<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের জন্য যুদ্ধ না করেও জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছিলেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু। সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেতে নিজের বাবা জসমতুল্লাহর নাম বদলে মশমতুল্লাহ করেন। ক্ষমতার দাপটে ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি যাচাই-বাছাইকালে আদমদীঘির প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা মজিবরকে বাদ দিয়ে তাঁর লাল মুক্তিবার্তা নম্বর (৩০৬০৯০১২১) ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধা বনে যান মজনু। কিন্তু বিধিবাম, ধরা খান জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) শুনানিকালে। পরে তাঁর ১৮৬৩ নম্বর বেসামরিক গেজেট ও সনদ বাতিল করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শুধু মজিবর নন, শেখ হাসিনার টানা তিন মেয়াদে কমবেশি ১৮ হাজার ব্যক্তির নামে মুক্তিযোদ্ধার গেজেট জারি করেছে মন্ত্রণালয়। তাঁদের অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এর মধ্যে আছেন হাসিনা সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও সিটি করপোরেশনের সাবেক  মেয়রও। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ, হাসিনা সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালীদের তদবির ও চাপে শত শত ব্যক্তির নামে মুক্তিযোদ্ধার গেজেট জারি হয়েছে।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/10.October/27-10-2024/2/kalerkantho-ft-1a.jpg" height="498" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/10.October/27-10-2024/2/kalerkantho-ft-1a.jpg" style="float:left" width="300" />এমন পরিস্থিতিতে হাসিনা সরকারের আমলে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক বলেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সংস্কার করা হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গত ১৪ আগস্ট উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি আরো বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দিয়ে একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠীকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের ত্যাগকে মূল্যায়ন করতে হলে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় সংস্কার প্রয়োজন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেই তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব ইসরাত চৌধুরী। নিজ দপ্তরে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আওয়ামী লীগের টানা তিন মেয়াদে মোট ১৮ হাজার মুক্তিযোদ্ধা গেজেটভুক্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে যাঁদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যাবে, তাঁদের বিষয়টি তদন্ত করা হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা নিয়ে বিতর্ক থাকায় ২০১১ সালে ষষ্ঠ দফায় নতুন করে চূড়ান্ত তালিকা তৈরির কাজ শুরু করে সরকার। এ জন্য অনলাইনে ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত গ্রহণ করা হয় প্রায় দেড় লাখ আবেদন। ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি আবেদন যাচাই-বাছাই শুরু হয় সারা দেশে। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ের করা মুক্তিযোদ্ধার তালিকাও যাচাই শুরু হয়। ২০২১ সালের ২৫ মার্চ </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বীর মুক্তিযোদ্ধার সমন্বিত তালিকা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">র নামে কয়েক দফায় চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। এখন পর্যন্ত সমন্বিত তালিকায় এক লাখ ৯৩ হাজার ৭৪৩ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেভাবে গেজেটভুক্ত হন প্রভাবশালীরা</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, হাসিনা সরকারের মন্ত্রী-এমপিসহ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বা তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম লেখাতে আবেদন করেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও তাঁর ভাই জাঁ-নেসার ওসমান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী প্রয়াত সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, বরিশালের সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ, গাইবান্ধা-৪ আসনের সাবেক এমপি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, ঢাকা-১১ আসনের সাবেক এমপি এ কে এম রহমতুল্লাহ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রেসসচিব ইহসানুল করিম, সাবেক সচিব খাজা মিয়ার বাবা প্রয়াত সোহরাব হোসেন, জামালপুরের আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সূত্র জানায়, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলীসহ কয়েকটি আবেদন নাকচ হলেও বেশির ভাগ আবেদন প্রক্রিয়া শেষে গেজেট জারি হয়েছে। শ ম রেজাউল করিম ও ফারুক খানের নামে গেজেট জারির পর সমালোচনার মুখে তা আবারও যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়। ইয়াফেস ওসমানের আবেদনে সুপারিশ করেন সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম। জাঁ-নেসার ওসমানের আবেদনে সুপারিশ করেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সৈয়দ আবুল হোসেনের আবেদনে সুপারিশ করেন জামুকার সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান। মোহাম্মদ আলীর আবেদনে সুপারিশ করেন তাঁরই স্ত্রী সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি তহুরা আলী।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জামুকার ৭৫তম সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমকে বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাঁর জন্ম ১৯৬২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। সে হিসাবে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় তাঁর বয়স ১০ বছরের কম ছিল। অথচ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেতে ন্যূনতম বয়স হতে হয় সাড়ে ১২ বছর। তাহলে রেজাউল করিমকে কিভাবে এই স্বীকৃতি দেওয়া হলো</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ প্রশ্ন ওঠে। জামুকার ৭২তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য  ফারুক খানের নামে মুক্তিযোদ্ধার গেজেট জারি হয়। তাঁর স্বীকৃতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় জামুকা এ বিষয়ে সেনা সদরের মতামত নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফারুক খানের প্রসঙ্গে জামুকার একজন সাবেক সদস্য নাম প্রকাশ না করে কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাঁর বিষয়ে আপত্তি দিলেও অন্য সদস্যরা আমলে নেননি। উনি ক্ষমতাসীন দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলে ইতিবাচক মতামত দেওয়া হয়। অথচ ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানের ২৩ পাঞ্জাব ব্যাটালিয়ন ভারতীয় সেনাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। ওই ব্যাটালিয়নে  ফারুক খান ছিলেন। নিজে বাঙালি অফিসার পরিচয় দিয়ে কোনো মতে জানে রক্ষা পান। ভারতীয় সেনারা ১৫ ডিসেম্বর তাঁকে দিল্লি পাঠান। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে ফারুককে কলকাতার বাংলাদেশ হাইকমিশনার হোসেন আলীর দপ্তরে পাঠানো হয়। এরপর ১৪ জানুয়ারি বেনাপোল বন্দর দিয়ে তিনি বাংলাদেশে আসেন। তাহলে তিনি মুক্তিযুদ্ধ করলেন কখন? </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ছাড়া বিশেষ কমিটির সুপারিশে সাবেক পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের নামে মুক্তিযোদ্ধার গেজেট হয়। তিনি সরকার নির্ধারিত সময়ে আবেদন করেননি বলে জানা গেছে।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মন্ত্রী-এমপিদের সুপারিশ</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০২২ সালের ১৯ জুলাই জামুকার সভায় পটুয়াখালীর বাউফলের হেমায়েত উদ্দিনকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির সুপারিশ করেন জামুকার সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাজাহান খান। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও চাঁদপুর-৫ আসনের সাবেক এমপি রফিকুল ইসলাম কক্সবাজারের মহেশখালীর গাজী আবদুস সাত্তারকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রত্যয়ন দিতে সুপারিশ করেন। ঢাকা-১৬ আসনের সাবেক এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার লুত্ফুর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত করতে সুপারিশ করেন। সাবেক মন্ত্রিপরিষদসচিব কবির বিন আনোয়ার পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার শাহানারা বেগমের স্বামী মৃত ইমান আলীকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত করার সুপারিশ করেন। আবেদনটি নওগাঁ-২ আসনের সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার জামুকার বৈঠকে উত্থাপন করেন। আলোচনার পর তাঁর নাম গেজেটভুক্তির সিদ্ধান্ত হয়। সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও জামুকার সদস্য মোশাররফ হোসেন চট্টগ্রামের নুরুল মোমিন নামের এক ব্যক্তির গেজেট সংশোধনের সুপারিশ করেন। সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সুপারিশে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা হন বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ছিদ্দিকুর রহমান, সরদার সামসুল আলম, আ. মান্নান মোল্লা ও আ. খালেক হাওলাদার। মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালীদের সুপারিশে হাজারো অমুক্তিযোদ্ধা গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা হয়রানির শিকার হয়েছেন</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শেখ হাসিনার পুরো ১৬ বছরের শাসনামলে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা তালিকাভুক্ত হতে হয়রানির শিকার হলেও মন্ত্রী-এমপি-মেয়রসহ দলীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কেউ কেউ জামুকার বিশেষ কমিটির সুপারিশে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির সুযোগ পেয়েছেন। অথচ তাঁরা সময়মতো অনলাইনে বা সরাসরি আবেদন করেননি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যক্তিগত শুনানির মাধ্যমে সেসব আবেদন বিশেষ কমিটিতে পাঠাতেন। এই বিশেষ সুপারিশপ্রাপ্তদের মধ্যে কেউ কেউ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন বলেও অভিযোগ আছে। আবার আওয়ামী লীগ ছাড়া ভিন্ন মতাদর্শের লোকজন আবেদন করলেই তাঁদের আবেদন নানা অসিলায় বাতিল করে দেওয়া হতো। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অভিযোগ আছে, মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের নামে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপক হয়রানি করা হতো। উপজেলা-জেলা কমিটির সদস্যদের চাহিদা পূরণ করতে না পারলে ইতিবাচক প্রতিবেদন যেত না জামুকায়। আবার জামুকার সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের খুশি করার পরই মিলত কাঙ্ক্ষিত সুপারিশ। এ কারণে অনেক নামি-দামি বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধারা সনদের জন্য আর জামুকামুখী হতেন না। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে বিএনপি-জামায়াতের মতাদর্শী মুক্তিযোদ্ধারা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন করার কথা মুখেও আনতেন না। বরং বিএনপি-জামায়াতের (২০০১-২০০৬) আমলে যেসব গেজেট হয়েছিল তার একটি বড় অংশ নানা অজুহাতে বা পুনতঃ দন্তের নামে বাতিল করা হয়েছিল।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রসঙ্গত, বিভিন্ন সরকারের আমলে পাঁচবার মুক্তিযোদ্ধার তালিকা হয়েছে। ১৯৮৬ সালে প্রথম জাতীয় কমিটি এক লাখ দুই হাজার ৪৫৮ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম প্রকাশ করেছিল। ১৯৮৮ সালে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের করা তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৭০ হাজার ৮৯২। ১৯৯৪ সালে করা তৃতীয় তালিকায় ৮৬ হাজার মুক্তিযোদ্ধা অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সালে মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল থেকে চতুর্থ তালিকায় এক লাখ ৫৪ হাজার ৪৫২ জনের নাম মুক্তিবার্তায় প্রকাশিত হয়।</span></span></span></span></p>