একই সঙ্গে দুই প্রস্তুতি এনসিপির

তৌফিক হাসান
তৌফিক হাসান
শেয়ার
একই সঙ্গে দুই প্রস্তুতি এনসিপির

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় প্রচার চালাচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিলেও আগেই যাতে গণপরিষদ নির্বাচন হয় তার জন্য আন্দোলনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। ঈদের পরই এ দাবিসহ রাষ্ট্র সংস্কার, গুম-খুনসহ গণহত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মাঠে নামবে এনসিপি।

দলটির একাধিক সূত্র থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

দলীয় সূত্রগুলো বলছে, কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় দুটি ইফতার আয়োজন শেষে এখন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় ইফতার অনুষ্ঠান করছে এনসিপি। এরই মধ্যে ঢাকা, সিলেট, যশোর, খুলনাসহ কয়েকটি জেলায় একাধিকবার ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। ইফতার আয়োজনের মধ্য দিয়ে দলের ও দলের নেতাকর্মীদের পরিচিতি জানানো হচ্ছে।

একই সঙ্গে প্রকারান্তরে নির্বাচনের প্রচারও চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি গণপরিষদ নির্বাচন, রাষ্ট্র সংস্কার ও গণহত্যাকারী এবং তাদের দোসরদের বিচারের দাবিও জনগণের মধ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে দলটি।

সূত্র বলছে, ঈদের পরই গণপরিষদ নির্বাচনসহ রাষ্ট্র সংস্কার ও শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে মাঠে নামবে দলটি। এ দাবিতে রংপুর থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত একটি লং মার্চ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

লং মার্চের মধ্য দিয়ে জনগণের মধ্যে এসব দাবি ছড়িয়ে দিতে চায় এনসিপি। তবে কবে নাগাদ লং মার্চটি অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। শোনা যাচ্ছে, আগামী এপ্রিল ও মে মাসের মধ্যে লং মার্চটি অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ ছাড়া এই দাবিতে ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় একাধিকবার পদযাত্রা করবে দলটি।

এ বিষয়ে দলের জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত কালের কণ্ঠকে বলেন, আমাদের এখন পর্যন্ত সংসদের আগেই গণপরিষদ নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান রয়েছে।

তবে জনপ্রতিনিধিত্ব করার ইচ্ছা ও সেবার জায়গা থেকে আমরা মানুষের কাছে যাচ্ছি। আমরা রিকশাওয়ালা, শ্রমিক, শিক্ষক ও কৃষক থেকে শুরু করে সব পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলছি। সবাই নতুন মুখ দেখতে চায়। কারণ এর আগে মানুষ বিভিন্ন দলের শাসন দেখেছে। যেহেতু ছাত্ররা অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে ছিল, তারা যদি দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে তাহলে দেশ সুন্দরভাবে চলবে বলে নাগরিকরা মনে করে।

সম্প্রতি এনসিপি নেতাদের ফেসবুক পোস্ট ও মন্তব্যে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। একই বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশের ঘটনা ঘটেছে। এতে দলটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলেও অনেকে মনে করে। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে দলটির একজন নেতা কালের কণ্ঠকে বলেন, এ বিষয়ে এখনো দলের আনুষ্ঠানিক কোন নির্দেশনা নেই।

 

চলছে নিবন্ধনের শর্ত পূরণে কার্যালয় খোঁজার কার্যক্রম

গত ৭ মার্চ জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রথম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সভা শেষে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, এনসিপি নেতাকর্মীরা এখন দলের নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করতে মনোযোগী হচ্ছেন। এর পাশাপাশি তৃণমূলে সাংগঠনিক কার্যক্রম বিস্তার করার কাজ শুরু করে দিয়েছেন। ঈদের পর এটি পুরোদমে শুরু হয়ে যাবে।

এনসিপির একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলীয় কার্যালয় স্থাপনসহ নিবন্ধনের শর্তের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এনসিপির ফেসবুক গ্রুপে বিভিন্ন পরামর্শ আসছে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কার্যালয় খুঁজছে দলটি। ঢাকায়ও কার্যালয়ের জন্য তিন-চারতলার একটি ভবন খুঁজছেন নেতাকর্মীরা।

নিবন্ধনের বিষয়ে আলোচনা করতে রমজানের মধ্যেই নির্বাচন কমিশনে যাওয়ার কথা ছিল এনসিপির। কিন্তু এ বিষয়ে দলের ্বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি। নেতাকর্মীরা জানান, নির্বাচন কমিশনের কাছে নিবন্ধনের আবেদন গ্রহণের সময় বাড়ানোর আবেদন করার কথা ছিল দলটির। সেটিও করা হয়নি। দলের শীর্ষ নেতারা এখনো নিবন্ধনের শর্ত পূরণের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। ঈদের পরে দলীয় ফোরামে নিবন্ধনের শর্ত পূরণের কাজ কতটা পূরণ হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে। যদি নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সময়ের মধ্যে শর্ত পূরণ করা সম্ভব হয় সে ক্ষেত্রে সময় বাড়ানোর আবেদন করা হবে না। না হলে ঈদের পরই এ বিষয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারে দলটি এবং মে-জুন পর্যন্ত চাওয়া হতে পারে।

 

আসন অনুযায়ী চলছে প্রচার

জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীরা কোন আসন থেকে নির্বাচন করবেন তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে আসন অনুযায়ী প্রচারে অংশ নিচ্ছেন নেতাকর্মীরা। এ থেকে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে তাঁরা কোন কোন আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন। 

দলীয় সূত্র বলছে, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের দুটি আসন থেকে নির্বাচন করার সম্ভাবনা রয়েছে। আসন দুটি হচ্ছে খিলগাঁও-সবুজবাগ ও মুগদা থানাধীন এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৯ এবং রামপুরা-বাড্ডা ও ভাটারা থানা এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১১ আসন। দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন রংপুরের পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত রংপুর-৪ আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন। এ লক্ষ্যে নাহিদ ও আখতার এ আসনগুলোর বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। এ ছাড়া দলটির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ভোলা-১ (সদর), আরিফুল ইসলাম আদীব বরিশাল-৫ (সদর) অথবা ঢাকা-১৪ (মিরপুর-সাভারের একাংশ), দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার), উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম পঞ্চগড়-১ (সদর-তেঁতুলিয়া-আটোয়ারী), মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) অথবা ঢাকা-১৮ (উত্তরার একাংশ-ক্যান্টনমেন্টের একাংশ-গুলশানের একাংশ) ও সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসন থেকে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ লক্ষ্যে নিজ নিজ এলাকায় জনসংযোগ বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।

এনসিপির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা জানান, নবগঠিত দলটি জোটবদ্ধ না এককভাবে নির্বাচন করবে, সেটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। সবই রয়েছে আলাপ-আলোচনার পর্যায়ে। তবে ভোটের প্রস্তুতিতে কেউ পিছিয়ে থাকতে চাইছেন না।

এ বিষয় জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব মীর আরশাদুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা এখন মূলত সহযোগী ও অঙ্গসংগঠন গোছানো এবং থানা, জেলা ও স্থানীয় রাজনীতি গোছানোর কাজ করছি। আমাদের ৩০০ আসনেই নির্বাচন করার প্রস্তুতি চলছে। এ জন্য জেলা কমিটিগুলো গঠন করার কার্যক্রমও চলমান। নির্বাচনের লক্ষ্যেই নেতাকর্মীরা বিভিন্ন আসনে ইফতারসহ নানা আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ছুটির ঘোষণা

শেয়ার
ছুটির ঘোষণা

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩০-৩১ মার্চ ও ১ এপ্রিল কালের কণ্ঠ বন্ধ থাকবে। তাই ৩১ মার্চ এবং ১-২ এপ্রিল পত্রিকা প্রকাশিত হবে না। পবিত্র ঈদুল ফিতর ১ এপ্রিল হলে ৩ এপ্রিলও পত্রিকা প্রকাশিত হবে না। তবে ঈদের ছুটিতে কালের কণ্ঠ অনলাইন চালু থাকবে।

সম্পাদক

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

শ্রমসচিবের গাড়ির সামনে টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিক-কর্মচারীরা

শেয়ার
শ্রমসচিবের গাড়ির সামনে টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিক-কর্মচারীরা

বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিক-কর্মচারীরা গতকাল বিজয়নগরে শ্রমসচিবের গাড়ির সামনে বসে পড়েন।ছবি : কালের কণ্ঠ

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ব্যারিস্টার তানিয়া আমীরের দেশে জরুরি অবস্থা জারির উসকানি

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
ব্যারিস্টার তানিয়া আমীরের দেশে জরুরি অবস্থা জারির উসকানি

দেশে জরুরি অবস্থা জারির উসকানি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এই উসকানি দেন।

গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সেনাপ্রধানের মনে কী আছে (হোয়াটস অন বাংলাদেশস আর্মি চিফস মাইন্ড?) শিরোনামে ইন্ডিয়া টুডেতে একটি সংবাদ বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়। সেখানে মূলত সেনাপ্রধান বাংলাদেশের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়বেন কি না, তা নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ নিয়ে কাজ করা বিবিসি ও রয়টার্সের সাবেক সাংবাদিক সুবির ভৌমিকের লেখায় বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান একজন রক্ষণশীল ও পেশাদার কর্মকর্তা, যিনি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করেন। তাঁর সহকর্মীরা জানান, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশে সামরিক শাসন কার্যকর নয়। ইতিহাস, বিশেষ করে পাকিস্তানি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা তাঁকে এই দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের উদ্ধৃতি দিয়ে সেখানে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে কঠোর দমন-পীড়ন না চালাতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জাতিসংঘ সতর্ক করেছিল এবং তা কার্যকর হয়েছিল।

তবে ওয়াকার সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি গুলি চালানোর অনুমতি দেননি এবং শেখ হাসিনা ও তাঁর উপদেষ্টাদের নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেন।

সম্প্রতি কিছু ব্লগার ও অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা অভিযোগ করেছেন, জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ভারতের প্রতি অনুগত এবং তিনি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন। তবে সেনাপ্রধানের ঘনিষ্ঠরা বলেন, তিনি কোনো গোষ্ঠীর অনুগত নন, বরং তিনি পেশাদার ভারতীয় সেনাবাহিনীকে অনুকরণ করে রাজনীতির বাইরে থাকতে চান।

এদিকে সেনাপ্রধান চাইলে দেশে জরুরি অবস্থা জারিতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে সমর্থন দিতে পারেন বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানিয়া আমীর।

আওয়ামী লীগপন্থী এই আইনজীবী বলেন, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদ ব্যবহার করে জরুরি অবস্থা জারি করতে পারেন; আর এ ক্ষেত্রে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান তাঁকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করতে পারেন। এর ফলে রাষ্ট্রপতি অন্তর্বর্তী সরকার বাতিল করে দ্রুত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের আয়োজন করতে পারবেন। সেনাবাহিনী সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের কঠোর হস্তে দমন করতে পারবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সঠিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারবে।

তবে তানিয়া আমীরের এমন মন্তব্য উড়িয়ে দিয়েছেন সেনা কর্মকর্তারা।

এক সেনা কর্মকর্তা ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন, তিনি (সেনাপ্রধান) সেনা ও বাইরের সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে চান। তিনি সেনা কর্মকর্তা ও অন্যান্য দায়িত্বশীল ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা না করে তাড়াহুড়া করে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না। কারণ তিনি একটি ঐকমত্য চান।

অন্যদিকে এক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল, যাঁর অধীনে সেনাপ্রধান আগে চাকরি করেছেন, তিনি বলেন, যদি মনে হয় তাঁকে (সেনাপ্রধান) সরিয়ে দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে, তাহলে তিনি কঠোর ভূমিকা পালন করবেন।

ইন্ডিয়া টুডের সংবাদ বিশ্লেষণে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সেনাপ্রধান সম্প্রতি আফ্রিকা সফর শেষে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমাকে এমন কিছু করতে বাধ্য করবেন না, যা আমি করতে চাই না। এতে বোঝা যায়, তিনি কঠোর অবস্থানে যেতে বাধ্য হতে পারেন, যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। তাঁর বাবা ব্যারিস্টার আমীর-উল-ইসলাম কিনেছিলেন কুষ্টিয়া-৩ আসনের জন্য।

মন্তব্য

রমজানে সহনীয় পণ্যের দামে স্বস্তিতে রোজা পার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
রমজানে সহনীয় পণ্যের দামে স্বস্তিতে রোজা পার

প্রতিবছর পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে অসাধু মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা বাজার অস্থিতিশীল করে তোলেন। রমজান এলেই মাছ-মাংস, শাক-সবজি থেকে শুরু করে কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়তে বাড়তে দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে যায়। বিশেষ করে রোজার ভোগ্যপণ্য হিসেবে পরিচিত ছোলা, খেজুর, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, চিনির বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। বছরের পর বছর ধরে এমন চিত্রই দেখে আসছে দেশবাসী।

তবে এবার ভিন্ন চিত্র। এবার রোজার ভোগ্যপণ্যের বাজার অনেকটাই স্থিতিশীল। ভোক্তারা বলছেন, গত কয়েক বছরের মধ্যে এবার রজমানে পণ্যের দাম সবচেয়ে কম। বেশির ভাগ খাদ্যপণ্যই ক্রেতাসাধারণের হাতের নাগালে রয়েছে।

রমজান মাসে ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং পণ্যের দাম কমানোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নানামুখী পদক্ষেপ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। ফলে এবার রমজানে নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি এসেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত সরকারের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে অসাধু ব্যবসায়ীদের যে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছিল তা এখন ভেঙে গেছে। এ ছাড়া এ বছর রমজান সামনে রেখে ট্যাক্স-ভ্যাট কমার পাশাপাশি পণ্য আমদানি বেড়েছে, যার সুফল মিলছে বাজারে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি বাড়ানো ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভোজ্যতেল, ছোলা, চিনি, পেঁয়াজ, আলু, খেজুরসহ বিভিন্ন পণ্যে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে আমদানিতে উৎসাহ বাড়ায় এবার ব্যাপক হারে ভোগ্যপণ্য আমদানি করেছেন আমদানিকারকরা। এতে গত বছরের তুলনায় কিছুটা কমে বিক্রি হয়েছে ছোলা, পেঁয়াজ, চিনি, দেশি রসুন, আলু ও আদাসহ কয়েকটি পণ্য। সবজি ও মুরগির বাজারেও কিছুটা স্বস্তি ছিল। 

এবার রমজানে পেঁয়াজ ও আলু গত বছরের তুলনায় অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া বেশির সবজি গত বছরের তুলনায় অনেকটাই কম দামে বিক্রি হয়েছে। রমজানে ইফতারসামগ্রীর বাজারেও তেমন বাড়াবাড়ি নেই। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সমন্বিত তদারকি জোরদার করায় সবজির বাজার সিন্ডিকেট কাঁচা মরিচ ও বেগুনের দাম বাড়াতে পারেনি।

গত রমজানে রাজধানীর খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ কেজি ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এবার বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে। আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়, যা গত বছর রমজানে বিক্রি হয় ৪০ টাকা কেজি। পাকা টমেটো কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর বিক্রি হয় মানভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। এখন ঈদ ঘিরে মুরগির দাম বাড়লেও রোজার শুরু থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত অনেকটাই সহনীয় দরেই এবার মুরগি বিক্রি হয়। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়। ঈদ উপলক্ষে এখন মুরগির দাম কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় ব্রয়লার মুরগি কেজি ২১০ থেকে ২২০ টাকা এবং সোনালি মুরগি কেজি ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর রোজায় ব্রয়লার মুরগি কেজি ছিল ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা, রোজার আগে আগে যা ২৫০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। দাম কমে চিনি কেজি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন, গত বছরের রমজানের তুলনায় এ বছর বেশির ভাগ পণ্যের দাম কমেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তালিকায় রয়েছে গম, ডাল, মুরগি, ডিম, মাছ, সয়াবিন, পামঅয়েল, চিনি, লবণ, আলু, টমেটো, মরিচ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন ও হলুদ।

বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন বলেছেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ায় এবার রমজানে বাজারে পণ্যের দাম সহনীয়।

এদিকে এবার রোজায় পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে সরকারের একাধিক সংস্থা মাঠে আছে। সংস্থাগুলো হলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেল, র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি), কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, সিটি করপোরেশন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর মনিটরিং টিম। এ ছাড়া নিত্যপণ্যের বাজারে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিও করা হচ্ছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ