<p>গাজাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর প্রাণঘাতী হামলা চলছেই। জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ  জানায়, ৪৮ ঘণ্টায় গাজার উত্তরের জাবালিয়া এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অর্ধশতাধিক শিশু প্রাণ হারিয়েছে। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান নির্বিচার হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সংস্থাটি।</p> <p>ইউনিসেফ সাবধান করে বলেছে, গাজার জনগণ রোগব্যাধি, ক্ষুধা আর অবিরাম বোমা হামলায় বড় বিপদের মুখে রয়েছে। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথারিন রাসেল  গত শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, দুটি আবাসিক ভবনে বিমান হামলায় শিশুরা নিহত হয়েছে। ওই ভবন দুটিতে শত শত বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি বাস করছিল। গাজায় শিশু হত্যা নিয়ে ইউনিসেফের বিবৃতির বিষয়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।</p> <p>এদিকে গাজার উত্তরে গত শনিবার একটি পোলিও টিকাদান কেন্দ্রে স্টান গ্রেনেড হামলায় চার শিশুসহ ছয়জন আহত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) এ কথা জানায়। ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় টিকাদান কর্মসূচি উপলক্ষে  হামলায় মানবিক বিরতি দিতে রাজি হওয়া সত্ত্বেও এই হামলা হলো। ইসরায়েলি বোমা হামলার কারণে গাজায় গত অক্টোবরে নির্ধারিত দ্বিতীয় রাউন্ডের পোলিও টিকাদান স্থগিত করা হয়। পরে গত শনিবার উত্তর গাজায় টিকাদান পুনরায় শুরু হলেও হামলার কারণে পরবর্তী সময়ে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।</p> <p>গতকাল রবিবার উত্তর গাজায় টিকাদান কর্মসূচি আবারও শুরু হওয়ার কথা। গত ২৫ বছরের মধ্যে গত আগস্টে গাজায় প্রথম পোলিও আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর  প্রথম রাউন্ডের  টিকাদান কর্মসূচি শুরু  হয়। ডাব্লিউএইচও বলেছে, উত্তর গাজায় প্রায় এক লাখ ১৯ হাজার শিশু টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার জন্য অপেক্ষমাণ। গাজার মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে চার লাখ ৫২ হাজার টিকা দেওয়া হয়েছে।</p> <p>এদিকে গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল রবিবার জানিয়েছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান হামলায় এ পর্যন্ত ৪৩ হাজার ৩৪১ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে এক লাখ দুই হাজার ১০৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২৭ জন প্রাণ হারিয়েছে।</p> <p>উত্তর গাজায় গতকাল জনবহুল দুটি বাড়িতে ইসরায়েলি বাহিনী আঘাত হেনেছে। এতে বহু ফিলিস্তিনি ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, উত্তর গাজায় গতকাল স্থানীয় সময় ভোরের দিকে এই হামলায় অন্তত ১৩ জন মারা গেছে।</p> <p>১২ দিন ধরে উত্তর গাজায় কোনো অ্যাম্বুল্যান্স, সিভিল ডিফেন্স দল বা প্যারামেডিমদের দল পাওয়া যাচ্ছে না। সেখানে বহু পরিবার সাহায্যের জন্য আবেদন করে যাচ্ছে। তারা বলছে, বহু জীবিত মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া রয়েছে। তাদের পরিবারের অনেক সদস্যও চাপা পড়েছে। কেউ তাদের উদ্ধারের জন্য আসছে না। লোকজন খালি হাতেই ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করে যাচ্ছে।</p> <p><strong>লেবাননে </strong><strong>হামলা চলছে</strong></p> <p>হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীকে ধ্বংসের নামে দক্ষিণ লেবাননজুড়ে গতকাল  হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তারা দাবি করেছে, তাদের হামলায় হিজবুল্লাহর এক জ্যেষ্ঠ কমান্ডার নিহত হয়েছেন। হিজবুল্লাহ অবশ্য এই তথ্য নিশ্চিত করেনি। এদিকে লেবাননের বালবেক শহরের দৌরিস এলাকার আবাসিক ভবনগুলো থেকে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।</p> <p>সূত্র : এএফপি, আলজাজিরা, বিবিসি</p>