<p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নতুন বছরে বিশ্ব তেলবাজার নানামুখী চাপে থাকতে পারে, এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চারটি ইস্যু জ্বালানি তেলের দামে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এই চারটি ইস্যু হচ্ছে ওপেকের তেল উৎপাদন সিদ্ধান্ত, ট্রাম্প প্রশাসনের তেল উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত, চীনে জ্বালানি তেলের চাহিদার কমতি এবং বিশ্বে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মার্কিন এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ) আশা করছে, ২০২৫ সালে অপরিশোধিত তেলের ব্যারেলপ্রতি দর ৭৪ ডলার হতে পারে। ইআইএর ধারণা, ট্রাম্প প্রশাসন তেলের উৎপাদন বাড়ালে অপরিশোধিত তেলের আমদানি ২০২৫ সালে ২০ শতাংশ কমে গিয়ে দৈনিক ১৯ লাখ ব্যারেলে ঠেকতে পারে। ১৯৭১ সালেই সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক অপরিশোধিত তেলের আমদানি এই পরিমাণ ছিল। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা ফিচের ধারণা, ২০২৫ সালে ব্যারেলপ্রতি অপরিশোধিত তেলের দাম কমে ৭০ ডলারে এসে ঠেকবে। ২০২৪ সালে গড়পড়তা ব্যারেলপ্রতি অপরিশোধিত তেলের দাম ৮০ ডলার ধরা হয়েছে। ফিচের বিশ্লেষণ মতে, ওপেকের বাইরে থাকা দেশগুলো চাহিদার দিকে তাকিয়ে বেশি উৎপাদনে গেলে দাম পড়ে যাবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্যদিকে জেপি মরগান মনে করছে, ২০২৫ সালে ব্যারেলপ্রতি গড়পড়তা অপরিশোধিত তেলের দাম ৭৩ ডলার হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে দাম কমে ব্যারেলপ্রতি ৬৪ ডলার হতে পারে। তবে যেসব কারণে তেলের দাম কমতে পারে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ওপেক প্লাসের (ওপেক ও মিত্র দেশগুলো) উৎপাদন সিদ্ধান্ত। সংস্থাটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত তারা তেল উৎপাদন বাড়াবে না এবং এই উৎপাদন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ পর্যন্ত চলতে পারে। দুটি কারণে ওপেক প্লাস এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথমত, বৈশ্বিক চাহিদার চেয়ে ওপেকের কম উৎপাদন। দ্বিতীয়ত, ওপেক সদস্য নয় এমন দেশগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধি। দৈনিক উৎপাদন ৫৮ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেলে সীমাবদ্ধ রেখে ওপেক প্লাস সতর্কতার সঙ্গে সরবরাহপ্রক্রিয়া সম্পাদন করবে, যাতে বাজারে বাড়তি সরবরাহের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ওপেকের সর্বশেষ পূর্বাভাস মতে, ২০২৪ সালে বিশ্বের তেলের উৎপাদন হবে দৈনিক ১৬ লাখ ১০ হাজার ব্যারেল, যা শুরুতে ধরা হয়েছিল ১৮ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল। একইভাবে ২০২৫ সালে দৈনিক উৎপাদন ধরা হয় ১৫ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল, যা পরে কমিয়ে করা হয় ১৪ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল। চীন ও এশিয়ার অনেক দেশ তেল আমদানি কমিয়ে দেওয়ায় ওপেকের পূর্বাভাসে সংশোধনী আনা হয়। কারণ ২০২৪ সালে চীনের দৈনিক চাহিদা ধরা হয়েছিল সাত লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল, যা পরে কমে এসে ঠেকেছে দৈনিক চার লাখ ৩০ হাজার ব্যারেলে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার ফিরতে পারায় বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেলের উৎপাদন বাড়বে। কারণ ট্রাম্প সব সময় নিয়ন্ত্রণমুক্ত প্রশাসন প্রত্যাশার পাশাপাশি জীবাশ্ম জ্বালানি নীতি পছন্দ করেন। এ কারণেই দেশটিতে তেলের উৎপাদন বাড়বে। আবার যুক্তরাষ্ট্রে তেল উৎপাদন বাড়লে বিশ্বে তেলের দাম কমে যাবে। অন্যদিকে চৈনিক অর্থনীতির তেজিভাব ধীরে ধীরে কমে যাওয়ার অর্থও হচ্ছে বিশ্বে তেলের দাম পড়ে যাওয়া। জ্বালানি তেল ব্যবহারে বিশ্বে চীনের অবস্থান দ্বিতীয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চতুর্থ যে বিষয়টি বিশ্ব তেলবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে, সেটি হলো নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বৃদ্ধি। এই বিষয়টি ২০২৫ সালে তেলের বাজারে বেশ প্রভাব ফেলব। কার্বন নিঃসরণের হার কমিয়ে জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাবগুলো রুখতে বিশ্বের অনেক দেশ এখন সৌরবিদ্যুৎ, বায়ুবিদ্যুৎসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানির অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহারে এগিয়ে এসেছে, যা তেলবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানতে চাইলে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আমিন উল আহসান কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আগামী বছরের জুন পর্যন্ত ছয় মাসে যে জ্বালানি তেল আসবে, সেটি এরই মধ্যে টেন্ডার ও জিটুজির মাধ্যমে চুক্তি করা হয়েছে। এতে আগামী জুন পর্যন্ত আমরা নিরাপদ আছি। নতুন বছরে তেলের বাজার অস্থির হলেও তেমন প্রভাব পড়বে না। চীন যেহেতু জ্বালানি তেল কেনা কমিয়েছে, তাই আমরা আশা করছি, নতুন বছরে জ্বালানি তেলের বাজার এত অস্থির হবে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আইইএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন বছরে ওপেক প্লাস বহির্ভূত দেশগুলোতে দৈনিক গড়ে ১৫ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেলের উত্তোলন বাড়তে পারে। এই উত্তোলন বৃদ্ধিতে মূল ভূমিকা পালন করবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, গায়ানা ও আর্জেন্টিনার মতো দেশ।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে প্রায় ৩২ লাখ টন পরিশোধিত ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির পরিকল্পনা (জি টু জি) গত নভেম্বরেই চূড়ান্ত করেছে।</span></span></span></span></p> <p> </p>