<p>সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান <strong>অধ্যাপক আলী রীয়াজ </strong>যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিঙ্গুইশড প্রফেসর, আটলান্টিক কাউন্সিলের সিনিয়র অনাবাসিক ফেলো ও আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের (এআইবিএস) প্রেসিডেন্ট। গণতন্ত্র, উগ্রবাদ, ধর্ম, দক্ষিণ এশিয়া ও বাংলাদেশের রাজনীতি তাঁর গবেষণার বিষয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যুক্ত আছেন আলী রীয়াজ। </p> <p>সম্প্রতি একান্ত আলাপচারিতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ, সংবিধান, সংস্কার, রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন কালের কণ্ঠ’র সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কালের কণ্ঠ’র সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি <strong>হাসান হাফিজ</strong>। </p> <p><strong>প্রশ্ন : </strong>এখনকার আলোচিত বিষয় সংস্কার। সারা দেশ উন্মুখ হয়ে আছে জানার জন্য কতটুকু সংস্কার, কোথায় সংস্কার, কতটুকু প্রয়োজন, কতখানি করা গেল। এখানে সবচেয়ে বড় বিষয় আমাদের সংবিধান সংস্কার। সেটা নিয়ে অনেক প্রত্যাশা, অনেক চাপ, সময়ের স্বল্পতাও আছে এখানে। নির্বাচনের চাপটাও ঘনীভূত হচ্ছে ক্রমাগত। আপনার অভিজ্ঞতা কেমন এখন পর্যন্ত। প্রায় গুছিয়ে এনেছেন যতদূর জানি। আগামী মাসের ৭ তারিখে সম্ভবত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে আপনারা প্রতিবেদন পেশ করতে যাচ্ছেন। আপনাদের অভিজ্ঞতাটা সামগ্রিকভাবে কেমন?</p> <p><strong>উত্তর : </strong>আমাদের অভিজ্ঞতার সবচেয়ে বড় দিক হচ্ছে সকলের সহযোগিতা। সবার কাছ থেকে আমরা সহযোগিতা পেয়েছি। রাজনৈতিক দলগুলো অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে, অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে তাদের প্রস্তাবগুলো দিয়েছে। আমরা সিভিল সোসাইটির সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি। তাঁরা এসেছেন, কথা বলেছেন এবং বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে যাদের আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি, তাঁদের অধিকাংশই এসেছেন, কথা বলেছেন। সবচেয়ে বড় জিনিস এই সহযোগিতার প্রধান দিক হচ্ছে, প্রত্যেকেই আন্তরিকভাবে চাচ্ছেন যে পরিবর্তন আসুক, সংস্কার হোক এবং এক্ষেত্রে একটা বড় ঐকমত্য আছে। এই ঐকমত্যটা আমরা বড় মাপের ক্ষতি, বড় মূল্য দিয়ে অর্জন করলাম তো। অনেকগুলো প্রাণ। ১৫ বছরের সংগ্রাম। জুলাই-আগস্টের যে ভয়াবহ নিপীড়ন, নির্যাতন-ম্যাসাকার যাকে আমরা বলব। তারপরও মানুষের মধ্যে আশা দেখতে পাচ্ছি। এটা হচ্ছে আমার সবচেয়ে বড় অভিজ্ঞতা। আরেকটা দ্বিতীয় অভিজ্ঞতা, আমরা যত বেশি মতপার্থক্যের কথা বলি, তারচেয়ে অনেক বেশি মতৈক্য আছে আমাদের। </p> <p><strong>প্রশ্ন : </strong>আমরা জানি না সেটা।</p> <p><strong>উত্তর :</strong> আমরা পাশাপাশি বসি না, কথা বলি না। কিন্তু যখনই আমরা গভর্নেন্সের প্রশ্নটা, শাসনব্যবস্থা, আমাদের অধিকারের কথা বলছি সবাই প্রায় একই সুরে কথা বলি কিন্তু আমরা। </p> <p><strong>প্রশ্ন :</strong> এটা একটা বড় অর্জন নিশ্চয়ই যেটা ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ফলে পাওয়া পরিবর্তিত বাংলাদেশে। </p> <p><strong>উত্তর : </strong>বড় অর্জন। বড় অর্জন মানুষ এখন ঐকমত্যের ভিত্তিতে সেগুলোকে গুছিয়ে তুলে সবাইকে উপস্থাপন করা, সবাইকে এক জায়গায় আনা- সে কাজটা অন্তর্বর্তী সরকার করবে। কিন্তু আমি যেটা দেখি সেটা হচ্ছে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় অর্জন যে মানুষ এখন একটা সম্ভাবনাময় দেশ দেখতে পায়। এর সঙ্গে অংশীদার হতে চায় এবং তাঁরা মনে করে যে সবাই মিলে এটা করা যাবে। </p> <p><strong>প্রশ্ন :</strong> আপনারা তো ১২০টি দেশের সংবিধান পর্যালোচনা করেছেন, মূল্যায়ন করেছেন। সেটার তুলনায় বাংলাদেশের বিদ্যমান সংবিধান কতটা জনমুখী বা গণবিরোধী? </p> <p><strong>উত্তর :</strong> এটা শুধুমাত্র ১২০টি সংবিধান বিবেচনার বিষয় নয়। আমরা যদি শুধু আমাদের সংবিধানে হাত দিই, গত ৫২ বছরে এই সংবিধানের একটা বড় দিক বা ক্ষতি হয়েছে যেটা, ক্রমাগতভাবে এটা ক্ষমতার এককেন্দ্রীকরণ করেছে। ক্রমাগতভাবে মানুষের অধিকার নিয়ে গেছে। অধিকার যেখানে দেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে এমন শর্ত আরোপ করা হয়েছে যে শর্তগুলো মানার পর আপনার আর আসলে কোনো অধিকারই থাকে না। মানুষের অংশগ্রহণের জায়গা সীমিত হয়ে এসেছে। নির্বাচনের পদ্ধতি সংবিধানে যাই তার বাইরেও ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় দিকটা যেটা যে সংবিধান মানুষকে যে অধিকার দিয়ে অধিকার সুরক্ষার ব্যবস্থা করবে তা করেনি। এর একটা বড় উদাহরণ, বাংলাদেশের সংবিধান বলে বিচার বিভাগের সঙ্গে নির্বাহী বিভাগের এক ধরনের দূরত্ব থাকবে। বিচার বিভাগ স্বাধীনতা ভোগ করবে- এটা বলা আছে। কিন্তু কার্যত সেটা কিভাবে হবে তা বলা নেই। উপরন্তু নির্বাহী বিভাগের এমন সব ব্যবস্থা করা হয়েছে যে নির্বাহী বিভাগই আসলে নিয়ন্ত্রণ করে বিচার বিভাগকে। এটা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথ হতে পারে না।</p> <p><strong>প্রশ্ন :</strong> আমাদের নতুন সংবিধান বা সংবিধান সংস্কার যা আপনারা মানুষের সঙ্গে কথা বলে করছেন সেটার ব্যাপারে আমরা কতটা আশাবাদী হতে পারি? একটা সত্যিকারের জনবান্ধব, আধুনিক ও সময়োপযোগী সংবিধান কতখানি আপনারা দিতে পারবেন বলে মনে হয়? প্রস্তাবগুলো কি রকম?</p> <p><strong>উত্তর :</strong> আমাদের প্রথম বিবেচনা হচ্ছে, এই সংবিধানের একটা গণতান্ত্রিক রূপ দিতে হবে। ক্ষমতার এককেন্দ্রীকরণ বন্ধ করতে হবে। নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন নির্বাহী বিভাগের ওপর এক ধরনের জবাবদিহিতা তৈরি হয়। এগুলো হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য। এগুলোকে সামনে রেখেই আমরা বিবেচনা করছি যে কিভাবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা যায়। কিভাবে স্থানীয় পর্যায়ের শাসনকে আরো বেশি মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া যায়। যেমন ধরুন, বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে আমরা একটা বড় জিনিস আমরা বিবেচনা করছি- বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ। মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে হবে। সুবিচার যদি নিশ্চিত করতে হয় আপনার দরজা বা প্রবেশাধিকারই যদি না থাকে... </p> <p><strong>প্রশ্ন : </strong>সময়সীমাটাও দরকার। অনন্তকাল ধরে তো আর চলতে পারে না বিচার প্রক্রিয়া। </p> <p><strong>উত্তর : </strong>অবশ্যই নয়। যেটা হয় দেখুন, ঢাকার বাইরে যারা থাকে, যদি হাইকোর্টের শরণাপন্ন হতে হয় তাদের ঢাকায় আসতে হয়। সেটা বাঞ্ছনীয় নয়। আমাদের প্রতিশ্রুতি কি ছিল? ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের যেটা প্রথম সংবিধান- আমরা যেটাকে ডিক্লারেশন অব ইন্ডিপেনডেন্স (স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র) সেটা কিন্তু বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান। কারণ সেখানে বলা হয়েছে, পরবর্তী সংবিধান না হওয়া পর্যন্ত এটাই আমাদের সংবিধান। সেখানে আমরা তো সাম্যের কথা বলেছিলাম। সামাজিক সুবিচার আর মানবিক মর্যাদার কথা বলেছিলাম। ওটাই তো আসলে ভিত্তি। তো সেখান থেকে এতটাই সরে গেছে সংবিধান যে আজ নাগরিককে তার অধিকারের জন্য রাজপথে প্রাণ দিতে হচ্ছে। অথচ এই সংবিধানের দায়িত্ব ছিল সেটাকে (অধিকার) সুরক্ষা দেওয়া। এটা হবে নাগরিকের হাতিয়ার, তার অধিকার সুরক্ষার হাতিয়ার। সেটা কি হয়েছে? সেটা হয়েছে ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা প্রয়োগের হাতিয়ার। </p> <p><strong>প্রশ্ন :</strong> আমরা জানি, পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ বলত যে ৭২ সালের সংবিধানে ফিরে যাবে। কিন্তু তারা নিজেরাই কাটাছেঁড়া করেছে সংবিধানকে। এটা কি একটা প্রতারণা ছিল না?</p> <p><strong>উত্তর : </strong>নিশ্চয়ই। দেখুন, ৭২-এর সংবিধানের মর্মবস্তুর দিক থেকে সেটা পরিবর্তন হয়ে গেছে ১৯৭৫ সালে। আওয়ামী লীগের হাতেই হয়েছে, বাকশাল যখন করা হয়। চতুর্থ সংশোধনী কি করেছে? বাহাত্তরের সংবিধান ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের যে মূল জায়গাটা ছিল জনগণ হবে এটার মালিক। কিন্তু যখন ৭৫ সালে বাকশাল ও চতুর্থ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বিচার বিভাগকে এক ব্যক্তির অধীন করা হয়েছিল। শুধু মর্মবস্তুই নয়, কাঠামোগত দিক থেকেও বাহাত্তরের সংবিধানের মৃত্যু ঘটেছে ১৯৭৫ সালে। পাশাপাশি আরেকটি কথা বলি। ৭২ সালের সংবিধান তৈরির প্রক্রিয়াও কিন্তু প্রশ্নবিদ্ধ। কারণ মুক্তিযুদ্ধ একটা জনযুদ্ধ। বাংলাদেশের কৃষক-শ্রমিক-ছাত্র, সাধারণ মানুষ দলমত নির্বিশেষে লড়াই করেছে। সেই লড়াইয়ের পর সংবিধান যখন তৈরি হলো তার (মানুষ) সঙ্গে কোনো রকম কথা হলো না। কোনোভাবেই তারা সম্পৃক্ত ছিল না। কারণ, একটি দল-আওয়ামী লীগ সংবিধান প্রণয়ণ করেছে। সেখানে মাত্র তিনজন ছিলেন যাঁরা আওয়ামী লীগের নন। সংবিধানে এমন সব বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে যেগুলো মুক্তিযুদ্ধের আগে এমনকি আওয়ামী লীগও বলেনি। যেগুলোর জন্য ম্যান্ডেট ছিল না। ৭৩ সালে সংবিধান তৈরি হলো। তার কি কোনো গণভোট হলো? ৭৩ সালে আমরা একটা নির্বাচনের মধ্যে চলে গেলাম। কিন্তু কোনো গণভোট হলো না। ফলে আপনি ৭২ সালের সালের সংবিধানের কথা বললে এই ত্রুটি-বিচ্যুতির কথা বলতে হবে।</p> <p>আমি একপর্যায়ে ব্যক্তিগর অবস্থান থেকে (সংবিধান) পুনর্লিখনের কথা বলেছিলাম। কমিশনের ৯ জন সদস্য- আমরা সবাই মিলে বিবেচনা করছি সব কিছু। কিন্তু আমার বক্তব্য হচ্ছে, বাংলাদেশের সংবিধান কিন্তু একাধিকবার পুনর্লিখিত হয়ে গেছে। ক্ষমতাসীনরা সেটা করেছেন তাঁদের স্বার্থে। আমি বলছি, আসুন জনগণের স্বার্থে সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা করতে পারি কিনা দেখি এবং শেষ পর্যন্ত আমাদের অর্থাৎ, কমিশনের দায়িত্ব কি? সুপারিশ করা। দেশ চালাবেন রাজনীতিবিদরা। তাঁরাই আসলে করবেন। কিভাবে করবেন সেটা তাদের পথ তাদের নির্ধারণ করতে হবে। </p> <p><strong>প্রশ্ন : </strong>আপনারা এর মধ্যে ২৫টি রাজনৈতিক দল ও তিনটি রাজনৈতিক জোটের সঙ্গে কথা বলেছেন। নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল কি এর মধ্যে আছে? </p> <p><strong>উত্তর : </strong>না তা নেই। আমরা কথা বলেছি মানে তাদের প্রস্তাবগুলো নিয়েছি। এর বাইরেও কিছু কিছু দল আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, তাদের প্রস্তাবগুলো দিয়েছে। সেগুলোও আমরা বিবেচনা করেছি। একটা ক্রাইটেরিয়া আমরা ব্যবহার করেছি যেটা ৩ নভেম্বর আমরা সুস্পষ্টভাবে বলেছি। যারা প্রত্যক্ষভাবে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের সময় ফ্যাসিবাদী সরকার এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলব না। এই অধিকারটা তারা নিজেরাই হারিয়েছে। ওইসব দল বাদ দিয়ে আমরা সবার কথাই বিবেচনা করেছি। নির্বাচন কমিশনে এমন নিবন্ধিত দলও আছে যাদের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে ২০২৪ সালে। অনিয়ম আছে এখানে। ফলে সেটা বিবেচনা করলে হবে না। আবার এমন দল আছে যাদের নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্যতা আছে কিন্তু দেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, এমন সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে যেগুলো আসলে রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের ওপর এক ধরনের নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা ছিল। আমরা দেখেছি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপে রাজনৈতিক দলগুলো কারা, সক্রিয় কারা, এই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে কারা ধারণ করছেন, কারা যুক্ত থেকেছেন এবং কিভাবে তারা ভূমিকা রেখেছেন- তাদের সবার কাছে আমরা গিয়েছি। </p> <p><strong>প্রশ্ন : </strong>আপনি সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র ছিলেন। দীর্ঘকাল শিক্ষক ছিলেন, এখনো অধ্যাপনা করছেন। আপনি নিজে ছাত্র রাজনীতির একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ফলে আপনার অভিজ্ঞতা একটু অন্যরকম। ফলে আমি জানতে চাইব, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর কতটুকু প্রজ্ঞা আছে দেশের সুশাসনের জন্য? </p> <p><strong>উত্তর : </strong>আমি মনে করি আছে। তাদের কিছু ব্যত্যয় আছে অবশ্যই। ব্যক্তি হিসেবে তো আমাদেরও ব্যত্যয় আছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সীমাবদ্ধতা আছে। আদর্শের ভিত্তিতে তাদের মতপার্থক্য আছে। কিন্তু তাদের দেশপ্রেম ও আন্তরিকতা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে। প্রত্যেকেই ভালো জানেন। সবাই ভালো জানেন কিনা, করেন কিনা সেটা সবার ক্ষেত্রেই একই বিষয়। </p> <p><strong>প্রশ্ন : </strong>সংস্কারের কারণে অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে অতি উচ্চ আকাঙ্ক্ষা জনতার মধ্যে তৈরি হয়েছে সেটা পূরণ করার ক্ষেত্রে তারা কতটা উপযুক্ত বলে আপনার মনে হয়েছে, যেহেতু আপনি তাদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া লক্ষ্য করেছেন দীর্ঘদিন ধরে? আপনার মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণ কি? </p> <p><strong>উত্তর : </strong>আমি আরেকটু বেশি আশা করেছিলাম। এই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আত্মসমালোচনা কিংবা আত্মবিশ্লেষণ যতটুকু হয়েছে তার চেয়ে আরেকটু বেশিই আমি প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু তারপরেও আমি বলব না যে রাজনীতির বাইরে গিয়ে আপনি কিছু করবেন। বিরাজনীতিকরণের পক্ষে আমি নই। কারণ, রাজনীতিই শেষ পর্যন্ত নির্ধারক। মানুষের প্রতিনিধিত্ব করার বিভিন্ন পথ আছে। এরমধ্যে প্রধান পথ হচ্ছে রাজনীতি এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে রাজনৈতিক দলকে বাদ দিয়ে তো তা হতে পারে না। ফলে আমি আশাটা বেশি করেছি। কিন্তু আবার দেখি যে এক ধরনের চেষ্টা আছে। আজ আমরা যে সংস্কারের কথা বলছি তা অন্তর্বর্তী সরকারের আগেও অনেক রাজনৈতিক দল বলেছে। বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাব আমরা দেখেছি। তার মানে রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনগুলোর মধ্যে সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা ও চেষ্টা আছে। নিজেরা বুঝতে পারেন কতটুকু করতে পারবেন। এগুলোকে আমি ইতিবাচকভাবে দেখি। </p> <p><strong>প্রশ্ন : </strong>চারদিকে যে সংস্কারের ঢেউ, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও তো সংস্কারের প্রয়োজন আছে। তরুণদের আকাঙ্ক্ষা দলগুলো কতটা পাঠ বা ধারণ করতে পারছে বলে আপনার মনে হয়?</p> <p><strong>উত্তর : </strong>আমি এখন পর্যন্ত মনে করি, তাদের কিছু ঘাটতি আছে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই একটা সুপারিশ আমরা করব ভেবেছি। একটা হচ্ছে, সংসদ সদস্য হওয়ার যে বয়স তা আমরা কমিয়ে দেওয়ার পক্ষে। এখন ২৫ বছর আছে, আমরা ২১ বছরে নিয়ে আসতে চাই। আমরা মনে করি, তরুণদের অংশগ্রহণের জায়গা তৈরি করতে হবে যাতে করে তারা সংসদে আসতে পারে, রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারে।  </p> <p>আমাদের সুপারিশে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে অনুরোধ জানাব, আপনারা যাদের মনোনয়ন দেবেন তাদের একটা অংশ তা এক-চতুর্থাংশ বা এক-তৃতীয়াংশ যাই হোক সেটা যেন তরুণরা হয়। কারণ, ভবিষ্যত বাংলাদেশ সব রাজনৈতিক দলকেই তৈরি করতে হবে। তরুণরাই বদলাবে। </p> <p><strong>প্রশ্ন : </strong>নারীদের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের একটা নিয়ম আছে যে, ৩৩ শতাংশ মনোনয়ন দিতে হবে। কিন্তু এটা কেউ কোনোদিন দেয়নি। তো এটাকে নিশ্চিত করার জন্যে কি করা যেতে পারে?</p> <p><strong>উত্তর : </strong>এর মধ্যে একটা জিনিস আমরা বিবেচনায় নিয়েছি। আমাদের সুপারিশমালাতেও থাকবে। আমরা সংসদে নারী আসন সংখ্যা ১০০ করার প্রস্তাব দেওয়ার কথা বিবেচনা করছি। এবং এটা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে। কারণ যে পদ্ধতিতে নারী সদস্যরা নির্বাচিত হতেন, সেটা সঠিক প্রতিনিধিত্ব হতো না।</p> <p><strong>প্রশ্ন : </strong>স্বজনপ্রীতিরও সুযোগ থাকত। ভোটে সরাসরি আসাটাই ভালো। </p> <p><strong>উত্তর :</strong> আমরা তা-ই মনে করি। তাতে করে নারী প্রতিনিধিত্ব তৈরি হবে। আমরা সংরক্ষিত আসনের পক্ষে নই। এটা শুধু আমাদের অবস্থান না। আমরা যে অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের বিশাল অংশ আমাদের বলেছে যে এই সুপারিশটা আপনারা করুন। কারণ ১৯৯১ সালের পর থেকে বাংলাদেশে যে গণতন্ত্রের চেষ্টা, সেখানে নারী সমাজের অংশগ্রহণ গণতন্ত্রের সংগ্রামে যতটা আমরা দেখতে পেয়েছি, এবারের আন্দোলনেও নারীদের অংশগ্রহণ অভাবনীয়। তো তাদের প্রতিনিধিত্ব কোথায়? তাদের আপনি যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিনিধিত্বের কথা বলছেন সেটা তো অ্যাসপিরেশনকে ফুলফিল করে না, বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে না। তাহলে আসুন আমরা চেষ্টা করি। তাদের সরাসরি প্রতিনিধিত্ব। যে রাস্তায় নেমে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে, যে ভোট দিয়ে অন্যদের নির্বাচন করতে পারে তাহলে তার সরাসরি নির্বাচনের পথ কেন আমরা করব না? </p> <p><strong>প্রশ্ন : </strong>মোটা দাগে আপনাদের প্রস্তাবগুলোর মূল প্রবণতা ও বৈশিষ্ট্য একটু বলবেন আমাদের?</p> <p><strong>উত্তর : </strong>প্রথম কথা, নাগরিকের অধিকার সুরক্ষা করা। দ্বিতীয় যে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করতে চাই, ক্ষমতার এককেন্দ্রীকরণ করার কোনো পথ যেন না থাকে যাতে জবাবদিহির ব্যবস্থা থাকে। তৃতীয় বিষয়, ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি করতে হবে। এটা কেবলমাত্র রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর ভারসাম্য নয়। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার অন্যত্রও ভারসাম্য তৈরি করতে হবে যেটা আমাদের আইনসভার মধ্যে থাকতে হবে। এই কারণে, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট তৈরির বিষয়টিও আমাদের বিবেচনায় আছে, যাতে পরস্পরের মধ্যে এক ধরনের জবাবদিহি ও ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা হয়।</p> <p><strong>প্রশ্ন : </strong>এবং সত্যিকারের বুদ্ধিভিত্তিক নেতৃত্বের সঙ্গে একটি মিথস্ক্রিয়া যেন হয়...</p> <p><strong>উত্তর :</strong> হওয়ার সুযোগ যেন তৈরি হয় অন্ততপক্ষে। আমরা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে যেভাবে সম্ভব আমরা সেই প্রস্তাব রাখতে চাই। এজন্য আমরা মনে করি যতটা সম্ভব সুবিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশে সংবাধানের শুরুর তিনটি বিভাগের মধ্যে নির্বাহী বিভাগ দিয়ে শুরু হয়। আমরা মনে করি শুরু হওয়া উচিত আইনসভা দিয়ে। কারণ এটি জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। ফলে এটিকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। নির্বাহী বিভাগ আইন বাস্তবায়ন বা প্রয়োগ করে। </p> <p><strong>প্রশ্ন : </strong>বর্তমান সংবিধানের আয়তন ছোট করা যায় কি না, সাধারণ মানুষের বোধগম্য করা যায় কি না?</p> <p><strong>উত্তর : </strong>আমরা এ সুপরিশ করব। সহজ ভাষায় সংবিধান করা, যেন সাধারণ মানুষ তাদের অধিকারের বিষয়ে বুঝতে পারে। মানুষ যেন বুঝতে পারে এটি তার সুরক্ষা কবজ। আমরাও মনে করি সংবিধানটা ছোট করে আনা প্রয়োজন। অনেকগুলো তফসিল আছে যেগুলো হয়তো নিঃসন্দেহে বাতিল হবে বলে আশা করছি। যেমন- তফসিলের শুরুর দিকে বিশেষ বিশেষ বক্তৃতা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। অন্যান্য দেশের সংবিধানে এমন বক্তব্য রেয়ার (খুব কম) দেখেছি। নতুন কাঠামো তৈরি করার সময় আমরা আশা করি এসব থাকবে না। আমাদের পরামর্শের জায়গাগুলো আমরা ড্রাফটিং (খসড়া) করছি। যারা নির্বাচিত হবেন বা ড্রাফটিং কমিটি হবে তারা এগুলো নির্বাচন করবেন। আমরা আমাদের দিকনির্দেশনার জায়গা থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোকে জবাবদিহির জায়গা যেভাবে প্রতিষ্ঠিত করা যায়...বারবার জবাবদিহি শব্দটা বলছি এ কারণে, গত ১৬ বছরের তিক্ততা শুধু না, গত ৫২ বছরে অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থায় যারা যান, তারা মনে করেন যে অনন্ত জীবন (ক্ষমতায়) থাকবেন। গত ১৬ বছরে দেখেছি, নির্বাচন ব্যবস্থাসহ প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এগুলোর বিষয়ে আমাদের মূল দৃষ্টি থাকছে। </p> <p><strong>প্রশ্ন : </strong>অন্য দশটা সংস্কার কমিশন থেকে আপনার অবস্থান ভিন্ন, আমরা জানি একটা ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়েছে। যেখানে প্রধান হিসেবে আছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। আপনি সহসভাপতি। সবগুলো সুপারিশ পেলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আপনার বৈঠক হবে। তাদের কাছ থেকে এই গ্যারান্টি আদায় করবেন, যেন ক্ষমতায় গেলে তারা এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে। সে বিষয়ে আপনি কেমন আশাবাদী?</p> <p><strong>উত্তর : </strong>এখন পর্যন্ত কমিশনের কাজ শুরু হয়নি। মাত্র কমিটি গঠন হয়েছে। আমি সম্মানিত বোধ করছি, আমাকে ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন। অতিরিক্ত কাজের দায়িত্ব নিতে হবে বলেই ওনি (ড. ইউনূস) ইঙ্গিত করছেন। জাতীয় ঐকমত্যের বড় দায়িত্ব রাজনীতিবিদদের, এটা কমিশনের কাজ না। কারণ তারাই দেশ চালাবে। ফলে ঐকমত্যের জায়গা তাদের তৈরি করতে হবে। (ঐকমত্যের প্রয়োজন) মানুষের জন্য তো আছে, অধিকাংশ দল, প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি ও সংগঠনের জন্যও প্রয়োজন। আমি এজন্য বারবার ঐকমত্যের জায়গাটা জোর দিয়ে চিহ্নিত করি। গণতান্ত্রিক সমাজে ভিন্নমত থাকাই স্বাভাবিক।</p> <p><strong>প্রশ্ন : </strong>একটা কথা হয় যে, অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। বিভিন্ন সংকটে তাদের সম্পৃক্ত করছে না। একবার-ই দেখেছি যে ভারতের অন্যায় ও মিডিয়ায় অতিরঞ্জিত যে বিষয়গুলো বলা হয়েছে তা মোকাবেলা করার জন্য জাতীয় ঐক্যের ডাক দেওয়া হয়েছিল। নাগরিক হিসেবে আপনার কাছে জানতে চাই, সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো দূরত্ব কতটুকু বা তাদের (রাজনৈতিক দল) আস্থায় নেওয়া হচ্ছে না, যতটুকু প্রত্যাশা ছিল। </p> <p><strong>উত্তর :</strong> প্রত্যাশা যা ছিল, তার দুদিক থেকে ব্যত্যয় আছে। তবে সামগ্রিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলো যে অবস্থান নিয়েছে, তারা তো সমর্থন জোগাচ্ছে। সমালোচনা থাকতেই পারে। না থাকলে, জবাবদিহি চাইব, কিন্তু বিশেষ মুহূর্তে তা চাইব না, এটা তো হয় না। ফলে এক ধরনের দূরত্ব যেটা আছে, তা বাস্তব কিছু কারণে আছে, কিছুটা দুই পক্ষের ব্যত্যয় আছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগটা থাকলে আরো ভালো হতো। নিজ দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে পারি, (অন্তর্বর্তী সরকারের) আরেকটু উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন ছিল। আমি আশা করছি, এই কমিশনের রূপরেখা পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পৃক্ততা কিছুটা বাড়বে। আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ বাড়বে। একসময় জনগণের প্রতিনিধিত্ব তারাই করবে। একটা বিশেষ মুহূর্তে থাকবে, অন্য সময় থাকবে না, এটা তো হতে পারে না। </p> <p><strong>প্রশ্ন : </strong>কালের কণ্ঠ’র স্লোগান হচ্ছে, ‘আংশিক নয়, পুরো সত্য’। ১৫তম বর্ষপূর্তি হয়ে ১৬তম বর্ষে পদার্পণ করছে কালের কণ্ঠ।</p> <p><strong>উত্তর : </strong>কালের কণ্ঠ’র পথযাত্রা তো এক অর্থে বন্ধুর, এবং বিভিন্নভাবে অগ্রসর হয়েছে। আগামীর জন্য এই প্রত্যাশা করতে চাই, যে বক্তব্য কালের কণ্ঠ সবচেয়ে বড় করে বলে আসছে ‘পুরো সত্য’, এই পুরো সত্য প্রকাশে পুরোটাই যেন তারা অগ্রগামী হয়, হবে, সেই আশা করি। শুভ জন্মদিন কালের কণ্ঠ। </p> <p><strong>প্রশ্ন :</strong> সাংবাদিকতার ছাত্র-শিক্ষক হিসেবে আপনার প্রত্যাশা ভিন্ন ধরনের। সেই প্রত্যাশা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে কতখানি অর্জন করা সম্ভব বলে আপনি মনে করেন?</p> <p><strong>উত্তর : </strong>পুরোটা অর্জন করা সম্ভব হবে না। যে সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিবেশের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যাচ্ছে, আগামীতে পরিবর্তন হবে আশা করি। তবে সেই পরিবর্তনের প্রাথমিক পর্যায়ে গণমাধ্যমকে আরো সাহসী ভূমিকা নিতে হবে। আরো দায়িত্ববান হতে হবে, একইসঙ্গে সত্যের প্রতি নিষ্ঠ হতে হবে। সে ক্ষেত্রে আমি মনে করি চ্যালেঞ্জ অনেক বড়। বলা যত সহজ, বাস্তবায়ন করা খুব সহজ না। আমি আশা করি, যে কোনো ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রে এই বক্তব্য হবে দিকনিদের্শনা যে, ‘পুরো সত্য, দায়িত্বশীলতা এবং যেটা সবচেয়ে বড় বিষয়, প্রত্যেকের মতামতের প্রতিফলন ঘটানো’।</p> <p><strong>প্রশ্ন : </strong>গণ-অভ্যুত্থানের ফলে যে মুক্তচিন্তার একটা ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে, সেখানে গণমাধ্যমের দায়িত্ব কি হতে পারে?</p> <p><strong>উত্তর :</strong> সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হচ্ছে, দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা। কারণ আমরা এমন একটা সময়ে বাস করি, যে সময়টাতে বিভিন্নভাবে মিথ্যা ও আংশিক প্রচার হচ্ছে। তেমন পরিস্থিতিতে মানুষের প্রত্যাশা কিন্তু গণমাধ্যমের কাছে অনেক বেশি। গণমাধ্যমের কাছে মানুষ সবচেয়ে বেশি আশা করে নির্ভরশীলতা। কারণ স্যোশাল মিডিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও নেতিবাচক ভূমিকাও আছে। কারণ আপনি আমি অসত্য প্রচার করতে পারি। গণ-অভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন পটপরিবর্তন এসেছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমেও পরিবর্তন এসেছে। এখানে শিক্ষার বড় বিষয়, আমরা গণমাধ্যম হিসেবে দায়িত্বশীল আচরণ করে মানুষকে পুরোটা সত্য দিতে পারছি কিনা। এবং আমরা যেন ক্ষুদ্র স্বার্থে পরিচালিত না হই। </p>