ঢাকা, শনিবার ১২ এপ্রিল ২০২৫
২৮ চৈত্র ১৪৩১, ১২ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, শনিবার ১২ এপ্রিল ২০২৫
২৮ চৈত্র ১৪৩১, ১২ শাওয়াল ১৪৪৬
জানা-অজানা

টেপা পুতুল

আব্দুর রাজ্জাক
আব্দুর রাজ্জাক
শেয়ার
টেপা পুতুল

[ষষ্ঠ শ্রেণির চারুপাঠ বইয়ের ‘কত দিকে কত কারিগর’ প্রবন্ধে টেপা পুতুলের কথা উল্লেখ আছে]

মাটি দিয়ে কুমোররা নানা রকম জিনিস তৈরি করে। এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্ম হলো টেপা পুতুল। বাংলার কুমোররা নরম এঁটেল মাটি দিয়ে হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞানের মাধ্যমে টিপে টিপে এই পুতুল তৈরি করে। হাত দিয়ে টিপে তৈরি করে বলে এ পুতুলকে টেপা পুতুল বলে।

টেপা পুতুল বাংলার ঐতিহ্যেরও একটি অংশ। কবে, কোথায় এ পুতুল বানানো শুরু হয়েছে সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায় না। বাংলাদেশে মূলত মেয়েরাই টেপা পুতুল তৈরি করে। তবে বর্তমানে পুরুষরাও এ কাজে জড়িত হচ্ছে।
এ পুতুল বানাতে কারিগরকে নিজস্ব মেধা ও দক্ষতা প্রয়োগ করতে হয়। পুতুলের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হাতের সাহায্যেই গড়ে তোলা হয়।

মাটির বুটি দিয়ে বা কাঠির রেখা টেনে এ পুতুলের অলংকার ও পোশাকের আভাস ফুটিয়ে তোলা হয়। পরে রোদে শুকাতে দেওয়া হয়।

শুকানো হয়ে গেলে পোড়ানো হয় আগুনে। এভাবেই টেপা পুতুল বানানো হয়। সাধারণত বাচ্চাদের খেলনাসামগ্রী হিসেবে টেপা পুতুল বানানো হয়। উল্লেখযোগ্য কিছু খেলনা পুতুল হলো বউ-জামাই, কৃষক, নথ পরা বউ। শৌখিন ব্যক্তিরা গৃহসজ্জার জন্য এ পুতুল সাজিয়ে রাখেন।
গ্রামবাংলার মেলায় টেপা পুতুলের পসরা সাজানো থাকে। বর্তমানে শহুরে মেলায়ও এ পুতুল দেখা যায়।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

স্বরণ

শামসুন নাহার মাহমুদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
শামসুন নাহার মাহমুদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
সংগৃহীত ছবি

শামসুন নাহার মাহমুদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ছিলেন এদেশের নারী মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী, বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও লেখক। ১৯০৮ সালের ফেনী (বৃহত্তর নোয়াখালী) জেলার গুথুমা গ্রামে তার জন্ম। তার পিতা মুহম্মদ নুরুল্লাহ ছিলেন মুন্সেফ।

খানবাহাদুর আব্দুল আজিজ তার মাতামহ এবং হাবীবুল্লাহ্ বাহার চৌধুরী ছিলেন সহোদর ভ্রাতা। 

শিক্ষাজীবনের শুরুতে তিনি চট্টগ্রামের খাস্তগীর গার্লস হাইস্কুলে ভর্তি হন, কিন্তু সামাজিক অনুশাসনের কারণে তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। পরে নিজ চেষ্টায় তিনি প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে ম্যাট্রিক (১৯২৬) পাশ করেন। পরে ডাক্তার ওয়াহিদউদ্দীন মাহমুদের সঙ্গে বিয়ে হওয়ায় (১৯২৭) তিনি উচ্চশিক্ষার সুযোগ পান।

 

তিনি ১৯৪২ সালে এমএ পাশ করেন। বিএ পাশ করার পর বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত মেমোরিয়াল হাইস্কুল থেকে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে তিনি বেগম রোকেয়ার নারীশিক্ষা ও নারীমুক্তি আন্দোলনে যুক্ত হন।

শামসুন্নাহার লেডি ব্রাবোর্ন কলেজে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন।

কলকাতায় থাকাকালে কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে তার বহুবার সাক্ষাৎ হয়েছে। নজরুল তাকে সাহিত্যচর্চায় উদ্বুদ্ধ করেন। শামসুন্নাহার নিয়মিত বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সম্মেলনে যোগ দিতেন। 

১৯৫২ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের পক্ষ থেকে তুরস্ক ও মধ্যপ্রাচ্য সফর করেন। তিনি কলম্বোয় অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব উইমেন দলের নেতৃত্ব দেন এবং সমগ্র এশিয়ার জন্য এই আন্তর্জাতিক মৈত্রী সংঘের আঞ্চলিক পরিচালক পদে নিয়োজিত হন।

এ ধরনের কাজের প্রয়োজনে তিনি বিভিন্ন সময়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, ইতালি, ফ্রান্স-এসব দেশ ভ্রমণ করেন। ১৯৬২ সালে তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।

তার প্রথম লেখা কবিতা প্রকাশিত হয় কিশোরদের ‘আঙ্গুর’ নামক মাসিক পত্রিকায়। আইএ পড়ার সময় তিনি ‘নওরোজ ও আত্মশক্তি’ পত্রিকার মহিলা বিভাগ সম্পাদনা করতেন। কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘বুলবুল’ (১৯৩৩) পত্রিকা হবীবুল্লাহ্ বাহার ও শামসুন্নাহার যুগ্মভাবে সম্পাদনা করেছেন। 

তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ-পুণ্যময়ী (১৯২৫), ফুলবাগিচা (১৯৩৫), বেগম মহল (১৯৩৬), রোকেয়া জীবনী (১৯৩৭), শিশুর শিক্ষা (১৯৩৯), আমার দেখা তুরস্ক (১৯৫৫), নজরুলকে যেমন দেখেছি (১৯৫৮) ইত্যাদি। 

১৯৬৪ সালের ১০ এপ্রিল (আজকের দিনে) ঢাকায় তার মৃত্যু হয়।

মন্তব্য

সব সময় আমরা চাঁদের এক দিকই দেখি কেন?

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সব সময় আমরা চাঁদের এক দিকই দেখি কেন?
সংগৃহীত ছবি

আমরা পৃথিবী থেকে চাঁদকে যেভাবে দেখি, তাতে সব সময় চাঁদের একই দিক চোখে পড়ে। চাঁদের রূপ পূর্ণিমা বা অমাবস্যায় বদলালেও, তার গায়ে থাকা গর্ত বা দাগগুলো সব সময় একই রকম দেখা যায়।

চাঁদ নিজে ঘোরে, আর একই সঙ্গে পৃথিবীর চারপাশেও ঘোরে। চাঁদ নিজের অক্ষের চারপাশে একবার ঘুরতে সময় নেয় ২৭.৩ দিন।

পৃথিবীকে ঘিরে চাঁদের আবর্তনও হয় একই সময়ের মধ্যে। এ কারণে চাঁদ যতই ঘুরুক, আমাদের দিক থেকে সবসময় এটির একদিকই দেখা যায়।

তবে পুরোপুরি একপাশই যে দেখা যায়, সেটাও ঠিক না। চাঁদের হালকা দুলুনি (যার নাম লুনার লাইব্রেশন) থাকার কারণে আমরা একটু বেশি অংশ দেখতে পাই, মোটামুটি ৫৯% পর্যন্ত চাঁদের মুখ দেখা যায়।

এই ঘটনাকে বলা হয় টাইডাল লকিং। চাঁদ পৃথিবীর সঙ্গে টাইডালি লকড বা আকর্ষণ বলের কারণে একইভাবে আটকে গেছে। এটি সিনক্রোনাস রোটেশন নামেও পরিচিত।

চাঁদ যেভাবে টাইডালি লকড হলো
প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে যখন চাঁদ নতুন তৈরি হচ্ছিল, তখন সেটি অনেক দ্রুত ঘুরছিল।

কিন্তু পৃথিবীর মহাকর্ষ বল চাঁদের ওপর আকর্ষণ তৈরি করে। যার ফলে চাঁদের ঘোরা ধীরে ধীরে কমে যায়। এক সময় চাঁদের নিজস্ব অক্ষপথে ঘোরার গতি আর পৃথিবীকে একবার ঘুরে আসার সময় এক হয়ে যায়। তখন থেকেই চাঁদ পৃথিবীর দিকে একই দিক ধরে রাখে।
 
তাহলে চাঁদের আলো কম-বেশি লাগে কেন?
যদিও আমরা সবসময় চাঁদের একদিক দেখি, সেই অংশের সবটাই কিন্তু একসঙ্গে সূর্যের আলো পায় না।
সেটা নির্ভর করে চাঁদ কোথায় আছে এবং সূর্য থেকে আলো কিভাবে পড়ছে তার ওপর। এই পরিবর্তনকে বলা হয় চাঁদের রূপ পরিবর্তন বা ফেজ। চাঁদের রূপ বা ফেজ বদলের পুরো একটা চক্র থাকে— নতুন চাঁদ (অমাবস্যা) থেকে পূর্ণ চাঁদ, আবার নতুন চাঁদে ফিরে আসা পর্যন্ত। এই পুরো চক্র শেষ হতে সময় লাগে প্রায় ২৯.৫ দিন।
কখনো অর্ধেক চাঁদ দেখা যায়, কখনো একটু বেশি মাত্রায়, কখনো আবার পুরোটা (পূর্ণিমা) আবার কখনো একেবারেই দেখা যায় না (অমাবস্যা)। মনে রাখা জরুরি যে চাঁদের অর্ধেক অংশ সব সময় সূর্যের আলোয় ভাসে। কিন্তু আমরা সব সময় সেই অংশটুকুই দেখতে পাই না।

অনেকে চাঁদের যেদিক আমরা দেখতে পাই না, তাকে ডার্ক সাইড বলেন। কিন্তু সেটি সব সময় অন্ধকার থাকে না। তাই জ্যোতির্বিদরা সেটাকে ফার সাইড অব দ্য মুন বা চাঁদের দূরের দিক বলেন।

সূত্র : বিবিসি

মন্তব্য

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

গত ৭ ও ৮ এপ্রিল কালের কণ্ঠের পত্রিকার প্রিন্ট এবং অনলাইন ভার্সনে ‘ক্লিনিকের জমি দখলে বাধা দেওয়ায় ইউপি সদস্যসহ ৫ জনকে কুপিয়ে জখম’ ও ‘পাঁচজনকে কুপিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের জমি দখল’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন দুটিতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন মো. আল আমিন ভূঁইয়া।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, প্রকাশিত প্রতিবেদনটি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে এবং শব্দের ভুল চয়ন ও ব্যবহারের কারণে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে এবং আমার নাম ও অবস্থান ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদটি সম্পূর্ণ ভুয়া, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আমাকে সামাজিক ও দাপ্তরিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য স্থানীয় নূর মোহাম্মদ মেম্বার ষড়যন্ত্র করছেন।

আরো পড়ুন
সালমান আর নাসির ছাড়া তেমন কোনো পুরুষ আমি দেখতে পাইনি

সালমান আর নাসির ছাড়া তেমন কোনো পুরুষ আমি দেখতে পাইনি

 

প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, বোড়ারচর কমিউনিটি ক্লিনিকের সাথেই আমাদের ক্রয়কৃত জায়গা বিদ্যমান রয়েছে।

উক্ত জায়গায় আমার সহোদর ভাই একটি দোকান নির্মাণ করতে যাওয়ায় স্থানীয় ইউপি সদস্য ও থানা পুলিশ বাধা প্রদান করলে কাজ বন্ধ রেখে পরের দিন রবিবার স্থানীয় মুরাদনগর থানায় আমিসহ আমার ভাই ওসির সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করি। ওসির সাথে স্পষ্টতই আমরা বলি যে, হাসপাতালের জন্য বরাদ্দকৃত জায়গা ৫ শতক। অথচ স্থানীয় ইউপি সদস্য নূর মোহাম্মদ মেম্বার অত্যন্ত কৌশলে ও তার হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য মুরাদনগর উপজেলা হাসপাতালের প্রধান ডা. সিরাজুল ইসলাম মানিক কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি পত্রে হাসপাতালের বরাদ্দকৃত জায়গা ৫ শতকের স্থলে ৬ শতক দেখিয়ে আমাকে সরেজমিন দখলকারী হিসেবে একটি মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ স্থানীয় থানায় দেওয়া হয়, যেখানে আমি ওই দিন ঢাকায় সশরীরে উপস্থিত ছিলাম। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার বোড়ারচর বাজারে গিয়ে নির্মাণকাজে বাধা প্রদান করলে আমার ভাই মো. কামাল কাজ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখেন।
শনিবার নুর মোহাম্মদ মেম্বারের সাথে কোনো ধরনের মারামারি সংঘটিত হয়নি। এমনকি এই জায়গা দখল নিয়ে কোনো ধরনের মামলাও হয়নি।

প্রতিবাদে আরো বলা হয়, প্রকৃতভাবে নূর মোহাম্মদ মেম্বার হাসপাতাল সংলগ্ন সরকারি প্রাইমারি স্কুলের রাস্তার (হালটে) উপরে অবৈধভাবে ৭/৮টি দোকান নির্মাণ করে দীর্ঘ অনেক বছর যাবত ভোগ দখল করে আসছে যার প্রতিবাদ করলে রবিবার মো. কামাল ভূঁইয়া কে নূর মোহাম্মদ মেম্বারসহ তার দলবল আক্রমণ করে  আমার ভাইকে মাথায় গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে। সংবাদে আমাকে আসামি দেখালেও আমার নামে কোন মামলা নেই এবং মারামারির সাথে আমার কোন সংশ্লিষ্টতাই ছিল না।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

‘যন্ত্রণাদায়ক যৌন সম্পর্কে’ বাধ্য করেন স্বামী, মুখ খুললেন স্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
‘যন্ত্রণাদায়ক যৌন সম্পর্কে’ বাধ্য করেন স্বামী, মুখ খুললেন স্ত্রী
সংগৃহীত ছবি

বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন স্বামী এবং জোর করে তাকে বিয়ে করতে বাধ্য করেছিলেন। 'রিপলিং' নামে সিঙ্গাপুরের বহু বিলিয়ন ডলারের একটি সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রসন্ন শঙ্করের বিরুদ্ধে ফের সামনে এল বিস্ফোরক অভিযোগ। 

সংবাদ সংস্থা দ্য সান ফ্রান্সিসকো স্ট্যান্ডার্ডের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, প্রসন্নের স্ত্রী দিব্যা শশীধরের আদালতে জমা করা নথি, ইমেল, ছবি এবং অন্যান্য রেকর্ড সামনে আসতেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। এছাড়াও ওই সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে দিব্যা অভিযোগ করেন, কীভাবে তার স্বামী তাকে লাগাতার যৌন সম্পর্কে বাধ্য করেছিলেন।

এমনকি বাইরে থেকে লোক ধরে এনে জোর করে তার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ এবং নগ্ন ভিডিও প্রচারের মতো গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। 

ওই সাক্ষাৎকারে দিব্যা জানিয়েছেন, তার ওপর স্বামীর অত্যাচার লাগামছাড়া হয়ে গিয়েছিল। স্বামীর জন্য তাকে ক্যারিয়ারও বিসর্জন দিতে হয়। শুরু হয়েছিল বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দিয়ে।

ধীরে ধীরে তা গড়িয়েছে আরো কয়েক ধাপ। 

প্রথমে অভিযোগ তুলেছিলেন প্রসন্ন। স্ত্রীর বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ এনে মুখ খুলেছিলেন তিনি। এ বার স্ত্রীকে ধর্ষণ, একাধিক নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক, নিজের শিশুপুত্রকে অপহরণ— এমনই নানা পাল্টা অভিযোগে প্রসন্নের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দিব্যা।

সিঙ্গাপুরের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ‘রিপলিং’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রসন্ন। জনপ্রিয় পত্রিকা ফোর্বসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রসন্নের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৩০ কোটি ডলার। স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ এবং ছেলের হেফাজতের মামলা চলছিল তার।

সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে ব্যবসায়ী দাবি করেছেন যে, দিব্যা তার বিরুদ্ধে সন্তানকে অপহরণের অভিযোগ তোলার কারণে তাকে পালাতে হয়েছে। ছেলে তার সঙ্গে ভাল আছে এবং সুখে আছে।

স্ত্রীর দায়ের করা অপহরণ এবং ধর্ষণের অভিযোগের তদন্তে নেমে চেন্নাই পুলিশ তাকে হেনস্থা করছে বলেও দাবি করেছেন প্রসন্ন।

প্রসন্নের দাবি, কোনও এফআইআর ছাড়া ‘অবৈধ ভাবে’ তাঁর মোবাইল ফোনের অবস্থান, গাড়ি, ইউপিআই এবং আইপি নজরে রাখছে পুলিশ।

স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে থাকার অভিযোগও তুলেছেন তিনি। বিষয়টি জানতে পেরেই নাকি প্রসন্নের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পথে হেঁটেছিলেন দিব্যা। কত খোরপোশ দেওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনাও করেছিলেন দু’জনে মিলে। তবে অভিযোগ, টাকার অঙ্কে সন্তুষ্ট হননি দিব্যা। এর পরেই দিব্যা ভুয়ো অভিযোগ দায়ের করেন বলে দাবি করেন প্রসন্ন।

যদিও দিব্যার দাবি একেবারেই ভিন্ন। তার অভিযোগ, যৌনকর্মীদের সঙ্গে লাগাতার সঙ্গম করতেন প্রসন্ন। কখনও কখনও যৌনকর্মীদের বাড়িতেও নিয়ে আসতেন। আবার কখনও দিব্যাকে নিজের বন্ধুদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার জন্য জোর করতেন প্রসন্ন। প্রতিবাদ করলে উল্টে তাকে ‘উদারমনস্ক’ হতে বলতেন প্রসন্ন। দিব্যার উপর ২৪ ঘণ্টা নজর রাখার জন্য প্রসন্ন বাড়িতে একাধিক সিসিটিভিও বসিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।

এ ছাড়াও অভিযোগ, কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াতেন প্রসন্ন। তবে কোথাওই বেশি দিন থাকতেন না। ‘দ্য সান ফ্রান্সিসকো স্ট্যান্ডার্ড’-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য এ বিষয়ে যাবতীয় ছবি, ভিডিয়ো এবং নথি প্রমাণ হিসাবে দেখিয়েছেন দিব্যা।

দিব্যার দাবি, প্রসন্নের সঙ্গে সংসার করা তাঁর কাছে ‘দুঃস্বপ্নের মতো’। সংবাদমাধ্যমে তিনি এ-ও দাবি করেছেন, ২০১৬ সালে সন্তান জন্ম দেওয়ার পর পরই প্রসন্ন তাঁকে ‘যন্ত্রণাদায়ক যৌনমিলনে’ বাধ্য করেছিলেন। প্রসন্ন নাকি বলেছিলেন যে, পুরুষদের ‘প্রধান চাহিদা’ সঙ্গম। দিব্যা রাজি না হওয়ায় প্রসন্ন হুমকি দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ দিব্যার।
দিব্যার কথায়, ‘‘প্রসন্ন আমায় বলত, যৌনতা আমার জন্য একটি প্রাথমিক চাহিদা। তোমাকে এটা করতে হবে। তুমি কতটা ব্যথায় ভুগছ তা কোনও ব্যাপার নয়।’’

দিব্যা আরো বলেছেন, ‘‘আক্ষরিক অর্থেই আমায় প্রসন্ন বলত, যদি তুমি এটা না করো, তা হলে আমি বাইরে গিয়ে সঙ্গম করব।’’

‘দ্য সান ফ্রান্সিসকো স্ট্যান্ডার্ড’-এর প্রতিবেদনে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে দিব্যাকে লেখা প্রসন্নের একটি ইমেল উদ্ধৃত করা হয়েছে। সেই মেলে প্রসন্ন তাকে যৌনকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার এবং তাদের দর জিজ্ঞাসা করার কথা বলেছিলেন। অন্য একটি ইমেলে স্ত্রীকে ‘উদারমনস্ক’ হওয়ার পরামর্শও নাকি তিনি দিয়েছিলেন।

অন্য দিকে, ‘দ্য সান ফ্রান্সিসকো স্ট্যান্ডার্ড’কে দেওয়া অন্য একটি ইমেলে প্রসন্ন লিখেছেন, তার বিরুদ্ধে দিব্যার তোলা অভিযোগ ভুয়ো। উদারমনস্ক হওয়ার প্রস্তাব যখন দিয়েছিলেন তখন তাদের বিয়ে পানসে হয়ে গিয়েছিল। তাতে শারীরিক সম্পর্ক ছিল না। আর সে কারণেই তিনি রাগের মাথায় ওই কথা বলেছিলেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, ‘অন্যায় ভাবে’ গ্রেফতারের ভয়ে ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন প্রসন্ন। তার খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। তবে প্রসন্নের দাবি, তার ছেলে নিরাপদে এবং সুখে থাকা সত্ত্বেও পুলিশ তাদের খুঁজে বেড়াচ্ছে।

সম্পর্কে এমন তিক্ততা তৈরি হলেও প্রসন্ন এবং দিব্যার সম্পর্কের শুরুর দিনগুলো ছিল মধুর। ২০০৭ সালে প্রথম দেখা হয় যুগলের। দু’বছর পর তাদের প্রেমপর্ব শুরু হয়। প্রসন্ন এবং দিব্যা— দু’জনেই মেধাবী। দীর্ঘ দিন একে অপরের থেকে দূরে ছিলেন যুগল। প্রসন্ন সিলিকন ভ্যালিতে একটি অ্যাপ তৈরির কাজ করছিলেন। অন্য দিকে, দিব্যা উচ্চশিক্ষার জন্য কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন।

২০১৩ সালে পুনরায় একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন প্রসন্ন এবং দিব্যা। একসঙ্গে নেদারল্যান্ডসে ছিলেন তারা। দিব্যার পরিবারের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও তারা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।

২০১৫ সালে সান ফ্রান্সিসকোয় চলে যান প্রসন্ন। সেখানে তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিরেক্টর হিসাবে একটি স্টার্টআপ সংস্থায় যোগ দেন। ২০১৭ সালে সিকিউরিটিজ় অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের তদন্তে দেখা যায় যে, সংস্থাটি বিনিয়োগকারীদের ঠকাচ্ছে। এর পরেই প্রসন্ন পদত্যাগ করেন।

২০১৭ সালের প্রথম দিকে ‘রিপলিং’ তৈরি করেন প্রসন্ন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, রিপলিংয়ের ৯ শতাংশ শেয়ারের মালিক তিনি। সংস্থা সাফল্যের মুখ দেখার পর এখন কোটি কোটি টাকার মালিক প্রসন্ন। সহকর্মীদের দাবি, প্রসন্ন ‘কোডিং গড’ এবং একজন অসাধারণ ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে স্ত্রীর অভিযোগ গুরুতর।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ