আদালতের আদেশ অগ্রাহ্য করেই ভেনিজুয়েলানদের তাড়ালেন ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আদালতের আদেশ অগ্রাহ্য করেই ভেনিজুয়েলানদের তাড়ালেন ট্রাম্প
ছবিসূত্র: এএফপি

আদালতের আদেশ অগ্রাহ্য করে ভেনেজুয়েলান অপরাধচক্রের অভিযুক্ত সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ফেডারেল আদালতের সাময়িক স্থগিতাদেশের পরও দুই শতাধিক ভেনেজুয়েলানকে নিয়ে এল সালভাদরে পাঠালো যুক্তরাষ্ট্র।  যুদ্ধকালীন আইন ব্যবহার করেই তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

হোয়াইট হাউজের নজিরবিহীন এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়, প্রেসিডেন্টের কাজে বাঁধা দেওয়ার অধিকার বিচার বিভাগের নেই।

 

বিচারক জেমস বোসবার্গি এই আদেশ দিয়েছিলেন। বহিঃশত্রু আইনের আওতায় এই আদেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যা মূলত যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ব্যবহৃত হয়। ভেনেজুয়েলান অপরাধচক্র ত্রেন দে আরাহুয়ার  দুই শতাধিক অভিযুক্ত সদস্যকে এই আদেশের পর বের করে দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। যারা অপহরণ, চাঁদাবাজি এবং চুক্তি হত্যার সঙ্গে জড়িত ভেনেজুয়েলার একটি গ্যাং।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মার্কিন ভূখণ্ড থেকে বহিষ্কৃত বিদেশি সন্ত্রাসী বহনকারী উড়োজাহাজের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করার কোনো অধিকার একজন বিচারকের নেই।’

তিনি বলেন, আদালতের কোনো আইনি ভিত্তি নেই এবং একজন প্রেসিডেন্ট কীভাবে বৈদেশিক বিষয় পরিচালনা করবেন তার ওপর সাধারণত ফেডারেল আদালতের কোনো এখতিয়ার নেই। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে মার্কিন সাংবিধানিক ব্যবস্থায় ক্ষমতার ভারসাম্য ও বিচারবিভাগের স্বাধীনতার প্রতি প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ জানালেন ট্রাম্প।

আরো পড়ুন
কবে ফিরছেন আটকা পড়া মহাকাশচারীরা, কত অর্থ পাবেন সুনীতা-বুচ?

কবে ফিরছেন আটকা পড়া মহাকাশচারীরা, কত অর্থ পাবেন সুনীতা-বুচ?

 

স্বাধীনতাবাদী ক্যাটো ইনস্টিটিউটের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এবং নাগরিক স্বাধীনতা বিষয়ক আইন বিশেষজ্ঞ প্যাট্রিক এডিংটন বলেন, ‘যাই বলুক না কেন, হোয়াইট হাউস প্রকাশ্য বিচারকের আদেশ অগ্রাহ্য করেছে।

তিনি আরো বলেন, ‘এটি সীমাহীন এবং অবশ্যই নজিরবিহীন।’ এ ছাড়া মার্কিন সরকারের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য উপেক্ষা করার এমন নজির গৃহযুদ্ধের পর আর দেখা যায়নি বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। 

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ভেনেজুয়েলান এই অপরাধীদের এল সালভাদরে পৌঁছার খবর নিশ্চিত করেছেন এবং প্রেসিডেন্ট বুকেলের প্রশংসা করেছেন। 

 তার প্রশাসন আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করেছে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আপনাকে এটা বলতে পারি যে, এরা খারাপ লোক ছিল।’

সূত্র : রয়টার্স

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু প্রশ্নে যা বললেন মার্কিন মুখপাত্র

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু প্রশ্নে যা বললেন মার্কিন মুখপাত্র
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়ন কী— এমন প্রশ্নের জবাবে বিষয়টিকে কূটনৈতিক আলোচনার অংশ বলে উল্লেখ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নবনিযুক্ত মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস। খবর ফক্স নিউজের।

গতকাল সোমবার স্থানীয় সময়ে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। 

ওই সাংবাদিক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের কয়েকদিন আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।

এখন নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নিয়েছে এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রায় ৬০ দিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি সম্পর্কে তার মূল্যায়ন কী? তিনি এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?

এ প্রশ্নের জবাবে ট্যামি ব্রুস বলেন, আপনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কথা বলছেন, যিনি অন্য দেশের ঘটনাবলি কীভাবে দেখেন তা নিয়ে কথা বলেছিলেন। তবে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও এই বিষয়ে তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করেন। কূটনৈতিক আলোচনা এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে কথোপকথনের বিষয়ে আমি কোনো পূর্বানুমান করতে চাই না।

এসব বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।

সাংবাদিক পুনরায় একই প্রশ্ন উত্থাপন করতে চাইলে ব্রুস তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, সরকার থেকে সরকার পর্যায়ে কূটনৈতিক আলোচনা বা কোনো নির্দিষ্ট দেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলি সম্পর্কে সরাসরি মন্তব্য করা আমার কাজ নয়। আমি কোনো পূর্বানুমানও করতে চাই না।

এর আগে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও সহিংসতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড।

তাই এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

সরকার গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, আমরা গভীর উদ্বেগ ও হতাশার সঙ্গে তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য লক্ষ্য করেছি, যেখানে তিনি বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ‘নিপীড়ন ও হত্যা’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে বলেছেন, ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীদের হুমকি এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বৈশ্বিক তৎপরতা একই আদর্শ ও লক্ষ্য দ্বারা পরিচালিত হয়। সেই আদর্শ ও লক্ষ্য হলো ইসলামপন্থী খিলাফতের মাধ্যমে শাসন করা।’

তুলসী গ্যাবার্ডের এই মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনামের জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলেছে, ‘বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইসলাম চর্চার জন্য সুপরিচিত এবং চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অসাধারণ অগ্রগতি অর্জন করেছে।’

আরো পড়ুন
খেলা শুরু করছো তোমরা, শেষ করব আমরা : সন্ত্রাসী সাজ্জাদের স্ত্রী

খেলা শুরু করছো তোমরা, শেষ করব আমরা : সন্ত্রাসী সাজ্জাদের স্ত্রী

 

গ্যাবার্ডের মন্তব্য কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ বা অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে করা হয়নি বলে বাংলাদেশ সরকার ওই বিবৃতিতে দাবি করে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিবৃতিতে উল্লেখ করে, তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্যে পুরো বাংলাদেশকে অন্যায় ও অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
 

মন্তব্য

উসকানির অভিযোগে ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে আটক করেছে ইসরায়েল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
উসকানির অভিযোগে ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে আটক করেছে ইসরায়েল
জেরুজালেমে ছেলের সঙ্গে আবদেল্লাতিফ। সূত্র: সিএনএন (পারিবারিক ছবি)।

ইসরায়েলি বিচারক মুক্তি দেওয়ার আদেশ দিলেও, ইসরায়েলি পুলিশ একজন সুপরিচিত ফিলিস্তিনি নারী সাংবাদিককে জেরুজালেমে আটক রাখার চেষ্টা করছে। যদিও তাকে ‘উসকানি’ এবং ‘সন্ত্রাসবাদের সমর্থন’ সম্পর্কিত অভিযোগে সোমবার আটক রাখা হয়েছে। আবদেল্লাতিফ এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

গতকাল সোমবার জেরুজালেমের একটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আবদেল্লাতিফকে হাজির করা হয়।

যেখানে একজন বিচারক জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে আরো পাঁচ দিনের জন্য আটক রাখার পুলিশের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। 

তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট অনুসারে লতিফেহ আবদেল্লাতিফ একজন ফ্রিল্যান্স ফটোসাংবাদিক। যার কাজ রয়টার্স, এবিসি নিউজ, বিবিসি, আল জাজিরা এবং টিআরটিতে প্রকাশিত হয়েছে।

আরো পড়ুন
মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি ঘিরে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, ভারতে কারফিউ জারি

মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি ঘিরে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, ভারতে কারফিউ জারি

 

 

ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, গত রবিবার জেরুজালেম জেলা পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে ‘সন্ত্রাসবাদের জন্য উসকানি এবং সমর্থনের সন্দেহে’ পুরাতন শহরে তার বাড়িতে গ্রেপ্তার করেছিলেন।

আবদেল্লাতিফের আইনজীবী এবং তার মা বলেছেন, বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অফিসাররা চিহ্নহীন যানবাহনে করে এসেছিল।

এক বিবৃতিতে পুলিশ আবদেল্লাতিফের প্রয়াত হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের একটি ভিডিও পোস্ট করার দিকে ইঙ্গিত করেছে। যেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘তিনি শহীদ হিসেবে মৃত্যুবরণ করতে চান।

’ 

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘এই ধরনের এবং অন্যান্য পোস্টগুলোতে স্পষ্ট যে, সন্দেহভাজন ব্যক্তি (আবদেল্লাতিফ) সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ডের প্রশংসা এবং মহিমান্বিত করছেন।’

আদালতে শুনানির পর আবদেল্লাতিফের আইনজীবী নাসের ওদেহ সিএনএনকে বলেন, ‘আদালত দেখেছেন, সাংবাদিক হিসেবে তার কাজের ভিত্তিতে এবং প্রতিরক্ষার ভিত্তিতে এই পোস্টগুলো তার পেশাগত কাজের অংশ। পোস্টগুলো ছয় মাসেরও বেশি পুরনো। তাকে আটকে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি জনসাধারণের জন্য বিপদ নয়।

’ তবে ইসরায়েলি পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তার মুক্তি স্থগিত করার জন্য সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করে।

আইনজীবী বলেন, ‘পুলিশ কেন্দ্রীয় আদালতে আপিল জমা না দেওয়া পর্যন্ত মুক্তির সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার অনুরোধ করেছে। বর্তমানে, আপিল প্রক্রিয়া কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত মুক্তির সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে।’

গত রবিবার আবদেল্লাতিফকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট সম্পর্কে তিন ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। 
আবদেল্লাতিফ এর আগেও ইসরায়েলি বাহিনীর দমন-পীড়নের শিকার হয়েছেন। 

আরো পড়ুন
গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ২০০

গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ২০০

 

২০২১ সালের মে মাসে অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে একটি ছোট ছেলেকে আটকের ভিডিও করার কারণে ইসরায়েলি সেনারা তাকে মারধর করেন, মরিচের গুড়া ছিটিয়ে দেন এবং তার মাথার স্কার্ফ জোর করে খুলে ফেলেন। 

ঘটনার সময় আবদেল্লাতিফ ইসরায়েলি বাহিনীকে একটি শিশুকে আটক করতে দেখেন বলে জানান। শিশুটির বাবা ও অন্যান্য ফিলিস্তিনিরা এতে বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। আবদেল্লাতিফ তখন ঘটনাটি ভিডিও করার চেষ্টা করেন, কিন্তু ইসরায়েলি সেনারা তাকে ধাক্কা দেন, যদিও তিনি তাদের স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে তিনি একজন রিপোর্টার।

সেনারা তাকে উপেক্ষা করে পিছনে ঠেলে দিতে থাকে। তারপর তার হিজাব খুলে ফেলে এবং হাঁটুতে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফিলিস্তিনিরা আবদেল্লাতিফকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসে, ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এরপর তাদের বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সূত্র : সিএনএন, মিডল ইস্ট আই

মন্তব্য

মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি ঘিরে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, ভারতে কারফিউ জারি

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি ঘিরে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, ভারতে কারফিউ জারি
ছবিসূত্র : পিটিআই

মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি মহারাষ্ট্র থেকে সরিয়ে নেওয়ার দাবিকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনার পরে ভারতের নাগপুরের বেশ কয়েকটি এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। ১৭ শতকের সম্রাটের সমাধি আওরঙ্গবাদে অবস্থিত, যা বর্তমানে ছত্রপতি সম্ভাজিনগর জেলা নামে পরিচিত। 

নাগপুরের পুলিশ কমিশনার রবীন্দ্র কুমার সিঙ্গাল ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ১৬৩ ধারার অধীনে একটি নোটিশ জারি করেছেন।

এতে বলা হয়েছে, কোতোয়ালি, গণেশপেঠ, তহসিল, লাকাদগঞ্জ, পাচপাওলি, শান্তিনগর, সক্করদারা, নন্দনবন, ইমামওয়াদা, যশোধরানগর এবং কপিলনগর থানা এলাকায় কারফিউ প্রযোজ্য। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

আরো পড়ুন
গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ২০০

গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ২০০

 

আওরঙ্গজেব সমাধি ছত্রপতি সম্ভাজিনগর জেলা থেকে সরিয়ে ফেলার দাবিতে গতকাল সোমবার থেকে বিক্ষোভ শুরু করে বজরং দল। পরবর্তীতে এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এর পাশাপাশি ধর্মগ্রন্থ পোড়ানোর গুজব ছড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠেছে।

পুলিশ কমিশনারের নোটিশ অনুসারে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দলের সমর্থকরা গতকাল সোমবার নাগপুরের  শিবাজি মহারাজের মূর্তির কাছে জড়ো হয়ে মহারাষ্ট্র থেকে আওরঙ্গজেবের সমাধি অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তারা স্লোগান দেওয়া শুরু করে। আওরঙ্গজেবের ছবি এবং সবুজ কাপড়ে মোড়ানো একটি প্রতীকী সমাধি পুড়িয়ে দেয় বলে নোটিশে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, সবুজ কাপড় পোড়ানোর ফলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে দাবি করে, এতে পবিত্র শ্লোক লেখা ছিল, যার ফলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। 

নোটিশে বলা হয়েছে, গত সন্ধ্যায় একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের প্রায় ৮০ থেকে ১০০ জন হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয় এবং বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।

তবে পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পিটিআইয়ের এক প্রতিবেদন অনুসারে, চারজন আহত হয়েছেন। এক ডজনেরও বেশি পুলিশ কর্মীও আহত হয়েছেন।

আরো পড়ুন
উড্ডয়নের পরপরই হন্ডুরাস উপকূলে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, নিহত ৬

উড্ডয়নের পরপরই হন্ডুরাস উপকূলে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, নিহত ৬

 

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং নাগপুরের সংসদ সদস্য নীতিন গড়করি শান্ত থাকার আবেদন জানিয়েছেন এবং গুজবে বিশ্বাস না করার জন্য জনগণকে অনুরোধ করেছেন। 

তিনি আরো বলেন, ‘আমি আপনাদের সকলকে আশ্বস্ত করছি যারা ভুল করেছে অথবা অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে। মুখ্যমন্ত্রীকে ইতিমধ্যেই এই পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে, তাই আমি সকলকে গুজবে কান না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’

সহিংসতার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মোট ৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। এলাকায় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য জনগণকে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি নাগরিকদের গুজবে বিশ্বাস না করার এবং আইন নিজের হাতে না নেওয়ার জন্যও আহ্বান জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন
৯৫ দিন ধরে ভাসছিলেন সাগরে, বেঁচে ছিলেন কচ্ছপ খেয়ে

৯৫ দিন ধরে ভাসছিলেন সাগরে, বেঁচে ছিলেন কচ্ছপ খেয়ে

 

 

এদিকে বিরোধীরা এই সহিংসতার জন্য রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। শিবসেনা ইউবিটি বিধায়ক আদিত্য ঠাকরে এক্স-এ পোস্ট করে বলেছেন, ‘রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা আগের চেয়ে অনেক বেশি ভেঙে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শহর নাগপুর এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে।’

কংগ্রেস নেতা পবন খেরা বলেছেন, ‘নাগপুর তার অস্তিত্বের ৩০০ বছরে দাঙ্গার সম্মুখীন হয়নি। গত বেশ কয়েকদিন ধরে, ৩০০ বছরের পুরনো ইতিহাসকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে বিভাজন, বিভ্রান্তি এবং অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই সংঘর্ষগুলো কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয় ক্ষেত্রেই শাসকগোষ্ঠীর আদর্শের আসল চেহারা উন্মোচিত করছে।’

সূত্র: এনডিটিভি

মন্তব্য

স্ট্যাচু অব লিবার্টি ফেরত চায় ফ্রান্স, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
স্ট্যাচু অব লিবার্টি ফেরত চায় ফ্রান্স, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র
সংগৃহীত ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার প্রতীক স্ট্যাচু অব লিবার্টি। ফ্রান্সের পক্ষ থেকে ১৮৮৫ সালে উপহার হিসেবে দেওয়া এই ভাস্কর্য এখন দেশটিতে ফেরত চাওয়ার দাবি তুলেছেন এক ফরাসি আইন প্রণেতা। তবে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা এটি ফেরত দেবে না।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম এপির খবরে বলা হয়, ফ্রান্সের পার্লামেন্ট সদস্য রাফায়েল গ্লাকসম্যান দাবি তুলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আর সেই মূল্যবোধ ধারণ করে না, যার প্রতীক হিসেবে এই মূর্তিটি দেওয়া হয়েছিল।

গত রবিবার এক জনসমাবেশে রাফায়েল গ্লাকসম্যান বলেন, ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি আমাদের ফিরিয়ে দিন। যুক্তরাষ্ট্রের কিছু মানুষ অত্যাচারীদের পক্ষ নিয়েছে, বৈজ্ঞানিক স্বাধীনতার দাবিতে গবেষকদের বরখাস্ত করেছে। এই মূর্তি যে মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করে, তারা তা রক্ষা করতে পারছে না।’ 

ফ্রান্সের এমন দাবির প্রেক্ষিতে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেছেন, তাদেরকে এটি কখনোই ফেরত দেওয়া হবে না।

ওই নিম্ন-স্তরের ফরাসি রাজনীতিবিকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে, কেবল যুক্তরাষ্ট্রের কারণেই ফরাসিদের এখন জার্মান ভাষায় কথা বলতে হচ্ছে না। 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি জার্মানিকে ধ্বংস করে দেওয়া আমেরিকান-ফরাসি মিত্রশক্তির কথা উল্লেখ করে সোমবার তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ফ্রান্সকে সহায়তা করেছিল। এ জন্য তাদের কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত।

১৮৮৫ সালে ফরাসি শিল্পী ফ্রেডেরিক বার্থোলডি ডিজাইন করা স্ট্যাচু অব লিবার্টি যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ