<p>শোনার এখনো সুযোগ পাইনি আমি। তবে ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক কথা দেখতে পেয়েছি। উনি না বুঝে কোনো কিছু করার মানুষ নন। বিভিন্নজনের কথায় যেটা বুঝলাম, সুরটা স্যার সম্পূর্ণ নতুন করেছেন। নজরুলগীতির সব গানই কিন্তু আমাদের বিদ্রোহী কবি সুর করে যাননি। সে ক্ষেত্রে হয়তো রহমান স্যার অনুমতি নিয়েই নতুন করে সুর বসিয়েছেন। এমন হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এ ক্ষেত্রে ‘বিকৃত’ হওয়ার কিছু হয়নি। একটা গানের কথার ওপর কয়েক ধরনের সুর হতেই পারে। ব্যক্তিগতভাবে ভালো-খারাপ লাগা অন্য বিষয়। যেমন - ‘বন্দে মাতরম’ গানটি যখন স্যার করেন তখনো কিন্তু ব্যাপক সমালোচনা হয়। তখন তো ফেসবুক ছিল না। পত্র-পত্রিকায় অনেক লেখালেখি হয়েছিল। ‘বন্দে মাতরম’ গানটি প্রায় হারিয়ে যাচ্ছিল। উনার হাত ধরে নতুন করে গানটি মানুষ গ্রহণ করল। তখনো কথার ওপর নতুন করে সুর করেছেন। ওই সুরটাই পরে আমাদের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে। এখন যে কেউ হুট করে বলতে পারবেন না, কোনটা আসল বন্দে মাতরম। আমার মনে হয় বিষয়টি এমনই।<br /> এমন মনে করার অবকাশ নেই উনি আসল গানটির মতো করার চেষ্টা করেছেন কিন্তু পারেননি। এসব যাঁরা বলছেন তাঁদের আমি বোঝাতে পারব না। আমি তাঁর শিক্ষার্থী, তাঁর সঙ্গে এখনো যোগাযোগ রয়েছে। এগুলোর জন্য বলছি না। এ আর রহমান সংগীতের হিমালয় পর্বত। এই সাবকন্টিনেন্টে এ আর রহমানের মতো সাকসেসফুল আর কোনো কম্পোজার গত এক শতকেও আসেননি। তিনি যেকোনো কাজ গবেষণা করেই করেন। তিনি তো গানের কথার অভাবে পড়েননি। মুগ্ধ হয়ে নিশ্চয়ই কাজী নজরুল ইসলামের গানে সুর করেছেন। ভালো-খারাপ লাগা সম্পূর্ণ আপেক্ষিক।<br /> ফেসবুকে দেখলাম সংগীতের সঙ্গে আছেন এমন অনেকেও বলছেন, এ আর রহমান একজন অশিক্ষিত মিউজিশিয়ান! এটা কিভাবে সংগীতের একজন মানুষ বলতে পারেন আমার জানা নেই। বিষয়টি একটু তলিয়ে দেখলে ওটাই হয়তো বের হবেন তিনি বা সিনেমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হয়তো নজরুলের গানসংশ্লিষ্ট কারো কাছ থেকে কথার অনুমতি নিয়েছে।<br /> ‘চিরঞ্জীবী মুজিব’ ছবিতে গানটি নতুন করে কম্পোজিশন করেছিলাম আমি। কুমার বিশ্বজিৎ গেয়েছেন। আমি গানের কথা ও সুর আগেরটাই রাখার চেষ্টা করেছি। সেটাই আমার ইচ্ছা ছিল। এ জন্য আরেকজন যে গানের কথায় নতুন সুর দিতে পারবেন না, এমনটা তো নয়। যদি অনুমতির ব্যাপার থাকে সেটা অন্য বিষয়। যাঁদের কাছে এর কপিরাইট আছে তাঁরা অভিযোগ করতে পারেন। তবে এতটুকু আত্মবিশ্বাস তাঁর প্রতি আছে, তিনি সব কিছু জেনেবুঝেই গানটি করেছেন।</p>