<p style="text-align:justify">বাংলাদেশে বর্তমানে ২৭৪টি বিদেশি এনজিও কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব এনজিওর কান্ট্রি হেড বা কান্ট্রি ডিরেক্টর পদে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিদেশি নাগরিকরা কর্মরত। অভিযোগ উঠেছে, এদের অনেকে প্রকৃত বেতন গোপন করে এনজিও বিষয়ক ব্যুরো থেকে কাজের অনুমোদন নিয়েছেন। শুধু এনজিওকর্মীরাই নন, বেসরকারি খাতে কর্মরত বিদেশিরাও একই কায়দায় কর ফাঁকি ও অর্থ পাচার করছেন।</p> <p style="text-align:justify">তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশি কর্মীদের তুলনায় বিদেশি কর্মকর্তারা ব্যাংকিং চ্যানেলে কম বেতন দেখিয়ে আয়কর বিভাগে প্রদর্শন করছেন। প্রকৃত বেতনের বড় একটি অংশ নিজ দেশে স্থানান্তর করছেন। উদাহরণস্বরূপ, জার্মানিভিত্তিক এনজিও ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর পঙ্কজ কুমার প্রতি মাসে সাড়ে ৭ হাজার ইউরো বেতন পেলেও আয়কর বিভাগে মাত্র ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা দেখিয়েছেন। এর বিপরীতে উৎসে কর হিসেবে ২০ হাজার ১৪৬ টাকা প্রদান করেছেন।</p> <p style="text-align:justify">চলতি বছরের এপ্রিলে চীনের একটি কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীর বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করে অর্থ পাচারের প্রমাণ পায় পুলিশের বিশেষ শাখা। এনজিও ব্যুরো এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী, বিদেশি কর্মকর্তাদের স্থানীয় বেতনভাতা সঠিকভাবে ঘোষণা করে অনুমোদন নিতে হয়। তবে বাস্তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই নিয়ম লঙ্ঘন হচ্ছে।</p> <p style="text-align:justify">জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান জানান, বিদেশি কর্মীদের কর ফাঁকির অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে। বিমানবন্দরে আয়কর সনদ যাচাই প্রক্রিয়া বর্তমানে চালু রয়েছে, যা ভবিষ্যতে অটোমেশন করার পরিকল্পনা রয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, বিদেশি এনজিওগুলো তাদের অনুদানে পরিচালিত হয়। অনুমোদনের সময় বেতন কম দেখানোর বিষয়টি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হয় না। তবে আয়কর আইন মেনে কাজ করার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।</p> <p style="text-align:justify">তথ্যানুসন্ধানে আরও জানা গেছে, এনজিও ব্যুরোর অনুমোদন নিয়েই বিদেশিরা বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার করছে। বেতন কম দেখিয়ে খরপোষ ভাতা প্রদানের অজুহাতে এই অনুমোদন নেওয়া হয়।</p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।</p>