সহজ ও স্বচ্ছ লেনদেনের সুবিধা দিচ্ছে তাক্বওয়া ক্রেডিট কার্ড

  • মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সম্পূর্ণ সুদমুক্ত ‘তাক্বওয়া’ ইসলামী ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের আধুনিক ব্যাংকিং সেবার পাশাপাশি সহজ ও স্বচ্ছ লেনদেনের সুবিধা নিশ্চিত করছে। সম্প্রতি কালের কণ্ঠকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেন মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মতিউল হাসান
শেয়ার
সহজ ও স্বচ্ছ লেনদেনের সুবিধা দিচ্ছে তাক্বওয়া ক্রেডিট কার্ড
মতিউল হাসান

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের নাম কী? এটি কতটা শরিয়াহসম্মত?

মার্কেন্টাইল ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকিং নীতিমালা অনুসরণ করে সম্পূর্ণ সুদমুক্ত ‘তাক্বওয়া’ ইসলামী ক্রেডিট কার্ড চালু করেছে, যা সম্পূর্ণ শরিয়াহসম্মতভাবে পরিচালিত হয়। এই কার্ড গ্রাহকদের জন্য আধুনিক ব্যাংকিং সেবার পাশাপাশি সহজ ও স্বচ্ছ লেনদেনের সুবিধা নিশ্চিত করে। বর্তমানে তাক্বওয়া ইসলামী ক্রেডিট কার্ড দুটি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে পাওয়া যাচ্ছে—তাক্বওয়া গোল্ড এবং তাক্বওয়া প্লাটিনাম, যা গ্রাহকদের প্রয়োজন ও সুবিধা অনুযায়ী ডিজাইন করা হয়েছে।

আপনাদের কার্ডের বিশেষ কী সুবিধা আছে, যা গ্রাহককে আকৃষ্ট করবে?

আমাদের তাক্বওয়া ক্রেডিট কার্ড সম্পূর্ণ সুদমুক্ত, শরিয়াহ পরিপালিত শরিয়াহ বোর্ড দ্বারা অনুমোদিত ও তদারকির মাধ্যমে পরিচালিত।

ইসলামিক সুবিধা হালাল খাতে ব্যবহারের নিশ্চয়তা ও শরিয়াহসম্মত পদ্ধতিতে লেনদেন। বিশেষ ডিসকাউন্ট ও অফার, ইসলামিক জীবনধারা অনুসারে বিভিন্ন মুদারাবাভিত্তিক সুবিধা। এবং সহজ কিস্তি সুবিধা, নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে সুবিধাজনক কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ।

এই কার্ডের মাধ্যমে কী কী সেবা পাওয়া যাবে? এবার রোজা ও ঈদ উপলক্ষে গ্রাহকদের কী সুবিধা দিচ্ছেন?

আমাদের কার্ড ব্যবহারকারীরা পণ্য ও সেবার কেনাকাটা, অনলাইন লেনদেন এবং আন্তর্জাতিক ভ্রমণের সুবিধা পাবেন।

বাংলা ও ইংরেজি নববর্ষ, পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহাসহ বিভিন্ন উৎসবে গ্রাহকদের কেনাকাটা আরো সুবিধাজনক করতে আমরা বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার দিচ্ছি। এবারের রমজান ও ঈদ উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য বিশেষ ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট ও কিস্তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, যা শরিয়াহসম্মত। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সব ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক রমজান মাসজুড়ে আড়ংয়ে কেনাকাটায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক উপভোগ করছেন। এ ছাড়া পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩৫টি দেশি ও আন্তর্জাতিক হোটেল ও রেস্তোরাঁয় ইফতার এবং ডিনার ও সাহরির বাফেটে একটি কেনাকাটায় তিনটি ফ্রি বাফেট সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড আউটলেট এবং অনলাইন শপে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটায় ৫৪ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় উপভোগ করা যাচ্ছে। তা ছাড়া আমাদের ক্রেডিট কার্ড থেকে বিকাশ, নগদ এবং এমবিএল রেইনবো অ্যাপে অ্যাড মানি একদম ফ্রি। এসব সুবিধা গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে আগ্রহ বাড়ায় এবং কেনাকাটাকে আরো সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে।

এই কার্ডে কত ধরনের ফি আছে, কিভাবে নিয়ে থাকেন?

আমাদের ইসলামী ক্রেডিট কার্ডে সুদের পরিবর্তে নির্দিষ্ট ও স্বচ্ছ ফি গ্রহণ করা হয়, যা গ্রাহকদের আগেই জানিয়ে দেওয়া হয় এবং এসব ফি সম্পূর্ণ শরিয়াহ নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত। প্রধান ফিগুলো হলো—কার্ড ফি ও সার্ভিস চার্জ, যা কার্ড ব্যবস্থাপনা ও লেনদেনসংক্রান্ত খরচের জন্য প্রযোজ্য; নগদ উত্তোলন ফি, যা গ্রাহকরা এটিএম থেকে নগদ উত্তোলনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সার্ভিস চার্জ হিসেবে প্রদান করেন; বার্ষিক ফি, যা কার্ডের সেবা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রযোজ্য এবং বাজারের প্রতিযোগিতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ; এবং বিলম্ব ফি নেই, তবে নির্ধারিত সময়ের পর পরিশোধে কোনো সুদ প্রযোজ্য হয় না।

তবে প্রশাসনিক ফি থাকতে পারে। এই ফিগুলো সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, সুবিধাজনক ও ন্যায্য, যা তাদের আর্থিক চাহিদা পূরণে সহায়ক।

গ্রাহক কার্ড ব্যবহার না করলে কিংবা আংশিক ব্যবহার করলে ফি কিভাবে নির্ধারণ হবে?

আমাদের ফি কাঠামো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে শুধু সক্রিয় সার্ভিস অনুযায়ী চার্জ প্রযোজ্য হয়। যদি গ্রাহক আংশিকভাবে বা নির্দিষ্ট সীমায় ব্যবহার করেন, তাহলে ব্যবহূত সেবার অনুপাতে ফি নির্ধারণ করা হয়। এতে গ্রাহকরা ন্যায্য ও স্বচ্ছভাবে মূল্য প্রদান করেন।

এই কার্ডে সাফল্য কেমন পাচ্ছেন? বাংলাদেশে এই কার্ডের প্রবৃদ্ধি ও সম্ভাবনা কেমন?

আমরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট, আমাদের ইসলামিক ক্রেডিট কার্ড বাজারে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। গ্রাহকরা এর স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা ও সুবিধাজনক ব্যবস্থার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন। বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং সেবার চাহিদা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আমরা বিশ্বাস করি, এই কার্ডের প্রবৃদ্ধি ও সম্ভাবনা ভবিষ্যতে আরো উজ্জ্বল হবে।

আপনার ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকিং সেবা কতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে?

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডো এবং ইসলামী ব্যাংকিং শাখাগুলোর মাধ্যমে হাজারো গ্রাহক উপকৃত হচ্ছেন। আমাদের ইসলামী ব্যাংকিং সেবা বর্তমানে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। গ্রাহকদের আস্থা এবং গ্রহণযোগ্যতার ফলে আমরা বাংলাদেশে সেবা প্রদান করছি। গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন সমর্থন ও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার ফলস্বরূপ আমাদের সেবা খাত দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে এবং আমরা ভবিষ্যতে আরো উন্নত সেবা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। উন্নত প্রযুক্তিভিত্তিক ইসলামিক ব্যাংকিং সেবা প্রদান করার মাধ্যমে গ্রাহকদের ভালো সাড়া পাওয়ায় আমরা বর্তমানে একটি পূর্ণাঙ্গ ‘ইসলামিক ব্যাংকিং শাখা’ ও ৪৫টি ইসলামিক ব্যাংকিং উইন্ডোর মাধ্যমে ইসলামিক ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে আসছি।

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

লা-রিবা ক্রেডিট কার্ডে খরচ ৫০% কম

    সুদমুক্ত ও শরিয়াহসম্মত লেনদেনে আগ্রহীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে লা-রিবা ইসলামিক ক্রেডিট কার্ড। গ্রাহকদের জন্য এই কার্ডের বিশেষ সুবিধা ও নিরাপত্তা মানদণ্ড ইত্যাদি নিয়ে কথা বলেছেন আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসির ডিএমডি মোহাম্মদ ফজলুর রহমান চৌধুরী
শেয়ার
লা-রিবা ক্রেডিট কার্ডে খরচ ৫০% কম
মোহাম্মদ ফজলুর রহমান চৌধুরী

লা-রিবা ইসলামিক ক্রেডিট কার্ডের বিশেষ সুবিধা কী?

লা-রিবা ইসলামিক ক্রেডিট কার্ডের অন্যতম প্রধান সুবিধা হলো ডায়নামিক কারেন্সি কনভার্সন সুবিধা, যেখানে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য আলাদা কোনো লিমিট নির্ধারণের প্রয়োজন নেই বরং একক লিমিটের অধীনে উভয় মুদ্রায় নির্বিঘ্নে লেনদেন করা যায়। আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে আলাদাভাবে ইউএসডি লিমিট কনভার্ট করার প্রয়োজন হয় না, পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট সাপেক্ষে বৈদেশিক লেনদেন কার্যকর হয়। ভ্রমণপিপাসু গ্রাহকদের জন্য এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা বিশেষভাবে আকর্ষণীয়, যেখানে প্লাটিনাম কার্ডধারীরা বছরে ছয়বার পর্যন্ত বিনামূল্যে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের লাউঞ্জ ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া বিশ্বের ১৫০০+ মাস্টারকার্ড লাউঞ্জকি লাউঞ্জ, যার মধ্যে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বলাকা লাউঞ্জও অন্তর্ভুক্ত, সেগুলোতে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়, যা আন্তর্জাতিক ভ্রমণকে আরো আরামদায়ক করে তোলে।

আপনাদের ইসলামিক ক্রেডিট কার্ডে খরচ কেমন?

প্রচলিত ক্রেডিট কার্ডের তুলনায় আমাদের কার্ডের খরচ অনেক কম। বেশির ভাগ কার্ডে বকেয়ার ওপর বার্ষিক ২৫ শতাংশ হারে সুদ চার্জ করা হয়। পক্ষান্তরে লা-রিবা ইসলামিক ক্রেডিট কার্ডে নির্দিষ্ট চার্জভিত্তিক হওয়ায় প্রচলিত কার্ড থেকে ৫০ শতাংশ খরচ কম। এই কার্ডটি সম্পূর্ণ ফ্রিতে ইস্যু করা হয়, যেখানে গ্রাহকদের কোনো প্রসেসিং ফি বা সিআইবি ফি দিতে হয় না।

ফলে এটি অন্যান্য কার্ডের তুলনায় আরো লাভজনক। এক বছরে যেকোনো অ্যামাউন্টের ১৮টি ট্রানজেকশন করলে বার্ষিক ফি মওকুফ করা হয়।

এই কার্ডের মাধ্যমে আর কী কী সেবা পাওয়া যাবে?

আমাদের কার্ডে অতিরিক্ত সুবিধার মধ্যে রয়েছে একটি সম্পূর্ণ ফ্রি সাপ্লিমেন্টারি কার্ড, নির্দিষ্ট মার্চেন্টে শূন্য শতাংশ ইএমআই সুবিধা, ৬,৫০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ ডিসকাউন্ট সুবিধা, সর্বনিম্ন এটিএম মেইনটেন্যান্স ফিতে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশ উইথড্রয়াল সুবিধা। যাতে কোনো অতিরিক্ত দৈনিক চার্জ ছাড়াই এটিএম থেকে নগদ উত্তোলনের সুযোগ থাকে এবং সর্বোচ্চ ৪৫ দিন থেকে সর্বনিম্ন ১৫ দিন পর্যন্ত সার্ভিস চার্জ ও মেইনটেন্যান্স ফিমুক্ত লেনদেনের সুবিধা।

 

এই কার্ডে লেনদেনে গ্রাহক নিরাপত্তায় কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন?

গ্রাহক নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করা হয় ইএমভি চিপভিত্তিক সিকিউরিটি কার্ড, কন্টাক্টলেস পেমেন্ট সুবিধা এবং অনলাইন লেনদেনের জন্য এসএমএস ও ই-মেইলভিত্তিক ওটিপি নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে, যা প্রতিটি লেনদেনকে সর্বোচ্চ নিরাপদ করে তোলে।

এবার রোজা ও ঈদ উপলক্ষে গ্রাহকদের কী সুবিধা দিচ্ছেন?

এবারে রোজা ও ঈদ উপলক্ষে লা-রিবা ইসলামিক ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার রয়েছে, যা ইফতার, সাহরি ও কেনাকাটায় অতিরিক্ত সুবিধা দেবে। এই বিশেষ রমজান অফারের আওতায় গ্রাহকরা দেশের স্বনামধন্য পাঁচ তারকা এবং বিলাসবহুল হোটেলে বাই-ওয়ান গেট ওয়ান, বাই-ওয়ান গেট টু, বাই-ওয়ান গেট থ্রি অফার উপভোগ করতে পারবেন। এ ছাড়া রমজান মাসব্যাপী কেনাকাটার আনন্দ আরো বাড়িয়ে তুলতে আড়ংয়ে লা-রিবা ইসলামিক ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করলে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক অফার উপভোগ করা যাবে, যা গ্রাহকদের জন্য বিশাল সুবিধা নিয়ে আসবে। ঈদ শপিং ও প্রয়োজনীয় কেনাকাটার ক্ষেত্রে এই বিশেষ ক্যাশব্যাক অফার গ্রাহকদের জন্য আরো লাভজনক হবে।

এই কার্ডের ফি কতটা শরিয়াহসম্মত ও ন্যায্য?

এই কার্ডের ফিসংক্রান্ত সব কিছুই স্বচ্ছ ও শরিয়াহসম্মতভাবে নির্ধারিত, যাতে গ্রাহকরা সুদমুক্ত আর্থিক সুবিধা উপভোগ করতে পারেন এবং নির্ভরযোগ্য ইসলামী ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। ফিসংক্রান্ত কাঠামোও সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও ন্যায্য, যাতে গ্রাহকদের জন্য বাড়তি আর্থিক চাপ সৃষ্টি না হয়। এই কার্ডের ক্ষেত্রে কোনো ইস্যুয়েন্স ফি, প্রসেসিং ফি বা সিআইবি ফি নেই, ফলে গ্রাহকরা অতিরিক্ত খরচ ছাড়াই সহজে কার্ড পেতে পারেন। তবে নির্দিষ্ট কিছু পরিষেবা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য, যা শুধু লেনদেন ও পরিচালনাগত খরচ নির্বাহ করার জন্য নির্ধারিত এবং শরিয়াহ পরামর্শক কমিটির অনুমোদিত। উদাহরণস্বরূপ, নগদ উত্তোলনের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন এটিএম মেইনটেন্যান্স ফি প্রযোজ্য। ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত উত্তোলনের ক্ষেত্রে উত্তোলন ফি ১৫০ টাকা (ভ্যাট ২২.৫০ টাকা)। অর্থাৎ এই কার্ড দিয়ে এটিএম থেকে ২০ হাজার টাকা উত্তোলন করে ডিউ ডেটে ২০ হাজার ১৭২.৫০ টাকা পরিশোধ করলেই হয়।  নগদ উত্তোলনের জন্য প্রচলিত কার্ডের মতো দৈনিকভিত্তিক কোনো অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া হয় না। যদি বকেয়া অবশিষ্ট থাকে, তাহলে প্রডাক্ট অনুযায়ী সার্ভিস চার্জ, যেমন—গোল্ড কার্ডের লিমিট এক লাখ টাকা পর্যন্ত। এই ক্ষেত্রে গ্রাহকদের বকেয়া থাকলে ৯৭০ টাকা ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে।

আপনাদের ইসলামিক ক্রেডিট কার্ডের সাফল্য কেমন পাচ্ছেন, বাংলাদেশে এই কার্ডের প্রবৃদ্ধি ও সম্ভাবনা কেমন?

আমাদের লা-রিবা ইসলামিক ক্রেডিট কার্ড বাংলাদেশের বাজারে ক্রমে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, বিশেষ করে যাঁরা সুদমুক্ত ও শরিয়াহসম্মত ব্যাংকিং খুঁজছেন, তাঁদের মধ্যে এই কার্ডের গ্রহণযোগ্যতা দিন দিন বাড়ছে। বিগত বছরগুলোর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ইসলামিক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সুদমুক্ত লেনদেনের প্রতি গ্রাহকদের আস্থা ও আগ্রহের প্রমাণ।

আপনাদের ইসলামী ব্যাংকিং সেবা কতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে?

আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ইসলামী আর্থিক ব্যবস্থা অনুসরণ করে তার সেবাগুলো তৈরি করেছে, যা সুদমুক্ত এবং শরিয়াহসম্মত। এই ব্যাংক ১৯৯৫ সাল থেকে দেশব্যাপী বর্তমানে ২২৬টি শাখা, ৮৭টি উপশাখা, ৭৪৫টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট, ২৪৫টি এটিএমের মাধ্যমে ৩০ বছর ধরে ৩৬ লাখ গ্রাহককে আস্থার সঙ্গে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ইসলামী ব্যাংকিংয়ের প্রতি গ্রাহকদের আস্থা এবং আগ্রহ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমাদের ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

মন্তব্য

সিটি ইসলামিকের গ্রাহক বেড়েছে ৩৪ শতাংশ

    সিটি ইসলামিক আমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ড উজরাহ পদ্ধতিতে পরিচালিত একটি কার্ড। এতে প্রচলিত ক্রেডিট কার্ডের শরিয়াহনিষিদ্ধ সুবিধা বাদ দিয়ে অন্য সব আধুনিক সুবিধা সংযোজন করা হয়েছে। কালের কণ্ঠকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব বিষয় তুলে ধরেন সিটি ব্যাংক পিএলসির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব ইসলামিক ব্যাংকিং (সিটি ইসলামিক) মো. আফজালুল ইসলাম
শেয়ার
সিটি ইসলামিকের গ্রাহক বেড়েছে ৩৪ শতাংশ
মো. আফজালুল ইসলাম

প্রচলিত কার্ডের সঙ্গে ইসলামিক ক্রেডিট কার্ডের পার্থক্য কী?

ইসলামিক ও প্রচলিত ক্রেডিট কার্ডের মধ্যে মূল পার্থক্য হলো শরিয়াহ পরিপালন ও সুদভিত্তিক লেনদেন। ইসলামিক ক্রেডিট কার্ড শরিয়াহসম্মত বিভিন্ন নীতি যেমন মুরাবাহা, ইজারাহ ও উজরাহ (সার্ভিস চার্জ) ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়, যা সম্পূর্ণ সুদমুক্ত। প্রচলিত ক্রেডিট কার্ডে কেনাকাটা করে কিস্তিতে পরিশোধ করলে সাধারণত সুদ আরোপ করা হয়। কিন্তু ইসলামিক ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে শরিয়াহ‌ নীতির ওপর ভিত্তি করে লাভ বা সার্ভিস চার্জ নেওয়া হয়।

পেমেন্টে বিলম্ব হলে প্রচলিত ক্রেডিট কার্ডে অতিরিক্ত সুদ বা লেট পেমেন্ট চার্জ আদায় করা হয়, যা ব্যাংকের আয় হিসেবে গণ্য হয়। পক্ষান্তরে ইসলামিক ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি আচরণকে নিরুৎসাহিত করার জন্য লেট পেমেন্ট চার্জ আদায় করা হয়, যা শুধু শরিয়াহ‌ নির্ধারিত দাতব্য খাতে ব্যয় করা হয়। এ ছাড়া ইসলামিক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কোনো গ্রাহক যেন শরিয়াহ‌ নিষিদ্ধ পণ্য ও সেবা ক্রয় করতে না পারেন, সে জন্য কার্ড সিস্টেমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা থাকে।

সিটি ইসলামিক আমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ড উজরাহ পদ্ধতিতে পরিচালিত একটি কার্ড।

উজরাহ একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ পারিশ্রমিক বা সার্ভিস চার্জ। অর্থাৎ নির্ধারিত সার্ভিস চার্জের বিপরীতে আমাদের গ্রাহকরা সিটি ইসলামিকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারেন। বাংলাদেশে একমাত্র আমরাই ইসলামিক আমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ড ইস্যু করে থাকি।

আপনাদের কার্ডের বিশেষত্ব কী, যা গ্রাহককে আকৃষ্ট করবে?

সিটি ইসলামিক আমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ডে প্রচলিত ক্রেডিট কার্ডের শরিয়াহ‌ নিষিদ্ধ সুবিধা বাদ দিয়ে অন্য সব আধুনিক সুবিধা সংযোজন করা হয়েছে।

গ্রাহকদের ধর্মীয় মূল্যবোধ অক্ষুণ্ন রেখে শরিয়াহসম্মত আধুনিক ব্যাংকিং সেবা উপভোগ করার জন্য আমাদের ইসলামিক ক্রেডিট কার্ড অনন্য। সিটি ব্যাংক বর্তমানে দুই ধরনের ইসলামিক ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে থাকে—সিটি ইসলামিক গোল্ড আমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ড ও সিটি ইসলামিক ব্লু আমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ড। আমাদের কার্ড দুটির বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে রয়েছে—এই কার্ডে লেনদেনে বিশেষ সুবিধার মধ্যে রয়েছে, আমেরিকান এক্সপ্রেসের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী লেনদেনের সুবিধা, প্রাইমারি গোল্ড কার্ডধারীদের জন্য প্রথম তিনটি বিদেশ ভ্রমণে ফ্রি প্রায়োরিটি পাস মেম্বারশিপ, গোল্ড কার্ডধারীদের জন্য প্রতিবছরে পাঁচটি ফ্রি লাউঞ্জ ভিজিট, রেস্তোরাঁ, ভ্রমণ, শপিং, লাইফস্টাইল, গ্রোসারি, এয়ারলাইনসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেরা সব অফার, দেশসেরা ফাইভ স্টার হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোতে বাই ওয়ান গেট ওয়ান অফার, মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্টস; সিটি ব্যাংক, কিউ-ক্যাশ ও এনপিএসবি এটিএম বুথে ২৪ ঘণ্টা নগদ উত্তোলনের সুবিধা এবং মাসিক ফ্রি ই-স্টেটমেন্ট ও কার্ড চেকসহ আরো অনেক সুবিধা।

আপনাদের কার্ডের মাধ্যমে কী কী সেবা পাওয়া যাবে? এবার রোজা ও ঈদ উপলক্ষে আপনারা গ্রাহকদের কী সুবিধা দিচ্ছেন?

আগে উল্লিখিত সেবার পাশাপাশি এই ঈদে সিটি ইসলামিক আমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ড যে অফারগুলো দিচ্ছে তার মধ্যে কয়েকটি হলো—দেশের শীর্ষস্থানীয় লাইফস্টাইল ও গ্রোসারি আউটলেটে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক। ৪৫০টিরও বেশি রিটেইল স্টোরে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সেভিংস, যা সারা দেশে বিস্তৃত।

১০০টিরও বেশি রেস্টুরেন্টে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত সেভিংস। বিভিন্ন জনপ্রিয় অনলাইন মার্চেন্ট ও ফুড ডেলিভারিতে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত সেভিংস এবং ৪০টিরও বেশি রেস্টুরেন্টে বাই ওয়ান গেট ওয়ান ইফতার ও ডিনার অফার, যার মধ্যে রয়েছে ফাইভস্টার হোটেলের অভিজাত ডাইনিং।

গ্রাহক কিভাবে নিশ্চিত হবে এই কার্ড শরিয়াহ‌সম্মত?

সিটি ব্যাংকে রয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সমাদৃত শরিয়াহ‌ স্কলারদের সমন্বয়ে গঠিত একটি স্বতন্ত্র ও স্বাধীন শরিয়াহ‌ সুপারভাইজারি কমিটি। এই কমিটির সদস্যরা অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে ক্রেডিট কার্ডসহ সিটি ইসলামিকের প্রতিটি প্রডাক্ট ও পলিসি যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দিয়ে থাকেন। শরিয়াহসম্মত বিভিন্ন পদ্ধতি পর্যালোচনা করে এই কমিটি সিটি ব্যাংকের ইসলামিক ক্রেডিট কার্ডের জন্য ‘উজরাহ’ পদ্ধতিকে অনুমোদন করেছেন যার ভিত্তিতে সিটি ইসলামিক আমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ড পরিচালিত হচ্ছে। তাই শরিয়াহ‌ মেনে সুদমুক্ত লেনদেন করার জন্য গ্রাহকরা নিশ্চিন্তে সিটি ইসলামিক আমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ড ব্যবহার করতে পারেন।

এই কার্ডে কত ধরনের ফি আছে, কিভাবে নিয়ে থাকেন?

সিটি ইসলামিক ক্রেডিট কার্ডে সাধারণত যেসব ফি আরোপিত হয় তার মধ্যে রয়েছে—কার্ড ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ বার্ষিক সাবস্ক্রিপশন ফি। কার্ড ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ মাসিক ফি। কার্ড হারানো বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে নতুন কার্ড ইস্যু করার জন্য ফি এবং এটিএম থেকে নগদ উত্তোলনের জন্য ফি।

গ্রাহক কার্ড ব্যবহার না করলে কিংবা আংশিক ব্যবহার করলে ফি কিভাবে নির্ধারণ হবে?

সিটি ইসলামিক ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকরা মূলত দুই ধরনের ফি পরিশোধ করে থাকেন। প্রথমত, আমাদের গ্রাহকরা একটি বার্ষিক সাবস্ক্রিপশন ফি পরিশোধ করেন। দ্বিতীয়ত, তারা একটি নির্ধারিত মাসিক ফি বা উজরাহ প্রদান করে থাকেন। তবে কোনো গ্রাহক কার্ড ব্যবহার না করলে সংশ্লিষ্ট মাসের জন্য তাকে কোনো মাসিক ফি প্রদান করতে হয় না। আংশিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাধারণত ব্যাংক তার গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে নির্ধারিত মাসিক ফি বা উজরাহর ওপর সম্পূর্ণ নিজস্ব এখতিয়ারে আংশিক ছাড় দিয়ে থাকে।

ইসলামিক ক্রেডিট কার্ডের সাফল্য কেমন পাচ্ছেন, বাংলাদেশে এই কার্ডের প্রবৃদ্ধি ও সম্ভাবনা কেমন?

বাংলাদেশের ক্রেডিট কার্ড ইন্ডাস্ট্রিতে সিটি ব্যাংক বরাবরই গ্রাহকদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। ২০২১ সালে চালু করার পর থেকেই ইসলামিক ক্রেডিট কার্ডেও আমরা অত্যন্ত ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। ২০২৩ সালের শেষে আমাদের ইসলামিক ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকসংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৫০০ যা ৩৩ শতাংশ বেড়ে বর্তমানে প্রায় ২২ হাজারে দাঁড়িয়েছে। গ্রাহকদের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সিটি ব্যাংকের প্রতি তাদের আস্থার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সিটি ইসলামিকের প্রতিটি কাজে পরিপূর্ণভাবে শরিয়াহ পরিপালন নিশ্চিত করা হয়েছে, যা আমাদের সফলতার অন্যতম চালিকাশক্তি।

আপনার ব্যাংকের ইসলামিক ব্যাংকিং সেবা কতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে?

সিটি ব্যাংকের সুশাসন, সুচিন্তা ও সুদৃঢ় আর্থিক ভিত্তি এই ব্যাংকটিকে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকে পরিণত করেছে। পাশাপাশি শরিয়াহ‌ পরিপালনে ব্যাংকের আপসহীন অঙ্গীকার গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এর ফলে সিটি ইসলামিক এরই মধ্যে দেশের ইসলামিক ব্যাংকিং খাতে একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যেও ২০২৪ সালে সিটি ইসলামিকের গ্রাহকসংখ্যা ৩৪ হাজার ৫০০ বেড়েছে এবং ফান্ড আন্ডার ম্যানেজমেন্ট ৩৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। যুগোপযোগী ইসলামিক ব্যাংকিং প্রডাক্ট, উন্নত গ্রাহকসেবা এবং ডিজিটাল ব্যাংকিং খাতে অগ্রণী ভূমিকার কারণে গ্রাহকদের কাছে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

 

মন্তব্য

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে যা জানতে হবে

    সাধারণত ‘সিলভার’, ‘গোল্ড’ ও ‘প্লাটিনাম’ ক্রেডিট কার্ড বেশি জনপ্রিয়। এসব কার্ডের একেকটিতে একেক সুবিধা ও ফিচার থাকে, যা নিজের পছন্দ ও প্রয়োজন অনুযায়ী বাছাই করা যায়
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে যা জানতে হবে

বর্তমান যুগে মানুষের জীবনে ক্রেডিট কার্ড অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি অনুষঙ্গ। এটি কেবল অর্থ আদান-প্রদানের মাধ্যম নয়, বরং সুবিধাজনক ও নিরাপদ লেনদেনের মাধ্যমও বটে। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে সহজে কেনাকাটা থেকে শুরু করে হোটেল বুকিং, বাস-ট্রেন-বিমানের টিকিট কাটা সম্ভব। তাই প্রতিনিয়ত বাড়ছে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা।

তবে যাঁরা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করছেন, তাঁদের বেশ কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি।

খরচের সীমা মেনে চলা : ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার সময় যেকোনো ধরনের খরচ সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং সীমা মেনে চলুন। লাগামহীন খরচের কারণে পরবর্তী সময় বিশাল ঋণের বোঝা ঘাড়ে পড়তে পারে।

বিল পরিশোধের নিয়ম : অবশ্যই মাসের নির্দিষ্ট তারিখে বিল পরিশোধ করুন।

অন্যথায় অতিরিক্ত সুদ ও চার্জের কবলে পড়তে হতে পারে।

সুদের হার বুঝে নেওয়া : প্রতিটি ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার আলাদা। তাই সুদের হার সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন ও বুঝে ব্যবহার করুন।

ফি ও চার্জ সম্পর্কে সচেতন থাকা : ক্রেডিট কার্ডে বিভিন্ন ধরনের ফি ও চার্জ থাকতে পারে, যেমন—বার্ষিক ফি, বিল পরিশোধে বিলম্বের ফি ইত্যাদি।

এসব ফি সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং যথাসময়ে পরিশোধ করুন।

ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখা : ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলে এই ব্যাপার নিয়ে সচেতন থাকা জরুরি। ক্রেডিট কার্ডের নম্বর কিংবা এসংক্রান্ত কোনো তথ্য কাউকে শেয়ার করা থেকে সব সময় বিরত থাকুন। ব্যাংকের অনুমোদিত কোনো ব্যক্তি ছাড়া এ ধরনের তথ্য কাউকে দেওয়া যাবে না।

ক্রেডিট কার্ডের যত সুবিধা : ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের অন্যতম প্রধান সুবিধা হলো, এর সাহায্যে দ্রুত লেনদেন করা যায়।

এমনকি হাতে টাকা না থাকলেও কোনো কিছু কিনতে মন চাইলে ঝামেলা ছাড়া সহজেই তা কেনা যায় এবং পরে পণ্যটির মূল্য পরিশোধ করে দেওয়া যায়। এ ছাড়া এতে নগদ অর্থের পাশাপাশি অনলাইন বা অফলাইনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুরক্ষিত লেনদেনের সুযোগ রয়েছে। সেই সঙ্গে যখন বড় অঙ্কের কোনো কেনাকাটা বা দেশে-বিদেশে ভ্রমণ করা হয়, তখন সঙ্গে ক্রেডিট কার্ড থাকলে একসঙ্গে অনেক টাকা হাতে না রেখেও সহজে একাধিক সেবা পাওয়া সম্ভব।

ক্রেডিট কার্ডের ধরন : বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নানা ধরনের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। সাধারণত ‘সিলভার’, ‘গোল্ড’ ও ‘প্লাটিনাম’ ক্রেডিট কার্ডগুলো বেশি জনপ্রিয়। এসব কার্ডের একেকটিতে একেক সুবিধা এবং ফিচার থাকে, যা নিজের পছন্দ ও প্রয়োজন অনুযায়ী বাছাই করা যায়।

ভ্রমণপিপাসুদের জন্য ভরসা ক্রেডিট কার্ড

বিদেশ ভ্রমণের সময় ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাওয়া যায়। বিদেশে এটি নিরাপদ ও ঝামেলাহীন লেনদেনের একটি সহজ মাধ্যম। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে স্থানীয় মুদ্রায় লেনদেন করা সহজ হয় এবং একাধিক সুবিধাও পাওয়া যায়, যেমন—ভ্রমণ বীমা, খরচের রিপোর্ট এবং বিশেষ ডিসকাউন্ট অফার। এ ছাড়া ক্রেডিট কার্ড দিয়ে হোটেল ও ট্রান্সপোর্ট বুকিং করা বর্তমানে সবচেয়ে সুবিধাজনক একটি পদ্ধতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একইভাবে ফ্লাইট, ট্রেন বা বাসের টিকিটও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সহজেই কেনা সম্ভব।

 

মন্তব্য

ক্যাশলেস অর্থনীতির পথে অনেক দেশ

    ♦ সুইডেন এ বছরই শতভাগ ক্যাশলেস দেশ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে ♦ দেশটিতে নগদ অর্থে লেনদেন হয় ১০ শতাংশের কম
বাণিজ্য ডেস্ক
বাণিজ্য ডেস্ক
শেয়ার
ক্যাশলেস অর্থনীতির পথে অনেক দেশ

প্রযুক্তির ব্যবহারে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ডিজিটাল লেনদেন। একসময় নগদ টাকা ছাড়া যেমন কেনাকাটা কল্পনা করা যেত না, এখন নগদ টাকা বহনই যেন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে বিশ্বজুড়ে মানুষ মোবাইল পেমেন্ট, ডিজিটাল ওয়ালেট, কার্ড পেমেন্ট ইত্যাদির দিকে ঝুঁকছে। ফলে লেনদেনে মানুষের চাহিদাকে সামনে রেখে সরকার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ডিজিটাল উদ্ভাবনে গুরুত্ব দিচ্ছে।

বর্তমানে সুইডেন, ফিনল্যান্ড, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, কানাডা ইত্যাদি দেশ ক্যাশলেস বা নগদ অর্থবিহীন লেনদেন করা দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে। এমনকি সুইডেন এ বছরই শতভাগ ক্যাশলেস দেশ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। বর্তমানে দেশটিতে নগদ অর্থে লেনদেন হয় ১০ শতাংশের কম।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান জুনিফার রিসার্চের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল ওয়ালেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৪৩০ কোটি।

২০২৯ সাল নাগাদ ব্যবহারকারীর সংখ্যা হবে ৫৮০ কোটি। এ সময়ে ডিজিটাল ওয়ালেট ব্যবহারকারী বাড়বে ৩৫ শতাংশ, যা বিশ্বজুড়ে ক্যাশলেস অর্থনীতি গড়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে।

আগামী বিশ্ব নগদ টাকা ছেড়ে ক্যাশলেস সোসাইটি তৈরির দিকে ধাবিত হচ্ছে। এ জন্য ক্যাশলেস অর্থনীতি বা ক্যাশলেস সোসাইটি আলোচনা বহুদিন ধরে চলে আসছে একাডেমিক পর্যায়ে।

সুইডেনের মতো বর্তমানে নরওয়ে, ফিনল্যান্ড ও ডেনমার্কে প্রায় ৯০ শতাংশের কাছাকাছি মানুষ ক্যাশলেস ব্যবস্থার আওতায় চলে গেছে। বিশেষজ্ঞের মতে, সুইডেন হয়তো পৃথিবীর প্রথম দেশ হবে যারা সম্পূর্ণ ক্যাশলেস সোসাইটিতে রূপান্তরিত হবে। এর মধ্যে ক্যাশলেস পেমেন্টের পথিকৃৎ রূপে পরিচিত চীন তাদের দেশের আলি পে, উইচ্যাট পে, টেনসেন্ট মোবাইল পেমেন্টের মাধ্যমে বহু আগের মোবাইল পেমেন্ট দিয়ে ক্যাশলেস যাত্রা চালু করেছিল।  কভিড-পরবর্তী সময়ে চীন তাদের প্রথম জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রা তৈরি করেছে। চীন আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ স্পর্শবিহীন ক্যাশলেস লেনদেন রূপান্তরের কাজে রয়েছে।

মূলত ক্যাশলেস-ব্যবস্থা আধুনিক অর্থনীতি বিকাশের একটি নতুন অধ্যায়। ক্যাশলেস-ব্যবস্থা ব্যবহারের অনস্বীকার্য অনেক সুবিধা আছে। যেমন—ক্যাশলেস-ব্যবস্থার মাধ্যমে যেকোনো সময়, জায়গা থেকে সহজে ও দ্রুত লেনদেন সম্পন্ন করা যায়, ক্যাশলেস-ব্যবস্থায় টাকা তৈরির খরচ কম আসে, অতিরিক্ত টাকা সঙ্গে না রাখার জন্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায়, আর্থিক অপরাধ সংখ্যা কমে যায়। সূত্র : গ্লোবাল ব্যাংকিং অ্যান্ড ফিন্যান্স রিভিউ

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ