ঢাকা, সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫
৩ চৈত্র ১৪৩১, ১৬ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫
৩ চৈত্র ১৪৩১, ১৬ রমজান ১৪৪৬

প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হবে

  • শীর্ষ বাজারে পোশাক রপ্তানি
শেয়ার
প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হবে

বাংলাদেশের গার্মেন্টস বা তৈরি পোশাক শিল্প খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রশংসনীয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও এই শিল্প খাতটির ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। অনেক প্রতিকূলতা মোকাবেলা করেই বাংলাদেশের গার্মেন্টস বা তৈরি পোশাক শিল্প এগিয়ে চলেছে।

আন্তর্জাতিকভাবে কিংবা কোনো কোনো দেশের পক্ষ থেকে কখনো কখনো সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে। কখনো কঠিন শর্ত আরোপ করা হয়েছে। কখনো বড় ধরনের বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে। তার পরও তৈরি পোশাক শিল্প এখনো বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত।

গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, দুই শীর্ষ বাজারে পোশাক রপ্তানিতে ভালো করেছে বাংলাদেশ। রপ্তানি হওয়া ৬৯ শতাংশ তৈরি পোশাকের গন্তব্য হয়ে উঠেছে এখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ। গত সাত মাসের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি পর্যালোচনা করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দুই বাজারে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। পরিসংখ্যান তুলে ধরে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের সাত মাসে ইউরোপের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ১৩.৯১ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬.৬৮ শতাংশ। আয় হয়েছে ৪৪৭ কোটি ২৭ লাখ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানির সর্বশেষ তথ্যে বৈশ্বিক পোশাক বাজারে প্রধান সরবরাহকারী দেশগুলোর পণ্য রপ্তানির মূল্য ও পরিমাণের এই চিত্র উঠে আসে। ইউরোপের বাজারে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সাত মাসে তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৩.৯১ শতাংশ। আয় হয়েছে এক হাজার ১৮১ কোটি ১৬ লাখ ডলার।
অপ্রচলিত বাজারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬.৪২ শতাংশ। গত সাত মাসে এসব বাজারে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬.৪২ শতাংশ। এ সময় আয় হয়েছে ৩৯৬ কোটি ৬১ লাখ ডলার।

প্রতিবছর বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ আসে এই খাতটি থেকেই। তাই এই খাতটিকে এগিয়ে নেওয়ার দিকে আমাদের আরো বেশি তৎপর হতে হবে। পাশাপাশি বিদ্যমান বাজারগুলোতে বাংলাদেশের অবস্থান সুসংহত করার পাশাপাশি নতুন নতুন বাজার খুঁজতে হবে। পণ্য বহুমুখীকরণে আরো বেশি মনোযোগ দিতে হবে। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে এখন বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো অনেক বেশি সক্রিয়।

শীর্ষ বাজারে পোশাক রপ্তানিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির এই ইতিবাচক ধারা ধরে রাখতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে কাজের মানের দিকেও। তৈরি পোশাক খাত এগিয়ে যাবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিন

    গণপরিবহনে ডাকাতির আশঙ্কা
শেয়ার
নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিন

বছরে দুটি ঈদ বাঙালি মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসব। কাজের প্রয়োজনে যে যেখানেই থাকুক, এ সময় সুস্থ-সবল প্রায় সবাই নাড়ির টানে পরিবার বা স্বজনদের কাছে ফিরবেই। সামনে ঈদুল ফিতর। এখনো সপ্তাহ দুয়েক বাকি।

এরই মধ্যে ট্রেন, বাস ও লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রেলপথে অনলাইনে অগ্রিম টিকিট কেনার অ্যাপে প্রথম দিন সকাল ৮টার মধ্যেই ৭৩ লাখ বার টিকিট কেনার চেষ্টা হয়েছে। সোয়া ৮টার মধ্যে বিক্রি হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টিকিট। টিকিট না পেয়ে অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, ঈদের আগে ট্রেন, বাসসহ অন্যান্য পরিবহনে কয়েক কোটি মানুষ চলাচল করবে। কিন্তু এবার নিরাপত্তা নিয়ে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে রয়েছেন বাস মালিকরা। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী যানবাহনে ডাকাতির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এ নিয়ে পরিবহন খাতের অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে রাতে দূরপাল্লার বাসে ডাকাতির আশঙ্কা বেশি করছেন।

গবেষণা ও সচেতনতামূলক প্রতিষ্ঠান সেভ দ্য রোডের তথ্য মতে, গত আট মাসে সড়ক, রেল ও নৌপথে চার হাজার ৫০৫টি ছিনতাই এবং ২৫৫টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে শুধু সড়কপথে এক হাজার ৮৬৮টি ছিনতাই আর ১১৩টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছে ১৬৮ জন। এ ছাড়া ফুটপাত বা চলার পথে দুই হাজার ৪৩২টি ছিনতাই ও ৩৫টি ডাকাতির ঘটনায় এক হাজার ১৭ জন আহত এবং একজন নারীসহ দুজন নিহত হয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্য মতে, গত বছর জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে নিবন্ধিত যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা ৫৪ হাজার ৪৭৪।

এর মধ্যে আন্ত জেলা বাস প্রায় ২২ হাজার। আর রাজধানী থেকে বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করে প্রায় ১০ হাজার বাস। সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি সূত্র জানায়, ঈদ ঘিরে রাজধানী থেকে বিভিন্ন জেলায় একটি বাস দিনে অন্তত তিনটি করে ট্রিপ দেবে। প্রতি ট্রিপে গড়ে ৪০ জন যাত্রী থাকলে ১০ হাজার বাসে দিনে আট লাখ যাত্রী পরিবহন করা হবে। এবার ডাকাত আতঙ্ক নিয়েই যাত্রীসেবা দিতে হবে। এ অবস্থায় সড়ক পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে, বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা যথেষ্ট পরিমাণে বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। টহল বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিরাপত্তার অংশ হিসেবে সম্প্রতি হাইওয়ে পুলিশ স্পেশাল হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর (০১৩২০-১৮২২০০) চালু করেছে। জরুরি পরিস্থিতিতে এই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তাত্ক্ষণিক সাড়া পাওয়া যাবে।

আমরা চাই, এবারের ঈদ যাত্রা নিরাপদ ও আনন্দদায়ক হোক। ডাকাতি-ছিনতাই থেকে নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা রোধেও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

মন্তব্য

মহাসচিবের ইতিবাচক বার্তা

    সংলাপে সহায়তায় প্রস্তুত জাতিসংঘ
শেয়ার
মহাসচিবের ইতিবাচক বার্তা

রমজান সংহতি সফর শেষে বাংলাদেশ ছেড়ে গেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। চার দিনের সফরে গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসেন তিনি। শুক্রবার তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কক্সবাজার সফর করেন। সেখানে তাঁরা লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে অংশ নেন।

শনিবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, এসবিপি, ওএসপি, এসজিপি, পিএসসি। সেনাবাহিনীর ফেসবুক পেজে জানানো হয়, সৌহার্দ্যপূর্ণ এই বৈঠকে পারস্পরিক কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি জাতিসংঘ মহাসচিব জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারি ও দক্ষতার প্রশংসা করেন এবং শান্তিরক্ষীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে জাতিসংঘ ঢাকা অফিসের উদ্যোগে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর এক গোলটেবিল বৈঠক হয়। বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সংস্কারের বিষয়ে তাঁদের মতামত তুলে ধরেন।
নেতাদের গুতেরেস বলেছেন, সংস্কার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সম্মানে আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জাতিসংঘের সহায়তা কামনা করেছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশ সফর শেষে গতকাল রবিবার সকালে ঢাকা ছেড়ে যান। ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে গত শনিবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে জাতিসংঘ শান্তি, জাতীয় সংলাপ, আস্থা ও নিরাময়কে উৎসাহিত ও সহায়তা করতে প্রস্তুত।

জাতিসংঘ মহাসচিব তাঁর বক্তব্যে উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, অন্তর্বর্তী সরকার ও বাংলাদেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানান। তিনি পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে বাংলাদেশ এবং বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।

বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফর নিঃসন্দেহে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। কারণ বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। মানবিক কারণে বাংলাদেশ কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে সাময়িক আশ্রয় দিয়েছে।

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এই জনগোষ্ঠীর বিপুলসংখ্যক মানুষের ভার বহন করতে গিয়ে বাংলাদেশ হিমশিম খাচ্ছে। গত শুক্রবার কক্সবাজারে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আমরা একটি গভীর মানবিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে। আর্থিক সহায়তা কাটছাঁটের ফলে ২০২৪ সালে মানবিক সহায়তার তুলনায় এ বছর মাত্র ৪০ শতাংশ সহায়তা পাওয়ার নাটকীয় ঝুঁকির মুখোমুখি আমরা। তিনি উল্লেখ করেন, এর ভয়াবহ পরিণতি হবে।

সামরিক অভিযানের মুখে মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে মায়ানমার সরকার শুধু টালবাহানা করছে। বাংলাদেশ সফরে এসে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মায়ানমারের সব প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে ভূমিকা রাখতে হবে।

বাংলাদেশ এখন এক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের কাজ হাতে নিয়েছে। আগামী দিনের উজ্জ্বল বাংলাদেশে জাতিসংঘ তার সহায়তা দিয়ে যাবে, জাতিসংঘ মহাসচিব সে বার্তাই দিয়ে গেলেন।

মন্তব্য

সময় ও অর্থের এ অপচয় কেন

    কাজ শেষ না করেই প্রকল্পের সমাপ্তি
শেয়ার
সময় ও অর্থের এ অপচয় কেন

জনস্বার্থে রাষ্ট্রীয়ভাবে নানামুখী প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। কিন্তু প্রকল্প গ্রহণ থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত পুরো কাজ যদি সঠিকভাবে সম্পন্ন না হয়, তাহলে জনপ্রত্যাশা যেমন পূরণ হয় না, তেমনি রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় হয়। নিকট অতীতে এমন অনেক নজির রয়েছে।

গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ ছয় বছরেই কেবল ৮০৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন না করেই সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে কোনো কোনোটির অগ্রগতি ছিল ২৫ শতাংশেরও কম। এসব প্রকল্প থেকে লক্ষ্য জনগোষ্ঠীও কাঙ্ক্ষিত সেবাপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) থেকে এসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

এতে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার আমলের ২০১৮-১৯ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ছয়টি অর্থবছরের মধ্যে শেষ করা প্রকল্প পর্যালোচনা করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, কাজ শেষ না করেই প্রকল্পের সমাপ্তি ঘোষণার পেছনে যেসব কারণ জড়িত, তার মধ্যে রয়েছে যেনতেনভাবে প্রকল্প হাতে নেওয়া, রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রকল্প নেওয়া, সাবেক এমপিদের চাহিদা পূরণে প্রকল্প নেওয়া এবং সম্ভাব্যতা সমীক্ষা না করেই প্রকল্প গ্রহণসহ আরো কিছু কারণ। এতে সময় ও অর্থের যেমন অপচয় হয়েছে, তেমনি এসব প্রকল্পের প্রকৃত উদ্দেশ্য পূরণ হওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

আইএমইডির সাবেক সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রথম দিকে দেখা যায়, অনেক সময় তড়িঘড়ি করে প্রকল্প নেওয়া হয়।

এ ছাড়া সম্ভাব্যতা সমীক্ষাও ঠিকমতো হয় না। ফলে শেষ দিকে এসে অনেক কাজ না করেও প্রকল্প শেষ করতে হয়। এমন কাজ বেশির ভাগ হয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া প্রকল্পের ক্ষেত্রে। দেখা গেছে, প্রয়োজন না থাকলেও নানা ধরনের কম্পোনেন্ট যুক্ত করে প্রকল্প নেওয়া হতো।...এসব কাজ অবশ্যই পরিকল্পনা ও শৃঙ্খলার পরিপন্থী।

আইএমইডির প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির আওতায় মোট ৩২৫টি প্রকল্প শেষ করার লক্ষ্য ছিল। বাস্তবায়িত হয় ২৭৭টি এবং লক্ষ্যের বাইরে থেকে যায় ২৪টি প্রকল্প। এগুলোর মধ্যে শতভাগ কাজ শেষ না করেই বিভিন্ন পর্যায়ে সমাপ্ত ঘোষণা করা হয় ১২৯টি প্রকল্প।

আমরা চাই, রাষ্ট্রীয় অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা হোক। প্রকল্পের সম্পূর্ণ ও মানসম্মত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

মন্তব্য

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনেই সমাধান

    কক্সবাজারে জাতিসংঘ মহাসচিব
শেয়ার
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনেই সমাধান

ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ ও বর্বর নির্যাতনের কারণে দলে দলে রোহিঙ্গা মায়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসে। এই জনগোষ্ঠীর বিপুলসংখ্যক মানুষের ভার বহন করতে গিয়ে বাংলাদেশ হিমশিম খাচ্ছে। মানবিক কারণে বাংলাদেশ কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে সাময়িক আশ্রয় দিয়েছে। ওদিকে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা তাদের মাতৃভূমি মায়ানমারে ফিরে যেতে চায়।

বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মনে করেন নিরাপদে, স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদাপূর্ণভাবে ফিরে যাওয়াই এই সংকটের প্রাথমিক সমাধান। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখে মায়ানমারের সব পক্ষের প্রতি সর্বোচ্চ সংযম অনুশীলন করার আহবান জানিয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুসারে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও সহিংসতার আরো উসকানি রোধ করে গণতন্ত্রের পথ প্রশস্ত করতে বলেছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিশ্ব একটি গভীর সংকটের দ্বারপ্রান্তে।
কারণ আর্থিক সহায়তা কমার ফলে ২০২৪ সালে মানবিক সহায়তার তুলনায় ২০২৫ সালে সহায়তা নাটকীয়ভাবে ৪০ শতাংশে নেমে আসার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এটি একটি নিরবচ্ছিন্ন বিপর্যয় হবে। মানুষ কষ্ট পাবে এবং মানুষ মারা যাবে।

বাংলাদেশে আশ্রিত ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার জন্য বিশ্বের সাহায্য-সমর্থন প্রয়োজন।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা এখানে এসেছে। তারা তাদের সুরক্ষা, পরিবারের জন্য মর্যাদা, নিরাপত্তা চায়।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, রোহিঙ্গা শিবির ও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া স্থানীয় সম্প্রদায়গুলো জলবায়ু সংকটের ঝুঁকিতে প্রথম সারিতে আছে। এটি ঠিক যে কক্সবাজার অঞ্চলের স্থানীয় মানুষের জীবন রীতিমতো দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। একটি জেলার একটি অংশে ১০ লাখ অতিরিক্ত মানুষ আশ্রয় নেওয়ায় তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

ওদিকে রোহিঙ্গাদের মধ্যে নানা ধরনের উগ্র ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জন্ম নিয়েছে। স্বাভাবিক আয়-রোজগারের সুযোগ কম থাকায় রোহিঙ্গারা মাদক, অস্ত্র চোরাচালানসহ নানা ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডে যুক্ত হচ্ছে। স্থানীয় লোকজনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে। আশ্রয়শিবিরগুলোতে প্রায়ই খুনখারাবির ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বাড়ছে। আর সব মিলিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকির সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশ এই অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।

গত শুক্রবার ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বৈঠক প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে ঢাকার সংস্কার এজেন্ডার প্রতি জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং বিশ্বের সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার জনগোষ্ঠীর জন্য তাঁর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের ব্যাপক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন গুতেরেস।

নিরাপদে, স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদাপূর্ণভাবে ফিরে যাওয়াই রোহিঙ্গা সংকটের প্রাথমিক সমাধানএ বাপারে কোনো সন্দেহ নেই। তাই রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের প্রত্যাবাসনে জোর দিতে হবে। এই অঞ্চলের প্রতিটি দেশ ও আঞ্চলিক সংস্থাকে এই সংকট সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হবে। দ্রুত প্রত্যাবাসনের চেষ্টা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই। আমাদের প্রত্যাশা, জাতিসংঘ মহাসচিবের এই সফর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তরিক ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ