ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫
৬ চৈত্র ১৪৩১, ১৯ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫
৬ চৈত্র ১৪৩১, ১৯ রমজান ১৪৪৬
একান্ত সাক্ষাৎকারে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

তিনটি সংস্কারের পর নির্বাচন দিতে হবে

শেয়ার
তিনটি সংস্কারের পর নির্বাচন দিতে হবে
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজনৈতিক বিরূপ পরিস্থিতিতে সব সময় দলকে সুসংগঠিত রেখেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের নানা দমন-পীড়নের মধ্যে তিনি বরাবরই ছিলেন সোচ্চার। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বিষয়ে কালের কণ্ঠকে বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিশেষ প্রতিনিধি হাসান শিপলু

 

কালের কণ্ঠ : নির্বাচন ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ জামান বক্তব্য দিয়েছেন।

এই দুজনের বক্তব্য কিভাবে দেখছেন?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : সেনাপ্রধান অবশ্যই নির্বাচন চান এবং একটি যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই নির্বাচন চান। ড. ইউনূস, সেনাপ্রধান ও আমাদের বক্তব্যের মধ্যে তেমন তফাত নেই। আমরা যৌক্তিক সময়ের কথা বলেছি। তবে কখনোই যেন যৌক্তিক সময় পার না হয়ে যায়।

নির্বাচন যত দ্রুত করবে, তত সমস্যা কমে যাবে। নির্বাচন আয়োজন যত দীর্ঘায়িত করবে, সমস্যা আরো বাড়বে। যারা বিপ্লব ও পরিবর্তনের বিরুদ্ধে এবং ফ্যাসিবাদীদের পক্ষে, তখন তারা সেই সুযোগটা নিতে থাকবে।

 

কালের কণ্ঠ : সেনাপ্রধান ১৮ মাসের কথা বলেছেন।

এটা কী যৌক্তিক সময়?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : এটা এ মুহূর্তে বলা খুব মুশকিল। সুনির্দিষ্ট কোনো সময় বলতে চাই না। দেখা যাক, যদি আগে হয়ে যায়, তাহলে আরো ভালো।

 

কালের কণ্ঠ : সরকারের সংস্কার প্রস্তাবের বিষয়ে আপনার মতামত কী?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : এখন সরকার যে সংস্কার ঘোষণা করেছে, সেগুলো প্রয়োজন। নিশ্চিতভাবে দরকার।

আমরাও দুই বছর আগে ৩১ দফা দিয়ে ওই সব সংস্কারের কথা বলেছি। সংস্কার কমিটিতে যাঁদের দিয়েছেন, তাঁরা যোগ্য মানুষ। একই সঙ্গে জনগণ কী চায় সেটা তাঁদের দেখতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাঁদের কাছে জানতে হবে, কাদের কী প্রস্তাব আছে না আছে। এ বিষয়ে একটি ঐকমত্য তৈরি করতে হবে। সেই ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা সংস্কারগুলো চাই। 

 

কালের কণ্ঠ : বিএনপি কোন কোন বিষয়ে সংস্কার চায়?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : নির্বাচনপ্রক্রিয়া, প্রশাসন ও বিচার বিভাগ—এই তিনটি সংস্কার করে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারলে নির্বাচনটা খুব সুন্দরভাবে করা যাবে। আমরা দ্রুত এই তিনটি সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচন চাই।

 

কালের কণ্ঠ : বিএনপি যে জাতীয় সরকারের কথা বলছে, সেটি কিভাবে হবে?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : আমরা এরই মধ্যে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী দলগুলো নিয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠন করার কথা বলেছি। বিভিন্ন দেশে এ ধরনের জোট করে সরকার গঠন হয়েছে। তবে জাতীয় সরকার নিঃসন্দেহে জটিল প্রক্রিয়া। নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করল, তাদের নিয়ে একটি বিষয় আছে। সেখানে যদি আওয়ামী লীগ অংশ নেয়, তাহলে আরেকটি ব্যাপার আছে। কিন্তু আওয়ামী লীগকে নিয়ে তো সরকার গঠন করা যাবে না। কারণ, তারা রাষ্ট্রদ্রোহী ও দেশবিরোধী কাজ করেছে। তাদের নিয়ে সরকার গঠনের প্রশ্নই উঠতে পারে না। এ জন্য আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী দলগুলো নিয়ে সরকার গঠন করা হবে।

 

কালের কণ্ঠ : সেই সরকারে কী জামায়াত থাকবে?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : তারা যদি সেভাবে আসে, তাহলে আন্দোলনকারী দলগুলো চিন্তা করে দেখবে। তখন আলোচনা করে দেখব। এখনই চূড়ান্ত মন্তব্য করতে চাই না।

 

কালের কণ্ঠ : আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া যাবে না—এমন বক্তব্য আসছে বিভিন্ন মহল থেকে। আপনি কী মনে করেন?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : নির্বাচন করতে না দেওয়ার বিষয়ে আমি একমত না। আপনি নির্বাচন করতে দেবেন না কেন? জনগণ বিচার করবে আওয়ামী লীগ থাকবে কি থাকবে না। এই যে রাজনীতিতে একটি প্রবণতা তৈরি হয়েছে, এ নির্বাচন করতে পারবে না, ও নির্বাচন কতে পারবে না। ওকে নিষিদ্ধ করতে হবে। যেমন জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ করল। এটা কখনো ঠিক হয়নি। তার প্রমাণ হলো, জামায়াত তো আমার সামনে চলে এলো। আমি আওয়ামী লীগকে যতটুকু বুঝি, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।

 

কালের কণ্ঠ : গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের নির্বাচন করতে দেওয়া না-ও হতে পারে। তাতে কী পরিস্থিতি দাঁড়াতে পারে? আপনি কি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : আমি ব্যক্তিগতভাবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পক্ষে না। কোনো রাজনৈতিক দলই নিষিদ্ধের পক্ষে না। আমার ব্যক্তিগত মতামত গণতন্ত্রকে গণতন্ত্রের মতো চলতে দিতে হয়। গণতান্ত্রিক চর্চা রাখতে হবে। একটি ফ্যাসিবাদী দল নিষিদ্ধ করলাম। তারপর সে ভিন্ন চেহারা নিয়ে ফিরে আসতে পারে। 

 

কালের কণ্ঠ : নির্বাচনের জন্য বিএনপি কতটা প্রস্তুত?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : আমরা নির্বাচনের জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকা দল। কারণ, এই দল তো ক্ষমতায় যাওয়ার দল, ক্ষমতায় যাবে।

 

কালের কণ্ঠ : অন্তর্বর্তী সরকারের কী স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করা উচিত হবে?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : আমি মনে করি না। এই সরকারের উচিত হবে শুধু জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করা।

 

কালের কণ্ঠ : বর্তমান প্রেক্ষাপটে কিছু ক্ষেত্রে সংবিধান পরিবর্তনের কথা উঠেছে। এ বিষয়ে আপনি কি মনে করেন?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : সংবিধান তো অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। এই সংবিধান তো একেবারে শেষ করে ফেলেছে আওয়ামী লীগ। সংবিধানের যে অবস্থা, তাতে নতুন করে লেখা উচিত। সেটা করবে নির্বাচিত সরকার।

 

কালের কণ্ঠ : পুলিশ বাহিনীকে কিভাবে পুনর্গঠন করা যেতে পারে?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : যারা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, সবাইকে চাকরিচ্যুত করতে হবে। যাদের রাজনৈতিক কারণে বঞ্চিত রাখা হয়েছে, তাদের দ্রুত ফেরাতে হবে। অতি দ্রুত নিয়োগ করতে নতুন নিয়োগ দিতে হবে, তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রশিক্ষিত করতে হবে।

 

কালের কণ্ঠ : ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কিভাবে দেখছেন? কেউ বলছেন, পুরো অবদান ছাত্রদের। আপনাদের ৪২২ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। তাহলে কী দাঁড়াল?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : আমি মনে করি, সবার অবদান আছে। সাধারণ জনগণ পরিবর্তন চেয়েছে। তারা সরকারের ওপর বিরক্ত ছিল। আমরা এই আন্দোলনের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বিশাল আকারে ছিলাম। তার মানে এই না বিএনপির সব করে ফেলেছে, সে কথা তো বলছি না। আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা কোনো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের হয়েছে বলে আমরা জানা নেই। যারা এখন ক্রেডিট নেওয়ার জন্য বলে বেড়াচ্ছেন—এটা একটা সংকীর্ণ রাজনীতি। এটি ছিল জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন।

 

কালের কণ্ঠ : ৫ আগস্টের পর অনেক মহলে বিএনপিবিরোধী একটি মনোভাব দেখা যাচ্ছে। এর কারণ কী?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : এটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। আমরা ওয়ান-ইলেভেনের গন্ধ পাচ্ছি, বিরাজনীতিকরণের গন্ধ পাচ্ছি। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। রাজনীতি বাদ দিয়ে বাংলাদেশ কিছু সম্ভব না।

 

কালের কণ্ঠ : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পরের নির্বাচন বিএনপির জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। আপনি কি মনে করেন? 

মির্জা ফখরুল ইসলাম : বাংলাদেশে আগে মাইনাস টুর যে পরিকল্পনা ছিল, সেটা এখনো আছে। আমরা বিশ্ব রাজনীতির মধ্যে পড়ে গেছি। ভারত আমাদের প্রতিবেশী, চীনেরও বাংলাদেশকে নিয়ে আগ্রহ আছে, মায়ানমারও রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে জড়িত, যুক্তরাষ্ট্রেরও বাংলাদেশকে নিয়ে আগ্রহ আছে। বিএনপির বিরোধিতার পেছনে সে বিষয় কাজ করে। কারণ জাতীয়তাবাদী শক্তিকে বাইরের লোকেরা পছন্দ করে না।

 

কালের কণ্ঠ : তারেক রহমানের দেশে ফেরার প্রক্রিয়া কী?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : দেশে ফেরার দুটি পথ আছে। প্রথম বিষয়টা হচ্ছে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। মামলা প্রত্যাহারে সরকারের অঙ্গীকার আছে।

 

কালের কণ্ঠ : জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব আছে কি?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : কোনো দূরত্ব নেই। বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতি সম্পূর্ণ আলাদা। তাদের চিন্তা ও আদর্শ উদ্দেশ্য আলাদা। যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, তারাই বিএনপি-জামায়াতকে ব্র্যাকেটবন্দি করতে চায়। আমরা রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে নির্বাচন ও আন্দোলনে জয়ী হতে জোট করেছি।

 

কালের কণ্ঠ : জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোট থাকবে কি না?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : এটি এখনই বলা যাবে না। নির্বাচনের আগে জনমত দেখব। এককভাবে করলে ভালো হলে তাই করব। জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করা ভালো হলে সেটিও করতে পারি।

 

কালের কণ্ঠ : ছাত্ররা রাজনৈতিক দল গঠন করতে চায়। অনেকে বলছেন, এটি হবে কিংস পার্টি। এ বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : বাংলাদেশে এর আগে এ ধরনের চেষ্টা বহুবার করা হয়েছে। রাজনৈতিক দল সাধারণত আন্দোলন সংগ্রাম থেকে উঠে আসে। এটা তার মূল ভিত্তি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় দল গঠন করতে হলে আলাদা বিপ্লবের বিষয় থাকে। কিন্তু এখানে দল গঠনের মূল ভিত্তি হওয়া উচিত জনগণের সমর্থন।

 

কালের কণ্ঠ : সংখ্যানুপাত পদ্ধতিতে নির্বাচন চান?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : আমরা এটাকে সমর্থন করব না। বাংলাদেশে এই পদ্ধতির চর্চা নেই। সুতরাং এটি এবারের নির্বাচনে প্রয়োগের প্রশ্নই ওঠে না।

 

কালের কণ্ঠ : আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ রাজনীতি নিয়ে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তারা রাজনীতিতে আবার ফির আসতে পারে, নির্বাচনেও আসতে পারে। কিন্তু জনগণের মধ্যে ফেরার সম্ভাবনা অদূর ভবিষ্যতে কম দেখছি।

 

কালের কণ্ঠ : দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি কিভাবে দেখছেন?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : আওয়ামী লীগ সরকারের বড় বড় ঘটনাগুলোর সঙ্গে কিছু শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী জড়িত ছিলেন। তাঁদের শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ৫০-৬০ হাজার লোক কাজ করে। সেই প্রতিষ্ঠানগুলো যদি আমরা বন্ধ করে ফেলি, তাহলে কিন্তু দেশের শিল্পোৎপাদন স্থবির হয়ে যাবে। অর্থনৈতিক সমস্যা হবে। বেকারত্ব বেড়ে যাবে। হয়তো সরকার সেই বিষয়টি চিন্তা করছে।

 

কালের কণ্ঠ : বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল করার কোনো পরিকল্পনা আছে কি না?

মির্জা ফখরুল ইসলাম : আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আমাদের যত দ্রুত সম্ভব কাউন্সিল প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত। সেটা নির্বাচনের আগেই করা যেতে পারে।

 

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা

খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল

দুই দশক আগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারিক আদালতের রায় অবৈধ ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে পৃথক আবেদন (লিভ টু আপিল) করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

এসব আবেদন গতকাল বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের কার্যতালিকায় শুনানির জন্য ছিল বলে সাংবাদিকদের জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরের আইনজীবী ছিলেন তিনি। 

গত বছর ১ ডিসেম্বর বিচারিক আদালতের রায় অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

রায়ে বলা হয়, আইনের ভিত্তিতে মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়নি। ফলে বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ। তাই বিচারিক আদালতের ডেথ রেফারেন্স নাকচ এবং আসামিদের আপিল মঞ্জুর করা হলো। এ রায়ের ফলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরসহ বিচারিক আদালত যাঁদের সাজা দিয়েছিলেন, তাঁদের সবাইকে খালাস দেওয়া হয়।

খালাসের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা উচিত বলে সেদিন মন্তব্য করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা করা হয়। আওয়ামী লীগের দাবি, এ হামলা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন।

আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করা হয়। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর মামলার রায় হয়। রায়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব প্রয়াত হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত।
সেই সঙ্গে ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল-জেল আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানির পর সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় দেন উচ্চ আদালত।

 

মন্তব্য
সংস্কারে এখনো লিখিত মতামত দেয়নি বিএনপিসহ বড় দলগুলো

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু আজ

নিখিল ভদ্র
নিখিল ভদ্র
শেয়ার
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু আজ

সংস্কার কমিশনগুলোর করা সুপারিশ চূড়ান্ত করতে আজ বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রথম দিনের সংলাপে অংশ নেবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। লিখিত মতামত পাওয়ার পর অন্য দলগুলোকে সংলাপে ডাকবে কমিশন। তবে এখনো বিএনপিসহ বড় রাজনৈতিক দলগুলোর অনেকে লিখিত মতামত জমা দেয়নি বলে জানা গেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার কালের কণ্ঠকে জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুপারিশগুলো চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু হচ্ছে। সংসদ ভবনের এলডি হলে এই সংলাপে প্রথম দিনে অংশ নেবে এলডিপি। আগামী শনিবার দুটি এবং রবিবার একটি দল সংলাপে অংশ নেবে। পর্যায়ক্রমে সব দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস সংলাপে থাকছেন না। সংলাপে নেতৃত্ব দেবেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি আরো জানান, এ পর্যন্ত ১৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে। আজ সকাল ১০টায় লিখিত মতামত জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) অন্য দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। দ্রুতই তারা মতামত জমা দেবে বলে জানিয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে লিখিত মতামত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবগুলোর ওপর আমাদের দলীয় মতামত প্রস্তুত করা হচ্ছে। যুগপত্ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে যেকোনো দিন সেগুলো কমিশনে জমা দেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, মতামতের জন্য যে ছক করা কাগজ (স্প্রেডশিট) দেওয়া হয়েছে, তাতে মতামত দিলে স্পষ্ট হওয়া যাবে না। বরং বিভ্রান্তি ছড়াবে। সে কারণে আমরা আপত্তি জানিয়েছি। বিভ্রান্তি এড়াতে বিস্তারিত আকারে মতামত জানানো হবে।

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সংস্কার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর মতামত চাওয়া হয়েছে। কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে আমাদের পার্টি ফোরামে আলোচনা হয়েছে। আমরা দলীয়ভাবে মতামত দেওয়ার বিষয়ে এরই মধ্যে কমিশনকে জানিয়েছি। জোটগতভাবে সংলাপে অংশগ্রহণের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের শীর্ষ নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো সুপারিশগুলোর বিষয়ে লিখিতভাবে মতামত জানানো হবে।

সূত্র মতে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করে। তারা সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের দেওয়া প্রতিবেদনগুলো থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশ চিহ্নিত করে। এর মধ্যে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত ৭০টি, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে ২৭টি, বিচার বিভাগ সংক্রান্ত ২৩টি, জনপ্রশাসন-সংক্রান্ত ২৬টি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত ২০টি সুপারিশ রয়েছে। ওই সুপারিশগুলো ছক আকারে বিন্যস্ত করা হয়েছে। ওই ছকগুলো গত ৬ মার্চ ৩৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ ১২টি দল নিবন্ধিত নয়। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৯। কমিশনের পক্ষ থেকে আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে রাজনৈতিক দল এবং জোটগুলোকে তাদের মতামত জানানোর জন্য বলা হয়। তবে নির্ধারিত সময়ে সাতটি দল মতামত দিলেও পরবর্তী সময়ে আরো আটটি দল মতামত জমা দিয়েছে। অন্যরা অতিরিক্ত সময় নিয়েছে।

কমিশন সূত্র জানায়, ঐকমত্য কমিশনের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির পক্ষ থেকে এখনো কিছুই জানানো হয়নি। এ পর্যন্ত মতামত জমা দেওয়া ১৫টি দল হলো এলডিপি, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), আমজনতার দল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), নাগরিক ঐক্য, জাতীয় গণফ্রন্ট ও বাংলাদেশ জাসদ।

মতামত দেওয়ার জন্য সময় নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণফোরাম, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণ অধিকার পরিষদ (জিওপি), জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ১২ দলীয় জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।

 

মন্তব্য
অর্থ উপেদষ্টা

দেশীয় শিল্প সুরক্ষার বাজেট দেওয়া হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দেশীয় শিল্প সুরক্ষার বাজেট দেওয়া হবে
সালেহউদ্দিন আহমেদ

আগামী অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় নজর দেওয়া হবে। পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা ভাতা বাড়ানো হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আগামী বাজেটে ব্যক্তি খাতের করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকার করার প্রস্তাব দিয়েছেন দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও টেলিভিশনের শীর্ষ নির্বাহীরা। একই সঙ্গে বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বাজেট বক্তব্যের কলেবর কমানো, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং নির্ভুল ডাটা-পরিসংখ্যান তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেছেন তাঁরা।

গণকাল বুধবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় তাঁরা এসব সুপারিশ তুলে ধরেন। সভা পরিচালনা ও শুভেচ্ছা বক্তব্যের সময় অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান বলেন, মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে আগামী জুনে। আমাদের রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়ছে। আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা এমন একটি বাজেট দিয়ে যেতে চাই যেটি পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক সরকার যে-ই আসুক, যেন ছুড়ে ফেলে দিতে না পারে, আমরা সেভাবেই একটি বাজেট দিতে চাই। আগামী বাজেটে আমরা প্রবৃদ্ধির দিকে নজর দিচ্ছি না, বরং আমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকেই প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে দেখছি। আমরা দেশীয় শিল্প সুরক্ষার একটি বাজেট দিতে চাই। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং উৎপাদনমুুখিতাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

প্রাক-বাজেট আলোচনায় ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ বলেন, সামনেই তো নির্বাচন। আর জুনে নতুন বাজেট। ফলে আপনারা যে বাজেট দিতে যাচ্ছেন সেটা পরবর্তী সরকারের জন্য কতটা সহায়ক হবে? যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই সিকদার বলেন, বিপর্যস্ত অর্থনীতি সামলাতে আপনি সফল হয়েছেন। এ জন্য ধন্যবাদ আপনি পেতেই পারেন। আগামী বাজেট সত্যিই আপনার জন্য চ্যালেঞ্জ।

কেননা অনেক দিন ধরেই মূল্যস্ফীতি। এটা আপনি কিছুটা কমিয়ে এনেছেন। এবারের রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে যে ধরনের ভয় বা আশঙ্কা করা হয়েছিল, তা হয়নি। অনেকাংশে বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। আসছে বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন তিনি। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা ও সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়ানো, টিসিবি কার্যক্রমের আওতা ও বাজেট বাড়ানো, আবার রেশনিং সিস্টেম ফিরিয়ে আনা যায় কি না সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেন তিনি।

সিনিয়র সাংবাদিক শওকত হোসেন মাসুম বলেন, একটি অর্থবছরে প্রকৃতপক্ষে কতসংখ্যক কর্মসংস্থান হয় সে হিসাবটা কখনো আমরা পাইনি। এবার আপনারা সে হিসাব দেবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা। ১৫ বছরে গণমানুষের প্রকৃত আয় বাড়েনি। আপনারা একটা মেকানিজম করে এই হিসাবটা বের করুন যে এক অর্থবছরে কতসংখ্যক কর্মসংস্থান হয়। সবখানে সংস্কার হচ্ছে, আপনারা বাজেট বত্তৃদ্ধতার আকারে সংস্কার আনুন। ঢাউস আকৃতির বাজেট বত্তৃদ্ধতার কোনো প্রয়োজন নেই। এটা কমিয়ে আনুন। বাস্তবমুখী বাজেট দিন। ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে যে বাজেট দেওয়া হতো সেটা ছিল অহেতুক। বাজেট উপস্থাপনের নামে দেখানো হতো এক রকমের প্রামাণ্যচিত্র।

ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের অ্যাসোসিয়েট এডিটর শামীম জাহেদী বলেন, কালো টাকা বৈধ করার ক্ষেত্রে কর সমান হবে কি না সেটায় আপনারা নজর দেবেন। দেশে এতগুলো টেলিভিশন আছে, দেড় হাজার কেবল অপারেটর আছে, সারা দেশে সাড়ে তিন কোটি বাড়ি আছে। এর ৫৪ শতাংশ বাড়িতে টেলিভিশন দেখা যায়। প্রত্যেকে ৩০০/৫০০ টাকা দিয়ে সংযোগ নেন। এখানকার টাকাটা আমরা এক টাকাও পাই না। সরকার পায় কি না আমি জানি না। এখানে একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তাহলে আমরা কিছু টাকা পাব। সরকারও রাজস্ব পাবে।

সময়ের আলোর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শাহনেওয়াজ করিম বলেন, সবার জন্য সুখবর ও স্বস্তিদায়ক বাজেট দিন। করদাতাদের জন্য ট্যাক্স কার্ড প্রবর্তন করা যায় কি না ভেবে দেখুন। এটা করতে পারলে তাঁরা সম্মানিত বোধ করবেন।

ডিবিসি নিউজের সম্পাদক লোটন একরাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিফলন বাজেটে থাকবে বলে আমার প্রত্যাশা। করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ করা হোক। বেকারত্ব কমনোর উদ্যোগ নেওয়া হোক। এ জন্য এসএমই উদ্যোক্তাদের যথেষ্ট সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ভাতা বাড়ানো প্রয়োজন। নয়তো বন্ধ করে দিন। এটা মিনিমাম পাঁচ হাজার টাকা হওয়া উচিত। টেলিভিশনে কোনো ওয়েজ বোর্ড নেই। একটি ওয়েজ বোর্ড এখানেও থাকা প্রয়োজন। ভারতীয় চ্যানেলগুলো এখানে দেদার চলছে, আমাদের কোনো চ্যানেল ভারতে চলে না। এখানেও কাজ করা প্রয়োজন।

এটিএন বাংলার হেড অব নিউজ মনিউর রহমান বলেন, করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ করা হোক। বাজেট বাস্তবায়ন কতটুকু হলো সেটা দেখা দরকার।

মন্তব্য
নাহিদ ইসলাম

আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসুক, আমরা তা প্রত্যাশা করি না

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসুক, আমরা তা প্রত্যাশা করি না
মো. নাহিদ ইসলাম

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ চান না বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা চাই না আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিক। প্রথমত, দলের ভেতরে যারা অন্যায়ের জন্য দায়ী, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। গত ১৭ মার্চ দ্য ডিপ্লোম্যাটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম আরো বলেছেন, নতুন দলের চ্যালেঞ্জ নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যত্ নিয়ে।

আন্দোলন থেকে সরকারে, তারপর আবার রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাটকে নাহিদ ইসলাম বলেন, একটি সরকারকে বাইরে থেকে দেখা আর ভেতর থেকে দেখা সম্পূর্ণ আলাদা অভিজ্ঞতা। অন্তর্বর্তী সরকার যখন দায়িত্ব নেয়, তখন বাংলাদেশের জন্য এটি অত্যন্ত সংকটপূর্ণ সময় ছিল। এটি আমার জন্যও চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি সময়ের দাবিতেই পদত্যাগ করে মূলধারার রাজনীতিতে ফিরেছি।

এখন আমি এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যত্ রাজনৈতিক পথচলা গঠন করতে চাই। নতুন রাজনৈতিক দল চালানো অবশ্যই কঠিন, তবে আমি প্রস্তুত।

নিজের দল এনসিপি সম্পর্কে নাহিদ বলেন, এনসিপি একটি মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল এবং আমরা এই আদর্শ বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য হলো নতুন কণ্ঠস্বর, বিশেষ করে তরুণ এবং সব সামাজিক শ্রেণির ব্যক্তিদের জন্য জায়গা তৈরি করা, যারা বছরের পর বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী রাজনীতি থেকে বাদ পড়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, এনসিপি এবং জামায়াতে ইসলামী সম্পূর্ণ ভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং আমাদের এজেন্ডাও সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমাদের মধ্যে কোনো সংযোগ নেই। কিছু দাবিতে মিল থাকতে পারে, যেমন আমরা সাংবিধানিক সংস্কার ও গণপরিষদ গঠনের পক্ষে। কিন্তু আমাদের আদর্শিক অবস্থান ভিন্ন এবং উগ্রবাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

নির্বাচন প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন এনসিপি প্রধান নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো আগের শাসনামলের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা। দেশে একটি স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিশ্চিত করা এবং একটি গণপরিষদ গঠন করা। তাই নির্বাচন এনসিপির তাত্ক্ষণিক অগ্রধিকার নয়। বর্তমানে আমরা নির্বাচনের জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করছি না।

সূত্র : বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাট

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ