<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সম্মিলিত বা সমষ্টিগত কাজে দায়িত্ববোধ ও কর্তব্যপরায়ণতা মানুষের সামগ্রিক জীবনের মৌলিক অনুষঙ্গ। কেউ যদি এই দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে বা অনুমতি ছাড়া এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করে তাহলে নানা ধরনের দুর্ঘটনা ও ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই সমষ্টিগত কাজ ও প্রাতিষ্ঠানিক যেকোনো অর্পিত দায়িত্ব ও প্রতিশ্রুতির প্রতি মুমিনকে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে সফল মুমিনদের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যারা নিজেদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(সুরা : মুমিনুন, আয়াত : ৮)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুরা নুরে বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মুুমিন তো শুধু তারাই, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে আন্তরিকভাবে মানে এবং যখন রাসুলের সঙ্গে সমষ্টিগত কোনো কাজে শরিক হয় তখন তাঁর অনুমতি ছাড়া কোথাও যায় না। (হে নবী!) যারা তোমার অনুমতি নেয়, তারাই আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে সত্যিকারভাবে মানে। সুতরাং তারা যখন তাদের কোনো কাজের জন্য তোমার কাছে অনুমতি চায় তখন তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা হয় অনুমতি দিয়ো এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে মাগফিরাতের দোয়া কোরো। নিশ্চয় আল্লাহ অতিক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(সুরা নুর, আয়াত : ৬২) </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার প্রেক্ষাপট হলো, আহজাবের যুদ্ধের সময় আরবের মুশরিক ও অন্যান্য সম্প্রদায় সম্মিলিতভাবে মদিনায় আক্রমণ করার পরিকল্পনা করে। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কিরাম কাফেরদের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য পরিখা খনন করেন। পরিখা খনন কাজে সাহাবায়ে কিরামের সঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও অংশগ্রহণ করেন। মোনাফেকরা প্রথমত খননকাজে শরিক হতে চাইত না। পরিস্থিতির চাপে কখনো এসে গেলে লোক দেখানোর জন্য সামান্য কাজ করে চুপিসারে সরে পড়ত। এর বিপরীতে সাহাবিরা অক্লান্ত পরিশ্রম সয়ে কাজ করে যেতেন। কখনো প্রয়োজন দেখা দিলে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে প্রস্থান করতেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই আয়াত দুটি অবতীর্ণ হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আলোচ্য আয়াত থেকে জানা যায়, সত্যিকারের মুমিন যখন কোনো সমষ্টিগত কাজের জন্য একত্র হয় তখন সেখান থেকে অনুমতি ছাড়া কোথাও চলে যায় না। যদি যাওয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়, অনুমতি নিয়ে যায়, নয়তো নিজের ব্যক্তিগত কাজের ওপর সমষ্টিগত কাজকে প্রাধান্য দেয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ আয়াত থেকে আরো জানা যায়, নিজের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার চেয়ে প্রতিষ্ঠান, দল ও জাতির নিরাপত্তার বিষয়টি বেশি গুরুত্বপূর্ণ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আলোচ্য আয়াতের শিক্ষা শুধু রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মজলিসের জন্য খাস নয়; বরং মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি বার্তা। তাই সম্মিলিত কাজ, আলেম-ওলামা, ইমাম-উস্তাজ, মা-বাবা, পরিবারের মুরব্বি, প্রতিষ্ঠানের পরিচালকবৃন্দ প্রমুখ দায়িত্বশীলদের মজলিসের ক্ষেত্রেও এই আদব অনুসরণীয়। তাঁরা কোনো কাজের জন্য সবাইকে একত্র হওয়ার আদেশ দিলে তা পালন করা উচিত। অনুমতি ছাড়া সেখান থেকে চলে যাওয়া উচিত নয়। এটাই ইসলামী সামাজিকতার দাবি। অন্যথায় এই দায়িত্ব পালনে অবহেলা করা বা পালিয়ে যাওয়া এটি মোনাফেকের আলামত। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমনকি দ্বিনি কাজে অনুপস্থিত থাকার জন্য শুধু অনুমতি প্রার্থনাই যথেষ্ট নয়; বরং অনুমতির পাশাপাশি ভিন্নভাবে আল্লাহর কাছে ইস্তেগফার করা উচিত। তা ছাড়া অনুমতি নেওয়ার মাধ্যমে সম্মিলিত কাজে ঐক্য রক্ষা হয়। পাশাপাশি কাজের গতি বৃদ্ধি পায় এবং সহকর্মীদের মন জয় করা যায়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মহান আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন।</span></span></span></span></p>