ঢাকা, শনিবার ২২ মার্চ ২০২৫
৮ চৈত্র ১৪৩১, ২১ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, শনিবার ২২ মার্চ ২০২৫
৮ চৈত্র ১৪৩১, ২১ রমজান ১৪৪৬
দ্য গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ

ইসরায়েল কেন গাজায় ফের হামলা শুরু করল

  • হামাসের ওপর নতুন করে আক্রমণের জন্য ইসরায়েলের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের পূর্ণ সমর্থন ছিল
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
ইসরায়েল কেন গাজায় ফের হামলা শুরু করল
রক্তাক্ত গাজা : ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় নারী, শিশুসহ চার শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গতকাল গাজার বেইত লাহিয়ায় একটি হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরা একে অন্যকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে। ছবি : এএফপি

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় আবারও বড় ধরনের হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে চার শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এতে কয়েক শ ব্যক্তি আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। হতাহতের মধ্যে হামাসের কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, নারী, শিশুসহ অনেক বেসামরিক ব্যক্তি রয়েছে।

উত্তর ও মধ্য গাজার কিছু অংশ থেকে লোকজনকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। এর মধ্য দিয়ে বড় ধরনের স্থল অভিযানের ইঙ্গিত মিলেছে। ফলে সম্প্রতি ঘরে ফেরা ফিলিস্তিনিরা আবারও বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কায় আছে।

এখন কেন হামলা : ইসরায়েল কয়েক সপ্তাহ ধরে হামলা চালানোর হুমকি দিয়ে আসছে।

তেল আবিব বলছে, পুনরায় গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠা হামাস নেতৃত্বকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হলে জিম্মি মুক্তির বিষয়টি গতি পাবে।

ছয় সপ্তাহ আগের চেয়ে ইসরায়েলের সক্ষমতা এখন বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহের কারণে ইসরায়েলের গোলাবারুদের মজুদ বেড়েছে এবং হামাস নেতাদের মধ্যে সম্ভাব্য নতুন লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া বিমান ও অন্যান্য সরঞ্জাম মেরামত করা হয়েছে এবং সেনারা পর্যাপ্ত বিশ্রাম পেয়েছে।

হামলার অন্যান্য কারণ : গাজায় নতুন হামলার আরো কিছু কারণ চিহ্নিত করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমালোচকরা। একটি কারণ হলো যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ে যাওয়ার ইচ্ছা নেতানিয়াহুর কখনোই ছিল না। দ্বিতীয় পর্যায়ে গেলে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা লাগত, যার ফলে গাজার শাসনভার কার্যত হামাসের হাতে চলে যেত। সেখানকার অধিকারকর্মীরা বলছেন, সম্প্রতি গাজায় নিজের নিয়ন্ত্রণ পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করেছে হামাস। কারণ বেসামরিক লোকজন গাজায় ফিরতে শুরু করেছে এবং হামাসের জন্য নতুন সদস্য জোগাড় করা সহজ হয়ে গেছে।

আরেকটি কারণ হলো হামাসের ওপর নতুন করে আক্রমণের জন্য ইসরায়েলের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের পূর্ণ সমর্থন ছিল।

এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কারণও রয়েছে। আসন্ন ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয় পেতে এবং ক্ষমতা ধরে রাখতে নেতানিয়াহুর প্রয়োজন ডানপন্থী মিত্রদের সমর্থন। এই মিত্ররা গাজায় যুদ্ধের স্থায়ী অবসানের তীব্র বিরোধিতা করেছে। জানুয়ারির যুদ্ধবিরতির প্রতিবাদে মন্ত্রিসভা থেকে একজন পদত্যাগও করেছেন। স্বল্প মেয়াদে হলেও এই গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন এখন নিশ্চিত।

এদিকে দুর্নীতির অভিযোগে নেতানিয়াহুর বিচার চলছে। দোষী সাব্যস্ত হলে কারাদণ্ড হতে পারে তাঁর। গতকাল আদালতে উপস্থিত থাকার কথা ছিল তাঁর। তবে যুদ্ধ শুরুর কারণ দেখিয়ে আদালতে উপস্থিত না থাকার অনুরোধ করেন নেতানিয়াহু, যা মঞ্জুর করেছেন আদালত।

এরপর কী হতে পারে : ভয়াবহ বাস্তবতা হলো ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার দুই মাসের যুদ্ধবিরতি এখন শেষ। নতুন করে ইসরায়েলের আক্রমণ বন্ধ করার জন্য শিগগির একটি চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলে মনে হচ্ছে।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এটি স্পষ্ট করেছেন যে, গতকালের হামলা ছিল একটি সম্ভাব্য বিস্তৃত আক্রমণের সূচনা, যা হামাসের হাতে জিম্মি ৫৯ জনকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। যদিও তাঁদের অর্ধেকের বেশি মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে গাজায় উল্লেখযোগ্য বেসামরিক লোকজনের হতাহতের ঘটনা, ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি এবং আরো ধ্বংসযজ্ঞ অনিবার্য হয়ে পড়েছে।

এদিকে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, ইসরায়েল এই হামলার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পরামর্শ করেছে।

অন্যদিকে গাজায় গতকালের ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ, চীন, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, ইরান ও জর্দান।

১৮ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজার বেশির ভাগ অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। ঘরবাড়ি, হাসপাতাল ও স্কুল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত এই অঞ্চলে ৪৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। সূত্র : আলজাজিরা

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

পাকিস্তানে তালেবান হামলায় পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
পাকিস্তানে তালেবান হামলায় পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একাধিক হামলায় পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ছয়জন আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার পুলিশ কথা জানায়। এসব তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) গোষ্ঠী এসব হামলার দায় স্বীকার করেছে।

এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, খাইবারপাখতুনখোয়া প্রদেশে কমপক্ষে পাঁচটি হামলা হয়েছে।

মার্চের মাঝামাঝি সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে বসন্ত অভিযান ঘোষণা করে টিটিপি। এর পর থেকে পার্বত্য প্রদেশ খাইবারপাকতুনখোয়া প্রদেশে ৮০টির বেশি হামলার দায় স্বীকার করেছে তারা। প্রাদেশিক রাজধানী পেশোয়ারের পুলিশপ্রধান কাশেম আলী বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের ওপর হামলা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, টিটিপি তাদের অভিযানের ঘোষণা দেওয়ার দুই দিনের মধ্যেই অন্তত ৯টি হামলা চালায়। সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

ভারতের বিরুদ্ধে মামলা ইলন মাস্কের

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
ভারতের বিরুদ্ধে মামলা ইলন মাস্কের
ইলন মাস্ক

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন সমাজমাধ্যম সংস্থা এক্স (সাবেক টুইটার)। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কর্ণাটক হাইকোর্টে মামলা করেছে সংস্থাটি। দেশটির তথ্য-প্রযুক্তি আইনের একটি নির্দিষ্ট ধারাকে কেন্দ্র যেভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, তা নিয়ে আপত্তি রয়েছে মাস্কের সংস্থার। এক্সের দাবি, এর মাধ্যমে অনলাইনে বিষয়বস্তুর ওপর অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণ এবং একতরফা কাটছাঁটের (সেন্সরশিপ) চেষ্টা করা হচ্ছে।

তাদের বক্তব্য, এটি সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী একটি রায়ের পরিপন্থী। এর মাধ্যমে অনলাইনে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকারকে খর্ব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ মাস্কের সংস্থার। তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৭৯(৩)(বি) ধারাকে কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে ব্যবহার করছে, সেটিকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে মামলা করেছে ওই সমাজমাধ্যম সংস্থা। ক্ষেত্রে ২০১৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের কথাও তুলে ধরেছে তারা।
ওই মামলায় বলা হয়েছিল, কেবল সঠিক বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বা ৬৯(এ) ধারায় নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসারে কোনো বিষয়বস্তু ব্লক করা যেতে পারে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার ওই ৬৯(এ) ধারার তোয়াক্কা না করেই পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে অভিযোগ এক্সের। মামলায় এক্স তথ্য-প্রযুক্তি আইনের এই দুটি ধারার কথাই মূলত তুলে ধরেছে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

মন্তব্য
সংক্ষিপ্ত

বিশ্বে সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপকারী দেশ ভারত : ট্রাম্প

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
বিশ্বে সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপকারী দেশ ভারত : ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুব ভালো। তবে সমস্যা হলো, বিশ্বের সর্বোচ্চ শুল্ক আদায়কারী দেশগুলোর মধ্যে একটি ভারত, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি সমস্যা। গত বৃহস্পতিবার ব্রেইবার্ট নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প এসব কথা বলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আমি মনে করি, তারা সম্ভবত এই শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে কমাবে।

তবে আগামী ২ এপ্রিল থেকে আমরা তাদের ওপর সেই একই শুল্ক আরোপ করব, যা তারা আমাদের পণ্য থেকে আদায় করে থাকে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই মন্তব্য ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে ভারত যদি শুল্ক কমানোর দিকে না যায়, তাহলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সংঘাত আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ ইকোনমিক করিডরকে ট্রাম্প একটি চমৎকার গ্রুপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যারা একসঙ্গে কাজ করে বাণিজ্যে মার্কিন স্বার্থ ক্ষুণ্ন করতে চায় এমন দেশগুলোর বিরুদ্ধে।

সূত্র : এনডিটিভি

 

মন্তব্য

প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ পুনরুদ্ধারের দাবি সুদান সেনাবাহিনীর

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ পুনরুদ্ধারের দাবি সুদান সেনাবাহিনীর

সুদানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার তারা তীব্র লড়াইয়ের পর আধাসামরিক র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) কাছ থেকে রাজধানী খার্তুমে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ পুনরুদ্ধার করেছে।

সেনাবাহিনীর মুখপাত্র নাবিল আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী শত্রুপক্ষের যোদ্ধা ও সরঞ্জাম সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছে এবং প্রচুর পরিমাণ সরঞ্জাম ও অস্ত্র জব্দ করেছে। সেনাবাহিনী বিজয় সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এবং আমাদের দেশের প্রতিটি ইঞ্চি সন্ত্রাসী ও তার সমর্থকদের হাত থেকে মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সব ফ্রন্টে অগ্রগতি অব্যাহত রাখবে।

সেনারা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের ভেতরের কিছু ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছে এবং অভিনন্দন বিনিময় করেছে।

যদিও তাৎক্ষণিকভাবে এসব ফুটেজ যাচাই করতে পারেনি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো।

এর আগে ২০২৩ সালের এপ্রিলে আরএসএফ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে আধাসামরিক বাহিনী প্রাসাদটি দখল করে নেয়। ওই সময় আরএসএফ দ্রুত খার্তুমের রাস্তাগুলো দখল করে। লোহিত সাগর উপকূলে বন্দর সুদানে পালিয়ে যায় সেনাবাহিনী সমর্থিত সরকার।

সেন্ট্রাল খার্তুমে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ মন্ত্রণালয় এবং রাজধানীর ব্যাবসায়িক জেলার পাশাপাশি অবস্থিত। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেনাবাহিনী শহরজুড়ে অভিযান চালানোর পর থেকে ভয়াবহ যুদ্ধের স্থান হয়ে উঠেছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে সেনাবাহিনী বলেছিল যে তাদের বাহিনী উত্তর ও দক্ষিণ থেকে একত্রিত হয়েছে।

লাখ লাখ মানুষ প্রায় দুই বছরে নিহত হয়েছে।

এক কোটি ২০ লাখেরও বেশি লোক
উচ্ছেদ হয়েছে এবং বিশ্বের বৃহত্তম ক্ষুধা ও বাস্তুচ্যুতিতে সংকট তৈরি হয়েছে সে দেশে। সূত্র : এএফপি

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ