<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গভীর সমুদ্র থেকে বংশবিস্তারে উপকূলীয় অঞ্চলের নদ-নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ আসে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরের চিরচেনা রাবনাবাদ, আন্ধারমানিক, পায়রাসহ অন্যান্য নদ-নদীর মিঠা পানিতে প্রজননের জন্য এসেই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ডুবোচর আর নদীতে নির্বিচারে পড়ে থাকা পলিবর্জ্যে। সাগর ও নদ-নদীতে জাল ফেললে উঠে আসছে পলিথিন। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, দ্রুত সময়ের মধ্যে নদীদূষণ বন্ধ করা এবং ডুবোচর অপসারণ করা না হলে ইলিশের বংশবিস্তার হ্রাসের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের অভিমুখ থেকে পাশের দেশে ছুটে চলে যাবে মাছের রাজা ইলিশ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান শুরুর আগমুহূর্তে দেশের বৃহত্তম মৎস্য বন্দর আলীপুর ও মহিপুর ঘুরে দেখা গেছে, শিববাড়িয়া নদীর দুই তীরে হাজারো সামুদ্রিক মাছ ধরা ট্রলার নোঙর করে আছে। নদীর দুই তীরে অসংখ্য পলিবর্জ্যের স্তূপ। নদীতেও ভাসছে পলিথিনের পোঁটলা। এ সময় নদীতে মাছ শিকারি জেলে মো. শহিদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নদীতে জাল ফেললে মাছের চেয়ে বেশি ওঠে পলিথিন। এই পলিথিনের কারণে আমাদের জাল ছিঁড়ে যায়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> হাতের বৈঠা নদীতে ফেলে একগুচ্ছ পলিথিন তুলে দেখিয়ে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই পলিথিনের কারণে ইলিশের ডিম, রেণু পোনা এবং অন্যান্য মাছ আটকে গিয়ে নষ্ট ও মরে যাচ্ছে। নদীর তলদেশে পলিথিনের আস্তরণ পড়ে যাচ্ছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> সামুদ্রিক জেলে মো. কাওসার বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাগরেও অনেক পলিথিন পাওয়া যায়। এই পলিথিনের কারণে আমাদের মাছ শিকার করতে সমস্যা হচ্ছে। সাগর ও নদীতে জেলেরাও পলিথিন ফেলছেন এবং মৎস্য ব্যবসায়ীরাও ফেলছেন এমনকি সামুদ্রিক যে বড় বড় জাহাজ আসে তারাও সাগরে পলিথিন ফেলছে। এ কারণে পলিথিনের বিচরণ দিন দিন বাড়ছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মৎস্য বন্দর মহিপুরের ট্রলার মালিক ও মৎস্য ব্যবসায়ী মো. ফজলু গাজী কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইলিশ মাছের প্রধান শত্রুই হচ্ছে নদীর ডুবোচর। আন্ধারমানিক, রাবনাবাদ নদসহ উপকূলীয় অঞ্চলের বেশির ভাগ নদীর মোহনা, প্রবেশমুখ ও বিভিন্ন স্থানে ডুবোচর জেগে ওঠায় প্রজননের জন্য ইলিশ নদীতে ঢুকতে পারছে না। তিন বছর ধরে আমাদের দেশে ইলিশের বিচরণ আশঙ্কাজনক হারে কমেছে। সাগর ও নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে না জেলেদের জালে। এখনই সময় নদীর ডুবোচর অপসারণ এবং জেলে ও ব্যবসায়ীদের পলিথিন ব্যবহার ও নদীতে ফেলা বন্ধ করতে কঠোর হওয়া প্রয়োজন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) অ্যাকোয়াকালচার বিভাগের চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অক্টোবর মাসের প্রথম পূর্ণিমা ও অমাবস্যায় সমুদ্র, নদ-নদী হয়ে ওঠে যৌবনা। এ সময়টিই ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। সমুদ্র থেকে উজানের মিঠা পানির নদ-নদীতে দলগতভাবে নারী ও পুরুষ ইলিশ সমহারে চলে আসে। আসার পথেই বড় নদ-নদী ও শাখা নদীর মুখে এবং অভ্যন্তরে ডুবোচরের কারণে ইলিশ প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়। এতে তারা গতিপথ পরিবর্তনে বাধ্য হয়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কলাপাড়া মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সমুদ্রসংলগ্ন সব নদ-নদীর দূষণ ও ডুবোচর এবং নিষিদ্ধ ছোট ফাঁসের জাল ব্যবহারের কারণে ইলিশের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবি এক কর্মকর্তার। একই সঙ্গে পলিবর্জ্যের কারণে ইলিশের বংশবিস্তারে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। সে লক্ষ্যে মা-ইলিশ সংরক্ষণের পাশাপাশি উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন সব ধরনের মাছ শিকার বন্ধে নিষিদ্ধ জাল ও পলিবর্জ্য নদীতে ফেলানো বন্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছি আমরা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>