেন্ট ক্যাথারিনসের ব্রক ইউনিভার্সিটির তাত্ত্বিক পদার্থবিদ বারাক সোশানি।

তিনি বলেন, "এ বিষয়ে এখন পর্যপ্ত আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, সেটি পর্যাপ্ত নয়। সম্ভবত এ সংক্রান্ত তত্ত্বের সংখ্যাও অপর্যাপ্ত।"

তবে অতীত ঘুরে দেখার কিছু বিকল্প পথ আপেক্ষিকতা তত্ত্বেই পাওয়া যায়, যদিও সেগুলো এখনো তাত্ত্বিক আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

কানাডার ওয়াটারলুতে পেরিমিটার ইনস্টিটিউট ফর থিওরিটিক্যাল ফিজিক্সের তাত্ত্বিক মহাবিশ্বতত্ত্ববিদ কেটি ম্যাক বলেন, "অতীতে ফিরে যাওয়ার জন্য মানুষ মূলত স্থান ও সময়ের পুনর্বিন্যাসকে একটা সূত্রে বেঁধে ফেলে।"

এটি 'আবদ্ধ সময়ের' মতো একটি চক্র তৈরি করে যেখানে মানুষ সময় ও স্থানের দূরত্ব অতিক্রম করে এসে আবারও আগের জায়গায় ফেরত আসে।

মার্কিন যুক্তিবিদ কুর্ট গ্যোডেল ১৯৪৯ সালের একটি গবেষণায় এ ধরনের একটি গাণিতিক বিবরণ প্রকাশ করেছিলেন, যেটি পরবর্তীতে অনেকেই অনুসরণ করেছেন। তবে বিভিন্ন কারণে সেটি খুব একটা কার্যকর পদ্ধতি বলে বিবেচিত হয়নি।

"মহাবিশ্বের কোথাও (অতীতে ফিরে যাওয়ার মতো) এমন কোনো পদ্ধতি আদৌ আছে কি-না, আমরা সেটা জানি না। এটি কেবলই একটি তাত্ত্বিক ধারণা। এখন পর্যন্ত এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি," বলেন কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানী ভেড্রাল।

ডক্টর হু সিরিজের ক্লাসিক পর্ব 'হেভেন সেন্টে' একটি ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে লাখ লাখ বছর ধরে ডক্টরের জীবনে একই ঘটনা ঘটতে থাকে। তবে সেখানে 'আবদ্ধ সময়ের' মতো কোনো বক্ররেখা দেখানো হয়নি, বরং একটি টেলিপোর্টারের বারংবার ব্যবহার লক্ষ্য করা গেছে।

১৯৯১ সালের একটি গবেষণায় পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড গট একটি বিশেষ পরিস্থিতির গাণিতিক বিবরণ তৈরি করেন, যেখানে দু'টি 'মহাজাগতিক স্ট্রিং' বিপরীত দিক থেকে একে অপরকে অতিক্রম করে।

তবে বিষয়টি এখন পর্যন্ত কেবলই অনুমাননির্ভর। কিছু তত্ত্বমতে, মহাবিশ্ব গঠনের শুরুর দিকে এ ধরনের স্ট্রিং তৈরি হয়ে থাকতে পারে। তবে সেগুলোর একটিকেও এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

তাত্ত্বিক কেটি ম্যাক বলেন, "মহাজাগতিক স্ট্রিং আছে বলে আমাদের বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।"

এমনকি তাদের অস্তিত্ব থাকলেও সমান্তরালে অবস্থান করা দু'টি মহাজাগতিক স্ট্রিং খুঁজে পাওয়া একটি অবিশ্বাস্য ব্যাপার।

ওয়ার্মহোল
আরেকটি ঘটনা আছে যেটি আপাতদৃষ্টিতে আপেক্ষিকতার তত্ত্বের সঙ্গে যায়। সেটি হচ্ছে– ওয়ার্মহোলস বা সুড়ঙ্গ পথ।
তাত্ত্বিকভাবে বলা হয়ে থাকে যে, স্থান ও সময়কে কাগজের টুকরার মতো এমনভাবে ভাঁজ করা সম্ভব যেখানে দুরবর্তী দু'টি বিন্দুর মধ্যে সহজে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য একটি সুড়ঙ্গ তৈরি করা যায়।

"সাধারণ আপেক্ষিকতায় ওয়ার্মহোলগুলো তাত্ত্বিকভাবে সম্ভব," বলেন ভেড্রাল।

কিন্তু এক্ষেত্রেও কিছু সমস্যা রয়েছে। কারণ, মহাবিশ্বে ওয়ার্মহোলের অস্তিত্ব আছে এমন কোনো প্রমাণ আমাদের হাতে নেই। 

"গাণিতিকভাবে এটি দেখানো হয়েছে যে ওয়ার্মহোলের অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকতে পারে। কিন্তু আসলেই সেগুলোর অস্তিত্ব থাকা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি ব্যাপার," বলছিলেন জ্যোর্তিপদার্থবিজ্ঞানী ড. এমা ওসবোর্ন।

আর মহাবিশ্বে যদি ওয়ার্মহোলগুলোর অস্তিত্ব থেকেও থাকে, তাহলে সেগুলো খুবই অল্প সময়ের জন্য টিকে থাকবে।
"ওয়ার্মহোলগুলোকে প্রায়ই দু'টি কৃষ্ণ গহ্বর হিসেবে বর্ণনা করা হয়ে থাকে যেগুলোর একটি অন্যটির সঙ্গে যুক্ত," বলেন ড. ওসবোর্ন।

এর অর্থ হলো ওয়ার্মহোলগুলোর মধ্যে অবিশ্বাস্যরকম তীব্র মহাকর্ষীয় জায়গা থাকতে পারে। "এক্ষেত্রে নিজস্ব মাধ্যাকর্ষণ বলেই সেটি ধ্বসে পড়তে পারে," বলেন জ্যোর্তিপদার্থবিজ্ঞানী ওসবোর্ন।

এছাড়া ওয়ার্মহোলগুলো আকারে অনুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে দেখার মতো ছোট হওয়ার কথা। ফলে মানুষ তো দূরের কথা, একটি ব্যাকটেরিয়াও এর মধ্যে ঠিকঠাকভাবে বসানো যাবে না।

তবে তাত্ত্বিকভাবে ওপরের সমস্যা দু'টিরই সমাধান করা সম্ভব। কিন্তু সেটার জন্য বিপুলমাত্রায় নেগেটিভ এনার্জি বা ঋণাত্মক শক্তি প্রয়োজন। এটি এমন শক্তি যা পরমাণুর চেয়ে ছোট জায়গার মধ্যেও কাজ করতে পারে।

জ্যোর্তিপদার্থবিজ্ঞানী ওসবোর্ন বলেন, "একটি শক্তিক্ষেত্রে সার্বিকভাবে অবশ্যই ধনাত্মক শক্তি থাকতে হয়। তবে এর মধ্যে অল্পমাত্রায় হলেও ঋণাত্মক শক্তি থাকতে পারে।"

"অল্পমাত্রার এই ঋণাত্মক শক্তিকে হয়তো আপনি বাড়াতে চাইতে পারেন, কিন্তু কোনোভাবেই সেটি সম্ভব বলে আমি মনে করি না," বলেন তিনি।

এই মতকে সমর্থন করে ভেড্রালও বলছেন, "এটি খুব একটা বাস্তবসম্মত প্রস্তাব নয়।"

কোয়ান্টাম মেকানিক্স
আপেক্ষিকতা তত্ত্ব নিয়ে তো অনেক কথা হলো। এবার জানা যাক, মহাবিশ্বসংক্রান্ত আরেক বিখ্যাত তত্ত্ব 'কোয়ান্টাম মেকানিক্স' টাইম ট্রাভেল নিয়ে কী বলছে?

আপেক্ষিকতা তত্ত্ব যেখানে মানুষ এবং মহাবিশ্বের মতো বড় বড় জিনিসের আচরণ বিশ্লেষণ করে, সেখানে কোয়ান্টাম মেকানিক্স কাজ করে পরমাণুর চেয়েও ছোট কণা, যেমন– ইলেকট্রন ও ফোটন নিয়ে।

কোয়ান্টাম মেকানিক্সের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হলো 'নন-লোকালিটি'। কোনো একটি জায়গায় একটি কণার অবস্থানের পরিবর্তন তার সঙ্গে সম্পর্কিত অন্য আরেকটি কণাকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এই ব্যাপারটিকে আইনস্টাইন দূরের "ভূতুড়ে ক্রিয়া" হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

দার্শনিক এমিলি অ্যাডলাম বলেন, "নন লোকালিটির সম্ভাবনা নিয়ে পদার্থ বিজ্ঞানীদের অনেকেই বেশ অসন্তুষ্ট। কারণ তাৎক্ষণিকভাবে এর প্রভাব দেখতে হলে তথ্যকে আলোর গতির চেয়ে দ্রুত গতিতে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌঁছে দিতে হবে, যা অসম্ভব বলে মনে করা হয়।"

আর এ কারণেই পদার্থবিজ্ঞানীদের কেউ কেউ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে 'নন-লোকালিটি' বাদ দিয়ে বিকল্প কিছু পন্থার প্রস্তাব করেছেন।

তবে বড় সমস্যাটি হলো প্রস্তাবিত ওইসব নতুন পন্থায় সময় সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা অনেক ক্ষেত্রেই বজায় রাখা সম্ভব হয় না।

অ্যাডলাম বলছেন, "নন-লোকালের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখার পরিবর্তে প্রতিক্রিয়াটিকেই বরং আপনি ভবিষ্যতের দিকে পাঠাবেন। প্রতিক্রিয়াটি কিছু সময় সেখানে ঘুরে ফিরে অতীতের দিকে চলে যাবে।"

অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, ভবিষ্যতের ঘটনা অতীতের ওপর প্রভাব ফেলছে। অথচ আমাদের প্রচলিত জ্ঞান সেটি বলে না।
ঘটনাগুলোকে আমরা অতীত থেকে বর্তমান এবং সেখান থেকে ভবিষ্যৎ পর্যন্ত একটি সরল রেখায় চিন্তা করি। অথচ অদ্ভুত এই কোয়ান্টাম পরীক্ষা বলছে যে, ভবিষ্যৎ ঘুরে এসে একটি তথ্য অতীতে ফিরে যেতে পারে।

তবে এই ব্যাখ্যার খুব একটা সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা নেই। "পদার্থবিজ্ঞানীদের অনেকেই একে নন-লোকালিটির মতোই অস্বস্তিকর বলে মনে করেন," বলেন দার্শনিক অ্যাডলাম।

এছাড়া নন-লোকালিটি পর্যবেক্ষণে যেখানে ক্ষুদ্র কণা নিয়ে কাজ করা হয়, সেখানে একজন মানুষ বা কাগজের টুকরোর মতো একটি জিনিস নিয়ে কাজ করাটা এর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।

"অতীতে কোনো বার্তা পাঠানো অসম্ভব ব্যাপার," বলেন অ্যাডলাম। একটি উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটা পরিষ্কার করা যাক। ধরা যাক, অ্যাডাম ও বেথ দু'জন গবেষক।

এদের মধ্যে অ্যাডাম একটি পরীক্ষাগারে কিছু একটা পরীক্ষা করছে। এখানে তার পরীক্ষায় কী ফলাফল আসবে, সেটি নির্ভর করছে একই জিনিস পরবর্তীতে বেথ কীভাবে পরীক্ষা করছে, সেটির ওপর।

অর্থাৎ ভবিষ্যৎ থাকা বেথের পরীক্ষা অতীতে অ্যাডামের পরীক্ষার ফলাফলকে নিয়ন্ত্রণ করছে। কিন্তু এটি কেবল তখনই ঘটবে যখন অ্যাডাম অতীতে যা করেছে এবং দেখেছে, সেটার সবকিছু বেথ ধ্বংস করে ফেলতে পারে।

“আপনি অতীতে একটি সংকেত পাঠাচ্ছেন এবং এর জন্য আপনাকে অতীতের সমস্ত কাজকর্মের প্রমাণ ধ্বংস করতে হচ্ছে। ফলে বাস্তবে দেখা যাবে, আপনি সেটি কোনো কাজেই লাগাতে পারবেন না,” বলেন অ্যাডলাম।

সেজন্য আমরা বলতে পারি যে, ভবিষ্যতে ভ্রমণ করা সম্ভব হলেও অতীতে ঘুরে আসা প্রায় অসম্ভব।

তবে যে তত্ত্বগুলোর ওপর ভিত্তি করে আমরা এমন সিদ্ধান্তে পৌছেছি, সেগুলোর প্রায় সবক’টিই অসম্পূর্ণ, যা অন্যতম বড় দুর্বলতা।

এর মধ্যে আপেক্ষিকতা ও কোয়ান্টাম মেকানিক্স তত্ত্ব দু’টি ব্যবহার করে মহাবিশ্বের কিছু নির্দিষ্ট বিষয় ভালোমত ব্যাখ্যা করা গেলেও সবকিছু ব্যাখ্যা করা যায় না।

সবকিছু ব্যাখ্যা করতে হলে আমাদের আরও কার্যকর একটি তত্ত্ব প্রয়োজন, যেটি একইসাথে আপেক্ষিকতা ও কোয়ান্টাম মেকানিক্সকেও একীভূত করে। যদিও গত কয়েক দশকের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত সেই ধরনের কোনো তত্ত্ব দাঁড় করানো সম্ভব হয়নি।

আরো পড়ুন
স্ত্রী-সন্তানের ওপর রাগ করে নিজবাড়িতে আগুন

স্ত্রী-সন্তানের ওপর রাগ করে নিজবাড়িতে আগুন

 

“কাজেই ওই রকম তত্ত্ব আবিষ্কার না পাওয়া পর্যন্ত (টাইম ট্রাভেল নিয়ে) আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না,” বলেন তাত্ত্বিক পদার্থবিদ বারাক সোশানি।

অবশ্য বিষয়টিকে আমরা অন্যভাবেও দেখতে পারি। যেমন- এই নিবন্ধটি পড়তে আপনার যতটুকু সময় লেগেছে, ততক্ষণে আপনি সাত মিনিট বা তারও বেশি সময় ভ্রমণ ভবিষ্যতের দিকে ভ্রমণ করে ফেলেছেন।
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ