গরমে ঠাণ্ডা বেলের শরবত দেহ ও মনকে যেমন চনমনে করে, তেমনি শরীরেরও বিভিন্ন উপকার করে। কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম, আলসারের মতো রোগ দমন করে এবং রক্ত পরিষ্কার করে এই বেল। বেলের গুণাগুণ বলার অপেক্ষা রাখে না। বেলের শরবত আমাদের অনেকের কাছে খুবই প্রিয়।
তবে বাজারে বা ফুটপাতে যে পদ্ধতিতে বেলের শরবত তৈরি হয় তা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই বাড়িতেই শরবত বানিয়ে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস খেতে পারেন। এর ফলে ফিট থাকবেন সারা দিন। আজ জানুন বেলের শরবত তৈরির সহজ ৫টি রেসিপি।
বেল-দইয়ের শরবত
উপকরণ
আরো পড়ুন
ঈদ আতিথেয়তা জমবে ভিন্ন স্বাদের কাবাবে
- বেল–১টি
- দই–আধা কাপ
- চিনি–৪ টেবিল চামচ
- লবণ–এক চিমটি
- আইস কিউব–পরিমাণমতো
- ঠাণ্ডা পানি–পরিমাণমতো
প্রণালী
প্রথমে বেলের খোসা ফাটিয়ে নিন। চামচের সাহায্যে ফল বের করুন। এবারে চামচ বা হাতের সাহায্যে ম্যাশ করে দানা আলাদা করে ফেলুন। ঠাণ্ডা পানি ঢেলে পুনরায় আলতো করে ম্যাশ করুন।
তারপর ছাঁকনিতে করে ম্যাশড বেল থেকে চামচ দিয়ে চেপে রস ছেঁকে নিন।
এবার রসে চিনি, দই ও লবণ দিয়ে মিশিয়ে নিন। প্রয়োজনে পানি যোগ করতে পারেন। সার্ভিং গ্লাসে প্রথমে আইস কিউব দিয়ে তার ওপর শরবত ঢেলে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন।
আরো পড়ুন
শহর ও গ্রামের ঈদ : সংস্কৃতির পার্থক্য
বেল-পুদিনার শরবত
উপকরণ
- বেল–বড় ১টি
- পুদিনা পাতা–প্রয়োজনমতো
- ঠাণ্ডা পানি–১ লিটার
- লবণ–প্রয়োজনমতো
- আইস কিউব–প্রয়োজনমতো
প্রণালী
খোসা থেকে ফল বের করে হাতে চটকে দানা আলাদা করে ফেলুন।
তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে আবার হাতের সাহায্যে আলতো করে চটকে নিন। এবারে ছাঁকনিতে রস নিয়ে কাঠের চামচের সাহায্যে পিষে ছোবা আলাদা করে ফেলুন।
ছাঁকা রসে চিনি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। গ্লাসে আইস কিউব আর পুদিনা পাতা কুচির ওপর শরবত ঢেলে পরিবেশন করুন। চাইলে পরিবেশনের আগে সামান্য লবণ দিতে পারেন, না দিলেও ক্ষতি নেই।
আরো পড়ুন
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মুখ ফোলা থাকে কেন
বেল-জিরার শরবত
প্রণালী
- বেল–২টি
- চিনি–৪ টেবিল চামচ
- জিরা গুঁড়া–প্রয়োজনমতো
- লবণ–প্রয়োজনমতো
- ঠাণ্ডা পানি
প্রণালী
বেলের খোসা ভেঙে ফল বের করে নিন। একটি বাটিতে বেল ঢালুন এবং বেলের দ্বিগুণ পরিমাণ পানি দিয়ে দিন। এবারে ম্যাশ করুন। ম্যাশড বেল ছাঁকনিতে নিয়ে চামচের সাহায্যে রস চিপে বের করুন। এবারে রসে প্রয়োজনমতো ঠাণ্ডা পানি বা আইস কিউব মিশিয়ে নিন। তারপর লবণ ও জিরা গুঁড়া দিয়ে দিলেই ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা বেলের শরবত তৈরি।
আরো পড়ুন
কাজুবাদামেরও রুটি হয় নাকি
বেল-গুড়ের শরবত
প্রণালী
- বেল–মাঝারি সাইজের ৩টি
- গুড়–১২ টেবিল চামচ বা প্রয়োজনমতো
- এলাচ গুঁড়া–১ চা চামচের তিন ভাগের এক ভাগ
- ভাজা জিরার গুঁড়া–১ চা চামচের তিন ভাগের এক ভাগ
- বিট লবণ–দুই চিমটি
- ঠাণ্ডা পানি–৩ থেকে ৩.৫ কাপ
প্রণালী
বেল ৩টা ভেঙে নিন। এরপরে বড় চামচ দিয়ে ভেতরের ফল বের করে বাটিতে রাখুন। এতে ১ কাপ পানি মেশান এবং ২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পরে একটি ভেজিটেবল ম্যাশার দিয়ে বেল ম্যাশ করে নিন।
এবারে একটি বড় ছাঁকনিতে ম্যাশ করা বেল ছাঁকুন। ছাঁকার সময়ে চামচ দিয়ে জোরে জোরে পিষবেন যাতে দানা আর ছোবা আলাদা হয়ে যায়। আর অবশ্যই একটু একটু করে পানি মেশাবেন ছাঁকার সময়ে, আধা কাপ থেকে পৌনে এক কাপের মতো।
আরো পড়ুন
ঈদ আপ্যায়নে রাখুন ভিন্ন স্বাদের স্ন্যাকস
রস পুরোপুরি ছাঁকা হয়ে গেলে এতে গুড় বা সম পরিমাণ চিনি মেশাবেন। মিষ্টির পরিমাণ চাইলে কমবেশি করতে পারবেন। আর রসে পানির পরিমাণও বাড়াতে বা কমাতে পারেন। এরপরে জিরা গুঁড়া, এলাচ গুঁড়া ও বিট লবণ দিয়ে দিন। এবার গ্লাসে ঢেলে পরিবেশন করুন।
বেলের শরবত
উপকরণ
- বেল–মাঝারি সাইজের ১টি
- বিট লবণ–আধা চা চামচ বা স্বাদমতো
- চিনি–৭-৮ চা চামচ
- ভাজা জিরার গুঁড়া–আধা চা চামচ
- আইস কিউব–প্রয়োজনমতো
- পানি–প্রয়োজন মতো
আরো পড়ুন
বিশ্বজুড়ে ঈদের জনপ্রিয় খাবার
প্রণালী
বেলের খোসা ভেঙে ভেতরের ফলটা বের করে একটি বাটিতে রাখুন। এবারে এর সাথে ২ গ্লাস পানি মিশিয়ে চামচ দিয়ে ভালো করে নেড়ে ১ ঘণ্টা ঢেকে রাখুন। বেল নরম হওয়ার জন্য এভাবে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
১ ঘণ্টা পর একটি পটেটো ম্যাশার দিয়ে পানিতে থাকা বেলকে ম্যাশ করুন। এতে দানা আর ছোবা আলাদা হয়ে যাবে। এবারে একটি বড় ছাঁকনিতে বেল ছেঁকে ছোবা আর দানা আলাদা করে ফেলুন। যে রসটা থাকবে তাতে আরো ১-২ গ্লাস পানি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। ঠাণ্ডা করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে আইস কিউব নিন। একে একে চিনি, বিট লবণ, আর জিরা গুঁড়া দিয়ে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে গেল মজাদার বেলের শরবত।
আরো পড়ুন
মাথা ব্যথা মানেই কি মাইগ্রেনের সমস্যা?