জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব চিংড়ি চাষে

  • * তিন বছরে উত্পাদন হ্রাস প্রায় ৯ হাজার মেট্রিক টন * রপ্তানি আয় কমেছে ৯১৭ কোটি টাকা * পরিবেশবান্ধব চাষপদ্ধতিতে গুরুত্ব দিচ্ছে মৎস্য দপ্তর, রপ্তানিকারক ও চাষিরা
কৌশিক দে, খুলনা
কৌশিক দে, খুলনা
শেয়ার
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব চিংড়ি চাষে

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে খুলনা অঞ্চলের চিংড়ি উত্পাদনে। এমন অবস্থা থেকে উত্তরণে নতুন ও পরিবেশবান্ধব চাষপদ্ধতিতে গুরুত্ব দিচ্ছেন মৎস্য দপ্তর, রপ্তানিকারক ও চাষিরা।

মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, খুলনা অঞ্চলে চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ কারখানা ৪৮টি, ডিপো ও কালেকশন সেন্টার এক হাজার ৫৯১টি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এক লাখ ২৬ হাজার ৫৩৯টি খামারে গলদা চিংড়ি উত্পাদন হয়েছে ৫১ হাজার ১১৬ মেট্রিক টন এবং এক লাখ ১২ হাজার ৪৫০টি বাগদা খামারে চিংড়ি উত্পাদন হয়েছে ৫২ হাজার ৪৭২ মেট্রিন টন।

এই সময়ে আধানিবিড় ১৫২টি খামারে উত্পাদন ছিল দুই হাজার ২৩৩ মেট্রিক টন। আর একটি খামারে ভেনামি হয়েছে ১৩ মেট্রিন টন।

খুলনা মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ৪৫১ মেট্রিক টন চিংড়ি রপ্তানি হয়েছিল, যা থেকে আয় হয়েছে এক হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ১৯ হাজার ৯০৫ মেট্রিক টন, আয় ছিল দুই হাজার ৪১২ কোটি টাকা।

এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে সরকার বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এক বছর আগে সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পটির মাধ্যমে খুলনা ও বাগেরহাটের ঘেরে সিনোবায়োটিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে চিংড়ি উত্পাদনের গবেষণায় আশাব্যঞ্জক সফলতা এসেছে বলে দাবি করছে মৎস্য বিভাগ।

সিনোবায়োটিক প্রযুক্তিটি হলো বিশেষ উপায়ে তৈরি প্রিবায়োটিক ও প্রোবায়োটিকের সংমিশ্রণ, যা খাদ্যের সঙ্গে চিংড়িকে খাওয়ানো হয়। পাশাপাশি চিংড়ি খামারের পানিতেও প্রয়োগ করা হয়।

এটি ব্যবহারের ফলে চিংড়ি চাষের পরিবেশ উন্নত হয়, ক্ষতিকর রোগজীবাণু মারা যায়, পানির গুণগত মান বজায় থাকে, চিংড়ির অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়, ফলে চিংড়ির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, উত্পাদনও বাড়ে।

মৎস্য দপ্তরের সাসটেইনবেল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপপরিচালক সরোজ কুমার মিস্ত্রী জানান, এই প্রযুক্তিতে প্রিবায়োটিক ও প্রবায়োটিক (উপকারী ব্যাকটেরিয়া) একত্রে ব্যবহারের ফলে চিংড়ি চাষের পরিবেশ উন্নত হয়, ক্ষতিকর রোগজীবাণু মারা যায়, পানির গুণগত মান বজায় থাকে। ফলে চিংড়ির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, উত্পাদনও বাড়ে।

খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল বলেন, ক্লাস্টার ও সিনোবায়োটিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে এরই মধ্যে চিংড়ি উত্পাদন বৃদ্ধি ও উত্পাদন ব্যয় কমানো সম্ভব হচ্ছে।

তবে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) পরিচালক এম এ হাসান পান্না চিংড়ি উত্পাদনে মানসম্মত পুকুর ও পোনা (রেণু) ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন।

তিনি বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি এখন বড় সমস্য। তিন থেকে সাড়ে তিন ফুট পানি গরম হয়। এ ক্ষেত্রে কমপক্ষে পাঁচ ফুট গভীরতায় চিংড়ি চাষ করতে হবে। ভাইরাসমুক্ত পানির ব্যবহার জরুরি। না হলে কোনো প্রযুক্তির সুফল পাওয়া যাবে না।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ভূরুঙ্গামারীতে ২০০০ ইয়াবা জব্দ বিজিবির

ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
শেয়ার
ভূরুঙ্গামারীতে ২০০০ ইয়াবা জব্দ বিজিবির

ভূরুঙ্গামারীতে দুই হাজার পিস ইয়াবা ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)। গত শনিবার বিকেলে উপজেলার দক্ষিণ বাশজানী গ্রামের আনন্দবাজার এলাকায় একদল মাদক কারবারিকে ধাওয়া করে এসব ইয়াবা জব্দ করেন বিজিবি সদস্যরা। বিজিবি জানিয়েছে, শনিবার বিকেলের দিকে দিয়াডাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পের টহলকারী দল আনন্দবাজার এলাকায় সন্দেহজনক একটি মোটরসাইকেল থামানোর চেষ্টা করে। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক কারবারিরা মোটরসাইকেল ও ইয়াবা ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

পরে ঘটনাস্থল থেকে দুই হাজার পিস ইয়াবা ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করে বিজিবি সদস্যরা দিয়াডাঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে যান।

মন্তব্য

সাংবাদিকের ছেলেকে অজ্ঞান করে লুট

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
শেয়ার
সাংবাদিকের ছেলেকে অজ্ঞান করে লুট

ধামরাই থানাসংলগ্ন কালের কণ্ঠের সাংবাদিকের বাসায় ঢুকে তাঁর ছেলেকে অজ্ঞান করে আসবাবপত্র তছনছ করে সোয়া দুই লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ধামরাই থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল রবিবার দুপুরে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভুক্তভোগী।

কালের কণ্ঠের ধামরাই প্রতিনিধি আবু হাসানের ছেলে মোহাম্মদ তানভির জানান, দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বোরকা পরা দুজন মহিলা, তাঁদের সঙ্গে বাচ্চা এক ছেলে ও ২০-২২ বছরের এক যুবক বাসা ভাড়া নেওয়ার কথা বলে প্রধান ফটকের ভেতরে ঢোকেন। এ সময় আকস্মিকভাবে পেছন থেকে তাঁর (তানভির) মুখে রুমাল চেপে ধরেন ওই যুবক। এরপর ওই যুবক অজ্ঞান হয়ে গেলে ভবনের ভেতরে ঢুকে পাঁচটি কক্ষের আলমারি, ওয়ার্ডরোব, শোকেস ও ট্রাঙ্কের তালা খুলে জিনিসপত্র তছনছ করে ওয়ার্ডরোবে থাকা সোয়া দুই লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

মন্তব্য

অবাধে কাটা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
শেয়ার
অবাধে কাটা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না মাটিখেকোদের দৌরাত্ম্য। রাতের আঁধারে ভেকু দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না সরকারি খাসজমিও। এতে ফসল উৎপাদন কমে যাওয়ার পাশাপাশি ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য।

সরেজমিনে উপজেলার পাইন্দং, ভূজপুর, সুয়াবিল, রোসাংগিরী, জাফতনগর, নারায়ণহাট ও লেলাং ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, সন্ধ্যার পর থেকেই আঞ্চলিক সড়কগুলোতে ওভারলোড যানবাহনের ছোটাছুটি। রাতের আঁধারে সমতল কৃষি ও বনভূমি মাটিখেকোদের দৌরাত্ম্যে পুকুর-খালে পরিণত হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাটি বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সিন্ডিকেট প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে কৃষিজমির উর্বর মাটি কাটছে। পাইন্দং ইউনিয়নের বাসিন্দা নিয়াজ মোরশেদ বলেন, রাতের আঁধারে অতিরিক্ত মাটি বোঝাই যানবাহনের চলাচলে রাস্তা ভেঙে দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে হুমকির শিকার হতে হয় তাদের। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, অবৈধভাবে মাটি কাটা বন্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। সুনির্দিষ্ট সংবাদ পেলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

মন্তব্য
সংক্ষিপ্ত

দুর্বৃত্তের বিষে পুড়ল বোরোক্ষেত

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি
শেয়ার
দুর্বৃত্তের বিষে পুড়ল বোরোক্ষেত

যশোরের কেশবপুরে দুর্বৃত্তরা পুড়িয়ে দিয়েছে এক কৃষকের ৯৩ শতক জমির বোরো ধান। গত বুধবার রাতের আঁধারে ঘাস মারা ওষুধ দিয়ে বোরো ক্ষেতটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জানিয়েছেন, ওই ক্ষেতের ধান কোনোভাবেই রক্ষা করা সম্ভব হবে না। ঘটনা উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কৃষক।

কৃষক বুলু সরদার বলেন, ওই ৯৩ শতক জমিতে প্রায় ৮০ মণ বোরো ধান উৎপাদন হতো। ধানে থোড় এসেছিল। কিন্তু এর আগেই দুর্বৃত্তরা ক্ষেতের ধান শেষ করে দিয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঘাস মারা ওষুধ স্প্রে করে ধানক্ষেতটি পুড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষেতের ধান আর রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
এতে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোখলেছুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে ওই ধানক্ষেতটি পরিদর্শন করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ