যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পুরনো সম্পর্ক শেষ : কানাডার প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পুরনো সম্পর্ক শেষ :  কানাডার প্রধানমন্ত্রী
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। ছবি : এএফপি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার পুরনো সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে, এমনটাই মন্তব্য করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অটোয়াতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। 

তিনি বলছেন, ‘আমাদের অর্থনীতির গভীরতর সংহতকরণ, কঠোর নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে থাকা কানাডার পুরনো সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে।’

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অটোয়াতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় কার্নি বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের মুখে কানাডীয়দের মৌলিকভাবে অর্থনীতি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।

’ তিনি বলেন, ‘কানাডা প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাবে, যার সর্বোচ্চ প্রভাব পড়বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর।’

এর আগে বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার আমদানি করা গাড়ি ও এর খুচরা যন্ত্রপাতির ওপর ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন এবং এটা স্থায়ী। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, নতুন গাড়ির শুল্ক ২ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। গাড়ি আমদানিকারী ব্যবসাগুলোর ওপর পরের দিন থেকে চার্জ শুরু হবে।

যন্ত্রাংশের ওপর কর মে বা তার পরে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

লিবারেল পার্টির নেতা কার্নি ১৯৬৫ সালে স্বাক্ষরিত মূল কানাডা-মার্কিন মোটরগাড়ি পণ্য চুক্তিকে তার জীবদ্দশায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি বলে অভিহিত করেছেন। তিনি ফরাসি ভাষায় বলেন, ‘এই শুল্কের মাধ্যমে এটি শেষ হয়েছে।’

আরো পড়ুন
ইউক্রেনে কেন শান্তিবাহিনী পাঠাতে চায় ফ্রান্স, ব্রিটেন?

ইউক্রেনে কেন শান্তিবাহিনী পাঠাতে চায় ফ্রান্স, ব্রিটেন?

 

তিনি আরো বলেন, কানাডা মার্কিন শুল্কের মাধ্যমে একটি অটোশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে পারে যদি সরকার ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এই শিল্পকে পুনর্নির্মাণ করার জন্য কাজ করে।

কানাডাকে এমন একটি অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে, যা কানাডিয়ানরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং এর মধ্যে অন্য অংশীদারদের সঙ্গে তার বাণিজ্য সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

তিনি বলেন, কানাডিয়ানরা ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্ক রাখতে পারে কি না তা এখনো দেখা বাকি। কার্নি সর্বশেষ আমদানি শুল্ক মোকাবেলা করার জন্য আগামী মাসের সাধারণ নির্বাচনের আগে তার প্রচারণার পরিকল্পনা পরিবর্তন করেছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই সব অ্যালুমিনিয়াম এবং ইস্পাত আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। অন্যদিকে কানাডা এখন পর্যন্ত মার্কিন পণ্যের ওপর প্রায় ৬০ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার (৪২ বিলিয়ন ডলার) শুল্ক আরোপ করেছে।

সূত্র : বিবিসি

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মায়ানমারে মৃতের সংখ্যা ২৭০০ ছাড়াল, খাদ্য পানি আশ্রয়ের অভাব

    সহায়তা প্রবেশে বাধা থাইল্যান্ডে উদ্ধার অভিযান
আলজাজিরা
আলজাজিরা
শেয়ার
মায়ানমারে মৃতের সংখ্যা ২৭০০ ছাড়াল, খাদ্য পানি আশ্রয়ের অভাব
মায়ানমার ও থাইল্যান্ডে ভূমিকম্পের চার দিন পর ১ এপ্রিল ব্যাঙ্ককে অসম্পূর্ণ ভবন ধসের স্থলে ভারী যন্ত্রপাতি। ছবি : এএফপি

মায়ানমারে বিধ্বংসী ভূমিকম্পে নিহতদের স্মরণে মঙ্গলবার এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়েছে। এ দুর্যোগে এখন পর্যন্ত দুই হাজার ৭০০-এর বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, যার মধ্যে মান্দালয়ের কাছে একটি প্রাক-বিদ্যালয়ে ৫০ শিশু নিহত হয়েছে। এই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন এমন এক সময়ে এলো, যখন সাহায্য সংস্থাগুলো জানিয়েছে, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মানুষ খাদ্য, পানি ও আশ্রয়ের অভাবে ভুগছে।

গত শুক্রবার দুপুরের দিকে আঘাত হানা ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটি ছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে শত বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী।

এটি প্রাচীন প্যাগোডা ও আধুনিক ভবন ধ্বংস করে দিয়েছে।

মায়ানমারের সামরিক নেতা সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং মঙ্গলবার এক টেলিভিশন ভাষণে জানান, ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দুই হাজার ৭১৯ জনে পৌঁছেছে এবং এই সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত চার হাজার ৫২১ জন আহত ও ৪৪১ জন নিখোঁজ রয়েছে। অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী থাইল্যান্ডে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে।

মায়ানমারের কেন্দ্রে অবস্থিত মান্দালয় শহরের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে একটি স্কাই ভিলা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের সামনে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে সাইরেন বাজিয়ে লোকজনকে দাঁড়িয়ে যেতে বলা হয়, যা ছিল ভূমিকম্প আঘাত হানার সুনির্দিষ্ট সময়। সেখানে উদ্ধারকর্মীরা থেমে গিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন। একটি রেসকিউ টেন্টের পাশে বাঁশের খুঁটিতে মায়ানমারের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উড়ছিল, আর কর্মকর্তারা ঘিরে রাখা এলাকার ভেতর দাঁড়িয়ে দেখছিলেন, আর স্বজনরা একটু দূরে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করছিলেন।

আরো পড়ুন
মায়ানমারে মৃতের সংখ্যা ২০০০ ছাড়াল, এক সপ্তাহের জাতীয় শোক ঘোষণা

মায়ানমারে মৃতের সংখ্যা ২০০০ ছাড়াল, এক সপ্তাহের জাতীয় শোক ঘোষণা

 

এদিকে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে ভূমিকম্পে আহত ও গৃহহারা হওয়া মানুষদের কাছে সহায়তা পৌঁছনো আরো কঠিন হয়ে পড়েছে।

থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্কক থেকে আলজাজিরার প্রতিবেদক জেসিকা ওয়াশিংটন জানান, মায়ানমারের মধ্যাঞ্চলের অনেক পরিবার এখনো মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সংকটে ভুগছে। তিনি বলেন, ‘ওই সব এলাকায় যোগাযোগ নেই, বিদ্যুৎ নেই। মানুষ খুব কষ্টে আছে। তারা এখনো খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছে। শহরের একটি হাসপাতালে রোগীদের বাইরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে।
পানির সংকটও রয়েছে।’

সহায়তা প্রবেশে বাধা
তিনি আরো জানান, বিপর্যয়ের মধ্যেও সামরিক বাহিনী বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি সাগাইং অঞ্চলে প্রবেশাধিকার খুবই সীমিত। সেখানে এক মালয়েশীয় উদ্ধারকারী দল একটি বিদ্যালয়ের ধ্বংসস্তূপে কাজ করছে। তবে অন্যান্য উদ্ধারকারী দল জানিয়েছে, সামরিক বাহিনী ও তাদের মিত্র মিলিশিয়ারা তাদের ওই সব এলাকায় প্রবেশ করতে বাধা দিচ্ছে, যেসব এলাকায় সহায়তার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।’

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, সামরিক বাহিনীর উচিত তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা এলাকাগুলোতে সাহায্য প্রবেশ করতে দেওয়া। অ্যামনেস্টির মায়ানমারবিষয়ক গবেষক জো ফ্রিম্যান বলেন, ‘মায়ানমারের সামরিক বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে এমন এলাকায় সহায়তা পৌঁছতে বাধা দিয়ে আসছে, যেখানে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো সক্রিয় রয়েছে। তাদের উচিত অবিলম্বে সব মানবিক সংস্থাকে বাধাহীন প্রবেশের অনুমতি দেওয়া এবং জরুরি সহায়তা পৌঁছতে কোনো প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি না করা।’

থাইল্যান্ডে উদ্ধার অভিযান
ব্যাঙ্ককে উদ্ধারকারীরা এখনো একটি ধসে পড়া অসমাপ্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপে জীবনের চিহ্ন খুঁজছে। তবে চার দিন পার হয়ে যাওয়ায় জীবিত কাউকে পাওয়ার সম্ভাবনা কমে এসেছে।

ভবনটির ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া স্বেচ্ছাসেবী বিন বুনলুয়েরিট বলেন, ‘ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রায় ৭০ জনের মরদেহ রয়েছে...তবে আমরা আশাবাদী, অলৌকিকভাবে অন্তত এক-দুজন জীবিত থাকতে পারে।’

ব্যাঙ্ককের ডেপুটি গভর্নর তাভিদা কামলভেজ জানান, স্ক্যানারে ছয়টি মানব-আকৃতির অবয়ব শনাক্ত করা হয়েছে, তবে তাদের শরীরে কোনো নড়াচড়া বা প্রাণের স্পন্দন নেই। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা এখন নিরাপদে তাদের কাছে পৌঁছনোর উপায় বের করার চেষ্টা করছেন।

মন্তব্য

গুজরাটে আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণ : নিহত বেড়ে ১৮

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
গুজরাটে আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণ : নিহত বেড়ে ১৮
গুজরাট রাজ্যের দিসা শহরের ওই কারখানায় মঙ্গলবার ভয়াবহ বিস্ফোরণে পাথর ও ধাতব টুকরা দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। ছবি : সংগৃহীত

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে অবৈধ আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরো পাঁচজন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

গুজরাট রাজ্যের দিসা শহরের ওই কারখানায় মঙ্গলবার ভয়াবহ বিস্ফোরণে পাথর ও ধাতব টুকরা দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে।

সরকারি মুখপাত্র ঋষিকেশ প্যাটেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারখানায় একটি বড় বিস্ফোরণের ফলে কংক্রিটের ছাদ ধসে পড়ে। এতে ১৮ জন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছে।’

তিনি আরো জানান, কারখানাটি কোনো লাইসেন্স ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছিল। কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে।

ভারতে আতশবাজি ব্যাপক জনপ্রিয়, বিশেষ করে হিন্দু ধর্মীয় উৎসব দীপাবলি ও বিয়ের অনুষ্ঠানে এগুলো ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু অগ্নিনিরাপত্তাসংক্রান্ত বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করার কারণে আতশবাজির কারখানাগুলোতে প্রায়ই বিস্ফোরণ ঘটে।

গত বছর মধ্য প্রদেশ রাজ্যে একটি আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণে ১১ জন মারা গিয়েছিল। ২০১৯ সালে পাঞ্জাব রাজ্যে একই ধরনের বিস্ফোরণে অন্তত ১৮ জন নিহত হয়, আর একই বছরে উত্তর প্রদেশে আরেকটি বিস্ফোরণে ১০ জন প্রাণ হারায়।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

বৈরুতে ইসরায়েলি হামলা, হিজবুল্লাহ কর্মকর্তাসহ নিহত ৪

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
বৈরুতে ইসরায়েলি হামলা, হিজবুল্লাহ কর্মকর্তাসহ নিহত ৪
১ এপ্রিল বৈরুতে একটি ভবনে ইসরায়েলি হামলাস্থলে মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। ছবি : এএফপি

লেবাননের দক্ষিণ বৈরুতে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মধ্যরাতে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর এক কর্মকর্তাসহ চারজন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর একটি সূত্র। চার মাস ধরে চলা একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির মধ্যে এটি দ্বিতীয় হামলা।

লেবাননের নেতারা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। ঈদুল ফিতর চলাকালীন আনুমানিক মধ্যরাত সাড়ে ৩টায় কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই এ হামলা চালানো হয়।

এর আগে শুক্রবার ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছিল। তখন বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছেন। এএফপির একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, বহুতল ভবনের ওপরের দুটি তলা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।

বিপরীত দিকের একটি ভবনের বাসিন্দা ইসমাইল নুরেদ্দিন এএফপিকে বলেন, ‘আমার পরিবারের সবাই চিৎকার করছিল। এত বড় বিস্ফোরণ হয়েছিল যে আমরা ধুলার মধ্যে একে অপরকে দেখতে পাচ্ছিলাম না।’

আরো পড়ুন
গাজায় সব পক্ষকে যুদ্ধবিষয়ক আইন মানতে হবে : যুক্তরাষ্ট্র

গাজায় সব পক্ষকে যুদ্ধবিষয়ক আইন মানতে হবে : যুক্তরাষ্ট্র

 

হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, হামলায় নিহতদের একজন হলেন হাসান বুদাইর, যিনি হিজবুল্লাহর ‘ফিলিস্তিনবিষয়ক উপপ্রধান’। হামলার সময় তিনি তার পরিবারের সঙ্গে বাড়িতেই ছিলেন।

অন্যদিকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ও দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেট এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা বুদাইরকে হত্যা করেছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, সম্প্রতি তিনি হামাসের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছিলেন, হামাসের যোদ্ধাদের পরিচালনা করছিলেন এবং ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও আসন্ন সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সহায়তা করছিলেন। তবে বিবৃতিতে এর বেশি বিস্তারিত আর কিছু জানানো হয়নি।

‘পরিষ্কার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন’
লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন এই হামলার নিন্দা জানিয়ে তার দেশের মিত্রদের প্রতি ‘আমাদের পূর্ণ সার্বভৌমত্বের অধিকারের’ পক্ষে সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম বলেছেন, এই হামলা ‘পরিষ্কারভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন’ এবং এটি গত এক বছরের বেশি সময় ধরে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিরসনের চেষ্টাকে ব্যাহত করছে।

 

হিজবুল্লাহর সংসদ সদস্য ইব্রাহিম মুসাভি লেবানিজ কর্তৃপক্ষকে ‘লেবাননের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উচ্চ পর্যায়ের পদক্ষেপ নেওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছেন।  

এই হামলা এমন সময় ঘটল, যখন কয়েক দিন আগে ইসরায়েল বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায়। ওই হামলার আগে লেবানন থেকে ইসরায়েলের দিকে ছোড়া রকেট হামলার জন্য হিজবুল্লাহকে দায়ী করেছিল ইসরায়েল, যদিও ওই হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সতর্ক করে বলেছিলেন, তার দেশের সামরিক বাহিনী ‘লেবাননের যেকোনো জায়গায় যেকোনো হুমকির’ বিরুদ্ধে হামলা চালাবে।

আরো পড়ুন
দক্ষিণ গাজায় ‘অত্যন্ত কঠোর যুদ্ধে’ ফিরছে ইসরায়েলি সেনারা

দক্ষিণ গাজায় ‘অত্যন্ত কঠোর যুদ্ধে’ ফিরছে ইসরায়েলি সেনারা

 

‘যুদ্ধবিরতি কার্যকর রাখতে হবে’
লেবাননে জাতিসংঘের বিশেষ সমন্বয়ক জিনিন হেনিস-প্লাসশায়ের্ট বলেছেন, ‘আরো সংঘাত কেউই চায় না।’ তিনি এক্সে লিখেছেন, ‘একমাত্র কার্যকর পথ হলো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ১৭০১ বাস্তবায়ন করা’, যা ২০০৬ সালে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিল এবং চলমান যুদ্ধবিরতির ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে।

হিজবুল্লাহর নেতা নাইম কাসেম শনিবার বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা এটি চালিয়ে যেতে দিতে পারি না।’

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, ‘লেবাননের সরকার সরাসরি দায়ী’ এবং যদি তারা যুদ্ধবিরতি কার্যকর না রাখে, ‘আমরাই তা প্রয়োগ করব।’

চুক্তি অনুযায়ী, ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে লেবানন থেকে ইসরায়েলের সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার করার কথা ছিল, কিন্তু তারা পাঁচটি ‘কৌশলগত স্থান’ ধরে রেখেছে বলে জানিয়েছে। যুদ্ধবিরতি শর্ত অনুযায়ী, হিজবুল্লাহর উচিত ছিল তাদের বাহিনীকে লিটানি নদীর উত্তরে সরিয়ে নেওয়া এবং দক্ষিণে তাদের অবশিষ্ট সামরিক স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া। ইসরায়েলি সেনারা পিছু হটতে শুরু করার পর লেবাননের সেনাবাহিনী দক্ষিণাঞ্চলে মোতায়েন হয়েছে।

মন্তব্য

গাজায় সব পক্ষকে যুদ্ধবিষয়ক আইন মানতে হবে : যুক্তরাষ্ট্র

বিবিসি
বিবিসি
শেয়ার
গাজায় সব পক্ষকে যুদ্ধবিষয়ক আইন মানতে হবে : যুক্তরাষ্ট্র
৩১ মার্চ ইসরায়েলের উচ্ছেদ আদেশের পর খান রাফা থেকে পালিয়ে যাওয়া লোকজন ইউনিস শহরে পৌঁছয়। ছবি : এএফপি

গাজার সার্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে জড়িত ‘সব পক্ষ’ যুদ্ধবিষয়ক আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলবে বলে আশা করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ১৫ জনের বিষয়ে দেশটি কোনো মূল্যায়ন করেছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা। নিহতদের মাঝে কেউ ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী, কেউ আবার বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মী ও একজন জাতিসংঘ কর্মকর্তা।

এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘এ মুহূর্তে গাজায় যা কিছু ঘটছে, সেই সব কিছুর জন্যই হামাস দায়ী।

জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা জানিয়েছে, গত ২৩ মার্চ পাঁচটি অ্যাম্বুল্যান্স, একটি অগ্নিনির্বাপক ট্রাক ও একটি জাতিসংঘের গাড়ি একের পর এক হামলার শিকার হয়েছে। এই ঘটনায় ১৫ জন নিহত হন এবং তাদের সবাইকে একত্র করে গণকবরে দাফন করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের সেনারা এমন কিছু যানবাহনের ওপর গুলি চালিয়েছে, যেগুলো ‘সন্দেহজনকভাবে’ অগ্রসর হচ্ছিল। কারণ ওই যানবাহনগুলো তাদের হেডলাইট জ্বালিয়ে রাখেনি বা যানবাহনগুলোতে কোনো জরুরি সংকেতও চালু ছিল না।

তাদের দাবি, নিহতদের মধ্যে একজন হামাস সদস্যও ছিলেন। পাশাপাশি সেখানে অন্যান্য যোদ্ধাও ছিলেন। তবে মরদেহগুলোকে একসঙ্গে বালিতে কবর দেওয়া নিয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেনি।

আরো পড়ুন
দক্ষিণ গাজায় ‘অত্যন্ত কঠোর যুদ্ধে’ ফিরছে ইসরায়েলি সেনারা

দক্ষিণ গাজায় ‘অত্যন্ত কঠোর যুদ্ধে’ ফিরছে ইসরায়েলি সেনারা

 

এদিকে যুদ্ধ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক আইনে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে।

একই সঙ্গে চিকিৎসাসেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের ব্যাপারেও এই আইনে বিশেষ সুরক্ষা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও তার নিজের আইনের কাছে বাধা। আইন অনুযায়ী, যুদ্ধবিষয়ক আইন লঙ্ঘন করে বিদেশি সামরিক বাহিনী এই অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে না।

জাতিসংঘের মানবিক সংস্থার প্রধান জনাথন হুইটল জানিয়েছেন, ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটু অ্যাম্বুল্যান্সের জরুরি আলোর সাহায্যে গণকবরটি চিহ্নিত করা হয়েছে। এক্সে প্রকাশিত এক ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘এখানে যা হয়েছে, তা পুরোপুরিভাবে একটি ভয়াবহ ঘটনা।

স্বাস্থ্যকর্মীরা কখনোই লক্ষ্যবস্তু হতে পারে না।’

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনা স্থগিত হওয়ার পর গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল ফের গাজায় আকাশ ও স্থল অভিযান চালানো শুরু করে। সেই থেকে গাজায় এক হাজার জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে নতুন করে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকার বেশ কিছু স্থান খালি করার নির্দেশনা দিয়েছে তেল আবিব। নোটিশে বলা হয়েছে, ‘সন্ত্রাসী’দের নিরস্ত্র করার জন্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বড় ধরনের অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে, ফলে রাফা ও পার্শ্ববর্তী খান ইউনিসের স্থানীয় বাসিন্দারা যেন দ্রুত আল-মাওয়াসি অঞ্চলে সরে যান। এরপর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সাম্প্রতিক দুই মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতির সময় রাফায় নিজেদের বাড়িতে ফেরত আসা হাজার হাজার ফিলিস্তিনি ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে শুরু করে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নির্দেশে গাজার এক পঞ্চমাংশ এলাকা এখন খালি করে ফেলা হয়েছে।

এ ছাড়া জরুরি ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ থাকায় গাজার হাসপাতালগুলোতে দেখা দিয়েছে ওষুধ স্বল্পতা। যুদ্ধবিরতি ভেঙে লাগাতার ১৫ দিনের মতো চলছে ইসরায়েলি আগ্রাসন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সীমান্ত পার করে ইসরায়েলের ওপর হামাসের এক নজিরবিহীন হামলার জবাবে ইসরায়েল গাজায় এই অভিযান শুরু করে। ওই হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করা হয়। এর পর থেকে চলমান যুদ্ধে ৫০ হাজার ৩৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ