ইমামতিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিল ফ্রান্স

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইমামতিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিল ফ্রান্স
ফ্রান্সের প্যারিসের গ্র্যান্ড মসজিদ। ছবি: এএফপি

ফ্রান্স সরকার ইমামতিকে একটি পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং দেশটির কর্মসংস্থান সংস্থার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। ফলে ইমামদের কাজ এখন একটি প্রতিষ্ঠিত ও নিয়মিত পেশা হিসেবে গণ্য হবে। ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেতাইয়ো মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এই ঘোষণা দিয়েছেন।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেতাইয়ো বলেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা প্রথমবারের মতো ফ্রান্সে ইমামের ভূমিকার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিচ্ছে।

’ রেতাইয়ো এই ঘোষণাটি ফরাসি ইসলাম ফোরামের (এফওআরআইএফ) দ্বিতীয় বৈঠকের সমাপনী অধিবেশনে দেন। এফওআরআইএফ হলো, ফ্রান্সে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্ক উন্নয়নের একটি সরকারি উদ্যোগ।

আরো পড়ুন
ক্রমেই সবুজে ঢেকে যাচ্ছে দুবাই শহর

ক্রমেই সবুজে ঢেকে যাচ্ছে দুবাই শহর

 

 

রেতাইয়ো ইমামদের জন্য আনুষ্ঠানিক কর্মপরিকল্পনা ও চুক্তিভিত্তিক চাকরির ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি ফ্রান্সে ইসলামোফোবিয়া সম্পর্কে উদ্বেগের কথাও তুলে ধরেছেন।

গত বছর ১৭৩টি মুসলিম-বিরোধী আক্রমণ রেকর্ড করা হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, ভুক্তভোগীরা অভিযোগ না জানানোর জন্য প্রকৃত সংখ্যা বলা যাচ্ছে না, সম্ভবত সংখ্যাটি আরো বেশি। অপরাধ মোকাবেলা করার জন্য সরকার ইসলামোফোবিয়া ঘটনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করার জন্য নতুন একটি প্ল্যাটফর্ম চালু করবে।

হাসপাতাল এবং সামরিক বাহিনীতে কর্মরত মুসলিম ধর্মযাজকদের এখন সরকারি সেবার অংশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে, যাতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ভূমিকা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত হয়।

সূত্র: এএফপি, মিডিল ইস্ট মনিটর

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মায়ানমারে মৃতের সংখ্যা ২০০০ ছাড়াল, এক সপ্তাহের জাতীয় শোক ঘোষণা

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
মায়ানমারে মৃতের সংখ্যা ২০০০ ছাড়াল, এক সপ্তাহের জাতীয় শোক ঘোষণা
ভয়াবহ ভূমিকম্পের তিন দিন পর ৩১ মার্চ মায়ানমারের মান্দালয়ে লোকজন অস্থায়ী তাঁবুতে দিন কাটাচ্ছে। ছবি : এএফপি

মায়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা সোমবার দুই হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের জীবিত উদ্ধারের আশা ক্ষীণ হয়ে আসছে। এ পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী এক সপ্তাহের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।

মায়ানমারের শাসক সামরিক জান্তা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শুক্রবারের বিধ্বংসী ভূমিকম্পে ‘জীবনহানি ও ক্ষতির প্রতি সমবেদনা জানাতে’ ৬ এপ্রিল পর্যন্ত জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৫১ মিনিট ২ সেকেন্ডে ৭.৭ মাত্রার এক মিনিট নীরবতা পালন করা হবে, যা ভূমিকম্পটি আঘাত হানার সুনির্দিষ্ট সময়।

সে সময় জনগণকে থেমে গিয়ে ভূমিকম্পের শিকারদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি গণমাধ্যমকে সম্প্রচার বন্ধ রেখে শোক চিহ্ন প্রদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মন্দির ও প্যাগোডায় প্রার্থনার আয়োজনও করা হবে।

জান্তা সোমবার আরো জানায়, এখন পর্যন্ত নিশ্চিত মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ৫৬ জন।

আর আহতের সংখ্যা তিন হাজার ৯০০ ছাড়িয়েছে এবং এখনো ২৭০ জন নিখোঁজ। তবে এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মৃতদের মধ্যে তিনজন চীনা নাগরিক ও দুজন ফরাসি নাগরিক রয়েছেন বলে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ও প্যারিসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

উদ্ধার অভিযান ধীর হয়ে আসছে
এদিকে এই ঘোষণার মধ্যেই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম মান্দালয়ে উদ্ধার অভিযানের গতি কমে আসছে।

১৭ লাখেরও বেশি জনসংখ্যার এ শহরটিতে এখনো হাজারো মানুষ বাড়ি ফিরতে পারেনি।

মান্দালয়ের সাজ্জা নর্থ মসজিদের প্রধান প্রশাসক অং মিন্ট হুসেইন বলেন, ‘পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে এটি ব্যাখ্যা করা কঠিন।’

টানা চার রাত ধরে বহু মানুষ খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় রাত কাটাচ্ছে। কেউ কেউ তাঁবুর ব্যবস্থা করতে পারলেও অনেকেই রাস্তার ওপর কম্বলে শুয়ে আছে, ভবনধসের আশঙ্কায় দালান থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করছে। 

ভূমিকম্পের প্রভাব এতটাই ভয়াবহ ছিল যে শত শত কিলোমিটার দূরে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককেও ৩০ তলাবিশিষ্ট একটি নির্মীয়মাণ ভবন ধসে পড়ে।

সেখানে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।  

খোলা আকাশের নিচে হাসপাতাল
অন্যদিকে মান্দালয়ের এক হাজার শয্যার সাধারণ হাসপাতাল খালি করে ফেলা হয়েছে এবং শত শত রোগীকে বাইরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের পার্কিং এলাকায় স্ট্রেচারে শুয়ে থাকা অনেক রোগীকে কেবল একটি পাতলা ত্রিপল দিয়ে সূর্যের তাপ থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্বজনরা তাদের পাশে থেকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন, কেউ হাত ধরে আছেন, আবার কেউ বাঁশের পাখা দিয়ে বাতাস করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, ‘আমরা যা পারছি, তা-ই করছি। আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

অস্বাভাবিক গরমে উদ্ধারকর্মীরা ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন এবং মৃতদেহ দ্রুত পচে যাওয়ায় শনাক্তকরণে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তবে সোমবার থেকে মান্দালয়ের রাস্তায় কিছু যানবাহন চলতে শুরু করেছে, রেস্তোরাঁ ও হকাররা ফের কাজ শুরু করেছেন। শহরের একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া মসজিদের সামনে শত শত মুসলিম ঈদুল ফিতরের নামাজও আদায় করেন।  

মানবিক সংকট আরো ঘনীভূত
মায়ানমার এমনিতেই বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি ছিল। দেশটি ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর চার বছর ধরে গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত, অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে এবং স্বাস্থ্যসেবা ও অবকাঠামো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ভূমিকম্পটিকে সর্বোচ্চ স্তরের জরুরি পরিস্থিতি হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং জীবন বাঁচানোর জন্য আট মিলিয়ন ডলারের জরুরি তহবিল চেয়েছে। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সংস্থাও ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা চেয়ে আবেদন করেছে।

অত্যন্ত বিরল এক পদক্ষেপে সামরিক জান্তার প্রধান মিন অং হ্লাইং আন্তর্জাতিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন। অতীতে বিচ্ছিন্ন মায়ানমারের শাসকগোষ্ঠী বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরও বিদেশি সহায়তা নিতে অপারগতা দেখিয়েছিল।

জান্তা মুখপাত্র জাও মিন টুন সোমবার চীন, রাশিয়া, ভারতসহ কয়েকটি মিত্র দেশের সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা আহতদের চিকিৎসা ও নিখোঁজদের সন্ধানে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’  

তবে ভূমিকম্পের পরও সামরিক বাহিনী বিদ্রোহীদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। একটি সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠন এএফপিকে জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পরপরই তাদের ওপর বিমান হামলায় সাতজন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। সোমবারও আরো কিছু বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে।  

মায়ানমারের চলমান গৃহযুদ্ধে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বাহিনী ও বিভিন্ন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী লড়াই করছে, যা ইতিমধ্যে ৩৫ লাখের বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে।

এদিকে ব্যাঙ্ককে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হচ্ছে। সেখানে এখন পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে এবং অন্তত ৭৫ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখনো জীবিতদের উদ্ধারের আশা পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি।

মন্তব্য

দক্ষিণ গাজায় ‘অত্যন্ত কঠোর যুদ্ধে’ ফিরছে ইসরায়েলি সেনারা

    জোরপূর্বক উচ্ছেদের আদেশ ঘোষণা শোকের ছায়ায় ঈদ উদযাপন
আলজাজিরা
আলজাজিরা
শেয়ার
দক্ষিণ গাজায় ‘অত্যন্ত কঠোর যুদ্ধে’ ফিরছে ইসরায়েলি সেনারা
নতুন ইসরায়েলি উচ্ছেদ আদেশের পর রাফা থেকে পালিয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনিরা ৩১ মার্চ গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে পৌঁছয়। ছবি : এএফপি

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাতে তাদের নতুন হামলা জোরদারের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সেখানে ফের জোরপূর্বক উচ্ছেদের আদেশ ঘোষণা করেছে।

সেনাবাহিনীর আরবি ভাষার মুখপাত্র আভিখাই আদরেয়ি সোমবার সকালে এক্সে ঘোষণা করেন, সেনাবাহিনী রাফা ও তার আশপাশের এলাকায় ‘অত্যন্ত কঠোরভাবে যুদ্ধ করতে’ ফিরছে। তিনি ফিলিস্তিনিদের তাৎক্ষণিকভাবে উপকূলীয় এলাকা আল-মাওয়াসিতে আশ্রয় নিতে নির্দেশ দেন। যদিও গাজার ওপর চলমান যুদ্ধে এই এলাকাও বারবার ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে, তা সত্ত্বেও এটিকে একটি ‘নিরাপদ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।

উচ্ছেদ আদেশ জারির কিছুক্ষণ পরই আলজাজিরা আরবি জানায়, ওই এলাকায় বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য স্থাপিত একটি তাঁবুর ওপর ইসরায়েলি হামলায় অন্তত দুজন নিহত হয়েছে।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা (ওসিএইচএ) জানিয়েছিল, জানুয়ারিতে ঘোষিত নাজুক যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল ১৮ মার্চ থেকে গাজার ওপর নতুন করে হামলা শুরুর করলে প্রায় এক লাখ ৪২ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নতুন করে শুরু হওয়া বোমাবর্ষণে ইতিমধ্যে প্রায় এক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

ওই বছর ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলে এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হয় এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েল গাজার ওপর যুদ্ধ শুরু করে।

শোকের ছায়ায় ঈদ উদযাপন
এদিকে পবিত্র রমজান মাসের সমাপ্তি উপলক্ষে তিন দিনের ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে ফিলিস্তিনিরা, তবে গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলতে থাকায় ঈদও বেদনায় ভরে উঠেছে। ঈদের প্রথম দিন রবিবার অন্তত ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। সোমবার সকালেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

ইসরায়েলি হামলায় আরো অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছে।

গাজার কেন্দ্রীয় শহর দেইর আল-বালাহ থেকে আলজাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খোদারি জানান, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রধান শহর খান ইউনিসে ইসরায়েলি বাহিনী ‘কমপক্ষে সাতটি পরিবারের বাড়িতে’ হামলা চালিয়েছে।

তিনি আরো জানান, গাজা উপত্যকার কেন্দ্রীয় অঞ্চল নুসেইরাত ও নেতজারিম করিডরের খুব কাছাকাছি এলাকায়ও প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। দেইর আল-বালাহতেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং সেখানে তিনজন কৃষক নিহত হয়েছেন।

গাজার উত্তরাঞ্চলীয় বেইত হানুনে এখন ফিলিস্তিনিরা ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে, যেখানে একসময় শিশুদের ঈদের আনন্দে মেতে ওঠার কথা ছিল।

উইসাম নাসার নামের এক ফিলিস্তিনি শিশু আলজাজিরাকে বলে, ‘আমরা সৈকতের কাছেও যেতে ভয় পাচ্ছি, যদি ইসরায়েলি সেনারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।’

পাশাপাশি হুসেইন আলকাফারনা বলেন, ‘এই ঈদে আমাদের কোনো আনন্দ নেই। আমরা নতুন পোশাকও কিনতে পারছি না, তার ওপর সারাক্ষণ ভয় আর আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে।’

মন্তব্য

স্পেনে কয়লাখনিতে বিস্ফোরণে নিহত ৫

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
স্পেনে কয়লাখনিতে বিস্ফোরণে নিহত ৫
স্পেনের উত্তরাঞ্চলীয় আস্তুরিয়াস অঞ্চলের একটি কয়লাখনিতে সোমবার বিস্ফোরণে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। ছবি : বিবিসি

স্পেনের উত্তরাঞ্চলীয় আস্তুরিয়াস অঞ্চলের একটি কয়লাখনিতে সোমবার বিস্ফোরণে পাঁচজন নিহত ও চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এ ছাড়া মাদ্রিদ থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত দেগানার সেরেডো খনিতে আরো দুই শ্রমিক দুর্ঘটনায় অক্ষত রয়েছেন বলে স্থানীয় জরুরি পরিষেবা সংস্থা জানিয়েছে।

বিস্ফোরণের কারণ নিশ্চিত না হলেও জরুরি পরিষেবা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ‘একটি মেশিনে সমস্যা’র কারণে ‘দুর্ঘটনা’ সম্পর্কে তাদের সতর্ক করা হয়েছিল। অন্যদিকে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মেশিন বিস্ফোরিত হয়েছে।

আহতদের নিকটবর্তী শহরগুলোর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আহতরা দগ্ধ হয়েছেন এবং তাদের মাথায় আঘাত লেগেছে।

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় নিহতদের পরিবারের প্রতি ‘গভীর সমবেদনা’ জানিয়েছেন এবং আহতদের ‘দ্রুত সুস্থতা’ কামনা করেছেন।

আস্তুরিয়াসের আঞ্চলিক সরকারের প্রধান অ্যাড্রিয়ান বারবন ‘নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে’ দুই দিনের শোক ঘোষণা করেছেন।

ঘন বনভূমিযুক্ত পাহাড়ি অঞ্চল আস্তুরিয়াসে খনি শতাব্দী ধরে একটি প্রধান শিল্প। ১৯৯৫ সালে মিয়েরেস শহরের কাছে আস্তুরিয়াসে একটি খনিতে বিস্ফোরণের পর ১৪ জন মারা যান।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

ফ্রান্সে অ্যাপলকে ১৫০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
ফ্রান্সে অ্যাপলকে ১৫০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা
প্রতীকী ছবি : এএফপি

ফ্রান্সের প্রতিযোগিতা কর্তৃপক্ষ সোমবার ঘোষণা করেছে, অ্যাপ ট্র্যাকিং গোপনীয়তা নীতিসংক্রান্ত কারণে তারা অ্যাপলকে ১৫০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ১৬২ মিলিয়ন ডলার) জরিমানা করেছে। এই ফিচারটি বর্তমানে ইউরোপের একাধিক দেশে তদন্তের আওতায় রয়েছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, অ্যাপল তাদের অ্যাপ ট্র্যাকিং ট্রান্সপারেন্সি (এটিটি) সফটওয়্যার যেভাবে কার্যকর করেছে, তা ব্যবহারকারীদের ডেটা সুরক্ষিত রাখার লক্ষ্যে ‘না প্রয়োজনীয়, না প্রাসঙ্গিক’। পাশাপাশি এটি তৃতীয় পক্ষের প্রকাশকদেরও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

জরিমানার পাশাপাশি অ্যাপলকে সাত দিনের জন্য তাদের ওয়েবসাইটে এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ করতে হবে।

জার্মানি, ইতালি, রুমানিয়া ও পোল্যান্ডের কর্তৃপক্ষও এটিটিসংক্রান্ত তদন্ত শুরু করেছে, যেটিকে অ্যাপল গোপনীয়তা সুরক্ষার পদক্ষেপ হিসেবে প্রচার করে থাকে। এই জরিমানা ইউরোপীয় নিয়ন্ত্রকদের কোনো মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিকতম পদক্ষেপ।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ধরনের জরিমানার প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।

অ্যাপল এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা আজকের সিদ্ধান্তে হতাশ, তবে ফ্রান্সের প্রতিযোগিতা কর্তৃপক্ষ এটিটিতে কোনো নির্দিষ্ট পরিবর্তন আনতে বলেনি।’

অন্যদিকে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি অ্যাপলের দায়িত্ব যে তারা নিয়ম মেনে চলবে।  

২০২১ সালে চালু হওয়া এটিটি ফিচারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের অন্যান্য অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে ট্র্যাকিংয়ের জন্য সম্মতি নিতে হবে। অনুমতি না দিলে সংশ্লিষ্ট অ্যাপ ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে না, যা লক্ষ্যভিত্তিক বিজ্ঞাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

সমালোচকরা বলছেন, অ্যাপল এই ব্যবস্থা ব্যবহার করে তাদের নিজস্ব বিজ্ঞাপন পরিষেবাকে এগিয়ে রাখছে এবং প্রতিযোগীদের সীমিত করছে।  

ফ্রান্সের প্রতিযোগিতা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এটিটি তৃতীয় পক্ষের অ্যাপগুলোর জন্য অতিরিক্ত সম্মতি জানানো বাধ্যতামূলক করেছে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য বিরক্তিকর হয়ে উঠছে।  

তদন্তে আরো উঠে এসেছে, অ্যাপলের সিস্টেম ব্যবহারকারীদের বিজ্ঞাপন ট্র্যাকিং থেকে বের হওয়ার জন্য একবার নয়, বরং দুইবার অনুমতি দিতে বাধ্য করে। এতে ফিচারটির নিরপেক্ষতা ব্যাহত হচ্ছে এবং অ্যাপ প্রকাশক ও বিজ্ঞাপন পরিষেবা প্রদানকারীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।  

কর্তৃপক্ষ বলছে, অ্যাপলের এই নীতি ছোট প্রকাশকদের ওপর বেশি প্রভাব ফেলছে, যারা বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের ওপর নির্ভরশীল।

 

বিজ্ঞাপন খাতের প্রতিক্রিয়া  
এ ছাড়া বিজ্ঞাপন খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অভিযোগ করেছে, এটিটি ব্যবহারকারীদের লক্ষ্যভিত্তিক বিজ্ঞাপন দেখানোর সক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করছে। তবে ২০২১ সালে ফ্রান্সের প্রতিযোগিতা কর্তৃপক্ষ জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানালেও তারা তদন্ত চালিয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন খাতের সংগঠন অ্যালায়েন্স ডিজিটাল, ইন্টারনেট অ্যাডভার্টাইজিং সিন্ডিকেট ও মিডিয়া কনসাল্টিং অ্যান্ড বাইয়িং কম্পানিজ ইউনিয়ন এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘এই সিদ্ধান্ত অনলাইন মিডিয়া ও বিজ্ঞাপন খাতে সক্রিয় ৯ হাজার কম্পানির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয়।’

ফ্রান্সের প্রতিযোগিতা কর্তৃপক্ষের প্রধান বেনোয়া কোয়েরে বলেন, ‘১৫০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা আমাদের কাছে যুক্তিসংগত ও উপযুক্ত মনে হয়েছে। অ্যাপলের রাজস্ব বিবেচনায় নিলে এই পরিমাণ অর্থ তুলনামূলকভাবে কম।’

গত বছর প্রায় ৪০০ বিলিয়ন ডলার মোট আয় করা অ্যাপল তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, এটিটি ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তার ওপর আরো নিয়ন্ত্রণ দেয় এবং এটি একটি সহজবোধ্য ও স্বচ্ছ পদ্ধতি। তারা আরো বলেছে, ‘এই পদ্ধতি সব ডেভেলপারের জন্য এক রকম, যার মধ্যে অ্যাপলও রয়েছে। এটি বিশ্বব্যাপী ভোক্তা, গোপনীয়তা সংরক্ষণকর্মী ও ডেটা সুরক্ষা কর্তৃপক্ষদের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ