এক আদেশে ৩২৭ এনজিওর ১০ হাজার কর্মী বেকার

শরীফুল আলম সুমন
শরীফুল আলম সুমন
শেয়ার
এক আদেশে ৩২৭ এনজিওর ১০ হাজার কর্মী বেকার

সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও সহযোগিতা কার্যক্রম স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা ইউএসএআইডি। গত ২৫ জানুয়ারি দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এসংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২১ জানুয়ারি এ বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। এরপর বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সহায়তা ছাড়া ইউএসএআইডির বাকি সব কার্যক্রম আপাতত তিন মাসের জন্য গুটিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এতে বাংলাদেশের প্রায় ৩২৭ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) ১০ হাজার কর্মী বেকার হয়ে পড়েছেন। হঠাৎ চাকরি হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশসহ একাধিক সহায়তা কার্যক্রম ঝুঁকিতে।

এনজিওবিষয়ক ব্যুরো সূত্র জানায়, দেশের ২৭৪টি এনজিও বিভিন্ন দেশ থেকে তহবিল (ফান্ড) পেয়ে থাকে।

এর মধ্যে ইউএসএআইডির ফান্ড পেত ৮৭টি এনজিও। এসব ডোনার এজেন্সির (দাতা সংস্থা) মাধ্যমে দেশে প্রায় ২৪০টি এনজিওর প্রকল্প পরিচালিত হতো। সেই হিসাবে ৩২৭টি এনজিওর ইউএসএআইডির ফান্ড স্থগিত হয়েছে।

এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আনোয়ার হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ৮৭টি ডোনার এজেন্সি ইউএসএআইডির ফান্ড নিত।

তারা অন্যান্য লোকাল এনজিওর মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করত। আপাতত তাদের তিন মাসের ফান্ড স্থগিত করা হয়েছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এতে বিপুলসংখ্যক কর্মীর কর্মসংস্থান বাধাগ্রস্ত হবে। সেবাগ্রহীতারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

এনজিওসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ৩২৭টি এনজিওর ইউএসএআইডির ফান্ডে ১০ হাজারের বেশি কর্মী সরাসরি চাকরি করতেন, যাঁদের সবাই বেকার হয়েছেন।

এসব কর্মীর বেশির ভাগই বিভিন্ন প্রকল্পে চুক্তিভিত্তিক চাকরি করায় তাঁরা কোনো আর্থিক সুবিধাও পাননি। ফলে হঠাৎ করে চাকরি হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে উত্কণ্ঠার মধ্যে দিন কাটছে তাঁদের। অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও শাসনব্যবস্থা, পরিবেশ, জ্বালানি এবং মানবিক সহায়তা কার্যক্রমও গতি হারিয়েছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে লাখ লাখ সুবিধাবঞ্চিত মানুষ।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ইউএসএআইডির ফান্ড বন্ধের ফলে উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হচ্ছে। এটা শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বে। তবে আমাদের দেশে উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রভাব বেশি। একই সঙ্গে বিশ্বে কিন্তু বিকল্প অর্থায়নের উৎসও কমে যাচ্ছে। ইউরোপীয় দেশগুলো অন্তর্মুখী হচ্ছে। বৈশ্বিক অবস্থাও ইতিবাচক নয়। এভাবে চলতে থাকলে সুবিধাবঞ্চিতরা আরো বঞ্চিত হবে।

সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) মূলত একটি গবেষণা সংস্থা। এই সংস্থায় ইউএসএআইডির অর্থায়নে বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হতো। তারা এক হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুতির চিঠি দিয়েছে। স্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্তদের তিন মাসের সময় দিয়ে চিঠি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আর অস্থায়ীদের শর্তানুযায়ী অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

আইসিডিডিআরবির কমিউনিকেশনস বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার এ কে এম তারিফুল ইসলাম খান কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্প ও গবেষণাগুলো পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত স্থগিত রেখেছি। আমরা আশাবাদী, পুনরায় আমাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারব।

নাম প্রকাশ না করে ইএসএআইডি হোস্ট অ্যান্ড ইমপ্যাক্টেড কমিউনিটি রেজিল্যান্স অ্যাকটিভিটি, বাংলাদেশ নামের একটি এনজিওর কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, আমি অন্য একটি স্থায়ী চাকরি ছেড়ে মাত্র তিন মাস আগে কিছুটা সিনিয়র পজিশনে এই প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম। নতুন প্রতিষ্ঠানে আমার চাকরি এখনো স্থায়ী হয়নি। এ অবস্থায় আমাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আমার চাকরি আর থাকছে না। পরিবার-পরিজন নিয়ে অথই সাগরে পড়ে গেলাম।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সুশীলনের সহকারী পরিচালক শাহিনা পারভীন কালের কণ্ঠকে বলেন, ইউএসএআইডির ফান্ডে আমাদের একটি প্রজেক্ট চলত। সেখানে ১৯ জন কর্মী ছিলেন। তাঁদের সবাইকে বাদ দিতে হয়েছে। তাঁদের যে অন্য কোনো প্রজেক্টে অন্তর্ভুক্ত করব, সেটাও সম্ভব হচ্ছে না। কারণ গ্লোবালি ফান্ড ক্রাইসিস চলছে।

ইউথ রাইজের কর্মকর্তা গৌতম ঘোষ কালের কণ্ঠকে বলেন, আমি এই প্রতিষ্ঠানে গত ২৩ জানুয়ারি যোগ দিয়েছি। এর দুই দিনের মাথায়ই ফান্ড বন্ধের খবর পেলাম। এই প্রজেক্টে ২০ জনের মতো কর্মী ছিলেন। এর মধ্যে ১২ জনের তাত্ক্ষণিকভাবে চাকরি গেছে। আর আমরা আটজন ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বেতন পাব।

কর্মসূচির পরিধি ও কর্মীদের বিপুল সংখ্যার কারণে বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি ও অলাভজনক উন্নয়ন সংস্থা হিসেবে পরিচিত ব্র্যাক। বাংলাদেশভিত্তিক সংস্থাটির কাজ রয়েছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে। ইউএসএআইডির ফান্ড বন্ধ ঘোষণার পর বাংলাদেশসহ চারটি দেশে ৯টি কর্মসূচি স্থগিত করেছে ব্র্যাক।

নাম প্রকাশ না করে একটি এনজিওর প্রধান নির্বাহী কালের কণ্ঠকে বলেন, ইউএসএআইডির ফান্ড বন্ধের ফলে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কর্মী ও সুবিধাভোগীরা। এর বাইরে যেসব গবেষণা কার্যক্রম চলত, সেগুলোর ক্ষতি হবে দীর্ঘমেয়াদি। তবে তিন মাস পর যদি ফান্ড চালুও হয়, তাহলে তা এক-তৃতীয়াংশে চলে আসবে। এতে আগে যদি সাতটি খাতে ফান্ডিং হতো, এখন সেটা দুটি খাতে চলে আসবে। এটা হলে অন্য ডোনাররাও একই পথ অনুসরণ করবে। এতে বাংলাদেশের উন্নয়ন কার্যক্রম বড় ধরনের বাধার মুখে পড়বে।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি এক সেমিনারে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নতুন যে অবস্থান নিয়েছে, তা পরিস্থিতি কঠিন করে তুলতে পারে। আশা করি রোহিঙ্গাদের জন্য তারা অর্থ সহায়তা বন্ধ করবে না। মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের ওপর আরো বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।

উন্নয়ন সহায়তা বন্ধ করতে যাচ্ছে সুইজারল্যান্ড : বাংলাদেশসহ তিন দেশে উন্নয়ন কর্মসূচিতে সহায়তা বন্ধ করতে যাচ্ছে সুইজারল্যান্ড সরকার। অন্য দুটি দেশ হলো আলবেনিয়া ও জাম্বিয়া। গত ২৯ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম সুইস ইনফোর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈদেশিক সহায়তার জন্য সুইস সরকার যে পরিমাণ অর্থ চেয়েছিল, তার চেয়ে কম অর্থ বরাদ্দ করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিন দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুইজারল্যান্ডের সরকার। সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন (এসডিসি) ২০২৮ সালের পর বাংলাদেশ, আলবেনিয়া ও জাম্বিয়ায় দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন কর্মসূচি বন্ধ করে দেবে।

বাংলাদেশে ইউএসএআইডির অবদান : ইউএসএআইডি গত ৫০ বছরের বেশি সময় বাংলাদেশে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি, পরিবেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ খাতে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে। তাদের অনুদান পাওয়া অনেক এনজিও এবং সরকারি সংস্থা রয়েছে। ইউএসএআইডি গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশকে প্রায় ২০ কোটি ২২ লাখ ডলার অর্থ সহায়তা দেওয়ার চুক্তি করে। এর আগে ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১-২৬ সালের জন্য বাংলাদেশ ও ইউএসএআইডির মধ্যে একটি নতুন ডিওএজি (ডেভেলপমেন্ট অবজেকটিভ গ্র্যান্ট অ্যাগ্রিমেন্ট) সই হয়। এর মাধ্যমে ৯৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় ইউএসএআইডি।

ফান্ড বন্ধের প্রভাব : ইউএসএআইডির ফান্ড বন্ধের ফলে স্বাস্থ্য খাতে বড় প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে এইচআইভি, ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মা রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বড় ঝুঁকিতে পড়বে। এতে এইচআইভি-এইডস, যক্ষ্মা, ডায়রিয়া, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ, ম্যালেরিয়া অপুষ্টিজনিত নানা সংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

পরিবেশ ও জ্বালানি প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং জ্বালানি নিরাপত্তা উন্নয়নে কাজ করার কথা বলছে ইউএসএআইডি, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সহায়তা করে। সব প্রকল্পই এখন বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া জলবায়ু সহনশীল কৃষি প্রযুক্তি উন্নয়নেও সহায়তা করে তারা।

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে ইউএসএআইডির কর্মসূচি পরিচালিত হতো। শিক্ষার্থীদের উন্নত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ করে তারা। এসব প্রকল্প এখন বন্ধ হয়ে গেছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মির্জা ফখরুল

দুষ্কৃতকারীরা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপতৎপরতায় লিপ্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দুষ্কৃতকারীরা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপতৎপরতায় লিপ্ত
মির্জা ফখরুল

দুষ্কৃতকারীরা আবারও দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই লোমহর্ষক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানো হচ্ছে। তাই দুষ্কৃতকারীদের কঠোর হাতে দমনের বিকল্প নেই। এ জন্য দেশের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, না হলে ফ্যাসিস্ট শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক নিন্দা, প্রতিবাদ ও শোক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাছির উদ্দিনকে হত্যার ঘটনায় তিনি এ বিবৃতি দেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, নাসির উদ্দিনকে সশস্ত্র দুষ্কৃতকারীরা বর্বর ও নিষ্ঠুর হামলা চালিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর পতনের পর দুষ্কৃতকারীরা আবারও দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।

একই সঙ্গে নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে ফায়দা হাসিলের অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। দুষ্কৃতকারীদের পৈশাচিক হামলায় নাছির উদ্দিন নিহতের ঘটনা সেই অপতৎপরতারই নির্মম বহিঃপ্রকাশ। আর অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই এ ধরনের লোমহর্ষক ঘটনা বারবার ঘটানো হচ্ছে। তাই এসব দুষ্কৃতকারীকে কঠোর হাতে দমনের বিকল্প নেই।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ দেশের মানুষের জানমাল রক্ষায় দল-মত-নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নইলে ওত পেতে থাকা আওয়ামী লীগের দোসররা মাথাচাড়া দিয়ে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন করতে মরিয়া হয়ে উঠবে। নাছির উদ্দিনকে হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানান ফখরুল। তিনি বিবৃতিতে নিহতের রুহের মাগফিরাত কামনাসহ শোকার্ত পরিবারের প্রতি গভীর সহমর্মিতা জানান।

মন্তব্য
ঈদ যাত্রায় স্বস্তি

বাস ট্রেন লঞ্চে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বাস ট্রেন লঞ্চে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে ট্রেনে চড়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে শিশুরা। তাই এত আনন্দ! গতকাল কমলাপুর রেলস্টেশনে। ছবি : মঞ্জুরুল করিম

আসন্ন ঈদের আগে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। এদিন কর্মঘণ্টা শেষ হতেই ঘরমুখো মানুষের বেরিয়ে পড়ার ব্যাকুলতায় রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট দেখা দেয়। তবে ঢাকা থেকে সড়কপথে বের হয়ে আর যানজটের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি। বাস, ট্রেন ও লঞ্চে উপচে পড়া ভিড় থাকলেও দুর্ভোগ পোহাতে হয়নি ঘরমুখো যাত্রীদের।

শেষ কর্মদিবসে যানজট : রাজধানীর মহাখালী, রামপুরা, হাতিরঝিল, বাড্ডা, গুলশান, বনানী, বিভিন্ন স্থানে এই যানজটের চিত্র দেখা গেছে। নীলক্ষেত নিউমার্কেট এলাকা, এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্স ল্যাব, কলাবাগান, ধানমণ্ডি, আড়ং, কলেজগেট, শিশুমেলা শ্যামলী, মত্স্য ভবন এলাকা, শাহবাগ এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যানজট ছিল।

রাজধানীর নতুন বাজার এলাকায় কথা হয় ট্র্যাভেল এজেন্সি ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, অফিস শেষে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে বের হলাম।

আগে থেকেই টিকিট কাটা ছিল। তবে যানজটের কারণে যদি সময়মতো কাউন্টারে (নর্দা) যেতে না পারি, বাস মিস করতে পারি।’

সড়কপথে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ : ঈদ যাত্রার চতুর্থ দিন বাড়ির পানে ফেরা যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে সড়কপথেও। শুরুর কয়েক দিন বাস টার্মিনালগুলো ফাঁকা থাকলেও এখন বাস মালিকদের মনে যেমন স্বস্তি ফিরেছে, তেমনি নির্বিঘ্নে ঢাকা ছাড়তে পারছে মানুষ।

গতকাল কল্যাণপুর ও গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, বাস কাউন্টারগুলোতে যাত্রীরা গ্রামের যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। চাঁপাই এক্সপ্রেসের সামনে রাজশাহীগামী যাত্রী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘১০ মিনিট হয় কাউন্টারে আসলাম। ১০-১২ জন ছিল সিরিয়ালে। মাত্র টিকিট পেলাম। আশা করছি, আল্লাহ ভালোভাবে গ্রামে পৌঁছে দেবেন।

সায়েদাবাদসহ আশাপাশের কিছু কাউন্টারে বাড়তি ভাড়া চাওয়ার অভিযোগ করেছেন কয়েকজন যাত্রী। গুলশানের যাত্রী রাজীব আহমেদ শনিবার চুয়াডাঙ্গায় গ্রামের বাড়ি যাবেন। গোল্ডেন লাইনের গোলাপবাগ কাউন্টারে গিয়ে এদিন সকালের কোনো বাসের টিকিট পাননি তিনি। বিকেলের এসি বাসের টিকিট আছে বলে জানান কাউন্টারে থাকা কর্মী ইয়াসিন। কিন্তু ভাড়া এক হাজার ৮০০ টাকা। যাত্রীরা জানান, অন্য সময় এই এসি বাসের ভাড়া এক হাজার ২০০ টাকা হলেও বাড়তি ৬০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।

লঞ্চের কেবিনের টিকিট শেষ : লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ছুটি শুরুর দিন বরিশালের লঞ্চগুলোর কেবিনের প্রায় ৯৫ শতাংশ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। ফিরতি টিকিটেরও চাহিদা বাড়ছে দিন দিন। ধারণা করা হচ্ছে, ডেকেও যাত্রীসংখ্যা স্বাভাবিকের থেকে কয়েক গুণ বেশি হবে। অন্য লঞ্চগুলোর কেবিনের টিকিটও বিক্রি শেষের দিকে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ডেকের যাত্রীর সংখ্যা বলে দেবে এবারের ঈদ যাত্রায় লঞ্চ মালিকদের কত লাভ হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, স্পেশাল সার্ভিসসহ বরিশাল-ঢাকা রুটে এবার মোট ১৯টি বিলাসবহুল লঞ্চ যাত্রী সেবায় নিয়োজিত থাকবে। এ ছাড়া ভায়া রুটের আরো দুই-তিনটি লঞ্চ যাত্রী বহন করবে। লঞ্চ কাউন্টারগুলোর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ১৯টি লঞ্চে বিভিন্নমানের প্রায় পাঁচ হাজার কেবিন রয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি লঞ্চই ডেকে হাজারের বেশি যাত্রী বহন করতে পারে।

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত : আবদুল্লাহপুরের বিভিন্ন কাউন্টারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ অভিযান চালিয়েছে বিআরটিএ।

 

মন্তব্য
দ্য ইনডিপেনডেন্টের দাবি

মায়ানমারে ফিরে সশস্ত্র যুদ্ধ করতে চায় রোহিঙ্গারা

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
মায়ানমারে ফিরে সশস্ত্র যুদ্ধ করতে চায় রোহিঙ্গারা

নিজ মাতৃভূমিতে ফিরতে রোহিঙ্গাদের একটি অংশ সশস্ত্র যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট গতকাল বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। মোহাম্মদ আয়াস নামের ২৫ বছর বয়সী এক রোহিঙ্গা যুবক সংবাদমাধ্যমটিকে সশস্ত্র প্রস্তুতির আদ্যোপান্ত জানিয়েছেন। তাঁদের লক্ষ্য, জান্তা বাহিনী ও অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে প্রতিহত করে নিজেদের ভূমি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা।

তাঁরা এ প্রস্তুতি দীর্ঘদিন ধরে নিচ্ছেন। বিশেষ করে মায়ানমারে ২০২১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকেই এ প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত হয়।

২০২৪ সালের জানুয়ারির এক ভোরে ইন্ডিপেনডেন্টের সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন মোহাম্মদ আয়াস। তখন কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে তিনি বনের গভীর দিয়ে যাচ্ছিলেন।

তবে তিনি কোথাও পালাচ্ছিলেন না। ফিরছিলেন মায়ানমারে, যেখান থেকে ২০১৭ সালে পালাতে হয়েছিল তাঁকে।

ওই সময় মায়ানমারের সেনাদের গুলির বৃষ্টিতে তাঁর বাবা প্রাণ হারিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, যারা তাঁর পরিবারকে উচ্ছেদ করেছে এবং তাঁদের এসব দুর্ভোগের জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তাঁরা।

আয়াস রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শিশুদের বার্মিজ ভাষা শেখান। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মতো শত শত যুবক যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। মায়ানমারের সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য যেসব সশস্ত্র গোষ্ঠী যারা তাদের পথের বাধা হবে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে তাঁরা সবাই এক।

আয়াস বলেন, আমরা প্রস্তুত। আমি আমার জনগণের জন্য মরতে প্রস্তুত।

নিজ মাতৃভূমিকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। মায়ানমারে আমাদের অধিকার ও স্বাধীনতার যুদ্ধে আমার কী হবে, এ নিয়ে আমি ভাবি না।

কক্সবাজারের ক্যাম্পে কয়েক বছর ধরে থাকা হাজার হাজার রোহিঙ্গা যুবক স্ব ইচ্ছায় সশস্ত্র গোষ্ঠীতে যোগ দিচ্ছেন বলে দাবি তাঁর।

সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেনডেন্ট একাধিক রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলেছে। তাঁদের মধ্যে নিজেকে কমান্ডার হিসেবে দাবি করা এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, তাঁরা গোপনে মায়ানমারে যান। সেখানে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন।

সম্প্রতি, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শরণার্থী ক্যাম্পে গেলে তাঁকে উদ্দেশ করে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে রোহিঙ্গারা। ২০১৭ সালে বর্বর অত্যাচার ও নির্মম গণহত্যা চালিয়ে মায়ানমারের রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করে দেশটির সেনাবাহিনী। ওই সময় জীবন বাঁচাতে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। যারা এখন কক্সবাজারের ক্যাম্পে মানবেতর জীবন যাপন করছে। সূত্র : ইন্ডিপেনডেন্ট

 

 

মন্তব্য
লাইলাতুল কদর

ঈমানদারদের জন্য জামায়াতে ইসলামী আমিরের প্রার্থনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ঈমানদারদের জন্য জামায়াতে ইসলামী আমিরের প্রার্থনা
শফিকুর রহমান

ঈমানদারদের জন্য পবিত্র লাইলাতুল কদরের নিয়ামত ও বরকত কামনা করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে অ্যাডমিনের দেওয়া পোস্টে এ প্রার্থনা করা হয়।

পোস্টে বলা হয়, ইয়া রব! আমাদের সব ঈমানদার ভাই-বোনকে পবিত্র লাইলাতুল কদরের পূর্ণ নিয়ামত ও বারাকাহ নসিব করুন। আমাদের ওপর রহম করুন, গুনাহখাতা ক্ষমা করুন এবং দুনিয়া ও আখিরাতের অপমান-অপদস্থতা এবং জাহান্নামের আগুন থেকে আমাদের মেহেরবানি করে মুক্তি দিন।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন, দ্বিনের পথে আমাদের সবাইকে অবিচল থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

 

 

 

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ