<p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.15pt">এখানকার শিশুদের প্রায় সবাই গরিব ঘরের সন্তান। মা-বাবার সঙ্গে তাদেরও কাজ করতে হয়। স্কুলে যাওয়ার সুযোগ হয় না। তবে তারাও পড়তে চায়। ওদের চোখে-মুখে বড় হওয়ার স্বপ্ন। কিন্তু হাওরের প্রতিকূল পরিবেশে তা অনেক সময় হয়ে ওঠে না। তবে একটি উদ্যোগ তাদের আশাবাদী করে তুলেছে। শিক্ষার সব আয়োজন নিয়ে তাদের বাড়ির ঘাটে হাজির হয়েছে অন্য রকম স্কুল। সেখানেই চলছে শিশুদের স্বপ্নপূরণের পাঠ। ভাসমান এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ছে স্কুল থেকে ঝরে পড়া কয়েক শ শিশু।</span></span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.15pt">ভাসমান নৌকাস্কুলটি নোঙর করেছে হামিদপল্লীর ঘাটে। এটি কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত মিঠামইন উপজেলার একটি গ্রাম। জানা গেছে, এখানে বসবাস করে প্রায় দুই হাজার মানুষ। যোগাযোগব্যবস্থাও নৌকানির্ভর। দ্বীপের মতো গ্রামটিতে নেই কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আশপাশের স্কুলগুলো অনেক দূরে। সামর্থ্য ও নিরাপত্তার কথা ভেবে সেখানে শিশুদের দিতে চান না অভিভাবকরা। ফলে শিক্ষাবঞ্চনা নিয়ে বেড়ে উঠছিল গ্রামের শিশুরা। </span></span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.15pt">হামিদপল্লীর শিশুরা এখন পড়তে শিখছে। রোজ নিয়ম করে সময়মতো নৌকাস্কুলে যায় তারা। আনন্দঘন পরিবেশে রপ্ত করছে বাংলা-ইংরেজি বর্ণমালা। আগ্রহী হয়ে উঠেছে বই পড়ায়। নাচ-গান, কবিতা আবৃত্তি, ছবি আঁকা ও খেলাধুলায় বিনোদন পাচ্ছে শিশুরা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পরবর্তী সময়ে এই শিশুরা যুক্ত হবে মূলধারার লেখাপড়ায়। জানা গেছে, বেসরকারি সংস্থা ঢাকা আহছানিয়া মিশন ২০১৭ সাল থেকে এই কার্যক্রমটি চালাচ্ছে। তখন এই কার্যক্রমে সহযোগিতা দেয় রিচ আউট টু এশিয়া (রোটা)। পরবর্তী সময়ে যুক্তরাজ্যের রিড ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায় কার্যক্রমটি চলমান রেখেছে তারা। </span></span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.15pt">প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর এ বি এম শাহাবুদ্দিন জানান, বর্তমানে হাওর উপজেলা মিঠামইনে দুটি ভাসমান নৌকাস্কুল ও ১০টি শিশু শিখন কেন্দ্রে ৪২০ জন শিশু পড়াশোনা করছে। ভাসমান স্কুলে দুই পালায় লেখাপড়া চলছে। শুধু হামিদপল্লী নয়, আশপাশের গ্রামের শিশুরাও এখানে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। নৌকা দিয়ে তাদের স্কুলে নিয়ে আসা হয়। ছুটির পর আবার পৌঁছে দেওয়া হয় তাদের বাড়িতে। হামিদপল্লীর নৌকাস্কুলের শিক্ষার্থী রাব্বি (৭) জানায়, এখানে পড়তে তার খুব ভালো লাগে। সবচেয়ে ভালো লাগে ছবি আঁকতে। লেখাপড়া করে বড় হয়ে পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন দেখে সে। আট বছর বয়সী তাসমি জানায়, স্কুলে লেখাপড়ার সঙ্গে খেলাধুলাও হয়। এটি তার খুব পছন্দের বিষয়। তাই রোজ সে স্কুলে যায়।</span></span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.15pt">হামিদপল্লীর বাসিন্দা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="letter-spacing:.15pt">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.15pt">গ্রামে কোনো স্কুল নেই। বাইরের স্কুলগুলোও অনেক দূরে। তাই ইচ্ছা থাকার পরও সন্তানকে স্কুলে দিতে পারেননি তিনি। এখন বাড়ির ঘাটে স্কুল এসেছে। অন্তত প্রাথমিক পর্যন্ত লেখাপড়া নিয়ে যে দুশ্চিন্তা ছিল, তা দূর হয়েছে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="letter-spacing:.15pt">’ </span></span></span></span></span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.15pt">হামিদপল্লীর ভাসমান স্কুলের শিক্ষক মাফুজা আক্তার বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="letter-spacing:.15pt">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.15pt">আমাদের স্কুলের শিশুদের অভিভাবকরা এতটাই গরিব যে, খরচাপাতি করে তাঁদের সন্তানদের পড়ানোর সামর্থ্য নেই। সরকারি প্রাথমিক স্কুলে খরচ না থাকলেও সেগুলো অনেক দূরে। শিশুরা ভাসমান স্কুলে লেখাপড়া করে খুব মজা পায়।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="letter-spacing:.15pt">’</span></span></span></p>