<p>সিগারেটের বিকল্প ইলেকট্রনিক সিগারেট বা ই-সিগারেট। তরুণদের মধ্যে ই-সিগারেটের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। ফাইবার বা প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি এই ব্যাটারিচালিত যন্ত্রের ভেতর একটি প্রকোষ্ঠ থাকে। সেটির মধ্যে ভরা থাকে বিশেষ ধরনের তরল মিশ্রণ।</p> <p>যন্ত্রটি গরম হয়ে ওই তরলের বাষ্পীভবন ঘটায় এবং ব্যবহারকারী সেই বাষ্প টেনে নেন ফুসফুসে, যা ধূমপানের অনুভূতি দেয়। এই পদ্ধতিকে বলে ‘ভেপিং’। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ই-সিগারেট সাধারণ সিগারেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি ক্ষতিকারক।  গবেষণায় দেখা গেছে, এটি ব্যবহারে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৭১ শতাংশ, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৫৯ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারে।<br /> ই-সিগারেটে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি সিগারেটের চেয়ে বেশি।</p> <p><strong>ভুল ধারণা</strong></p> <p>অনেকেই মনে করেন, ই-সিগারেট ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে সাহায্য করে। কিন্তু ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের মতে, ই-সিগারেট ধূমপান ছাড়তে সাহায্য করে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটির প্রভাব সাধারণ সিগারেটের চেয়েও ক্ষতিকর।</p> <p>ই-সিগারেটের তরল মিশ্রণের (ই-লিকুইড) মধ্যে থাকে প্রপেলিন গ্লাইসল, গ্লিসারিন, পলিইথিলিন গ্লাইসল, নানাবিধ ফ্লেভার ও নিকোটিন।</p> <p>ই-সিগারেটের তরল মিশ্রণ গরম হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব রাসায়নিক থেকে সাধারণ সিগারেটের ধোঁয়ার সমপরিমাণ ফরমালডিহাইড উৎপন্ন হয়। এ ছাড়া ই-সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকে অতি সূক্ষ্ম রাসায়নিক কণা, যা ভীষণ ক্ষতিকারক। এর থেকে মুখ, গলা জ্বালা, বমিভাব ও কাশি দেখা দিতে পারে।</p> <p>এ ছাড়া নিকোটিন থেকে দ্রুত আসক্তি তৈরি হয় ই-সিগারেটের প্রধান উপকরণ।</p> <p>সিগারেট ছাড়ার বাসনায় যাঁরা ই-সিগারেট ব্যবহার করেন, তাঁদের বরং উল্টো এটির ওপর আসক্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটা থেকে ফুসফুসে নানা ধরনের অসুখ দেখা দিতে পারে।</p> <p><strong>আছে ক্যান্সারের ঝুঁকি</strong></p> <p>ই-সিগারেটে যেভাবে রাসায়নিক নিকোটিন ব্যবহার করা হয়, এর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে মৃত্যুও হতে পারে। এর ধোঁয়ায় এমন কিছু উপাদান আছে, যা থেকে ক্যান্সার হওয়ার যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে।</p> <p>ধূমপান নিষিদ্ধ অনেক জায়গায় ই-সিগারেট ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়ে থাকে। আর তাতেই এর চাহিদা বাড়ছে। ই-সিগারেট সেবন করে আসলে ধূমপান ছাড়া যায় না। বরং ধূমপানের পেছনে বেশি খরচ করে মানুষ আরো বড় বিপদ ডেকে আনছে।</p> <p><strong>পরামর্শ দিয়েছেন</strong></p> <p>অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান</p> <p>মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ</p> <p>হেলথকেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লি.</p> <p>শ্যামলী, ঢাকা।</p>