চট্টগ্রাম-রংপুর

ঈদের ছুটিতে বিশেষ নিরাপত্তা

চট্টগ্রাম ও রংপুর অফিস
চট্টগ্রাম ও রংপুর অফিস
শেয়ার
ঈদের ছুটিতে বিশেষ নিরাপত্তা

পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত, চট্টগ্রামের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও ঈদে ফাঁকা হওয়া বাসাবাড়ির নিরাপত্তায় পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঈদের ছুটিতে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ অপরাধ রোধে নানা পরিকল্পনা নিয়েছে চট্টগ্রামের প্রশাসন। এবার ঈদের দীর্ঘ ছুটির বিষয়টি মাথায় রেখে ঈদের আগে ও পরে, দুই ভাগ করে সাজানো হয়েছে নিরাপত্তা পরিকল্পনা।

ঈদের ছুটিতে বাসাবাড়ির নিরাপত্তায় থানার পুলিশের পাশাপাশি অতিরিক্ত মোবাইল টিম ও সিটিজেন ফোরামের সদস্যরা কাজ করবেন।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, মিয়াতুল ফালাহ মসজিদে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি আর্চওয়ে স্থাপন করা হবে, গোয়ন্দা পুলিশের একাধিক টিম কাজ করবে।

ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে শহর থেকে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছে। ভিড় বেড়েছে বাস, ট্রেন, লঞ্চসবখানেই। ফাঁকা হতে শুরু করেছে নগরী।

পুলিশ বলছে, ঘরমুখো মানুষ যেন চুরি-ছিনতাইয়ের কবল থেকে রক্ষা পায়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) রইস উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ঈদের যে দীর্ঘ ছুটি, তা আমলে নিয়ে কয়েকটি স্টেজে নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। ঈদে বড় জামাত যেখানে হবে, সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে। স্থায়ীভাবে ফোর্স মোতায়েন করা হবে।

এর পাশাপাশি আর্চওয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, বাসাবাড়ি, ব্যাংকসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্য থানার রেগুলার টিমগুলো থাকবে নিরাপত্তার দায়িত্বে। সেই সঙ্গে এলাকার গুরুত্ব বিবেচনা করে সেখানে অতিরিক্ত মোবাইল টিমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সিটিজেন ফোরামের সঙ্গে সমন্বয় করেছে। তারাও নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করবে।

এদিকে সিএমপির পক্ষ থেকে নগরবাসীকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সিএমপি বলছে, নগরীর বাসিন্দারা বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ করে গ্রামের বাড়িতে যাবেন। যাঁরা ঈদের ছুটিতে পরিবারসহ গ্রামের বাড়িতে যাবেন, তাঁরা অবশ্যই সংশ্লিষ্ট পুলিশের বিট অফিসার বা থানাকে অবহিত করে যাওয়ার অনুরোধ করেছে সিএমপি।

এ ছাড়া পবিত্র ঈদুল ফিতরের দীর্ঘ ছুটিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভল্টের নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাংক বা কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাব্যবস্থা অধিকতর জোরদার করা।

চট্টগ্রাম ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, পতেঙ্গাসহ পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে আমাদের অবস্থান থাকবে। সিভিল ও সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করা হবে।

রংপুর : ঈদের ছুটিতে প্রায় ফাঁকা হয়ে যাওয়া রংপুর নগরে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। নগর পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দাদের পাশাপাশি আছে সেনা টহল। বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর স্থাপনা ও আবাসিক এলাকায় দিন ও রাতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। বৃদ্ধি করা হয়েছে চেকপোস্ট। নগরজুড়ে আছে সিসি ক্যামেরা। অপরাধীরা বড় অপরাধ করে যেন নগর অতিক্রম করতে না পারে, সে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

মহানগর পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোনো সুনির্দিষ্ট হুমকি না থাকলেও আগাম সতর্কতা হিসেবে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা। এদিকে রংপুর বিভাগের প্রবেশদ্বার, নগরের মডার্ন মোড়ে অস্থায়ী সেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ঈদ উদযাপন করতে আসা ঘরে ফেরা মানুষ এবং ঈদ উদযাপন শেষে কর্মস্থলে ফেরার পথে যারা সমস্যার সম্মুখীন হবে, তাদের সাহায্য করবেন র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। চিকিৎসা সহায়তার জন্য দুটি সেবা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। র্যাবের সেবা কেন্দ্রটির নাম দেওয়া হয়েছে র্যাব সাপোর্ট সেন্টার এবং মেট্রোপলিটন পুলিশের সেবা কেন্দ্রটির নাম দেওয়া হয়েছে সাব-কন্ট্রোলরুম

নগরের মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকায় ৬০ শতাংশের বেশি মানুষজন বহিরাগত। অর্থাৎ কেউ ভাড়া থাকে, কেউ বাসাবাড়ি করেছে। তাদের বেশির ভাগই ঈদে বাড়ি যাবে। এ জন্য আমরা নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এনেছি।

রংপুর র্যাব-১৩-এর কমান্ডার এম জেড ইস্তেখাব চৌধুরী বলেন, আমরা চাই ঈদের সপ্তাহজুড়ে ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে যারা পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে উত্তরাঞ্চলে আসবে, তারা যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয়। ভোগান্তি যেন না হয়, সেই লক্ষ্যে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মজিদ আলী বলেন, ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ অনেক সময় পথে বিপদগ্রস্ত হয়। তাদের সাহায্য করার মতো কেউ থাকে না। তবে এখন র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা তাদের সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত।

তিনি বলেন, পুলিশের গৃহীত পদক্ষেপের পাশাপাশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে নিরাপত্তা সচেতনতাবোধ তৈরি করা গেলে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে ও অপরাধ দমনে অধিকতর সফল হওয়া সম্ভব।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ঝুঁকি

শেয়ার
ঝুঁকি
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে কেউ ট্রাকে, কেউ পিকআপ ভ্যানে ফিরছেন। গতকাল ঢাকা-টাঙ্গাইল যমুনা সেতু মহাসড়কে। ছবি : কালের কণ্ঠ
মন্তব্য

২৪ ঘণ্টায় তিন কোটি টাকা টোল আদায়

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
শেয়ার
২৪ ঘণ্টায় তিন কোটি টাকা টোল আদায়

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষ ও গণপরিবহন বেড়েছে। যমুনা সেতু দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ হাজার ৩৩৫টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে তিন কোটি ৩৮ লাখ ৫২ হাজার ৯০০ টাকা। গতকাল শনিবার সকালে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল কালের কণ্ঠকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) রাত ১২টা থেকে শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ হাজার ৩৩৫টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।

মন্তব্য

অতিরিক্ত ভাড়া ঠেকাতে বিআরটিএর অভিযান

রাজশাহী ব্যুরো
রাজশাহী ব্যুরো
শেয়ার
অতিরিক্ত ভাড়া ঠেকাতে বিআরটিএর অভিযান

ঈদ যাত্রায় যাত্রীদের কাছ থেকে পরিবহনগুলো যেন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না পারে, সে লক্ষ্যে বিআরটিএর এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাজশাহী নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনালে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন আল্পনা ইয়াসমিন। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, যাত্রী যাবেন রাজশাহী থেকে ফেনী, কিন্তু যাত্রীর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কক্সবাজারের ভাড়া এক হাজার ৮০০ টাকা।

অথচ নিয়ম অনুসারে ভাড়া নেওয়ার কথা এক হাজার ৩৬১ টাকা। অভিযানে নেমে এমন ঘটনা জানার পর গ্রামীণ ট্রাভেলেসকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন বিআরটিএর এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আল্পনা ইয়াসমিন।

মন্তব্য

ঠাকুরগাঁওয়ে পাঁচ টাকায় ঈদ বাজার

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
শেয়ার
ঠাকুরগাঁওয়ে পাঁচ টাকায় ঈদ বাজার

মাত্র পাঁচ টাকায় ঈদের বাজার করতে পেরে খুশি ঠাকুরগাঁওয়ের পাঁচ শতাধিক হতদরিদ্র পরিবার। গতকাল শনিবার সকালে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড় মাঠে স্থানীয় মানবিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহায় জুলুমবস্তি এই ঈদ বাজারের আয়োজন করে। সহায়তা পাওয়া জরিনা বেগম বলেন, আমার পরিবারে পাঁচজন সদস্য। স্বামী ও সন্তান দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাই।

ঠিকমতো খেতেও পারি না। ঈদের জন্য আলাদা বাজার করা সম্ভব ছিল না। কিন্তু সহায় জুলুমবস্তির এই পাঁচ টাকার বাজারের জন্য এবার ভালো খাবার খেতে পারব। সংগঠনের সভাপতি ফখরুল আলম লিফাত বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল সুবিধাবঞ্চিত পরিবারগুলোকে ঈদের আনন্দ দিতে সহায়তা করা।
এই বাজারের মাধ্যমে কমপক্ষে ৫০০ পরিবার কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে। জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা বলেন, এ ধরনের আয়োজন সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ