<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মামলা দেওয়ার ঘটনা অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে কেন্দ্র করে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, বিশেষ করে পুলিশে গ্রেপ্তার বাণিজ্য চলে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের ঢালাওভাবে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তীকালে এসব মামলার কোনো সাক্ষীসাবুদ পাওয়া যায় না। এমনকি এসব মামলার বাদী যে পুলিশ বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, তারাও আদালতে সাক্ষি দিতে যায় না। মাঝখানে কিছু মানুষ হয়রানির শিকার হয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সেই পুরনো ঘটনা যেন আবার নতুন করে প্রত্যক্ষ করা গেল গত কয়েক মাসে। কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশে মামলা বাণিজ্যের একটি অসাধু চক্র গড়ে ওঠে। এই চক্র ভুয়া মামলায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের নাম ঢুকিয়ে আবার কেটে দেওয়ার অজুহাত করে কামিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। দেশজুড়ে এই চক্রটি এক আতঙ্কের নাম। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মামলা বাণিজ্য</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> চক্রের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় রাজনীতিক, অসাধু আইনজীবী এবং পুলিশ। এসব মামলা তদন্তের নামে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মামলা বাণিজ্যে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> জড়িয়ে পড়ছেন অনেক পুলিশ কর্মকর্তা। তারাও মামলার আসামির তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার অজুহাত করে কামিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। অনেক মামলার বাদী আসামিকে চেনেন না, আসামিও বাদীকে চেনেন না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে যে মামলাগুলো করা হয়েছে, তার অনেক মামলাই বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে স্বীকার করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা। মিথ্যা ও হয়রানিমূলক এসব মামলা যারা করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সবার অবগতির জন্য সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অনেকে মনে করেন, চাঁদাবাজি, পূর্বশত্রুতা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এসব বানোয়াট মামলা করা হচ্ছে। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মামলা বাণিজ্য</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> করতে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, ঠিকাদার, সরকারি কর্মকর্তাসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে আসামি করা হয়েছে।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত বছর ১৪ অক্টোবর মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়েরকারী ও অপতৎপরতাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সবার অবগতির জন্য সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাম্প্রতিক সময়ে চাঁদাবাজি, ব্ল্যাকমেইলিংসহ নানা রকম হয়রানি করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের উদ্দেশ্যমূলক মামলা দায়ের বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ফৌজদারি অপরাধ। এসব কর্মকাণ্ডে জড়িতদের কঠোরভাবে হুঁশিয়ারি প্রদানসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে এরই মধ্যে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> কিন্তু মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা করা থেমে নেই। কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর গ্রামের কৃষক কাশেম মিয়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় তিন মাসের বেশি সময় ধরে গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাড়িঘরছাড়া। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সহিংসতার ঘটনায় সারা দেশের বিভিন্ন থানায় গত আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাসে দুই হাজারের বেশি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় লক্ষাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১২ হাজারের বেশি আসামিকে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, মামলায় নিরপরাধ মানুষকে আসামি করা কোনোভাবেই উচিত নয়। আমাদের প্রত্যাশা, মামলা ও গ্রেপ্তার বাণিজ্য প্রতিরোধ করা হবে। ভুক্তভোগীরা যাতে প্রতিকার পায় সেই  ব্যবস্থা নিতে হবে।</span></span></span></span></p> <p> </p>