<p>কোকিল সবার কাছেই অতি পরিচিত পাখি। বাংলাদেশে পাপিয়া, বউ কথা কও—নানা রকম রূপকথা ও বিশ্বাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। অনেকের কাছে কোকিল বসন্তের প্রতীক। শীতকালে এরা নীরব থাকে, বসন্তে সরব হয়ে অবিরাম ডাকে। এ জন্যই কোকিলকে বসন্তের পাখি বলা হয়।        </p> <p>পৃথিবীতে কোকিলের প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ১৩০। বাংলাদেশে আছে ২০ প্রজাতি—১৪টি স্থায়ী বাসিন্দা এবং ৬টি পরিযায়ী। পুরুষ কোকিল অতিশয় আকর্ষণীয়, উচ্চৈঃস্বরে সুরেলা কণ্ঠে ডাকে। স্ত্রী কোকিলের ডাক ভিন্ন, তীব্র কিক্-কিক্-কিক্-কিক্ স্বরে এক গাছ থেকে অন্য গাছে যেতে যেতে ডাকে। খুব ভোরে সবার আগে এ পাখির ডাক শোনা যায়।           </p> <p>বেশির ভাগ কোকিল লম্বা ও সরু গঠনবিশিষ্ট পাতিকাকের মতো। পুরুষ কোকিল উজ্জ্বল কালো, ঠোঁট হালকা হলুদ, চোখ গাঢ় লাল। স্ত্রী কোকিল গাঢ় বাদামি এবং শরীরে সাদা ফোঁটা ও দাগ রয়েছে। এদের উভয় পায়েই সামনে ও পেছনের দিকে দুটি করে আঙুল বিদ্যমান। পাতাভরা গাছেই এরা খাবার খোঁজে। শুঁয়োপোকা এদের প্রধান খাদ্য।             </p> <p>বেশির ভাগ কোকিল বাসা বাঁধে না, কাকসহ অন্য প্রজাতির পাখির বাসায় ডিম পাড়ে। দাঁড়কাক ও পাতিকাকের বাসা এদের বেশি পছন্দ। কারণ কোকিলের ডিম পাড়ার সময় আর কাকের ডিম পাড়ার সময় একই—এপ্রিল-আগস্ট মাস। কখনো এসব ডিম অবিকল পোষক পাখির ডিমের মতো হয়। কোকিল যেসব পাখির বাসায় ডিম পাড়ে, সেসব বাসা যদি ছোট বা আবদ্ধ হয়, সে ক্ষেত্রে পোষক পাখি বাসা ছেড়ে দূরে গেলে কোকিল পোষকের ডিম ফেলে দিয়ে সেখানে ডিম পেড়ে রাখে। প্রায় ১২ দিনে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। বাচ্চা ফুটার পর একই বাসায় পালকপাখি ও কোকিলের ছানা দেখা যায়। পোষক পাখি ওই বাচ্চা লালন-পালন করে। কখনো কখনো মা-কোকিলও বাচ্চাদের খাবার খাওয়ায়।                                        ► আব্দুর রাজ্জাক</p>