ফিনল্যাল্ডে মিলিটারি প্রশিক্ষণে থাকায় জাতীয় দলের সর্বশেষ দুটি অ্যাসাইনমেন্টে ছিলেন না তারিক কাজী। ছয় মাসের প্রশিক্ষণ শেষে বসুন্ধরা কিংসের জার্সিতে দুটি ম্যাচ খেলে আবার জাতীয় দলে ফিরেছেন এই সেন্টারব্যাক। ভারত ম্যাচ সামনে রেখে গতকাল কিংস অ্যারেনায় শুরু হওয়া অনুশীলনে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই দেখা গেল তাঁকে। ওজন কমিয়ে ফিটনেসে জোর দিয়ে নিজেকে আরো শানিয়ে নেওয়ায়ই গভীর মনোযোগ তারিকের।
অনুশীলনে নামার ঠিক আগেই তারিক এই প্রতিবেদককে বলে গেলেন, ‘এবার আমরা ভারতকে হারিয়ে দিতে পারব বলে মনে হচ্ছে। দলে অনেক নতুন খেলোয়াড় এসেছে। হামজা, ফাহমিদুল...স্থানীয় কয়েকজনও আছে। আল আমিন ভালো করেছে।’
এই নতুনরাই স্বপ্ন দেখাচ্ছেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরাকেও। বাংলাদেশ কোচের স্বপ্নের পরিধি বিস্তৃত হয়েছে ইংলিশ ফুটবলে খেলা হামজা চৌধুরী দলে থাকায়। জাতীয় দলের অনুশীলনে এই মুহূর্তে হামজা না থেকেও যেন আছেন। প্রায় আট হাজার কিলোমিটার দূরে থাকা হামজাকে নিয়ে গণমাধ্যমে একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে কাবরেরা ও জামাল ভুঁইয়াকে।
চতুর্থ মেয়াদে চুক্তি বাড়ানোর পর কাবরেরারও এটা প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট। সব কিছু মিলিয়ে নতুন শুরুর আশা দেখছেন বাংলাদেশ কোচ, ‘হ্যাঁ, নতুন শুরু হচ্ছে আমাদের। বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের সঙ্গে নতুন কয়েকজন যোগ হয়েছে। এই দল নিয়ে আমি খুবই আশাবাদী।’

২০০৩ সালের পর ভারতকে আর হারাতে পারেনি বাংলাদেশ।
র্যাংকিংয়েও ৫৯ ধাপ এগিয়ে ভারত। যদিও বাংলাদেশ-ভারত লড়াইয়ে র্যাংকিংয়ের দূরত্ব মনে রাখে না বোধ হয় কোনো দলই। শেষ পাঁচ ম্যাচের পরিসংখ্যানে চারটিই যে ড্র। বাংলাদেশ-ভারত সর্বশেষ দেখা হয় মালদ্বীপে, ২০২১ সাফে। ডিফেন্ডার ইয়াসিন আরাফাতের হেড রুখে দেয় সুনীল ছেত্রীর ভারতকে। ভারতের মাটিতে সর্বশেষ ২০১৯ সালে খেলা ম্যাচটিতে ১ পয়েন্ট নিয়ে ফিরেছিলেন জামালরা। এবার শিলংয়ে হতে যাওয়া ম্যাচে জয়ের ছক আঁকার কথা শুনিয়েছেন জামাল, ‘(ভারতে গিয়ে) আমরা সর্বশেষ ম্যাচ তাদের বিপক্ষে যেভাবে খেলেছিলাম এবারও সেই একই খেলা চাই। কিন্তু এবার ৩ পয়েন্ট নিতে চাই।’ জামাল অবশ্য লম্বা সময় ধরে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলের বাইরে ছিলেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি ব্রাদার্সের হয়ে লিগে একটি ম্যাচ খেললেও ফিটনেসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নেই তিনি। ভারত ম্যাচের যেহেতু এখনো ২৪ দিন বাকি, তত দিনে চেনা রূপে ফিরবেন বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে জামালকে প্রশ্ন করা হলে অবশ্য এড়িয়ে গেছেন তিনি।
হামজা-ফাহমিদুল আছেন, লিগ ও ফেডারেশন কাপে ৯ গোল করে প্রথমবার দলে সুযোগ পাওয়া আল আমিন ও আরিফ হোসেনকে নিয়েও বাড়তি প্রত্যাশা কাবরেরার কণ্ঠে। বিশেষ করে পুলিশ এফসিতে খেলা আল আমিন আক্রমণভাগে যেভাবে দ্যুতি ছড়িয়েছেন তা নজর কেড়েছে সবার। প্রতিপক্ষের বক্সে অনেক দিন ধরে একজন জাত স্ট্রাইকারের অভাব দৃশ্যমান। আল আমিন সেই অভাব পূরণ করবেন বলেই মনে করছেন কাবরেরা, ‘(গোল খরা) এ জন্যই আল আমিন দলে আছে। আমার বিশ্বাস, ওর মধ্যে কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, ওর স্টাইলও আমার পছন্দের। আমাদের ধ্যান-ধারণার সঙ্গে সে যায়। তার মানসিকতা যথেষ্ট ইতিবাচক, প্রাণশক্তি আছে। আমি মনে করি, সে আমাদের পরিকল্পনার সঙ্গে মানানসই।’