<p>পেটের মেদ নিয়ে চিন্তিত নয়, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। শরীরের অন্যান্য অঙ্গের আগে পেটে মেদ জমে। এর ফলে পছন্দের পোশাকগুলো পরতে গিয়েও বাঁধে বিপত্তি। শুধু তাই নয়, হৃদরোগ থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস পর্যন্ত হতে পারে পেটের অতিরিক্ত মেদের কারণে। পেটে জমে থাকা অতিরিক্ত মেদ কমাতে ডায়েট ও লাইফস্টাইলে পরিবর্তন আনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।</p> <p>আজকের প্রতিবেদনে জানুন সকালের ৭টি অভ্যাস সম্পর্কে, যেগুলো মেনে চললে পেটের অতিরিক্ত মেদ দূর করা কিছুটা হলেও সহজ হয়ে যাবে।</p> <p><strong>পেটে মেদ জমার কারণ</strong></p> <ul> <li>অপর্যাপ্ত ব্যায়াম</li> <li>অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস</li> <li>মানসিক চাপ</li> <li>কম ঘুম</li> <li>বংশগত কারণ</li> </ul> <p><strong>পেটের মেদ কমাবে যে ৭টি অভ্যাস</strong></p> <p>প্রতিদিন সকালে সাতটি কাজ করলে কমবে পেটের মেদ। কী সেই কাজ, চলুন জেনে নিই।</p> <p><strong>দিনের শুরুতেই এক গ্লাস পানি</strong></p> <p>ওজন কমানোর অন্যতম সহজ উপায় হলো দিনভর হাইড্রেটেড থাকা। শরীরকে হাইড্রেটেড রাখার জন্য দিন শুরু করুন এক গ্লাস পানি পান করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস পানি পান করা হলে সারাদিন এনার্জেটিক থাকা যাবে। চিয়া সিড সারারাত ভিজিয়ে সকালে পান করতে পারেন অথবা আজওয়া ভিজিয়ে রেখে সেটাও পান করতে পারেন।</p> <p>এছাড়াও হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করলেও পেটের মেদ কমতে পারে। এগুলো কেবল শরীরকে হাইড্রেট করে না, বরং হজমেও সহায়তা করে। তবে অ্যাসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যা থাকলে খালি পেটে লেবু পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন।</p> <p><strong>মেডিটেশন করুন</strong></p> <p>দিনের শুরুতে ১০ মিনিট ধরে মেডিটেশন করুন। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে মেডিটেশন বেশ কার্যকর। মানসিক চাপের কারণে ওজন বাড়তে পারে। এটি পেটের চর্বি বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে। পেটের মেদ কমাতে চাইলে প্রতিদিন সকালে ১০ মিনিট মেডিটেশন করুন। এর ফলে মানসিক চাপ কমবে এবং হরমোন ব্যালেন্স করতে সাহায্য করবে।</p> <p><strong>প্রোটিন সমৃদ্ধ নাস্তা করুন</strong></p> <p>কথায় আছে, সকালের নাস্তা রাজার মত করতে হয়। সত্যিই তাই। আমাদের দিনভর এনার্জেটিক রাখতে সকালে একটু ভালো নাস্তা তো করতেই হবে। সকালের নাস্তার তালিকায় রাখুন প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। এতে করে রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল থাকবে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকবে। ফলে বার বার খাবার খাওয়ার ক্রেভিং হবে না, আবার বেশি ক্ষুধাও লাগবে না। তাই ডিম, দই বা প্রোটিন স্মুদির মতো খাবার সকালের নাস্তার তালিকা রাখতে পারেন।</p> <p><strong>নিয়মিত ব্যায়াম করুন</strong></p> <p>ওজন কমাতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই। পেটের মেদ কমানোর জন্য করতে পারেন সহজ কিছু ব্যায়াম। ব্যায়াম করার সবচেয়ে ভালো সময় হলো সকালবেলা। মর্নিং ওয়াক, জগিং, ইয়োগা অথবা এইচআইআইটি ওয়ার্কআউট করুন। দিনের শুরুতে আগে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করে শরীরকে অ্যাকটিভ করে তারপর ব্যায়াম করুন। এটি দ্রুত ক্যালরি বার্ন করতে সাহায্য করবে। প্রতিদিন সকালে কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করার জন্য রাখুন।</p> <p><strong>সারাদিনের খাবারের প্ল্যানিং করুন</strong></p> <p>সারাদিন কী কী খাবেন, তার একটা প্ল্যান সকালেই করে ফেলুন। সকালের এই প্ল্যানিং আপনার সারাদিনের জাংক ফুড বা আনহেলদি খাবার খাওয়াকে কন্ট্রোল করবে।</p> <p><strong>ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খান</strong></p> <p>সকালের নাস্তাটা প্রোটিন ও ফাইবারযুক্ত খাবার দিয়ে করুন। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে পেটের মেদ কমাতে ভূমিকা পালন করে। তাই ফাইবার আছে এমন শস্য, ফলমূল, শাকসবজি বেছে নিন।</p> <p><strong>পর্যাপ্ত ঘুমানো নিশ্চিত করুন</strong></p> <p>শুনতে কিছুটা অবাক লাগলেও ঘুম পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে। অপর্যাপ্ত ঘুম হরমোনের ব্যালেন্স ঠিক রাখে না, খাবারের রুচি বাড়ায় এবং পেটে মেদ জমতে ভূমিকা রাখে। কম ঘুম মানসিক চাপও বাড়িয়ে দেয় এবং সেখান থেকেও পেটে মেদ জমে। এজন্য বিশেষজ্ঞরা সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ভালো ঘুম সারাদিন কাজের শক্তি যোগানোর পাশাপাশি পেটের মেদ কমাতেও সাহায্য করবে।</p> <p><strong>পেটের মেদ কমাতে যা খাবেন</strong></p> <p>সকালের এই কাজগুলোর পাশাপাশি কিছু খাবার খেতে পারেন মেদ কমানোর জন্য। এই খাবারগুলো পেটে মেদ কমাতে সাহায্য করে।</p> <ul> <li><strong>ডিম:</strong> প্রোটিন সমৃদ্ধ এই খাবারটি পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে। ডিম পেট দীর্ঘক্ষণ ভরিয়ে রাখে এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করে।</li> <li><strong>কফি:</strong> কফিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে, যা পেটের মেদ কমাতে ভূমিকা রাখে। তবে ব্ল্যাক কফি বা চিনি ছাড়া কফি মেদ কমাতে বেশি কার্যকর।</li> <li><strong>গ্রিন টি:</strong> ওজন কমানোর জন্য গ্রিন টি বেশ জনপ্রিয়। গবেষণায় দেখা গেছে গ্রিন টি মেটাবলিজম ইম্প্রুভ করে এবং পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান পেটের জমে থাকা মেদ কমাতে খুব বেশি কার্যকর।</li> </ul> <p>নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও সঠিক জীবনযাপনের মাধ্যমে শরীরের বাড়তি মেদ কমিয়ে ফেলা সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে অব্যশই আপনার ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।</p> <p>সূত্র : সাজগোজ</p>