<p>আফগানিস্তানে নারীদের কাজে নিয়োগ দেওয়া সকল জাতীয় ও বিদেশি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে তালেবান সরকার। আলজাজিরার প্রতিবেদনে এই খবর দেওয়া হয়েছে।</p> <p>গতকাল রবিবার রাতে এক্স-এ প্রকাশিত একটি চিঠিতে দেশটির অর্থনীতি মন্ত্রণালয় সতর্ক করেছে, সর্বশেষ আদেশ মেনে চলতে ব্যর্থ হলে এনজিওগুলো আফগানিস্তানে তাদের পরিচালনার লাইসেন্স হারাবে।</p> <p>তালেবান সরকার দুই বছর আগে এনজিওগুলোকে আফগান নারী কর্মী নিয়োগ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল। কারণ হিসেবে সরকার জানিয়েছে, এনজিওতে কাজ করা নারীরা প্রশাসনের দেওয়া নির্ধারিত পোশাকবিধি মেনে চলে না।</p> <p>চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকার আবারও তালেবান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয় এমন প্রতিষ্ঠানের সকল নারীর কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছে। এতে আরো বলা হয়েছে, ‘তারা সহযোগিতা না করলে প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম বাতিল করা হবে এবং মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত সেই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সও বাতিল করা হবে।’</p> <p>২০২১ সালের আগস্টে তালেবানের ক্ষমতায় আসার পর থেকে  জনসাধারণের স্থান থেকে নারীদের অনেকাংশে মুছে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া তালেবান কর্তৃপক্ষ মেয়ে এবং নারীরে জন্য ষষ্ঠ শ্রেণির পর শিক্ষার অধিকার বন্ধ করে দিয়েছে। সরকার বেশির ভাগ চাকরিতেই নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং পার্ক ও অন্যান্য পাবলিক স্থানে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। </p> <p>প্রথমে তালেবান সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি পোস্টে বলেছিল, প্রাথমিক শিক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞা একটি ‘অস্থায়ী স্থগিতাদেশ’। মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ গঠনের পরে তা তুলে নেওয়া হবে, তবে আজ পর্যন্ত এই ব্যবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি।</p> <p>এ ছাড়া, সম্প্রতি দেশটিতে নারীদের প্যারামেডিকেল এবং ধাত্রীবিদ্যা প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণও নিষিদ্ধ করা হয়। এদিকে তালেবান নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা জানালা, বারান্দা বা যেসব স্থান থেকে নারীদের দেখা যেতে পারে, সেগুলো ঢেকে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন। </p> <p>এই মাসের শুরুর দিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়েছিল, ত্রাণ কাজের জন্য গুরুতর প্রয়োজনীয়তা থাকা সত্ত্বেও ক্রমবর্ধমান সংখ্যক মানবিক কর্মীদের (আফগান নারী) তাদের দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া হচ্ছে। জাতিসংঘের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা টম ফ্লেচার তালেবান সরকার কর্তৃক অবরুদ্ধ নারী বা পুরুষ কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধির কথা জানিয়েছেন।</p> <p>এমন এক সময়ে নারীদের এনজিও কার্যক্রম থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যখন আফগানিস্তান মানবিক সহায়তার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। লাখ লাখ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং অন্যান্য সংকটে ভুগছে।</p> <p>সূত্র : আলজাজিরা</p>