আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মামলা: হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার তদন্ত শুরু

মেহেদী হাসান পিয়াস
মেহেদী হাসান পিয়াস
শেয়ার
আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মামলা: হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার তদন্ত শুরু
শেখ হাসিনা

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সারা দেশে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি, হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা হয়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত বাগেরহাটের আরিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মো. বুলবুল কবির গতকাল বুধবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় লিখিত অভিযোগ করেন। তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক (প্রশাসন) ও তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগটি গ্রহণ করেন। পরে তা অভিযোগ নিবন্ধন বইয়ে নিবন্ধন করা হয়।

কোনো অভিযোগ নিবন্ধনের পর তা মামলা হিসেবে গণ্য করা হয়। 

তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক (প্রশাসন) ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দুপুর দেড়টায় আমরা অভিযোগটি গ্রহণ করেছি। অভিযোগটি নিবন্ধন বইয়ে নিবন্ধনভুক্ত করা হয়েছে। এই নিবন্ধনের মানে মামলা হয়েছে।

আমরা তদন্তকাজও শুরু করে দিয়েছি। আপাতত পেপারওয়ার্ক করছি।’

একই অপরাধে ব্যক্তির পাশাপাশি দল ও সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। শেখ হাসিনার সঙ্গে অন্য যাঁদের আসামি করা হয়েছে, তাঁরা হলেন সাবেক সেতু মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

এ ছাড়া রয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক মো. হারুন অর রশিদ, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক গোয়েন্দাপ্রধান হারুন অর রশীদ। এসব আসামির পাশাপাশি আবেদনে নাম উল্লেখ না করে শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা চাওয়া হয়েছে।

এদিকে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গতকাল সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলোর বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা হবে। এসব ঘটনার তদন্ত জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণের আলাদা দুটি অভিযোগ নিয়মিত এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে রাজধানীর কাফরুল ও উত্তরা পশ্চিম থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল ঢাকা মহানগরের মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিএমএম) আদালত এই নির্দেশ দেন।

হত্যা মামলাটির বাদী ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার বাসিন্দা মো. রাজিব (৩২)। তাঁর ছোট ভাই ফয়জুল ইসলাম রাজন (১৮) কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ গোলচত্বর এলাকার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। নিহত রাজন কাফরুল থানা এলাকার ঢাকা মডেল ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান।

এই মামলার আইনজীবী তাজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আন্দোলন চলা অবস্থায় মামলা করা সম্ভব ছিল না। নিহতের বড় ভাই মো. রাজিব আজ (বুধবার) সিএমএম আদালতে অভিযোগ উল্লেখ করে মামলার আবেদন করেন। শুনানির পর আদালত এটি নিয়মিত এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কাফরুল থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।’  

অপহরণ মামলায় পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সোহেল রানা। অন্য আসামিরা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক ও বেনজীর আহমেদ। মামলায় র‌্যাবের অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জন সদস্যকে আসামি করা হয়েছে।

এই মামলার বাদী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সোহেল রানা দাবি করেন, ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে উত্তরা এলাকা থেকে তাঁকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে আটক করা হয়। পরে তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নানা নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

গণহত্যার অভিযোগে যা বলা হয়েছে

গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে উল্লেখ করে আবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাসহ উল্লিখিত ব্যক্তিদের পরিকল্পনা ও নির্দেশে আন্দোলনকারী নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে তাদের সমূলে বা আংশিকভাবে নির্মূল করার উদ্দেশ্যে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটানো হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়, সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের পাশাপাশি পুলিশ-র‌্যাবের সদস্যরা এই ঘটনায় জড়িত। নির্বিচার গুলিতে কমপক্ষে ৪৩৯ জন আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় কমপক্ষে ১০ হাজার আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় এবং এক হাজার লোক চিরতরে অন্ধত্ব ও পঙ্গুত্ব বরণ করে। কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কমপক্ষে ৩২ শিশু নির্মম গণহত্যার শিকার হয়েছে উল্লেখ করে আবেদনে বলা হয়, আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে নির্মূল করতে র‌্যাব সদস্যরা হেলিকপ্টার ব্যবহার করে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ও বোমা নিক্ষেপ করে গণহত্যা চালান।

সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং তথ্য ও সম্প্র্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের বিষয়ে আবেদনে বলা হয়েছে, তাঁদের নির্দেশে দেশব্যাপী ইন্টারনেটসেবা বন্ধ করে গণহত্যা চালানো হয়। গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তথ্য গোপন করতেই ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে।

আসামিদের নির্দেশ ও পরিকল্পনায় সারা দেশে ২৮৬টি মিথ্যা মামলায় সাড়ে চার লাখ আন্দোলনকারীকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে ১২ হাজার আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। এসব কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩-এর ৩(২), ৪(১)(২) ধারা অনুযায়ী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ। অভিযোগটি নিবন্ধনভুক্ত করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, দল-সংগঠন সত্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়।

অভিযোগকারীর আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তা বিচ্ছিন্ন কোনো অপরাধ নয় যে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে। পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনাগতভাবে অপরাধ ঘটানো হয়েছে।’

আইনজীবী বলেন, ‘এই আদালতে মামলা করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় অভিযোগ করতে হয়। সংস্থা অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার পর ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচারিক কাজ শুরু করেন।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে বিচারের সুযোগ আছে কি না, জানতে চাইলে আইনজীবী তামিম বলেন, ‘আমাদের সাধারণ মানুষের ধারণা যে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত অপরাধ ছাড়া এই ট্রাইব্যুনালে বিচার হয় না। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩-এ বলা আছে, আইন প্রণয়নের আগে-পরের সব অপরাধের বিচার এই ট্রাইব্যুনাল করতে পারেন।’ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত চারটি মামলা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। বর্তমানে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ফিলিস্তিন প্রশ্নে মুসলিমবিশ্বের ভূমিকা হতাশাজনক : ইলিয়াস কাঞ্চন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ফিলিস্তিন প্রশ্নে মুসলিমবিশ্বের ভূমিকা হতাশাজনক : ইলিয়াস কাঞ্চন
সংগৃহীত ছবি

চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফা প্রসঙ্গে মুসলিমবিশ্বের নীরব বা বক্তব্যনির্ভর ভূমিকা অত্যন্ত হতাশাজনক। সেই তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ সমাবেশে অনেক বেশি মুখর। ধারাবাহিকভাবে যার প্রভাব পড়ছে ইসরায়েলি হানাদারদের ওপর।’

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর কাকরাইলে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ অফিসের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘সারা বিশ্বের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। যার কারণে তাদের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সম্প্রতি শীতল আচরণ করেছেন।’ এ সময় দ্রুত গাজায় নৃশংসতা ও শিশু হত্যা বন্ধের দাবি জানান তিনি।

আরো পড়ুন
জুলাই শহীদদের নিয়ে জামায়াতের ১০ খণ্ডের বই

জুলাই শহীদদের নিয়ে জামায়াতের ১০ খণ্ডের বই

 

সমাবেশে ইলিয়াস কাঞ্চন তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘গাজায় যে নৃশংসতা চলছে, তা মানবতার বিরুদ্ধে চরম অপরাধ।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা আমাদের গভীরভাবে হতাশ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিন জাতি ইনশাআল্লাহ আবার ঘুরে দাঁড়াবে। এই গাজার জয় হবেই হবে। যত দিন এই পৃথিবী থাকবে, তত দিন ওই ইসলামের ভূমি ধ্বংস করা যাবে না।

দরকার পুরো মুসলিমবিশ্বের এক হওয়া এবং বর্বর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করা।’

প্রতিবাদ সমাবেশের পর নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সদস্যরা একটি প্রতিবাদ মিছিল করে জাতীয় প্রেস ক্লাব পর্যন্ত যান। সেখানে দাঁড়িয়ে তারা আবারও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নিসচা কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান লিটন এরশাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম খান ও কামাল হোসেন খান, দপ্তর সম্পাদক মো. রোকনুজ্জামান রোকন, নির্বাহী সদস্য আব্দুর রাজ্জাক ও মো. শফিকুল ইসলাম, কামরুজ্জামান, সদস্য নজরুল ইসলাম ফয়সাল, আব্দুল মান্নান ফিরোজ, সাভার উপজেলা শাখার সভাপতি ইসমাইল হোসেন, সাভার পৌর শাখার সভাপতি শাহ আলী রাজিব, ধামরাই উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, মুন্সীগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি জামাল হোসেন মণ্ডল প্রমুখ।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

বিদেশি বিনিয়োগ আসবে কবে থেকে, জানালেন নাহিয়ান রহমান

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বিদেশি বিনিয়োগ আসবে কবে থেকে, জানালেন নাহিয়ান রহমান
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫-এ কী পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গেছে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের হেড অব বিজনেস নাহিয়ান রহমান। আগামী সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫-এর শেষ দিনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিডার নির্বাহী সদস্য শাহ মোহাম্মদ মাহবুব, প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেসসচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

নাহিয়ান রহমান বলেন, ‘আমলাতান্ত্রিক জটিলতা অবসান চান বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। তাই বিনিয়োগে স্বস্তি আনতে দাপ্তরিক ভোগান্তি দূর করা হচ্ছে।’

বিনিয়োগ সম্মেলনে বিনিয়োগের পরিমাণের চেয়ে একটি পাইপলাইন তৈরি করাই বড় লক্ষ্য বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ সম্মেলন আপাতত সফল হয়েছে। বিনিয়োগের জন্য পাইপলাইন তৈরি হয়েছে।

সামনের দিনগুলোতে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে বিনিয়োগ তরান্বিত করার প্রচেষ্টা চালানো হবে।’

নাহিয়ান বলেন, ‘তবে সেসব বিনিয়োগকারী সমঝোতা সই করেছেন তাদের কাছ থেকে ১৮-২৪ মাসের বিনিয়োগ নিশ্চিত করা হবে।’

এবারের আসরে ৪০০ থেকে ৪৫০ জন বিনিয়োগকারী প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন বলেও জানান নাহিয়ান।

মন্তব্য

খালি পয়সা খান, কাম তো করেন না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
খালি পয়সা খান, কাম তো করেন না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সংগৃহীত ছবি

সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার খরচার হাওরের রাবার ড্যাম পরিদর্শনে গিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ফোনে কোনো এক কর্মকর্তার প্রতি ক্ষোভ ঝাড়তে দেখা গেছে। ফোনে কথা বলার সময় তিনি বলেছেন, ‘পয়সা খাবেন, পকেটে ঢোকাবেন খালি; কাম করবেন না। শোনেন, না হলে আপনারে কিন্তু রিপেয়ার করে দেব।’

আজ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) এসংক্রান্ত একটি ভিডিও সোশ্যাল মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ওই ভিডিওতে স্বরাষ্ট উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরো বলেছেন, ‘জানেন না যে আমরা এখানে আসব। ও, আপনি খোঁজও রাখেন না। খরচার হাওরের রাবার ড্যাম লিক হয়েছে কেন? কয়দিন লাগবে? শোনেন, না হলে কিন্তু আপনারে রিপেয়ার করে দেব, বুঝতে পারছেন। পয়সা খাবেন, পকেটে ঢুকাইবেন খালি, কাজ করবেন না।
রাবার ড্যামের কাজ আপনি সাত দিনের মধ্যে শেষ করবেন।’ পরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ওই কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে আসতে বলেন।

এর আগে আজ সকালে সিলেটে সফরে গিয়ে লাল গালিচা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকালে তিনি সিলেটের এয়ারপোর্ট থানায় গেলে লাল গালিচা বিছানো দেখেন তিনি।

আর এটা দেখে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেন।  এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লাল গালিচা সরিয়ে নেওয়া নির্দেশ দেন।

সঙ্গে সঙ্গে সেটা সরিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিমকে উদ্দেশ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলতে শোনা যায়, ‘এগুলো রাখতে আমি না করেছি। তার পরও এগুলো কেন দিয়েছ? আমি বারবার বলে দিয়েছি, এগুলো হবে না।

প্রটোকল করতে করতে তোমাদের সময় শেষ, মেইন কাজ করতে পারতেছ না।’

পরে বিমানবন্দর থানা পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সেখানে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। থানা পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এসেছিলাম এই থানা পরিদর্শন করতে। আপনারা জানেন, পুলিশের থেকে আমাদের আশা অনেক কিন্তু তাদের থাকা-খাওয়ায় কিন্তু অনেক বড় সমস্যা।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা শুধু তাদের (পুলিশ) থেকে চান, কিন্তু তাদের তো দিতেও হবে কিছু। আপনারা এই বিষয়ে কথা বলবেন।’ তিনি বলেন, ‘অনেক পরিবর্তন হয়েছে। পরিবর্তন আরো হবে। যে যা-ই বলুক রোজার সময় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক উন্নতি হয়েছে না?’ 

পুলিশের কাছে থেকে আসামিদের ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এগুলোর ক্ষেত্রে আপনারা (সাংবাদিকরা) কথা বলবেন।

এ ছাড়া যারা আসামি ছিনিয়ে নিচ্ছে, তাদেরও আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। এসব ঘটনা আপনারা সঙ্গে সঙ্গে জানাবেন, আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব।

মন্তব্য

স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া প্রজ্ঞাপন জারি, সতর্ক করল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া প্রজ্ঞাপন জারি, সতর্ক করল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
সংগৃহীত ছবি

সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পদায়ন আদেশ নকল করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালপূর্বক ভুয়া স্মারক বসিয়ে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পদায়ন আদেশ নকল করে কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালপূর্বক ভুয়া স্মারক বসিয়ে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে প্রতারকচক্র প্রতারণা করার চেষ্টা করছে।

আরো পড়ুন
সাবেক এমপির ভাই ফরিদ মোল্লার কারাদণ্ড, কোটি টাকা অর্থদণ্ড

সাবেক এমপির ভাই ফরিদ মোল্লার কারাদণ্ড, কোটি টাকা অর্থদণ্ড

 

এতে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সব নিয়োগ/পদায়ন/বদলিসংক্রান্ত সব আদেশ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট এবং সরকারি কর্মচারী ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি (GEMS)-এর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

যেকোনো নিয়োগ/পদায়ন/বদলির প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে কোনো প্রকার যাচাইয়ের প্রয়োজন হলে তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে যাচাই করা যেতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা যাচ্ছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ